ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» খোকার গপ্‌প বলা

মা ডেকে কন, ‘খোকন-মণি! গপ্‌প তুমি জানো? কও তো দেখি বাপ!’ কাঁথার বাহির হয়ে তখন জোর দিয়ে এক লাফ বললে খোকন, ‘গপপ জানি, জানি আমি গানও!’ বলেই খুদে তানসেন সে তান জুড়ে জোর দিল –Continue Reading

ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» খোকার বুদ্ধি

চুন করে মুখ প্রাচীর পরে বসে শ্রীযুত খোকা, কেননা তার মা বলেছেন সে এক নিরেট বোকা। ডানপিটে সে খোকা এখন মস্ত একটা বীর, হুংকারে তাঁর হাঁস মুরগির ছানার চক্ষুস্থির! সাত লাঠিতে ফড়িং মারেন এমনই পালোয়ান!Continue Reading

ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» মা

যেখানেতে দেখি যাহা মা-এর মতন আহা একটি কথায় এত সুধা মেশা নাই, মায়ের মতন এত আদর সোহাগ সে তো আর কোনোখানে কেহ পাইবে না ভাই। হেরিলে মায়ের মুখ দূরে যায় সব দুখ, মায়ের কোলেতে শুয়েContinue Reading

ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» দিদির বে-তে খোকা

‘সাত ভাই চম্পা জাগো’– পারুলদি ডাকল, না গো? একী ভাই, কাঁদচ?–মা গো কী যে কয়–আরে দুত্তুর! পারায়ে সপ্ত-সাগর এসেছে সেই চেনা-বর? কাহিনির দেশেতে ঘর তোর সেই রাজপুত্তুর? মনে হয়, মণ্ডা মেঠাই খেয়ে জোর আয়েশ মিটাই!–Continue Reading

ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» খাঁদু-দাদু

অ মা! তোমার বাবার নাকে কে মেরেছে ল্যাং? খ্যাঁদা নাকে নাচছে ন্যাদা – নাক ডেঙাডেং ড্যাং! ওঁর নাকটাকে কে করল খ্যাঁদা র‍্যাঁদা বুলিয়ে? চামচিকে-ছা বসে যেন ন্যাজুড় ঝুলিয়ে! বুড়ো গোরুর টিকে যেন শুয়ে কোলা ব্যাং!Continue Reading

ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» খোকার খুশি

কী যে ছাই ধানাই-পানাই – সারাদিন বাজছে সানাই, এদিকে কারুর গা নাই আজই না মামার বিয়ে! বিবাহ! বাস, কী মজা! সারাদিন মণ্ডা গজা গপাগপ খাও না সোজা দেয়ালে ঠেসান দিয়ে। তবু বর হচ্ছিনে ভাই, বরেরContinue Reading

ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» খুকি ও কাঠবেড়ালি

কাঠবেড়ালি! কাঠবেড়ালি! পেয়ারা তুমি খাও? গুড়-মুড়ি খাও? দুধ-ভাত খাও? বাতাবি-নেবু? লাউ? বেড়াল-বাচ্চা? কুকুর-ছানা? তাও— ডাইনি তুমি হোঁৎকা পেটুক, খাও একা পাও যেথায় যেটুক! বাতাবি-নেবু সকলগুলো একলা খেলে ডুবিয়ে নুলো! তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুসContinue Reading

ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» ঝিঙে ফুল (ছড়া)

ঝিঙে ফুল! ঝিঙে ফুল। সবুজ পাতার দেশে ফিরোজিয়া ফিঙে-কুল – ঝিঙে ফুল। গুল্মে পর্ণে লতিকার কর্ণে ঢলঢল স্বর্ণে ঝলমল দোলো দুল– ঝিঙে ফুল॥ পাতার দেশের পাখি বাঁধা হিয়া বোঁটাতে, গান তব শুনি সাঁঝে তব ফুটেContinue Reading

ঝিঙে ফুল কাজী নজরুল ইসলাম

» ঝিঙে ফুল

‘ঝিঙে ফুল’ ১৩৩৩ সালের আশ্বিন মাসে গ্রন্থাকারে বাজারে বের হয় বলে সাপ্তাহিক ‘গণবাণী’ পত্রিকার বিজ্ঞাপন দৃষ্টে অনুমিত হয়। পক্ষান্তরে বেঙ্গল লাইব্রেরির তালিকা অনুসরণ করে আলী আহমদ দেখিয়েছেন যে, ‘ঝিঙে ফুল’ ১৯২৬ খৃষ্টাব্দের এপ্রিল (মুতাবিক চৈত্রContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» বিজয়িনী

হে মোর রাণী! তোমার কাছে হার মানি আজ শেষে। আমার বিজয়-কেতন লুটায় তোমার চরণ-তলে এসে। আমার সমর-জয়ী অমর তরবারী ক্লান্তি আনে দিনে দিনে, হয়ে ওঠে ভারী, এখন এ ভার আমার তোমায় দিয়ে হারি, এই হার-মানা-হারContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» শেষের ডাক

মরণ-রথের চাকার ধ্বনি ঐ রে আমার কানে আসে। পুবের হাওয়া তাই নেমেছে পারুল বনে দীঘল শ্বাসে॥ ব্যথার কুসুম গুলঞ্চ ফুল মালঞ্চে আজ তাই শোকাকুল, গোরস্থানের মাটির বাসে তাই আমার আজ প্রাণ উদাসে॥ অঙ্গ আসে অবশContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» বরষায়

আদর গর-গর বাদর দর-দর এ-তনু ডর-ডর কাঁপিছে থর-থর॥ নয়ন ঢল-ঢল [সজল ছল-ছল] কাজল-কালো-জল ঝরে লো ঝর ঝর॥ ব্যাকুল বনরাজি   শ্বসিছে ক্ষণে ক্ষণে সজনী! মন আজি   গুমরে মনে মনে। বিদরে হিয়া মম বিদেশে প্রিয়তমContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» প্রণয়-ছল

প্রণয়-ছল কত ছল করে সে বারেবারে দেখতে আসে আমায়। কত বিনা-কাজের কাজের ছলে চরণ দুটি আমার দোরেই থামায়॥ জানলা আড়ে চিকের পাশে দাঁড়ায় এসে কিসের আশে, আমায় দেখেই সলাজ ত্রাসে, গাল দুটিকে ঘামায়॥ অনামিকায় জড়িয়েContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» ফুল-কুঁড়ি

আর পারিনে সাধতে লো সই এক ফোঁটা এই ছুঁড়িকে। ফুটবে না যে ফোটাবে কে বলল সে ফুল-কুঁড়িকে। ঘোমটা-চাঁপা পারুল-কলি, বৃথাই তারে সাধল অলি পাশ দিয়ে হায় শ্বাস ফেলে যায় হুতাশ বাতাস ঢলি। আ মলো ছিঃ! ওরContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» প্রণয় নিবেদন

লো কিশোরী কুমারী! পিয়াসি মন তোমার ঠোঁটের একটি গোপন চুমারই॥ অফুট তোমার অধর ফুলে কাঁপন যখন নাচন তুলে একটু চাওয়ায় একটু ছুঁলে গো! তখন এ-মন যেমন কেমন-কেমন কোন্ তিয়াসে কোঙারি? – ওই শরম-নরম গরম ঠোঁটেরContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» বিরহ-বিধুরা

কার তরে? ছাই এ পোড়ামুখ আয়নাতে আর দেখব না; সুর্মা-রেখার কাজল-হরফ নয়নাতে আর লেখব না! লাল-রঙিলা করব না কর মেহেদি-হেনার ছাপ ঘষে; গুলফ চুমি কাঁদবে গো কেশ চিরুণ-চুমার আপশোশে! কপোল-শয়ান অলক-শিশুর উদাস ঘুম আর ভাঙবে না;Continue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» স্নেহ-পরশ

আমি এদেশ হতে বিদায় যেদিন নেব প্রিয়তম, কাঁদবে এ বুক সঙ্গীহারা কপোতিনী সম – তখন মুকুরপাশে একলা গেহে আমারই এই সকল দেহে চুমব আমি চুমব নিজেই অসীম স্নেহে গো! আহা পরশ তোমার জাগছে যে গোContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» পথিক বঁধু

আজ   নলিন-নয়ান মলিন কেন বলো সখী বলো বলো! পড়ল মনে কোন্ পথিকের বিদায়-চাওয়া ছলছল? বলো সখী বলো বলো!! মেঘের পানে চেয়ে চেয়ে বুক ভিজালে চোখের জলে, ওই সুদূরের পথ বেয়ে কি চেনা-পথিক গেছে চলেContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» শরাবন তহুরা

নার্গিস-বাগমে   বাহার কী আগমে ভরা দিল দাগমে– কাঁহা মেরি পিয়ারা, আও আও পিয়ারা। দুরু দুরু   ছাতিয়া ক্যায়সে এ রাতিয়া কাটুঁ বিনু সাথিয়া ঘাবরায়ে জিয়ারা, তড়পত জিয়ারা॥ দরদে দিল জোর, রঙিলা কওসর শরাবন তহুরা লাও সাকি লাও ভর, পিয়ালা তুContinue Reading

পূবের হাওয়া— কাজী নজরুল ইসলাম

» সোহাগ

গুলশন কো চুম চুম কহতে বুলবুল, রুখসারা সে বে-দরদি বোরকা খুল! হাঁসতি হ্যায় বোস্তাঁ, মস্ত্ হো যা দোস্তাঁ, শিরি শিরাজি সে যা বেহোশ জাঁ। সব কুছ আজ রঙিন হ্যায় সব কুছ মশগুল, হাঁস্‌তি হ্যায় গুল হো কর দোজখ বিলকুল হা রে আশেক মাশুক কি চমনোঁ মে ফুলতাContinue Reading