নিকটে[১]

বাদলা-কালো স্নিগ্ধা আমার কান্ত এল রিমঝিমিয়ে,

বৃষ্টিতে তার বাজল নুপূর পায়জোরেরই শিঞ্জিনী যে।

ফুটল উষার মুখটি অরুণ, ছাইল বাদল তাম্বু ধরায়;

জমল আসর বর্ষা-বাসর, লাও সাকি লাও ভর-পিয়ালায়।

ভিজল কুঁড়ির বক্ষ-পরাগ হিম-শিশিরের আমেজ পেয়ে

হমদম! হরদম দাও মদ, মস্ত্ করো গজল গেয়ে!

ফেরদৌসের ঝরকা বেয়ে গুল-বাগিচায় চলচে হাওয়া,

এই তো রে ভাই ওক্ত খুশির, দ্রাক্ষারসে দিলকে নাওয়া।

কুঞ্জে জরীন ফারসি ফরাস বিছিয়েচে আজ ফুলবালারা,

আজ চাই-ই চাই লাল-শিরাজি স্বচ্ছ-সরস খোর্মা-পারা!

মুক্তকেশী ঘোর-নয়না আজ হবে গো কান্তা সাকি,

চুম্বন এবং মিষ্টি হাতের মদ পেতে তাই ভরসা রাখি!

কান্তা সাথে বাঁচতে জনম চাও যদি কওসর-অমিয়,

সুর বেঁধে বীণ সারেঙ্গিতে খুবসে শিরীন শরাব পিয়ো!

খুঁজবে যেদিন সিকান্দারের বাঞ্ছিত আব্-হায়াত কুঁয়ায়,

সন্ধান তার মিলবে আশেক দিল-পিয়ারার ওষ্ঠ চুমায়!

খামখা তুমি মরছ কাজী শুষ্ক তোমার শাস্ত্র ঘেঁটে,

মুক্তি পাবে মদখোরের এই আল-কিমিয়ার পাত্র চেটে!

সূত্রনির্দেশ ও টীকা

  1. বাঙলা একাডেমির নজরুল রচনাবলীতে কবিতাটি পত্রিকায় প্রকাশিত শিরোনাম ‘বাদল-প্রাতের শরাব’ শিরোনামে গ্রন্থিত হয়েছে।