অনুচ্ছেদ ২৫ :
এর তিনটি হাদীস রয়েছে:
প্রথম: আনাস হতে।
দ্বিতীয়: জাবির হতে।
তৃতীয়: মিহজান হতে। এর তৃতীয়টি ইতোপূর্বে গত হয়েছে।
এছাড়া চতুর্থ আরেকটি হাদীস রয়েছে জনৈক আনসারী ব্যক্তি হতে মুহাম্মাদ (সা.)-এর কতিপয় সাহাবীর সূত্রে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) দাজ্জাল সম্পর্কে উল্লেখ করে বলেন:
(يأتي سباخ المدينة وهو محرم عليه أن يدخل نقابها فتنتفض المدينة بأهلها نفضة أو نفضتين – وهي الزلزلة – فيخرج إليه منها كل منافق ومنافقة ثم يولي الدجال قبل الشام حتى يأتي بعض جبال الشام فيحاصرهم وبقية المسلمين يومئذ معتصمون بذروة جبل من جبال الشام فيحاصرهم الدجال نازلا بأصله حتى إذا طال عليهم البلاء قال رجل من المسلمين: يا معشر المسلمين حتى متى أنتم هكذا وعدو الله نازل بأرضكم هكذا؟ هل أنتم إلا بين إحدى الحسنيين بين أن يستشهدكم الله أو يظهركم؟ فيبايعون على الموت بيعة يعلم الله أنها الصدق من أنفسهم ثم تأخذهم ظلمة لا يبصر امرؤ فيها كفه قال: فينزل ابن مريم فيحسر عن أبصارهم وبين أظهرهم رجل عليه لأمته فيقولون: من أنت يا عبد الله؟ فيقول: أنا عبد الله ورسوله وروحه وکلمته عیسی ابن مريم اختاروا بين إحدى ثلاث: بين أن يبعث الله على الدجال وجنوده عذابا من السماء أو يخسف بهم الأرض أو يسلط عليهم سلاحكم ويكف سلاحهم عنكم . فيقولون: هذه يا رسول الله أشفى لصدورنا ولأنفسنا . فيومئذ ترى اليهودي العظيم الطويل الأكول الشروب لا تقل يده سيفه من الرعدة فيقومون إليهم فيسلطون عليهم ويذوب الدجال حين يرى ابن مريم كما يذوب الرصاص حتى يأتيه أو يدركه عیسی فيقتله)
“সে মাদীনার অনুর্বর এলাকায় আসবে। তার জন্য মাদীনাহ্ কোন এলাকায় প্রবেশ করা নিষিদ্ধ। অতঃপর মাদীনাহ্ তার অধিবাসী সহ একবার অথবা দু’বার কেঁপে উঠবে। ফলে মাদীনা সকল মুনাফিক নর-নারী দাজ্জালের কাছে গিয়ে একত্র হবে। দাজ্জাল সিরিয়ার দিকে এক পাহাড়ের কাছে গিয়ে সেখানকার জনগণকে ঘেরাও করবে। আর অবশিষ্ট মুসলিমগণ সিরিয়ার কোন এক পাহাড়ের চূড়ায় আশ্রয় নিবে। অতঃপর দাজ্জাল এর পাদদেশে গিয়ে তাদেরকে ঘেরাও করবে। যখন বিপদ দীর্ঘতর হবে তখন এক মুসলিম বলবে, হে মুসলিম জনগণ! তোমরা এভাবে কতদিন আল্লাহর দুশমন দ্বারা বেষ্টিত থাকবে? তোমরা শাহাদাত অথবা বিজয় অর্জনের কোন একটিকে বেছে নিবে না? এমনকি তারা মৃত্যুর জন্য এমন এক শপথ গ্রহণ করবে, যে বিষয়ে আল্লাহ অবগত আছেন যে, তারা তাদের অন্তর দিয়েই সত্য শপথ করেছে। এরপর তাদেরকে অন্ধকার ঘিরে নিবে যার ফলে কোন ব্যক্তি নিজের হাতও দেখতে পাবে না। অতঃপর ইবনু মারইয়াম অবতরণ করবেন। ফলে তাদের চোখের সামনে থেকে অন্ধকার দূর হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় তাদের মাঝে বর্ম পরিহিত এক লোক দেখতে পাবে। অতঃপর তারা বলবে, হে আল্লাহর বান্দা! আপনি কে? জবাবে তিনি বলবেন, আমি আল্লাহর বান্দা ও তাঁরই রাসূল, তাঁর সৃষ্টি রূহ এবং কালিম ঈসা ইবনু মারইয়াম। অতঃপর তিনি বলবেন: তোমরা এই তিনটির কোন একটি বেছে নাও। আল্লাহ দাজ্জাল ও তার বাহিনীর উপর আকাশ থেকে শাস্তি নাযিল করবেন, অথবা আল্লাহ তাদেরকে যমীনে ধ্বসিয়ে দিবেন, অথবা আল্লাহ তাদের উপর তোমাদের তরবারি চাপিয়ে দিবেন এবং তাদের তরবারি তোমাদের উপর থেকে ফিরিয়ে রাখবেন। তারা বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! এই শেষটিই আমাদের অন্তর নিরাময়ের জন্য অধিক উপযোগী। সেদিন তুমি দেখতে পাবে যে, একজন দীর্ঘদেহী মোটাসোটা অধিক পানাহারকারী ইয়াহুদী ও ভয়ের কারণে স্বীয় তরবারি হাতে বহন করতে পারবে না। অতঃপর মুসলিমরা তাদের দিকে অগ্রসর হলে মুসলিমদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করা হবে। আর ঈসা ইবনু মারইয়ামকে দেখামাত্র সে সীসা গলে যাওয়ার মত গলে যাবে অথবা ঈসা (আ.) তাকে ধরে হত্যা করে ফেলবেন।”
‘আবদুর রায্যাক় (২০৮৩৪) ‘আমর ইবনু সুফিয়ান আস-সাক়াফী হতে তার সূত্রে।
আমি বলি: এর সানাদ সিক়াত, শাইখাইনের রিজাল। তবে জনৈক আনসারী ব্যতীত। কেননা তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। হয়তো তিনি কোন সাহাবী হবেন। কেননা সানাদের এই সাক়াফী একজন তাবিঈ, যিনি আবূ মূসা আল-আশ‘আরী ও অন্যান্য সাহাবী থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। যদি তাই হয় তাহলে সানাদটি সহীহ। কেননা সাহাবীর জাহালাতে কোন অসুবিধা নেই।
অনুচ্ছেদ ২৬ :
এ অংশের সমর্থনে দুটি হাদীস রয়েছে:
প্রথম: জাবির বর্ণিত হাদীস। যা গত হয়েছে, এবং তাতে রয়েছে:
(وذلك يوم الخلاص وذلك يوم تنفي المدينة الخبث كما ينفي الكير خبث الحديد)
“সেটাই নাজাত দিবস। সেদিন মাদীনাহ্ তার মধ্যকার মন্দকে বিদূরীত করবে যেমন হাফর লোহার ময়লা দূর করে।”
দ্বিতীয়: আবূ হুরাইরাহ বর্ণিত হাদীস। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
(ألا إن المدينة كالكير تخرج الخبيث لا تقوم الساعة حتى تنفي المدينة شرارها كما ينفي الكير خبث الحديد)
“জেনে রাখ, মাদীনাহ্ হলো হাফরের ন্যায়। সে তার মধ্যকার মন্দ (পাপীদেরকে) বের করে দেয়। কিয়ামাত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না মাদীনাহ্ তার মধ্যকার খারাপ (লোকদের) বের করে দিবে যেমন হাফ লোহার ময়লা দূর করে থাকে।”
মুসলিম (৪/১২০)
অনুচ্ছেদ ২৭ :
এ বিষয়ে দুটি হাদীস রয়েছে:
প্রথম: মিহজান ইবনু আল-আদরা‘ বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে।
দ্বিতীয়: জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে।
অনুচ্ছেদ ২৮ :
এরও দুটি হাদীস রয়েছে:
প্রথম: উম্মু শুরাইক বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি:
(ليفرن الناس من الدجال في الجبال) قالت: أم شريك: يا رسول الله فأين العرب يومئذ؟ قال: (هم قليل)
“মানুষ দাজ্জাল থেকে পালিয়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিবে। উম্মু শুরাইক বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তখন আরবগণ (মাক্কাহ্ ও মাদীনাবাসী) কোথায় থাকবে? তিনি বললেন: তাদের সংখ্যা খুব কম হবে।”
মুসলিম (৮/২০৭), তিরমিযী (৩৯২৬), আহমাদ (৬/৪৬২)।
দ্বিতীয়: ‘আয়িশাহ হতে বর্ণিত:
(أن رسول الله صلى الله عليه و سلم ذكر جهدا شديدا يكون بين يدي الدجال فقلت: يا رسول الله فأين العرب يومئذ؟ قال: (يا عائشة العرب يومئذ قليل) . فقلت: ما يجزي المؤمنين يومئذ من الطعام؟ قال: (ما يجزي الملائكة التسبيح والتكبير والتحميد والتهليل) . قلت: فأي المال يومئذ خير؟ قال: ( غلام شديد يسقي أهله من الماء وأما الطعام فلا طعام)
রাসূলুল্লাহ (সা.) দাজ্জাল আগমনের প্রাক্কালের খুবই কঠিন অবস্থার কথা উল্লেখ করলেন। ফলে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তখন আরবগণ কোথায় থাকবে? তিনি বলেন: হে ‘আয়িশাহ! তখন আরবরা সংখ্যায় কম হবে।” আমি বললাম, সে সময় মানুষের খাদ্য হিসেবে কি যথেষ্ট হবে? তিনি বলেন: “যা ফিরিশতাদের জন্য যথেষ্ট— তাসবীহ, তাকবীর, তাহমীদ ও তাহলীল।” আমি বললাম, তখন কোন সম্পদ উত্তম হবে? তিনি বলেন: “এমন পরিশ্রমী গোলাম যে তার মালিককে পানি পান করাবে। আর খাদ্য, সেদিন তো খাদ্য থাকবে না!”
আহমাদ (৬/১২৫), হাম্বাল (৪৭/২), আবূ ইয়ালা (৩/১১৩৩) হাম্মাদ ইবনু সালামাহ হতে ‘আলী ইবনু যায়িদ থেকে হাসানের মাধ্যমে ‘আয়িশাহ সূত্রে।
আমি বলি: এই সানাদটি যঈফ। সানাদে হাসান বাসরী একজন মুদাল্লিস, আর ‘আলী ইবনু যায়িদ হলো ইবনু জাদ‘আন। তিনি যঈফ। অথচ আল্লামা হায়সামী বলেছেন: ‘এটি আহমদ ও আবূ ইয়ালা বর্ণনা করেছেন। এর রিজাল সহীহ রিজাল।’
অনুচ্ছেদ ৩৯ :
আমি এর সমর্থনে কোন (শাহিদ) হাদীস পাইনি।
অনুচ্ছেদ ৩০ :
এর সমর্থনে রয়েছে ‘আলী (রা.)-এর হাদীস। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
(المهدي منا آل البيت يصلحه الله في ليلة)
“মাহ্দী আমাদের আহলে বাইতের অর্ন্তভুক্ত। আল্লাহ তাকে এক রাতের মধ্যেই (খিলাফাতের) যোগ্য করে দিবেন।”
এটি একটি প্রমাণিত হাদীস। যা বর্ণিত আছে সিলসিলাহ সহীহাহ (হা/২৩৭১)।