অনুচ্ছেদ ১৯ :

এ অংশের দুটি সাক্ষ্য হাদীস রয়েছে:

প্রথম: নাওয়াস ইবনু সাম‘আন বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে।

দ্বিতীয়: আসমা বিনতু ইয়াযীদ আল-আনসারিয়্যাহ বর্ণিত হাদীস, এটিও গত হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ২০ :

এরও দুটি সাক্ষ্য হাদীস রয়েছে। যা এইমাত্র (উপরে) ইঙ্গিত করা হলো।

অনুচ্ছেদ ২১ :

এ অংশেরও দুটি সাক্ষ্য হাদীস রয়েছে। যা ইঙ্গিত করা হলো।

অনুচ্ছেদ ২২ :

এর বর্ণনা একদল সাহাবী সূত্রে বর্ণিত হাদীসসমূহে এসেছে:

প্রথম: আনাস ইবনু মালিক বর্ণিত হাদীস। যা সামনে (৩৪নং অনুচ্ছেদে) আসবে।

দ্বিতীয়: ফাত়িমাহ বিনতু ক়াইস হতে গোয়েন্দা ও দাজ্জাল সম্পর্কে বর্ণিত হাদীস: তামীম আদ-দারীর রিওয়ায়াত হতে।1 তাতে রয়েছে: দাজ্জাল বলবে:

(وإني مخبركم عني: إني أنا المسيح وإني أوشك أن يؤذن لي في الخروج فأخرج فأسير في الأرض فلا أدع قرية إلا هبطتها في أربعين ليلة غير مكة وطبيبة فهما محرمتان علي كلتاهما كلما أردت أن أدخل واحدة – أو: واحدا – منهما استقبلني ملك بيده السيف صلتا يصدني عنها وإن على كل نقب منها ملائكة يحرسونها قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم – وطعن بمخصرته في المنبر -: هذه طيبة هذه طيبة قال: هذه طيبة (يعني: المدينة) ألا هل كنت حدثتكم ذلك؟) . فقال الناس: نعم قال (فإنه أعجبني حديث تميم أنه وافق الذي كنت أحدثكم عنه وعن المدينة ومكة)

“আমি তোমাদেরকে আমার সম্পর্কে জানিয়ে দিচ্ছি— আমিই মাসীহ দাজ্জাল! অচিরেই আমাকে বেরিয়ে আসার অনুমতি প্রদান করা হবে। তখন আমি বেরিয়ে আসব, এবং বিশ্বভ্রমণ করব। বিশ্বের কোন দেশই আমি ভ্রমণ না করে ছাড়ব না। একমাত্র মাক়াহ্ ও মাদীনাহ ছাড়া সমগ্র বিশ্ব মাত্র চল্লিশ রাতে আমি ঘুরে আসব। এ দু’টি শহরে প্রবেশ আমার জন্য নিষিদ্ধ। এই দুই শহরের কোন একটিতে আমি প্রবেশের ইচ্ছা করলে একজন ফিরিশতা ধারালো তরবারি হাতে সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে আসবে এবং এ থেকে আমাকে বিরত রাখবে। (মাক্কাহ ও মাদীনাহ্) রাস্তায় রাস্তায় ফিরিশতা মোতায়েন থাকবে যারা পাহারা দিবে।” ফাত়িমাহ বিনতু ক়ায়িস বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এ কথা বলেছেন এবং লাঠি দিয়ে মিম্বারে আঘাত করে বলেছেন: এই ভূমি পবিত্র, এই ভূমি পবিত্র, এই ভূমি পবিত্র। (অর্থাৎ মাদীনাহ)। আচ্ছা! আমি কি তোমাদের কাছে এ ঘটনা বর্ণনা করে শুনাইনি? তখন উপস্থিত জনতা বললো, হ্যাঁ। তিনি বলেন: অবশ্যই তামীম দারীর বর্ণনা আমাকে বিস্মিত করেছে। যেহেতু আমি যা কিছু ইতোপূর্বে তোমাদেরকে বর্ণনা করে শুনিয়েছিলাম তার সাথে তার বর্ণনা হুবহু মিলে গেছে। দাজ্জাল সম্পর্কে এবং মাক্কাহ্ ও মাদীনাহ্ সম্পর্কে সবই মিলে গেছে।”

মুসলিম (৮/২০৫), আহমাদ (৬/৪১৩, ৪১৮), অনুরূপ তায়ালিসি (২/২১৮-২১৯), সংক্ষেপে, এবং আবূ দাউদ (২/২১৪-২১৫), হাম্বাল (৪৪/২-৪৫/১), ইবনু মানদাহ ৯৮/২-১), আজরী (পৃ. ৩৭৬-৩৭৯) সংক্ষেপে, কিন্তু তারা মাক্কাহ্ শব্দ উল্লেখ করেননি। এটি এসেছে আহমাদের বর্ণনায় (৬/৩৭৩-৩৭৪) ও ইবনু মানদাহ (৯৭/২)।

তৃতীয়: ‘আয়িশাহ বর্ণিত হাদীস! এইমাত্র উল্লেখকৃত আহমাদের শেষ বর্ণনাটির ব্যাপারে শা‘বী বলেন: আমি মুহার্‌রার ইবনু আবূ হুরাইরার সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে ফাত়িমাহ বিনতু ক়াইসের হাদীসটি বর্ণনা করলে তিনি বলেন: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমার পিতা আমাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন যেমন হাদীস ফাত়িমাহ তোমাকে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি বলেছেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) (إنه نحو المشرق) “পূর্ব দিকে”। তিনি বলেন, অতঃপর আমি ক়াসিম ইবনু মুহাম্মাদের সাক্ষাৎ পেয়ে তাকে ফাত়িমাহ্‌র হাদীসটি অবহিত করি। তখন তিনি বলেন: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ‘আয়িশাহ আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন যেমন আপনার কাছে বর্ণনা করেছেন ফাত়িমাহ। তবে তিনি বলেছেন:

(الحرمان عليه حرام: مكة والمدينة)

“হারামাইন তার উপর হারাম: মাক্কাহ্ ও মাদীনাহ।”

আহমাদ (৬/৩৭৩-৩৭৪, ৪১৭-৪১৮) মুজালিদ হতে ‘আমির সূত্রে। মুজালিদ হলো সাঈদের পুত্র। তিনি শক্তিশালী নন। তিনি ফাত়িমাহের হাদীসে মাক্কাহ্ শব্দটি হিফাযাত করেননি। সেজন্য তার হাদীস ও ‘আয়িশাহের হাদীসের মধ্যে ব্যতিক্রম হয়েছে। আসলে দু’টি হাদীস একই রকম। কেননা মাক্কাহ শব্দের উল্লেখ ফাত়িমাহের হাদীসে প্রমাণিত। যা মুসলিম ও অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে। যেমন পূর্বে গত হয়েছে ‘আমির সূত্রে। এছাড়া আহমাদের একটি বর্ণনা (৬/২৪১) দাউদ হতে— যিনি ইবনু আবূ হিন্দ— ‘আমির থেকে ‘আয়িশাহ সূত্রে মারফু’ ভাবে সংক্ষেপে এ শব্দে:

(لا يدخل الدجال مكة ولا المدينة)

“দাজ্জাল মাক্কাহ্ ও মাদীনাহতে প্রবেশ করবে না।”

আমি বলি: এর সানাদ মুসলিমের শর্তে সহীহ। অনুরূপ বর্ণনা করেছেন ইবনু মানদাহ।

চতুর্থ: আবূ হুরাইরাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

(على أنقاب المدينة ملائكة لا يدخلها الطاعون ولا الدجال)

“মাদীনার প্রবেশদ্বারে ফিরিশতাগণ মোতায়েন থাকবেন। সেখানে মহামারি (প্লেগ) ও দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না।”

বুখারী (৪/৭৬), মুসলিম (৪/১২০), আহমাদ (২/২৩৭, ৩৩১), আদ-দানী (১২৮/২)। এছাড়া ভিন্ন সানাদে আহমাদ (২/৪৮৩) এ শব্দে: “মাদীনাহ্ এবং মাক্কার প্রত্যেক প্রবেশ পথ ফিরিশতাদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকবে..।” এছাড়া মুসলিমের অপর বর্ণনায় ও আবূ ইয়ালা, (২৯২/২) রয়েছে:

(يأتي المسيح من قبل المشرق همته المدينة حتى ينزل دبر أحد ثم تصرف الملائكة وجهه قبل الشام وهنالك يهلك)

“মাসীহ দাজ্জাল মাদীনাহ্ আক্রমণের উদ্দেশে পূর্ব দিক থেকে এসে উহুদ পাহাড়ের পিছনে উপস্থিত হবে। অতঃপর ফিরিশতাগণ তার মুখ সিরিয়ার দিকে ফিরিয়ে দিবেন এবং সে ওখানেই ধবংস হবে।”

পঞ্চম: আবূ বাক্‌রাহ আস-সাক়াফী বলেন: লোকেরা মুসাইলামার ব্যাপারে বেশি বেশি আলোচনা করছিল তার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কোন কিছু বলার পূর্বে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) খুত়বায় দাঁড়িয়ে বললেন:

(أما بعد ففي شأن هذا الرجل الذي قد أكثرتم فيه وإنه كذاب من ثلاثين كذابا يخرجون بين يدي الساعة وإنه ليس من بلدة إلا يبلغها رعب المسيح إلا المدينة على كل نقب من نقابها ملكان يذبان عنها رعب)

“এবার এই ব্যক্তির প্রসঙ্গ যার ব্যাপারে তোমরা খুব আলোচনা করছিলে। সে তো ঐ ত্রিশজন মিথ্যাবাদীর একজন যারা ক়িয়ামাতের আগে বের হবে। এমন কোন শহর বাদ থাকবে না যেখানে মাসীহ (দাজ্জালের) আতঙ্ক না ছড়াবে। তবে মাদীনাহ্ ব্যতীত। এর প্রত্যেকটি প্রবেশ পথে দুইজন করে ফিরিশতা নিযুক্ত থাকবেন যারা দাজ্জালের ভয় থেকে একে নিরাপদ রাখবেন।”

‘আবদুর রায্‌যাক় (২০৮২৩), আহমাদ (৫/৪১,৪৭) তার সূত্রে, এবং অন্য সানাদে মা‘মার যুহরী হতে তিনি ত়ালহা ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আওফ হতে তার সূত্রে।

আমি বলি: বাহ্যিকভাবে এই সানাদটি সহীহ। কেননা এর রিজাল সিক়াত, বুখারীর রিজাল। কিন্তু দুইজন সিক়াহ মা‘মার এর বিপরীত করেছেন। তারা হলেন: ‘আক়ীল ইবনু খালিদ এবং ইবনু শিহাবের ভাই মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুসলিম। তারা বলেছেন। ইবনু শিহাব হতে যুহরীর সূত্রে: নিশ্চয় ‘আয়ায ইবনু মুসাফিহ তাকে সংবাদ দিয়েছেন আবূ বাক্‌রাহ হতে।

আহমাদ (৫/৪৬)।

আমি বলি: এটাই অধিক সহীহ।2 এই ‘আয়ায মাজহুল (অজ্ঞাত)। তবে হাদীসের শেষ অংশ তার মুতাবাআত করা হয়েছে। তিনি বলেন: ইবরাহীম ইবনু সা‘দ তার পিতা হতে তার দাদার মাধ্যমে আবূ বাক্‌রাহ (রা.) থেকে নাবী (সা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি (সা.) বলেছেন:

(لا يدخل المدينة رعب المسيح الدجال لها يومئذ سبعة أبواب على كل باب ملكان)

“মাদীনায় মাসীহ দাজ্জালের ভীতি প্রবেশ করবে না। সেদিন এর সাতটি দরজা থাকবে। আর প্রত্যেক দরজায় দুইজন করে ফিরিশতা থাকবেন।”

বুখারী (৪/৭৬), আহমাদ (৫/৪১, ৪৭), মুস্তাদরাক হাকিম (৪/৫৪২)। এর শাহিদ বর্ণনা রয়েছে আবূ হুরাইরাহ থেকে বুখারীর নিকটে (হা/৫৭৩১) মালিক সূত্রে! যা বর্ণিত আছে মুয়াত্তা (৩/৮৮)।

ষষ্ঠ: নাবী (সা.)-এর জনৈক সাহাবী হতে বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে। ভিন্ন সানাদে শীঘ্রই তা আসছে।

সপ্তম: জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ হতে, যা গত হয়েছে।

অষ্টম: আবূ সাঈদ আল-খুদরী হতে, এটিও গত হয়েছে।

নবম: ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর হতে, এটি গত হয়েছে।

দশম: আনাসের হাদীস যা আবূ হুরাইরাহ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ শাইখাইনের নিকট।

হাদীসটি বর্ণনা করেছেন বুখারী (৭১৩৪) তিরমিযী (২২৪৩), ইবনু হিব্বান (৬৭৬৬)।

অনুচ্ছেদ ২৩ :

এর কয়েকটি হাদীস রয়েছে:

প্রথম: ফাত়িমাহ বিনতু ক়াইস বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে।

দ্বিতীয়: জাবির হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নাবী (সা.) মিম্বারে দাঁড়িয়ে বললেন:

(يا أيها الناس إني لم أقم فيكم الخبر جاءني من السماء (فذكر حديث الجساسة مختصرا وفيه:) قال: هو المسيح تطوى له الأرض في أربعين يوما إلا ما كان من طيبة) قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: (وطيبة المدينة ما باب من أبوابها إلا عليه ملك مصلت سيفه يمنعه وبمكة مثل ذلك)

“আমি তোমাদের সামনে এজন্য দাঁড়িয়েছি যে, আমার কাছে আকাশ থেকে সংবাদ এসেছে (অতঃপর তিনি সংক্ষেপে জাস্‌সাসার হাদীস উল্লেখ করেন এবং তাতে রয়েছে) তিনি বলেন: “সে হলো মাসীহ (দাজ্জাল), চল্লিশ দিনে তার জন্য যমীনকে ভাজ করা হবে। তবে ত়াইয়িবাহ্‌র কিছু স্থান বাদে।” রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “মাদীনাহ্ ত়াইয়িবাহ্‌র এমন কোন দরজা অবশিষ্ট থাকবে না যেখানে দাজ্জালকে বাধা দেয়ার জন্য চকচকে তরবারি নিয়ে ফিরিশতা মোতায়েন না থাকবে। মাক্কাহতেও অনুরূপ অবস্থা হবে।”

আবূ ইয়ালা ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে দু’টি সানাদে মুহাম্মাদ ইবনু ফুযাইল হতে: আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন ওয়ালীদ ইবনু জুমাই‘ আবূ সালামাহ ইবনু ‘আবদুর রহমান হতে তার সূত্রে।

আমি বলি: এই সানাদটি হাসান, এবং মুসলিমের শর্তে। আল্লামা হায়সামী বলেন (৭/৩৪৬): হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আবূ ইয়ালা দু’টি সানাদে, যার একটির রিজাল সহীহ রিজাল।

তৃতীয়: মিহজান ইবনুল আদরা‘ বলেন: রাসলুল্লাহ (সা.) আমাকে কোন এক কাজে প্রেরণ করলেন। এরপর মাদীনাহ্ কোন এক রাস্তায় তাঁর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। অতঃপর তিনি উহুদ পাহাড়ে আরোহণ করলেন। আমিও তাঁর সাথে আরোহণ করলাম। অতঃপর মাদীনার দিকে মুখ করে এর উদ্দেশে তিনি কিছু কথা বললেন। অতঃপর বললেন:

(ويل أمك – أو: ويح أمها – قرية يدعها أهلها أينع ما يكون يأكلها عافية الطير والسباع يأكل ثمرها ولا يدخلها الدجال إن شاء الله كلما أراد دخولها تلقاه بكل نقب من نقابها ملك مصلت يمنعه عنها)

“তোমার মায়ের সর্বনাশ হোক অথবা বলেছেন: তার মায়ের জন্য করুণা হয়। এ জনপদকে এর অধিবাসীরা সর্বোত্তম অবস্থায় ছেড়ে চলে যাবে। জীবন প্রত্যাশী পাখি ও পশুগুলো এর ফলমূল খাবে। আল্লাহ চাহেন তো এতে দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না। যখনই সে এতে প্রবেশ করতে চাইবে তখনই এর প্রবেশ পথে খোলা তরবারি হাতে ফিরিশতা তাকে বাঁধা প্রদান করবে।”

হাকিম (৪/৪২৭) এবং তিনি বলেছেন: সানাদ সহীহ। যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন।

আমি বলি: এর সানাদে ইনকিতা‘ হয়েছে (বর্ণনাকারী বাদ পড়েছে)। সামনে এর আলোচনা আসবে।

অনুচ্ছেদ ২৪ :

এ বিষয়ে কয়েকটি হাদীস রয়েছে:

প্রথম: ইবনু ‘উমার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

(ينزل الدجال في هذه السبخة بمر قناة فيكون أكثر من يخرج إليه النساء حتى أن الرجل ليرجع إلى حميمه وإلى أمه وابنته وأخته وعمته فيوثقها رباطا مخافة أن تخرج إليه ثم يسلط الله المسلمين عليه فيقتلونه ويقتلونه شيعته حتى أن اليهودي ليختبئ تحت الشجرة أو الحجر فيقول الحجر أو الشجرة للمسلم: هذا يهودي تحتي فاقتله)

“দাজ্জাল এই অনুর্বর বালুময় ভূমির নালার পার্শ্বে অবতরণ করবে। তার কাছে যারা আগমন করবে তাদের অধিকাংশই থাকবে মহিলা। এমনকি পুরুষেরা তার বন্ধু, তার মা, তার মেয়ে, তার বোন এবং তার ফুফুর কাছে ফিরে গিয়ে তার (দাজ্জালের) কাছে যাওয়ার আশঙ্কায় তাদেরকে বেঁধে রাখবে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদেরকে তার উপর কর্তৃত্ব দিবেন। মুসলিমরা তাকে ও তার অনুসারীদেরকে হত্যা করবে। এমনকি ইয়াহুদীরা গাছ অথবা পাথরের আড়ালে লুকিয়ে থাকবে, তখন পাথর অথবা গাছ মুসলিম ব্যক্তিকে বলবে: এইতো আমার পিছনে ইয়াহুদী, সুতরাং তাকে হত্যা করো।”

আহমাদ (২/৬৭), হাম্বাল ‘ফিতান’ (৫১/২-৫২-১)।

আমি বলি: এর সানাদ হাসান। যদি না মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক় আন্ আন্ শব্দে বর্ণনা করতেন।

দ্বিতীয়: আবূ সাঈদ আল-খুদরী হতে মারফুভাবে বর্ণিত:

(يأتي الدجال – وهو محرم عليه أن يدخل نقاب المدينة – فينزل بعض السباخ التي تلي المدينة فيخرج إليه يومئذ رجل … ) الحديث

“দাজ্জাল আসবে। তার জন্য মাদীনাহ্‌র অলিগলিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। অতঃপর সে মাদীনার পার্শ্ববর্তী তৃণলতা শূণ্য (অনুর্বর) ভূমিতে অবতরণ করবে। অতঃপর সেদিন তার দিকে এক ব্যক্তি বেরিয়ে আসবে …।”

শাইখাইন ও অন্যরা। এটি ‘আবদুর রায্‌যাকের শব্দে গত হয়েছে।

তৃতীয়: মিহজান ইবনু আল-আদরা‘ হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) লোকদের উদ্দেশে খুত়বাহ দিলেন। তিনি বললেন:

(يوم الخلاص وما يوم الخلاص؟ يوم الخلاص وما يوم الخلاص؟ يوم الخلاص وما يوم الخلاص؟) (ثلاثا) فقيل له: وما يوم الخلاص؟ قال: (يحبيء الدجال فيصعد أحدا فينظر المدينة فيقول لأصحابه: أترون هذا القصر الأبيض؟ هذا مسجد أحميد . ثم يأتي المدينة فيجد بكل نقب منها ملكا مصلنا فيأتي سبخة الجرف فيضرب رواقه ثم ترجف المدينة ثلاث رجفات فلا يبقى منافق ولا منافقة ولا فاسق ولا فاسقة إلا خرج إليه فذلك يوم الخلاص)

“নাজাত দিবস, নাজাত দিবস কি? নাজাত দিবস, নাজাত দিবস কি? নাজাত দিবস, নাজাত দিবস কি? (তিনবার) তখন তাঁকে বলা হবে: নাজাত দিবস আবার কি? তিনি বলেন: “দাজ্জাল আসবে। সে উহুদ পাহাড়ে উঠে তার সাথীদেরকে বলবে: তোমরা কি এই সাদা প্রাসাদটি দেখতে পাচ্ছো? এটা মাসজিদে আহমাদ। অতঃপর সে মাদীনায় আসবে। সেখানে এসে এর প্রত্যেক প্রবেশ দ্বারে দুই জন করে ফিরিশতা খোলা তরবারি হাতে মোতায়েন পাবে। এরপর সে সাইহানাতুল জুরুফ নামক স্থানে এসে তার আসন গাড়বে। অতঃপর মাদীনায় তিনবার কম্পন সৃষ্টি হবে। ফলে কোন মুনাফিক পুরুষ ও নারী, ফাসিক পুরুষ ও নারী মাদীনায় অবশিষ্ট থাকবে না। তারা মাদীনাহ্ থেকে বেরিয়ে তার কাছে চলে আসবে। আর এটাই হলে নাজাত দিবস।”

আহমাদ (৪/৩৩৮), হাম্বাল (৪৬/২-৪৭-১), হাকিম (৪/২২৭, ৫৪৩) এবং তিনি বলেছেন:  মুসলিমের শর্তে সহীহ। যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন।

তারা যেমন বলেছেন তাই, যদি সানাদটি ‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক়ীক় এবং মিহজান এর মধ্যকার ইনকিতা‘ থেকে নিরাপদ হয়। কেননা আহমাদের আরেক বর্ণনায় এই দুই জনের মাঝে রয়েছেন রাজা ইবনু আবূ রাজা আল-বাহিলী। এছাড়া হাম্বাল (৪৬/১)। এর সানাদটি তার প্রথম বর্ণনার সানাদের চেয়ে অধিক সহীহ। কিন্তু এটি সর্বাবস্থায় সমস্যা মুক্ত এর শাওয়াহিদ দ্বারা।

চতুর্থ: রাসূলুল্লাহ (সা.) হার্‌রার কোন এক প্রান্তরে আরোহণ করলেন। তখন আমরা তাঁর সাথে ছিলাম। তিনি বলেন:

(نعمت الأرض المدينة إذا خرج الدجال على كل نقب من أنقابها ملك لا يدخلها فإذا كان كذلك رجفت المدينة بأهلها ثلاث رجفات لا يبقى منافق ولا منافقة إلا خرج إليه وأكثر – يعني – من يخرج إليه النساء وذلك يوم الخلاص وذلك يوم تنفي المدينة الخبث كما ينفي الكير خبث الحديد يكون معه سبعون ألفا من اليهود على كل رجل منهم ساج وسيف محلى فتضرب رقبته بهذا الضرب الذي عند مجتمع السيول) ثم قال رسول الله صلى الله عليه و سلم: (ما كانت فتنة – ولا تكون حتى تقوم الساعة – أكبر من فتنة الدجال ولا من نبي إلا وقد حذر أمته ولأخير نكم بشيء ما أخبره نبي أمته قبلي) ثم وضع يده على عينه ثم قال: (أشهد أن الله عز و جل ليس بأعور)

“মাদীনাহ্ কতই না উত্তম ভূমি। দাজ্জাল যখন বের হবে তখন মাদীনাহ্‌র প্রত্যেক রাস্তায় ফিরিশতা নিযুক্ত থাকবেন, ফলে দাজ্জাল সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না। এরূপ অবস্থায় মাদীনাহ্ তার অধিবাসীদের নিয়ে তিনবার প্রকম্পিত হবে। তখন প্রতিটি মুনাফিক পুরুষ ও নারী (মাদীনাহ্ থেকে) বেরিয়ে দাজ্জালের কাছে চলে যাবে। যারা বেরিয়ে দাজ্জালের কাছে যাবে তাদের অধিকাংশ হবে মহিলা। আর এটাই হলো ইয়াওমুল খালাস (নাজাত দিবস)। এই দিনে মাদীনাহ্ তার মধ্যকার ময়লা দূরীভূত করবে যেমন হাফর লোহার ময়লা দূর করে থাকে। দাজ্জালের সাথে সত্তর হাজার ইয়াহুদী থাকবে। তাদের প্রত্যেকের সাথে থাকবে চাঁদরে আবৃত কারুকার্য খচিত তলোয়ার। অতঃপর পানি প্রবাহের সঙ্গম স্থলে তার ঘাড়ে এ তরবারি দ্বারা আঘাত করা হবে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: “দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে বড় ফিতনা (অতীতে) ছিল না এবং ক়িয়ামাত পর্যন্ত হবেও না। এমন কোন নাবী নেই যিনি স্বীয় উম্মাতকে দাজ্জাল সম্পর্কে সাবধান না করেছেন। আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে তার সম্পর্কে এমন সংবাদ দিব যা আমার পূর্বে কোন নাবী স্বীয় উম্মাতকে তা দেননি।” অতঃপর তিনি তাঁর চোখের উপর হাত রেখে বলেন: “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ কানা নন।”

আহমাদ (৩/২৯২), এবং তার ছেলে ‘সুন্নাহ’ (১৩৮)।

আমি বলি: এর রিজাল সিক়াত, শাইখাইনের রিজাল। তবে যুহাইর ব্যতীত। তিনি হলেন ইবনু মুহাম্মাদ আল-খুরাসানী। তার মাঝে দুর্বলতা আছে। ইবনু কাসীর বলেন (১/১২৭): ‘এর সানাদ জাইয়্যিদ এবং হাকিম একে সহীহ বলেছেন। এর আরেকটি সূত্র রয়েছে সংক্ষেপে ‘আল-ইহসান’ গ্রন্থে (৬৬১৬)।

পঞ্চম: আনাস ইবনু মালিক হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

(يجيء الدجال فيطأ الأرض إلا مكة والمدينة فيأتي المدينة . فيجد بكل نقب من نقابها صفوفا من الملائكة فيأتي سبخة الجرف فيضرب رواقه فترجف المدينة ثلاث رجفات فيخرج إليه كل منافق ومنافقة)

“দাজ্জাল আসবে। তার জন্য যমীনকে ভাঁজ করে দেয়া হবে। তবে মাক্কাহ্ ও মাদীনাহ্ ব্যতীত। সে মাদীনায় আসবে এবং সেখানকার প্রতিটি প্রবেশ পথে সারিবদ্ধ অবস্থায় ফিরিশতাদের পাবে। অতঃপর সে সাইনাহাতুল জুরুফ নামক স্থানে এসে তার আসন গাড়বে। তখন মাদীনায় তিনবার কম্পন সৃষ্টি হবে। এতে প্রত্যেক মুনাফিক পুরুষ ও নারী তার কাছে চলে আসবে।”

বুখারী (১/৪৬৬), মুসলিম (৮/২০৬-২০৭), আহমাদ (৩/১৯১, ২০৬, ২৩৮, ২৯২), হাম্বাল (৪৭/১-৪৮/২), আদ-দানী ‘ফিতান’ (১২৭/২-১২৮/১)।

সূত্রনির্দেশ ও টীকা

  1. জেনে রাখুন, এই কিস্‌সাটি সহীহ, বরং মুতাওয়াতির। এটি বর্ণনায় তামীম আদ-দারী একা হয়ে যাননি যেমনটি অজ্ঞতাবশতঃ কতিপয় তা‘লীক়কারী ধারণা করেছেন ইবনু কাসীরের ‘নিহায়া’ গ্রন্থের উপর (পৃ. ৯৬)। বরং তামীম দারীর মতাবা‘আত করেছেন আবূ হুরাইরাহ, ‘আয়িশাহ, জাবির (রা.)। যা সামনে আসছে।
  2. অতঃপর আমি দেখেছি হাকিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন (৪/৫৪১) ‘আবদুর রাযযাক় ও অন্যদের থেকে মা‘মার সূত্রে। এবং তিনি বলেছেন : “এই সানাদে মা‘মার ও শু‘আইব ইবনু আবূ হামযাহ যুহরী সূত্রে হাদীসটি বর্ণনার ক্ষেত্রে এই হাদীসটি মু‘দাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কেননা ত়ালহা ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আওফ হাদীসটি আবূ বাকরাহ থেকে শুনেননি। বরং তিনি শুনেছেন ‘আয়ায ইবনু মুসাফিহ হতে আবূ বাকরাহ থেকে। এভাবেই বর্ণনা করেছেন ইউনূস ইবনু ইয়াযীদ এবং ‘আকীল ইবনু খালিদ যুহরীর হতে।’ অতঃপর তিনি তাদের দিকে সানাদটি সম্পর্কিত করেন।