অনুচ্ছেদ ৩১ :

কয়েকটি হাদীস এ অংশের সমর্থন দেয়:

প্রথম: ‘উসমান ইবনু আবুল ‘আস হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

(يكون للمسلمين ثلاثة أمصار: مصر بملتقى البحرين ومصر بالحيرة)

“তখন তিনটি শহর মুসলিমদের দখলে থাকবে। তার একটি থাকবে বাহরাইনের নিকটবর্তী এবং আরেকটি থাকবে হীরাতে।”

আমি বলি: এর রিজাল সিক়াত, মুসলিমের রিজাল, তবে ‘আলী ইবনু যায়িদ ইবনু জাদআন ব্যতীত। তিনি যঈফ।

দ্বিতীয়: জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত হাদীস, যা পূর্বে গত হয়েছে।

এর শাহিদ বর্ণনা করেছেন মুসলিম (১/৯৫) ভিন্ন সানাদে আবূ যুবাইর হতে, তিনি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহকে মারফু ভাবে বলতে শুনেছেন:

(لا تزال طائفة من أتي يقاتلون على الحق ظاهرين إلى يوم القيامة . قال: فينزل عیسی ابن مریم صلى الله عليه وسلم فيقول أميرهم: تعال صل لنا . فيقول: لا إن بعضكم على بعض أمراء تكرمة الله هذه الأمة)

“আমার উম্মাতের একদল লোক সত্যের উপর অবিচল থেকে অনবরত জিহাদে লিপ্ত থাকবে। তারা ক়িয়ামাত পর্যন্ত বিজয়ী থাকবে। তিনি বলেন: অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) অবতরণ করবেন। তখন তাদের আমীর বলবেন, জনাব, এগিয়ে এসে আমাদেরকে সলাত পড়ান! তিনি বলবেন, না। আপনারা একে অন্যের আমীর। আল্লাহর পক্ষ থেকে এটা উম্মাতের মর্যাদা।”

এটি বর্ণিত আছে সিলসিলাহ সহীহাহ (হা/১৯৬০), হাদীসটি আদ-দানী বর্ণনা করেছেন (১৪২/২)।

তৃতীয়: আবূ হুরাইরাহ বর্ণিত হাদীস। যা গত হয়েছে এ শব্দে:

(ثم ينزل عيسى ابن مريم صلى الله عليه و سلم من السماء فيؤم الناس فإذا رفع رأسه من ركعته قال: سمع الله لمن حمده قتل الله المسيح الدجال وظهر المسلمون)

“অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। তিনি লোকদের ইমামতি করবেন। তিনি যখন রুকু‘ থেকে মাথা উঠাবেন তখন বলবেন: সামিআল্লাহু লিমান হামীদাহ, আল্লাহ মাসীহ দাজ্জালকে ধ্বংস করেছেন এবং মুসলিমদের বিজয়ী করেছেন।”

চতুর্থ: নাওয়াস ইবুন সাম‘আন বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে।

পঞ্চম: ‘আয়িশাহ বর্ণিত হাদীস, এটিও গত হয়েছে।

ষষ্ঠ: নাবী (সা.) এর কতিপয় সাহাবী সূত্রে বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে।

সপ্তম: সামুরাহ হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলতেন:

(إن الدجال خارج وهو أعور عين الشمال عليها ظفرة غليظة وإنه يبرئ الأكمه والأبرص ويحيي الموتى ويقول للناس: أنا ربكم . فمن قال: أنت ربي: فقد فتن ومن قال: ربي الله . حتى يموت فقد عصم من فتنة ولا فتنته بعده ولا عذاب عليه فيلبث ما شاء الله ثم يجيء عيسى ابن مريم عليهما السلام من قبل المغرب مصدقا بمحمد صلى الله عليه و سلم وعلى ملته فيقتل الدجال ثم إنما هو قيام الساعة)

“দাজ্জাল বের হবে, তার বাম চোখ হবে কানা। চোখের উপর মোটা চামড়ায় ঢাকা হবে। সে জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে সুস্থ করবে। সে মৃতকে জীবিত করে লোকদের উদ্দেশ্যে বলবে: আমি তোমাদের রব্ব। যে ব্যক্তি বলবে, তুমি আমাদের রব্ব, সে ফিতনায় পতিত হল। আর যে ব্যক্তি আমার রব্ব আল্লাহ। এমনকি সে মারা যাবে। সেতো তার ফিতনা থেকে নিরাপদ, এরপর আর কোন ফিতনা হবে না এবং তার উপর কোন শাস্তিও হবে না। অতঃপর আল্লাহ যতদিন চান (দাজ্জাল) অবস্থান করবে। অতঃপর পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে ঈসা ইবনু মারইয়াম আসবেন। মুহাম্মাদ (সা.)-কে সত্যায়ন করে এবং তার উম্মাতের একজন হয়ে। অতঃপর ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন। অতঃপর এর পরেই কিয়ামাত সংঘটিত হবে।”

আহমাদ (৫/১৩)।

আমি বলি: এর সানাদ সহীহ, যদি হাসান বাসরী আন্ আন্ শব্দে বর্ণনা না করতেন। হাফিয ইবনু হাজার ফাতহুল বারী গ্রন্থে (৬/৪৭৮) এর সানাদ হাসান হওয়ার বিষয়টি জোরালো করেছেন।

অষ্টম: আবূ হুরাইরাহ বর্ণিত হাদীস। নাবী (সা.) বলেছেন:

(كيف أنتم إذا نزل ابن مريم [من السماء] فيكم وإمامكم (وفي رواية: وأمكم) منكم؟) قال: ابن أبي ذئب ـ أحد رواته ـ تدري ما (أمكم منكم)؟  أمكم بكتاب ربكم تبارك وتعالى وسنة نبيكم صلى الله عليه وسلم

“কতই না আনন্দের কথা! যখন ঈসা ইবনু মারইয়াম (আকাশ থেকে) তোমাদের মাঝে অবতরণ করবেন, আর ইমাম হবেন তোমাদের থেকে।” (আরেক বর্ণনায় রয়েছে: তোমাদের থেকেই তোমাদের ইমাম হবে)। ইবনু আবূ যি’ব (এক বর্ণনায়) বলেন: “তোমাদের থেকেই তোমাদের ইমাম হবে।”— এর অর্থ সম্পর্কে তুমি জানো কি? (তা হলো) তোমাদের মহান পরাক্রমশালী বরকতময় আল্লাহর কিতাব ও তোমাদের নাবী (সা.)- এর সুন্নাতের অনুসারী হয়েই তিনি তোমাদের ইমাম হবেন।

বুখারী (৬/৩৮৪), মুসলিম (১/৯৪), ‘আবদুর রাযযাক় (২০৮৪১), আহমাদ (২/২৭২, ৩৩৬), ইবনু মানদাহ (৪১/২), বায়হাক়ী ‘আল- আসমা’ (৪২৪ পৃ.) অতিরিক্ত অংশ তার।

দ্বিতীয় সূত্র: আবূ হুরাইরাহ হতে মারফুভাবে এ শব্দে:

(والذي نفسي بيده ليوشكن أن ينزل فيكم ابن مريم حكما عدلا فيكسر الصليب ويقتل الخنزير ويضع الحرب ويفيض المال حتى لا يقبله)

“ঐ সত্ত্বার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অতি শীঘ্রই ঈসা ইবনু মারইয়াম একজন ন্যায় পরায়ণ শাসক হিসেবে তোমাদের মাঝে (আকাশ থেকে) অবতরণ করবেন। তিনি (খৃষ্টান ধর্মের প্রতীক) ‘ক্রশ’ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর হত্যা করবেন এবং জিযিয়া তুলে দিবেন, অজস্র ধন-সম্পদ দান করবেন। কিন্তু তা গ্রহণ করার মত (গরীব মানুষ) পাওয়া যাবে না।”

আমি বলি: এর সানাদ বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ।

আরেকটি সূত্র: ইবনু সীরীন হতে এক বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বলেন:

(ينزل ابن مريم عليه لأمته وممصرتان بين الأذان والإقامة فيقولون له: فيقول: بل يصلي بكم إمامكم أنتم أمراء بعضكم على بعض)

“ইবনু মারইয়াম (আ.) অবতরণ করবেন আযান ও ইকামাতের মধ্যবর্তী সময়ে হালকা হলুদ রঙ বিশিষ্ট খানি চাঁদর ও বর্ম পরিহিত অবস্থায়। লোকেরা তাঁকে বলবে: আপনি অগ্রসর হোন। তখন তিনি বলবেন: বরং তোমাদের ইমাম তোমাদেরকে সলাত পড়াবেন। তোমরা একে অপরের ইমাম।”

‘আবদুর রাযযাক় (২০৮৩৮)। এর সানাদ সহীহ মাক়তূ’। এটি মুরসালভাবে মারফুর হুকুমে রয়েছে।

আরেকটি সূত্র: মা‘মার হতে। তিনি বলেন:

(أنه المهدي الذي يصلي وراءه عيسى)

“ঈসা (আ.) যাঁর পিছনে সলাত পড়বেন তিনি হলেন মাহদী।”

‘আবদুর রাযযাক় (২০৮৩৯)।

পঞ্চম সূত্র: আবূ হুরাইরাহ হতে মারফুভাবে বর্ণিত এ শব্দে:

(ينزل عيسى ابن مريم فيقتل الخنزير ويمحو الصليب وتجمع له الصلاة ويعطي المال حتى لا يقبل ويضع الخراج وينزل الروحاء فيحج منها أو يعتمر أو يجمعهما) قال: وتلا أبو هريرة: وإن من أهل الكتاب إلا ليؤمنن به قبل موته ويوم القيامة يكون عليهم شهيدا [ النساء: ١٥٩ ] . فزعم حنظلة أن أبا هريرة قال: (يؤمن به قبل موته): عيسى فلا أدري هذا كله حديث النبي صلى الله عليه و سلم أو شيء قاله أبو هريرة؟

“ঈসা (আ.) অবতরণ করবেন। তিনি শুকর হত্যা করবেন, ‘ক্রশ’ বিলুপ্ত করবেন, তার জন্য সলাত একত্র করা হবে, তিনি ধন-সম্পদ দান করবেন, এমনকি তা গ্রহণ করার মত লোক পাওয়া যাবে না। তিনি খারাজ তুলে দিবেন। তিনি রাওহাতে অবতরণ করবেন এবং সেখান থেকে হাজ্জ বা ‘উমরাহ করবেন অথবা দুটোই একত্রে করবেন।” তিনি বলেন, আবূ হুরাইরাহ তিলাওয়াত করলেন: “কিতাবধারীদের মধ্যে সবাই তার মৃত্যুর আগে ঈসার উপর ঈমান আনবেই। আর ক়িয়ামাতের দিন তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেন।” (সূরাহ নিসা: ১৫৯)। ফলে হানযালাহ ধারণা করলেন, আবূ হুরাইরাহ বলেছেন: “তারা ঈসার মৃত্যুর পূর্বে ঈমান আনবে।” আমি জানি না, এর পুরোটাই কি নাবী (সা.) এর হাদীস নাকি এতে আবূ হুরাইরাহ্ নিজস্ব কিছু কথা আছে?

আহমাদ (২/২৯০-২৯১)।

আমি বলি: এর সানাদ মুসলিমের শর্তে সহীহ। তিনি এর ‘রাওহাতে’ অবতরণ থেকে বর্ণনা করেছেন। অনুরূপ আল-ইহলাল (৪/৬০), ‘আবদুর রাযযাক় (২০৮৪২), আদ-দানী (১৪৪/১) এবং ইবনু মানদাহ (২/৪১)।

ষষ্ঠ সূত্র: আবূ হুরাইরাহ হতে মারফুভাবে এ শব্দে:

(ليس بيني وبينه نبي (يعني: عيسى) وإنه نازل فإذا رأيتموه فاعرفوه: رجل مربوع إلى الحمرة والبياض بين ممصرتين كأن رأسه يقطر وإن لم يصبه بلل فيقاتل الناس على الإسلام فيدق الصليب ويقتل الخنزير ويضع الجزية ويهلك الله في زمانه الملل كلها إلا الإسلام ويهلك [الله في زمانه] المسيح [الكذاب] الدجال [وتقع الأمنة على الأرض حتى ترتع الأسود مع الإبل والنمار مع البقر والذئاب مع الغنم ويلعب الصبيان بالحيات لا تضرهم] فيمكث في الأرض أربعين سنة ثم يتوفى فيصلي عليه المسلمون [ويدفنونه])

“আমার এবং ঈসার মাঝে কোন নারী আসবে না। অবশ্য তিনি (আকাশ থেকে) অবতরণ করবেন। তোমরা যখন তাঁকে দেখবে, তখন তাঁকে এভাবে চিনবে যে, ‘তিনি হবেন মধ্যম আকৃতির, তার দেহের রং হবে লাল-সাদা মিশ্রিত, তার পরিধানের কাপড় হবে হালকা হলুদ রঙ বিশিষ্ট দু’খানি চাঁদর এবং তার মাথার চুল ভিজে না থাকা সত্ত্বেও সেখান থেকে ফোটায় ফোটায় পানি ঝরতে থাকবে। তিনি ইসলামের জন্য লোকেদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন, ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর নিধন করবেন এবং জিযিয়া কর রহিত করবেন। মহান আল্লাহ তাঁর সময়ে ইসলাম ছাড়া অন্য সব মতবাদকে ধ্বংস করে দিবেন। তিনি [মিথ্যাবাদী] দাজ্জালকে হত্যা করবেন। [পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এমনকি সিংহ উটের সাথে ঘাস খাবে, চিতাবাঘ গরুর সাথে এবং নেকড়ে বকরীর সাথে। আর শিশুরা সাপ নিয়ে খেলা করবে অথচ এসব তাদের কোন ক্ষতি করবে না।] এরপর তিনি পৃথিবীতে চল্লিশ বছর জীবিত থাকার পর ইন্তিকাল করবেন এবং মুসলিমরা তাঁর জানাযার সলাত আদায় করবেন [এবং তাঁকে দাফন করবেন]।

আবূ দাউদ (২/২১৪) হাদীসের শব্দাবলী তার, ইবনু হিব্বান (১৯০২, ১৯০৩), আহমাদ (২/৪০৬, ৪৩৭), ইবনু জারীর ‘আত-তাফসীর; (৭১৪৫), আজরী (৩৮০ পৃ.), ‘আবদুর রাযযাক় (২০৮৪৫) এবং তিনি বৃদ্ধি করেছেন:

(وتكون الدعوة واحدة لرب العالمين)

“তখন একটি মাত্র দা‘ওয়াত হবে রব্বুল আলামীনে।”

এর শাহিদ বর্ণনা রয়েছে পরবর্তী সূত্রে।

আমি বলি: এর সানাদ সহীহ। হাফিয একে সহীহ বলেছেন। হাদীসটি বর্ণিত আছে সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ (হা-২১৮২)।

সপ্তম সূত্র: আবূ হুরাইরাহ হতে মারফুভাবে এ শব্দে:

(يوشك المسيح عيسى ابن مريم أن ينزل حكما قسطا وإماما عدلا فيقتل الخنزير ويكسر الصليب وتكون الدعوة واحدة)

“অচিরেই মাসীহ ঈসা ইবনু মারইয়াম অবতরণ করবেন ন্যায় পরায়ণ শাসক ও ইনসাফকারী ইমাম হিসেবে। তিনি শুকর হত্যা করবেন, ক্রশ ভেঙ্গে ফেলবেন। তখন দা‘ওয়াত হবে শুধুমাত্র একটি।”

আহমাদ (২/৩৯৪)

আমি বলি: এর সানাদ হাসান।

অষ্টম সূত্র: আবূ হুরাইরাহ হতে মারফুভাবে অনুরূপ। তবে শেষের বাক্যটি বাদে। তাতে অতিরিক্ত রয়েছে:

(ويرجع السلم وتتخذ السيوف مناجل وتذهب حمة كل ذات حمة وتنزل السماء رزقها وتخرج الأرض بركتها حتى يلعب الصبي بالثعبان فلا يضره ويراعي الغنم الذئب فلا يضرها ويراعي الأسد البقر فلا يضرها)

“শান্তি ফিরে আসবে, তরবারি পরিত্যক্ত হবে, সকল প্রকার বিষধর প্রাণীর বিষ দূর হয়ে যাবে, আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করবে, যমীন তার বরকত উদ্গীরন করবে, এমনকি শিশুরা সাপ নিয়ে খেলা করবে তা সত্ত্বেও সাপ তার কোন ক্ষতি করবে না। নেকড়ে বকরীর পাল পাহারা দিবে, সে তার কোন ক্ষতি করবে না। বাঘ গরুর পাল পাহারা দিবে, সে তাদের কোন ক্ষতি করবে না।”

আহমাদ (২/৪৮২-৪৮৩), ফুলাইহ্ হতে, তিনি হারিস ইবনু ফুখাইল আনসারী হতে, তিনি যিয়াদ ইবনু সা’দ হতে আবূ হুরাইরাহ সূত্ৰে।

আমি বলি: এর সানাদ সম্পর্কে ইবনু কাসীর বলেন: “জাইয়্যিদ, মজবুত, সালিহ।” কিন্তু এ ব্যাপারে আমার আপত্তি আছে দু’দিক থেকে:

এক: এই যিয়াদ ইবনু সা’দ হলো মাদানী আনসারী। ইবনু আবূ হাতিম তাকে উল্লেখ করেছেন (১/২/৫৩২) তার পুত্র সা’দ ইবনু যিয়াদের বর্ণনাতে তারই সূত্রে। কিন্তু সেখানে তার কোন দোষ-গুণ উল্লেখ করেননি। আর ইবনু হিব্বান তাকে ‘আস-সিক়াত’ গ্রন্থে (১/৭৩) উল্লেখ করেননি। আর ইবনু হিব্বান তাকে ‘আস-সিক়াত’ গ্রন্থে (১/৭৩) উল্লেখ করেছেন।

দুই: সানাদের এই ফুলাইহ্ হলো ইবনু সুলাইমান আর-খাযাঈ। যদি সে শাইখাইনের রিজালভুক্ত হয়ে থাকে তাহলে তার ভুল প্রচুর। যেমন বলেছেন হাফিয ‘আত-তাক়রীব গ্রন্থে।

আমি বলি: তাই উচিত হবে এ কথা বলা যে, এটি এর পূর্বের হাদীস দ্বারা মজবুত।

নবম সূত্র: আবূ হুরাইরাহ হতে মারফুভাবে এ শব্দে:

(لا تقوم الساعة حتى ينزل الروم بالأعماق أو بدابق فيخرج إليهم جيش من المدينة من خيار أهل الأرض يومئذ فإذا تصافوا قالت الروم: خلوا بيننا وبين الذين سبوا منا نقاتلهم فيقول المسلمون: لا والله لا نخلي بينكم وبين إخواننا. فيقاتلونهم فينهزم ثلث لايتوب الله عليهم أبدا ويقتل ثلثهم – أفضل الشهداء عند الله – ويفتتح الثلث لا يفتنون أبدا فيفتتحون قسطنطينية (وفي رواية: فيبلغون قسطنطينية فيغنمون) و (في طريق أخرى عنه: سمعتم بمدينة جانب منها في البر وجانب منها في البحر؟) قالوا: نعم يا رسول الله قال: (لا تقوم الساعة حتى يغزوها سبعون ألفا من بني إسحاق فإذا جاؤوها نزلوا فلم يقاتلوا بسلاح ولم يرموا بسهم قالوا: لا إله إلا الله والله أكبر. فيسقط أحد جانبيها الذي في البحر ثم يقولوا الثانية: لا إله إلا الله والله أكبر . فيسقط جانبها الآخر ثم يقولوا الثالثة: لا إله إلا الله والله أكبر . فيفرج لهم فيدخلوها فيغنموا) فبينما هم يقتسمون الغنائم قد علقوا سيوفهم بالزيتون إذ صاح فيهم الشيطان: إن المسيح [الدجال] قد خلفكم في أهليكم . فيخرجون وذلك باطل [فيتركون كل شيء ويرجعون] فإذا جاؤوا الشام خرج فبينما هم يعدون للقتال يسوون الصفوف إذ أقيمت الصلاة [صلاة الصبح] فينزل عيسى ابن مريم صلى الله عليه وسلم فأمهم فإذا رآه عدو الله ذاب كما يذوب الملح في الماء فلو تركه لانذاب حتى يهلك ولكن يقتله الله بيده فيريه دمه في حربته)

“ক়িয়ামাত ততক্ষণ ক়ায়িম হবে না যতক্ষণ তার পূর্বে এ নিদর্শন প্রকাশ না পাবে। রোমকরা (সিরিয়ার) আ‘মাক় ও দায়িক় নামক নহরের কাছে অবতীর্ণ হবে। অতঃপর মাদীনাহ্ থেকে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনী তাদের মোকাবিলার উদ্দেশে রওয়ানা হবে। সেখানে পৌঁছে যখন তাঁরা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে, তখন রোমকরা বলবে: আমাদেরকে এবং আমাদের মধ্যকার যারা বন্দী হয়েছে অথবা যারা আমাদের মধ্য থেকে কিছু লোককে বন্দী করে রেখেছে উভয়কে মিলিত হওয়ার সুযোগ দাও, আমরা তাদের সাথে মিলে অথবা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। তখন মুসলিমরা বলবে: মনে রেখ, আল্লাহর শপথ! আমরা তোমাদের বন্দীদেরকে ছাড়ব না অথবা যারা তাদেরকে বন্দী করেছে তাদের সাথে তোমাদেরকে মিলিত হতে দিব না। অতঃপর মুসলিমদের সাথে তাদের তুমুল লড়াই হবে। যুদ্ধে মুজাহিদদের এক তৃতীয়াংশ পরাজয় বরণ করবে, যাদের তাওবাহ আল্লাহ কবূল করবেন না। আর এক তৃতীয়াংশ শাহাদাত বরণ করবে, যারা আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম শহীদ গণ্য হবে। আর এক তৃতীয়াংশ জয়ী হবে যারা কখনো পর্যুদস্ত হবে না। অবশেষে এরাই কুসতুনতুনিয়া জয় করবে। বিজয় লাভের পর তারা তাদের তরবারিসমূহ যাইতূন গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখে গণীমাত বণ্টন করতে থাকবে। এমন সময় হঠাৎ তাদের মধ্যে শয়তান চিৎকার দিয়ে বলে উঠবে: “শুনো, মাসীহ (দাজ্জাল) তোমাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে।” এ সংবাদ শুনামাত্র সবাই কুসতুনতুনিয়া থেকে বেরিয়ে আসবে। এসে দেখবে, কিছুই হয়নি, একটা গুজব মাত্ৰ। অতঃপর তারা সিরিয়ায় পৌঁছলে শয়তান (দাজ্জাল) আত্মপ্রকাশ করবে। তখন মুসলিমরা তার মুকাবিলা করার উদ্দেশে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিবে এবং সমানভাবে সারিবদ্ধ হবে। এমন সময় সলাতের আযান হবে এবং ঈসা (আ.) যমীনে অবতরণ করবেন এবং তাদের ইমাম হবেন। যখন আল্লাহর দুশমন (দাজ্জাল) তাঁকে দেখবে, তখন সে এরূপ বিগলিত হয়ে যাবে যেমন পানিতে লবণ গলে যায়। তাকে যদি ছেড়েও দেয়া হয় তবুও সে বিগলিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহর নাবী (ঈসা.) তাকে নিজ হাতে হত্যা করবেন, এবং তিনি ঈমানদার সাথীদেরকে তাঁর বল্লমে ওর রক্ত দেখিয়ে দিবেন।”

মুসলিম (৮/১৭৫-১৭৬) হাদীসের শব্দাবলী তার, অনুরূপভাবে তার আরেকটি সূত্র (৮/১৮৭-১৮৮) অতিরিক্ত অংশ তার, এবং আদ-দানী (১১৩/১-২, ১২১/২) দুটি সানাদে, হাকিম (৪/৪৮২) এবং আরেকটি রিওয়ায়াত, আর অতিরিক্ত অংশ তার, এবং তিনি বলেছেন: মুসলিমের শর্তে সহীহ, তবে শাইখাইন তা বর্ণনা করেননি।’ মুসলিমের শর্ত করাটা তার ধারণাপ্রসূত।

আমি বলি: এর কিছু অংশের সমর্থন (শাহিদ) রয়েছে ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদের হাদীসে। যা ইউসাইর ইবনু জাবির বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন:

(هاجت ريح حمراء بالكوفة فجاء رجل ليس له هجيري إلا: يا عبد الله ابن مسعود جاءت الساعة . قال: فقعد – وكان متكئا – فقال: إن الساعة لا تقوم حتى لا يقسم ميراث ولا يفرح بغنيمة . ثم قال بيده هكذا ونحاها نحو الشام فقال: عدو يجمعون لأهل الإسلام ويجمع لهم أهل الإسلام . قلت: الروم تعني؟ قال: نعم وتكون عند ذاكم القتال ردة شديدة فيشترط المسلمون شرطة للموت لا ترجع إلا غالبة فيقتتلون حتى يحجز بينهم الليل فيفيء هؤلاء وهؤلاء كل غير غالب وتفنى الشرطة ثم يشترط المسلمون شرطة للموت لا ترجع إلا غالبة فيقتتلون حتى يحجز بينهم الليل فيفيء هؤلاء وهؤلاء كل غير غالب وتفنى الشرطة ثم يشترط المسلمون شرطة للموت لا ترجع إلا غالبة فيقتتلون حتى يمسوا فيفيء هؤلاء وهؤلاء كل غير غالب وتفنى الشرطة فإذا كان اليوم الرابع نهد إليهم بقية أهل الإسلام فيجعل الله الدبرة عليهم فيقتتلون مقتلة – إما قال: لا يرى مثلها وإما قال:لم ير مثلها ـ حتي إن الطائر ليمر بجنباتهم فما يخلفهم حتى يخر ميتا فيتعاد بنو الأب كانوا مائة فلا يجدونه بقي منهم إلا الرجل الواحد فبأي غنيمة يفرح؟ أو أي ميراث يقاسم؟  فبينما هم كذلك إذ سمعوا ببأس هو أكبر من ذلك فجاءهم الصريخ إن  الدجال قد خلفهم في ذراريهم . فيرفضون ما في أيديهم ويقبلون فيبعثون عشرة فوارس طليعة . قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ( إني لأعرف أسماءهم وأسماء آبائهم وألوان خيولهم خير فوارس على ظهر الأرض يومئذ)

“একদা কূফা নগরীতে লোহিত বর্ণের একটা দমকা হাওয়া প্রবাহিত হলো। তখন এক ব্যক্তি এসে ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদকে বললো: সাবধান হে ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ! ক়িয়ামাত এসে গেছে। অবশ্য এটা তার অভ্যাসগত নয়। বর্ণনাকারী বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ হেলান অবস্থায় ছিলেন, এ কথা শুনে তিনি বসে গেলেন। তিনি বসে বললেন: ক়িয়ামাত ঐ পর্যন্ত ক়ায়িম হবে না যে পর্যন্ত এ অবস্থার সৃষ্টি না হবে যে, মীরাস বণ্টন করা হবে না এবং গণীমাত পেয়ে কোন আনন্দ প্রকাশ করা হবে না। অতঃপর তিনি হাত দিয়ে এভাবে ইশারা করলেন এবং হাত সিরিয়ার দিকে বাড়িয়ে দিলেন। তারপর বললেন, একদল দুশমন সিরিয়াবাসীর উদ্দেশে একত্রিত হবে এবং একদল ইসলামপন্থীও তাদের উদ্দেশে একত্রিত হবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি রোমীদের কথা বলছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর বললেন: ঐ যুদ্ধে (উভয় পক্ষের) প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুবই প্রবল হবে। মুসলিম বাহিনী একদল মুজাহিদকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত রাখবে, যারা বিজয়ী না হওয়া পূর্বে কিছুতেই ফিরবে না। অতঃপর তারা সারাদিন যুদ্ধে লিপ্ত থাকবে যে পর্যন্ত রাত তাদের মাঝে অন্তরায় সৃষ্টি না করে। রাত হলে এই দল ঐ দল সকলেই এভাবে ফিরে আসবে যে, কেউই বিজয়ী হতে পারেনি। এদিকে মৃত্যুর জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দলটি শেষ হয়ে যাবে। অতঃপর মুসলিমরা মৃত্যুর জন্য আরেকটি দল প্রস্তুত করবে যারা বিজয়ী না হয়ে ফিরবে না। এরাও রাত এসে অন্তরায় সৃষ্টি না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। অবশেষে রাত এসে গেলে এই দল ঐ দল সবাই অবিজয়ী হয়ে ফিরে আসবে। আর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দলটিও শেষ হয়ে যাবে। অতঃপর মুসলিমরা আরেকটি দলকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করবে যারা বিজয়ী না হয়ে ফিরে আসবে না। এরাও রাত এসে অন্তরায় সৃষ্টি না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। অবশেষে রাত এসে গেলে এই দল ঐ দল সবাই অবিজয়ী হয়ে ফিরে আসবে। আর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দলটিও শেষ হয়ে যাবে। যখন চতুর্থ দিন আসবে তখন অবশিষ্ট মুসলিম বাহিনী শত্রুবাহিনীর দিকে অগ্রসর হবে। এদেরকেও আল্লাহ পরাজয়ের সম্মুখিন করবেন অথবা চরম অবস্থায় সম্মুখিন করবেন অথবা ধ্বংসের মুখোমুখি পৌঁছাবেন। যাতে এরাও এমন প্রাণপণে যুদ্ধ করবে যার দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায় না বা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি পাখি যখন তাদের আশেপাশে উড়ে যাবে, তখন তাদেরকে অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না। অতিক্রম করতে গেলে মরে মাটিতে পড়ে যাবে। যুদ্ধশেষে কোন পিতার সন্তানদেরকে যাদের সংখ্যা একশো গণনা করা হবে কিন্তু মাত্র একজন ব্যতীত তাদের আর কাউকে জীবিত পাওয়া যাবে না। তাহলে কিসের গণীমাতে আনন্দ হবে? বা কোন মীরাস বণ্টন করা হবে? কাদের মাঝে বন্টন করা হবে? যারা বেঁচে থাকবে তারা এ শোক অবস্থায় থাকতেই হঠাৎ এর চাইতেও বড় বিপদের কথা শুনবে। তাদের কাছে বিপদের সংবাদদাতা এসে শুনাবে যে, দাজ্জাল তাদের অনুপস্থিতিতে তাদের সন্তান-সন্তুতির স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। তখন তারা হয়রান পেরেশান হয়ে তাদের হাতে যা কিছু আছে, সব পরিত্যাগ করে নিজ নিজ গৃহের দিকে রওয়ানা হবে। তাদের আগে আগে দশ জন অশ্বারোহী পাঠিয়ে দেয়া হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ঐসব অশ্বারোহীর নাম ও তাদের পিতার নাম, এমনকি তাদের ঘোড়ার রঙ পর্যন্ত আমার জানা আছে। তারা তৎকালীন পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে উত্তম অশ্বারোহী বা সেরা অশ্বারোহীদের অন্যতম হবে।”

আহমাদ (১/৪৩৫), মুসলিম (৮/১৭৭-১৭৮)

দশম সূত্র: আবূ হুরাইরাহ হতে মারফুভাবে:

(ينزل عيسى ابن مريم فيدق الصليب ويقتل الخنزير ويضع الجزية ويهلك الله عز و جل في زمانه الدجال وتقوم الكلمة الله رب العالمين)

“ঈসা ইবনু মারইয়াম অবতরণ করবেন। তিনি ক্রশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর নিধন করবেন এবং জিযিয়া রহিত করবেন। আল্লাহ তাঁর যুগেই দাজ্জালকে ধ্বংস করবেন। আর তখন কালেমা শুধুমাত্র হবে আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের জন্য।”

আদ-দানী (১৪৩/২), ইবনু মানদাহ (৪১/২) এবং এর সানাদ জাইয়্যিদ।

এই হলো শুধুমাত্র আবু হুরাইরাহ থেকে বর্ণিত হাদীসের দশটি সানাদ সূত্র। এটা তার সূত্রে মুতাওয়াতির বর্ণনা।

নবম: হুযাইফাহ ইবনুল ইয়ামান হতে বর্ণিত। যা এইমাত্র গত হওয়া আবূ হুরাইরাহর হাদীসের অনুরূপ, যা এর চেয়ে পরিপূর্ণ এবং এতে রয়েছে: তিনি আক়াবায়ে আফীক়ের উল্লেখ করেন। তাতে আছে:

(فلما قاموا يصلون نزل عيسى ابن مريم صلوات الله عليه إمامهم فصلى بهم (۱) فلما انصرف قال: هكذا: أفرجوا بيني وبين عدو الله . ( قال أبو حازم: قال أبو هريرة: فيذوب كما تذوب الإمالة في الشمس وقال عبد الله بن عمرو: كما يذوب الملح في الماء ) وسلط الله عليهم المسلمين فيكسرون الصليب ويقتلون الخنزير ويضعون الجزية)

“যখন লোকেরা দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করতে থাকবে তখন ঈসা ইবনু মারইয়াম অবতরণ করবেন এবং তাদের সাথে সলাত আদায় করবেন।1 অতঃপর সলাত শেষে তিনি বলবেন: এভাবে: তোমরা আমার মাঝে এবং আল্লাহর দুশমনের মাঝে জায়গা খালি করে দাও। আবূ হাযিম বলেন, আবু হুরাইরাহ বলেছেন: সে এমনভাবে বিগলিত হবে যেমন সূর্যের (তাপে) চর্বি গলে যায়। আর ‘আবদুল্লাহ ইবনু আমর বলেন: যেমন ভাবে লবন পানিতে বিগলিত হয়। অতঃপর আল্লাহ তাদের উপর মুসলিমদেরকে কর্তৃত্ব দিবেন। ফলে তারা ক্রশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর নিধন করবেন এবং জিযিয়া কর রহিত করবেন।”

এটি বর্ণনা করেছেন ইবনু মানদাহ (৯৫/২), হাকিম (৪/৪৯০-৪৯১) এবং তিনি বলেছেন: মুসলিমের শর্তে সহীহ। যাহাবী তার স্বীকৃতি দিয়েছেন।

আমি বলবো: এর সানাদে খাল্‌ফ ইবনু খালীফাহ আশজাঈ রয়েছে। যদিও তিনি সত্যবাদী, মুসলিমের রিজাল কিন্তু তিনি শেষ বয়সে সংমিশ্রণ করতেন। কাজেই শাওয়াহিদে তার হাদীসটি জাইয়্যিদ। আর হাফিয (৬/৪৭৮) ইবনু মানদাহর সূত্রটি উল্লেখের পর বলেন: এর সানাদ সহীহ। এটা ভুল অথবা শিথীলতা।

দশম: হুযাইফাহ ইবনু উসাইদ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:

(… ولكن الدجال يخرج في بغض من الناس وخفة من الدين وسوء ذات بين فيرد كل منهل فتطوى له الأرض طي فروة الكيش حتى يأتي المدينة فيغلب على خارجها ويمنع داخلها ثم جبل إيلياء فيحاصر عصابة من المسلمين فيقول لهم الذين عليهم: ما تنتظرون بهذا الطاغية أن تقاتلوه حتى تلحقوا بالله أو يفتح لكم؟ فيأتمرون أن يقاتلوه إذا أصبحوا فيصبحون ومعهم عيسى ابن مريم فيقتل الدجال ويهزم أصحابه حتى أن الشجر والحجر والمدر يقول: يا مؤمن هذا يهودي عندي فاقتله)

“ … কিন্তু দাজ্জাল এমন সময় আগমন করবে যখন মানুষ পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে, ধর্মকে কিছুই মনে করবে না, এবং আপোষে খারাপ আচরণ করবে। অতঃপর (দাজ্জাল) সকল নদীর ঘাটে আগমন করবে। যমীন তার জন্য এমনভাবে সংকোচন করে দেয়া হবে তা যেন মেষের একটি চামড়া। অবশেষে সে মাদীনাতে আসবে। মাদীনার বহিরাংশে সে বিজয় লাভ করবে কিন্তু অভ্যন্তরে প্রবেশে বাধা প্রাপ্ত হবে। অতঃপর সে ইলিয়া পাহাড়ে গিয়ে একদল লোককে ঘেরাও করবে।”

হাকিম (৪/৫২৯-৫৩০), ‘আবদুর রাযযাক় (২০৮২৭) সংক্ষেপে। হাকিম বলেন: সানাদ সহীহ। যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। তারা যেমন বলেছেন হাদীসটি তা-ই।

একাদশ: মুহাম্মাদ (সা.)-এর কতিপয় সাহাবী হতে বর্ণিত, যা পূর্বে গত হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৩২ :

এ অংশের সমর্থন (শাহিদ) দেয় হুযাইফাহ ইবনুল ইয়ামান বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে। এবং তাতে রয়েছে:

(فلما انصرف (يعني: عيسى من الصلاة) قال هكذا: أفرجوا بيني وبين عدو الله)

“যখন ঈসা (আ.) সলাত থেকে অবসর হবেন তখন বলবেন: এভাবে: তোমরা আমার মাঝে ও আল্লাহর দুশমনের মাঝে জায়গা খালি করে দাও।”

সূত্রনির্দেশ ও টীকা

  1. অর্থাৎ বাইতুল মাকদিসে। আর দামিস্কে তিনি ইমাম মাহদীর পিছনে মুক্তাদী হয়ে সলাত আদায় করবেন। যা পূর্বের সমস্ত হাদীস প্রমাণ করে।