» » ছয়

সেকালে কবি এবং কথাশিল্পীর কাজ ছিল রাজার মনোরঞ্জন। একালেও তাই, তবে এক রাজার নয়, বহু রাজার। তখন তাঁর গুণাগুণের বিচার করত রাজ-দরবার, এখন করে জন-দরবার। এ বড় কঠিন ঠাঁই। ‘একটি শ্লোকে স্তুতি গেয়ে’ সে-’রাজার কাছে’Continue Reading

» » সাত

সে কথা এখন থাক। অভিলাষবাবু যার জন্যে এত গরজ করে আমাকে টেনে নিয়ে এলেন, সেই ব্যাপারটা আগে বলে নিই। যা অনুমান করেছিলাম তাই। আবার একটা নতুন ঝঞ্ঝাট সাধ করে সেধে আনবার প্রয়োজন বোধ করছেন ভদ্রলোক।Continue Reading

» » আট

এতদিন যেসব জেল-থেকে-ফেরা অচেনা পত্রলেখক ও লেখিকা আমাকে তাদের আত্মকাহিনী শুনিয়েছেন (যার কিছু কিছু আমি পাঠক-দরবারে পেশ করেছি), তাদের দুটো দলে ফেলা যেতে পারে। এক যাঁরা বলতে চেয়েছেন, তাঁরা নিরপরাধ অর্থাৎ বিভ্রান্ত বিচারের বলি, দুই—যাঁরাContinue Reading

হাদীছের গল্প

» হাদীছের গল্প

হাদীছের গল্প গবেষণা বিভাগ, হাদীছ ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ প্রকাশকের নিবেদন গল্প, কবিতা, সঙ্গীত ইত্যাদি শিল্প ও সাংস্কৃতিক উপকরণ মানুষের স্বভাবজাত অন্তঃক্রিয়ার এক চিরন্তন অংশ। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সমাজ ও সংস্কৃতির একটি বিরাট অংশ দখল করে রয়েছেContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে

নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে, লেখক অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়; প্রচ্ছদ শিল্পী পূর্ণেন্দু পত্রী, প্রথম প্রকাশ এপ্রিল ১৯৭১; প্রথম অখণ্ড সংস্করণ : জানুয়ারী ১৯৯৯। উৎসর্গ— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং আমার মাকে। নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে হল অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় রচিতContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » প্রথম খণ্ড

দেশভাগ নিয়ে ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ সিরিজের চারটি পর্ব। প্রথম পর্ব ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’, দ্বিতীয় পর্ব ‘মানুষের ঘরবাড়ি’, তৃতীয় পর্ব ‘অলৌকিক জলযান’, চতুর্থ পর্ব ‘ঈশ্বরের বাগান’। কিংবদন্তী তুল্য উপন্যাস ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ সম্পর্কে অগ্রজ সাহিত্যিক বিমলContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » এক

সোনালী বালির নদীর চরে রোদ হেলে পড়েছে। ঈশম শেখ ছইয়ের নিচে বসে তামাক টানছে। হেমন্তের বিকেল। নদীর পাড় ধরে কিছু গ্রামের মানুষ হাট করে ফিরছে। দূরে দূরে সব গ্রাম মাঠ দেখা যাচ্ছে। তরমুজের লতা এখনContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » দুই

ঢাক-ঢোলের বাজনা শোনা যাচ্ছে। ব্যাগপাইপ বাজাচ্ছে কেউ—মনে হয় কেউ দামামা বাজাচ্ছে। একদল লোক ঢাক-ঢোল বাজিয়ে গোপাট ধরে উঠে আসছে। শচীন্দ্রনাথ পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে সেই শব্দ শুনছিলেন। বুঝি ফেলু ফিরছে নারাণগঞ্জ থেকে। ফেলুর গলায় কালো তার বাঁধা।Continue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » তিন

সম্পর্কে জোটন বিবি আবেদালির দিদি হয়। সেই জোটন শোলার ছোট্ট ঝাঁপটা টেনে ঘর থেকে মুখ বার করল। এখনও ভোর হয়নি। সারা রাত জোটনের চোখে ঘুম নেই। মসজিদে সামু আজান দিচ্ছে, জোটন ঘরে বসে অন্ধকারে ছেঁড়াContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » চার

একটা হাড়গিলে পাখি অনবরত সেই থেকে ডাকছে। বাড়িটার উত্তরে মোত্রা ঘাসের জঙ্গলে। এখন সেখানে নানারকমের কীটপতঙ্গ উড়ে বেড়াচ্ছে। বড় বড় কুমীরের মতো দুটো গোসাপ ঝোপের ভিতর ঢুকে গেল। পাখিটা তবু ডাকছে, অনবরত ডাকছে। মালতী আতাফলContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » পাঁচ

তখন বিকেলবেলা। বর্ষার জল মাঠে থইথই করছে। জোটন গোপাট ধরে জল ভাঙতে থাকল। সে সাঁতার কেটে পাশের গ্রামে উঠে যাবে। সে জলজ ঘাসের ফাঁকে ফাঁকে ঝোপ-জঙ্গল অতিক্রম করে কেবল সাঁতার কাটছে। সে সাঁতার কেটে ঠাকুরবাড়িরContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » ছয়

আরও কিছুকাল পরে। সোনা নিবিষ্ট মনে তরমুজ খেতে বসে মাটি খুঁড়ছিল। বেলে মাটি, সুতরাং সে অনেকটা মাটি তুলে ফেলল। সোনালি বালির চর এখন শুকনো। চর পার হলে নদীর জল পাতলা চাদরের মতো, তিরতির করে কাঁপছে।Continue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » সাত

ক্রমে কিছু সময় গেল। কিছু বছর কেটে গেল। মাঠের শেষ শস্যকণা ঘরে উঠে গেছে। এখন চৈত্রের মাঝামাঝি মাঠ এখন ধু-ধু করছে। শুকনো জমিতে হাল বসছে না। সর্বত্র চাষবাসের একটা বন্ধ্যা সময়। যতদূর চোখ পড়ছে, সমানেContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » আট

বাইরে ইতস্তত মুরগি চরে বেড়াচ্ছিল। ভুখা পেটে জালালি ঘরের দাওয়ায় বসে। সামসুদ্দিন এবং তার মজলিস, অথবা ভিতর বাড়িতে অলিজানের রান্না গোস্ত (মেহমানদের ভোগের জন্য) সবই বিসদৃশ। জালালি কচুর ঝোপ অতিক্রম করে মাঠে দৃষ্টি দিল। ধানখেতেContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » নয়

শীতকাল এলেই মানুষটা কিছুদিন যেন ভালো থাকে। ঠাণ্ডার জন্য মণীন্দ্রনাথ গায়ে র‍্যাপার জড়িয়েছেন। আগের মতো খালি গায়ে থাকছেন না। এমন করে ভালো হতে হতে একদিন হয়তো যথার্থই ভাল হয়ে যাবেন। তখন কোথাও দু’জনে চলে যাবেContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » দশ

বড়বৌ পূজার ফুল তুলছিল। শীতকাল। বাগানের ভিতর শীতের সব ফুল ফুটে আছে। খুব ভোরে মালতী স্নান করতে এসেছিল ঘাটে। ঘাটে শীতের কুয়াশা ছিল তখন, ঘাটের সিঁড়িতে রোদ ছিল না। কিরণী আবু পাড়ে বসে ব্রতকথা বলছিল—ওঠContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » এগার

মালতীর দিনগুলি মন্দ কাটছিল না। রঞ্জিত আসার পরই মালতীর মনে হল ওর কী যেন হারিয়ে গিয়েছিল জীবন থেকে, কী যেন নেই, সংসারে কী না থাকলে ফাঁকা ফাঁকা মনে হয় এমন এক জিনিস রঞ্জিত ফিরে আসারContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » বার

ফেলু দাওয়ায় বসে গরজাচ্ছিল। বাঁ হাতে এখন আর একেবারেই শক্তি পাচ্ছে না। হাতটার দিকে তাকালেই ভয়ঙ্কর এক আক্রোশ বুক বেয়ে ওপরে উঠতে থাকে—তুমি ঠাকুর, পাগল ঠাকুর, তোমার পাগলামি ভাইঙ্গা দিমু। হাতটা ওর বাঁ হাত। কব্জিতেContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » তের

এখন শীতের দিন। জমি থেকে সব ফসল উঠে গেল বলে মাঠ ফাঁকা। কেবল নরেন দাস অথবা মাঝি-বাড়ির শ্রীশচন্দ্র, প্রতাপ চন্দ কামলা দিয়ে নিচু জমিতে তামাকের চাষ করছে। আর সব উর্বরা জমি থাকলে সেখানে পেঁয়াজ, রসুনContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » চৌদ্দ

জায়গাট বড় নির্জন, পুকুরটা প্রাচীন। মজা দিঘির মতো দাম এবং কচুরিপানায় ঠাসা। পাড়ে পাড়ে কত বিচিত্র গাছগাছালি গভীর বনের সৃষ্টি করেছে। ছোট বড় লতার ঝোপ-পায়ে হাঁটা সামান্য পথ। পথে শুকনো ঘাসপাতা। মাটিতে মরা ডাল, পাখিরContinue Reading