অনুচ্ছেদ ১৭ :
এ অংশের সমর্থনে কয়েকটি হাদীস রয়েছে।
প্রথম: আবূ সাঈদ আল-খুদরী হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি আমাদেরকে যা কিছু বর্ণনা করে শুনিয়েছেন, তন্মধ্যে ছিল: তিনি বলেছেন—
(يأتي الدجال وهو محرم عليه أن يدخل نقاب المدينة فيخرج إليه رجل [يمتلئ شبابا] يومئذ [من المؤمنين] هو خير الناس أو من خيرهم فيقول: أشهد أنك الدجال الذي حدثنا رسول الله صلى الله عليه و سلم حديثه . فيقول الدجال: أرأيتم إن قتلت هذا ثم أحييته أتشكون في الأمر؟ فيقولون: لا . فيقتله ثم يحييه فيقول حين يحيى: والله ما كنت قط أشد بصيرة فيك مني الآن قال: فيريد قتله الثانية فلا يسلط عليه)
“দাজ্জাল মাদীনার দিকে অগ্রসর হবে। অথচ মাদীনাহ্র গলিতে প্রবেশ করা তার উপর হারাম ও নিষিদ্ধ। অতঃপর মাদীনাহ্র নিকটবর্তী কোন এক রাস্তায় পৌঁছলে এ দিনই মাদীনাহ্ থেকে (যৌবনে পরিপূর্ণ) এক মহান ব্যক্তি যিনি শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি অথবা শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের অন্যতম তার দিকে এগিয়ে আসবেন। এসে তাকে বলবেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি তুমি দাজ্জাল, যার বিবরণ রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে বর্ণনা করে শুনিয়েছেন। তখন দাজ্জাল (উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে) বলবে: আচ্ছা! তোমরা বল, আমি যদি এ ব্যক্তিকে হত্যা করে জীবিত করতে পারি, তবে কি তোমরা আমার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে? উপস্থিত সাধারণ লোকেরা বলবে, না। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর সে ঐ যুবককে হত্যা করে জীবিত করবে। তাকে জীবিত করার পর ঐ মহান ব্যক্তি বলবেন: আল্লাহর শপথ! আমি ইতোপূর্বে তোমার সম্পর্কে এমন সম্যক ধারণা লাভ করতে পারিনি যা আজ এ মূহুর্তে লাভ করলাম (অর্থাৎ তুমি যে সত্যিই দাজ্জাল তা এখন পরিষ্কার বুঝতে পারলাম)। তখন দাজ্জাল তাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করতে মনস্থ করবে কিন্তু সে কিছুতেই তার উপর জয়ী হতে পারবে না।”
‘আবদুর রাযযাক় বর্ণনা করেছেন (২০৮২৪): আমাদেরকে মা‘মার সংবাদ দিয়েছেন যুহরী হতে, তিনি বলেন, আমাকে সংবাদ দিয়েছেন ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উত়বাহ, আবূ সাঈদ আল-খুদরী বলেছেন: অতঃপর হাদীসটি উল্লেখ করেন এবং তিনি বৃদ্ধি করেন:
(قال معمر: وبلغني أنه يجعل على حلقه صفيحة من نحاس . وبلغني أنه الخضر الذي يقتله الدجال ثم يحييه)
“মা‘মার বলেন, আমার নিকট পৌঁছেছে যে, দাজ্জাল তাঁর গলায় তামার পাত জড়ানোর চেষ্টা করবে। এবং আমার নিকট পৌঁছেছে যে, দাজ্জাল যাকে হত্যা করার পর পুনরায় জীবিত করবে তিনি হলেন খিযির।”
আহমাদ (৩/৩৬) আবদুর রাযযাক় হতে মা‘মার এর উল্লিখিত কথাটি বাদে।
এবং বুখারী (১৩/৮৬-৮৮), মুসলিম (৮/১৯৯), ইবনু মানদাহ (১/৯৫) ভিন্ন সানাদে যুহরী হতে। মুসলিম বৃদ্ধি করেছেন:
(قال أبو إسحاق: يقال: إن هذا الرجل هو الخضر عليه السلام)
“আবূ ইসহাক় বলেন: বলা হয়, এই লোকটি হলো খিযির (আ.)।”
আমি বলি: এই আবূ ইসহাক় হলেন, ইবরাহীম ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু সুফিয়ান আয-যাহিদ। ইনি সহীহ মুসলিমের রাবী। যেমন বিষয়টি দৃঢ় করেছেন হাফিয (১৩/৮৮-৮৯) ‘আয়াম, নাববী ও অন্যদেরকে অনুসরণ করে।
আমি বলি: ইতোপূর্বে উল্লেখ হয়েছে যে, মা‘মারের নিকট এ বিষয়ে সংবাদ পৌঁছেছে। কিন্তু এ সংবাদ পৌঁছানোর কোন দলীল নেই। কেননা তাকে কে সংবাদ দিয়েছে তা জানা যায়নি। যদি জানাও যায়, তবুও বর্ণনাটি হবে মাক়তূ‘। আর খিযির তো নাবী (সা.) এর আগেই মারা গেছেন। তিনি নাবী (সা.)-কে পাননি। মুহাক়িক়গণের নিকট এটাই প্রাধান্যযোগ্য কথা। এজন্যই ইবনুল আরাবী বলেছন: “আমি শুনলাম যে, কেউ নাকি বলেছে: দাজ্জালকে যিনি হত্যা করবেন তিনি হলেন খিযির। এই দাবীর কোন দলীল প্রমাণ নেই।”
দ্বিতীয়: নাবী (সা.) এর জনৈক সাহাবী হতে বর্ণিত, যা গত হয়েছে। তাতে রয়েছে:
(وإنه يسلط على نفس فيقتلها ثم يحييها ولا يسلط على غيرها)
“দাজ্জাল এক ব্যক্তির উপর কর্তৃত্ব খাটিয়ে তাকে হত্যা করে পুনরায় তাকে জীবিত করবে। দাজ্জাল এ লোকটি ছাড়া অন্য কারো উপর কর্তৃত্ব খাটাতে পারবে না।”
তৃতীয়: নাওয়াস ইবনু সামআন বর্ণিত হাদীস, যা গত হয়েছে। তাতে রয়েছে:
(ثم يدعو رجلا ممتلئا شبابا فيضربه بالسيف فيقطعه جزلتين رمية الغرض ثم يدعوه فيقبل ويتهلل وجهه يضحك)
“অতঃপর দাজ্জাল যৌবনে পরিপূর্ণ এক যুবককে ডাক দিবে এবং তাকে তলোয়ার দিয়ে জোরে আঘাত করবে এবং তাকে দুই টুকরো করে ফেলবে। প্রত্যেকটি টুকরো দুই ধনুকের ব্যবধানে চলে যাবে। অতঃপর তাকে ডাকবে। ডাকা মাত্র সে জীবিত হয়ে তার কাছে আসবে। তখন তার চেহারা হবে উজ্জ্বল, চমকপ্রদ ও হাস্যময়।”
চতুর্থ: ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগনিম বর্ণিত হাদীস, এর প্রথমাংশ গত হয়েছে। পুরো হাদীসটি হলো:
(ثم يدعو برجل – فيما يرون – فيؤمر به فيقتل ثم يقطع أعضاءه كل عضو على حدة فيفرق بينها حتى يراه الناس ثم يجمع بينها ثم يضرب بعصاه فإذا هو قائم فيقول: أنا الله أحيي وأميت . وذلك كله سحر يسحر به أعين الناس ليس يعمل من ذلك شيئا)
“অতঃপর (দাজ্জাল) এক ব্যক্তিকে ডেকে এনে তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়ে হত্যা করবে। অতঃপর তার প্রতিটি অঙ্গ আলাদা আলাদাভাবে টুকরো করে তা পৃথক করে রাখা হবে। এমনকি লোকজন তা দেখবে। অতঃপর টুকরোগুলো একত্র করে তাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করা মাত্র তা দাঁড়িয়ে যাবে। তখন দাজ্জাল বলবে, আমিই আল্লাহ, আমি জীবিত করতে পারি, মৃত্যু দিতে পারি। আসলে এ সবই যাদু, যা দ্বারা সে লোকদের চোখকে যাদুগ্রস্থ করবে। সে এসবের কিছুই করবে না।”
আমি বলি: এর সানাদ দুর্বল, এবং এ শব্দে বর্ণনাটি মুনকার। আল্লাহই অধিক জ্ঞাত।
পঞ্চম: ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর হতে বর্ণিত। যা পরবর্তী অনুচ্ছেদে আসবে।
অনুচ্ছেদ ১৮ :
এর দুটি হাদীস রয়েছে:
প্রথম: আবূ সাঈদ আল-খুদরী হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
(يخرج الدجال فيتوجه قبله رجل من المؤمنين فتلقاه المسالح – مسالح الدجال فيقولون له: أين تعمد؟ فيقول: أعمد إلى هذا الذي خرج … قال: فيقولون له: أو ما تؤمن بربنا؟ فيقول: ما بربنا خفاء، فيقولون: اقتلوه . فيقول بعضهم لبعض: أليس قد نهاكم ربكم أن تقتلوا أحدا دونه؟ قال: فينطلقون به إلى الدجال فإذا رآه المؤمن قال: يا أيها الناس هذا الدجال الذي ذكر رسول الله صلى الله عليه وسلم . قال: فيأمر الدجال به فيشيح فيقول: خذوه وشيحوه . فيوسع ظهره وبطنه ضربا قال: فيقول: أو ما تؤمن بي؟ قال: فيقول: أنت المسيح الكذاب . قال: فيؤمر به فيؤشر بالمنشار من مفرقه حتى يفرق بين رجليه قال: ثم يمشي الدجال بين القطعتين ثم يقول له: قم . فيستوي قائما قال: ثم يقول له: أتؤمن بي؟ فيقول: ما ازددت فيك إلا بصيرة . قال: ثم يقول: يا أيها الناس إنه لا يفعل بعدي بأحد من الناس . قال: فيأخذه الدجال ليذبحه فيجعل ما بين رقبته إلى ترقوته نحاسا فلا يستطيع إليه سبيلا قال: فيأخذ بيديه ورجليه فيقذف به فيحسب الناس أنها قذفه إلى النار وإنما ألقي في الجنة) . فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: (هذا أعظم الناس شهادة عند رب العالمين)
“দাজ্জাল বের হলে একজন (বিশিষ্ট) ঈমানদার ব্যক্তি তার দিকে রওয়ানা হবে। সংবাদ পেয়ে দাজ্জালের পক্ষ থেকে তার অস্ত্রধারী, ব্যক্তিরা গিয়ে তাঁর সাথে মিলিত হবে। তারা তাকে জিজ্ঞেস করবে, তুমি কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছো? তিনি বলবেন, ঐ ব্যক্তির কাছে যে আবির্ভূত হয়েছে। তখন তারা বলবে, তুমি কি প্রভূর প্রতি ঈমান আনবে না? তিনি বলবেন, আমাদের প্রভূর ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। এরপর তারা পরস্পরে বলবে, একে হত্যা কর। তারপর একে অপরকে বলবে, তোমাদের প্রভূ নিষেধ করেছেন যে, তোমরা তাকে না দেখিয়ে কাউকে হত্যা করবে না। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তারা তাঁকে দাজ্জালের নিকট নিয়ে যাবে। যখন ঈমানদার ব্যক্তি দাজ্জালকে দেখতে পাবেন তখন বলবেন, হে জনগণ! এই তো সেই দাজ্জাল যার কথা রাসূলুল্লাহ (সা.) আলোচনা করেছেন। এরপর দাজ্জালের নির্দেশে তাঁর চেহারা ক্ষতবিক্ষত করা হবে। বলা হবে, একে ধরে চেহারা ক্ষতবিক্ষত করে দাও। অতঃপর তাঁর পেট ও পিঠকে পিটিয়ে বিছিয়ে ফেলা হবে। তারপর দাজ্জাল জিজ্ঞেস করবে, আমার প্রতি ঈমান আনবে না? তিনি বলবেন, তুমি তো মিথ্যাবাদী মাসীহ দাজ্জাল। এ কথা শুনে তাকে কুড়াল দিয়ে খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলার জন্য আদেশ করা হবে। তার আদেশে প্রথমে তাকে দুই পা আলগা করে খণ্ড করা হবে। অতঃপর দাজ্জাল খণ্ডিত টুকরাদ্বয়ের মাঝখানে এসে তাকে লক্ষ্য করে বলবে, উঠ! তখনই তিনি উঠে দাঁড়াবেন। তারপর আবার দাজ্জাল তাকে জিজ্ঞেস করবে, এবার আমার প্রতি ঈমান আনবে কি? তখন তিনি বলবেন, আমি তো তোমার সম্পর্কে আরো অধিক অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। অতঃপর তিনি উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে বলবেন, হে লোক সকল! মনে রেখ, দাজ্জাল আমার পরে আর কোন মানুষের উপর কর্তৃত্ব চালাতে পারবে না। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর দাজ্জাল তাঁকে জবাই করার জন্য ধরবে এবং গলা ও ঘাড়ে তামা জড়িয়ে দিতে চেষ্টা করবে। কিন্তু এ পর্যায়ে পৌঁছতে সক্ষম হবে না। অতঃপর তাঁর হাত পা ধরে তাঁকে নিক্ষেপ করবে। মানুষ ধারণা করবে বুঝি আগুনে ফেলে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তাঁকে জান্নাতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের নিকট এই ব্যক্তি বড় শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবেন।”
মুসলিম (৮/২০০), ইবনু মানদাহ (৯৫/১) ক়াইস ইবনু ওয়াহাব হতে, তিনি আবুল ওয়াদাক হতে তার সূত্রে। এবং হাকিম ও অন্যরা ‘আত়িয়্যাহ হতে তার সূত্রে অনুরূপ। যা গত হয়েছে।
দ্বিতীয়: ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর হতে রাসূলুল্লাহর (সা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি (সা.) দাজ্জাল সম্পর্কে বলেন:
(ما شبه عليكم منه فإن الله ليس بأعور يخرج فيكون في الأرض أربعين صباحا يرد منها كل منهل إلا الكعبة وبيت المقدس والمدينة الشهر كالجمعة والجمعة كاليوم ومعه جنة ونار فناره جنة وجنته نار معه جبل من خبز ونهر من ماء يدعو رجلا فلا يسلطه الله إلا عليه فيقول: ما تقول في؟ فيقول: أنت عدو الله وأنت الدجال الكذاب . فيدعو بمنشار فيضعه حذو رأسه فيشقه حتى يقع على الأرض ثم يحييه فيقول: ما تقول؟ فيقول: والله ما كنت أشد بصيرة مني فيك الآن أنت عدو الله الدجال الذي أخبرنا عنك رسول الله صلى الله عليه وسلم . قال: فيهوي إليه بسيفه فلا يستطيعه فيقول: أخروه عني)
“দাজ্জাল সম্পর্কে তোমরা সন্দিহান হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কানা নন। দাজ্জাল বের হয়ে পৃথিবীতে চল্লিশ সকাল অবস্থান করবে। সে পৃথিবীর প্রত্যেক জলাধারে পৌঁছবে কিন্তু কা’বা, বাইতুল মাক়দিস ও মাদীনায় ঢুকতে পারবে না। তখনকার এক মাস হবে এক সপ্তাহের সমান, এক সপ্তাহ হবে এক দিনের সমান। তার সাথে জান্নাত ও জাহান্নাম থাকবে। তার জাহান্নাম হবে জান্নাত আর জান্নাত হবে জাহান্নাম। তার সাথে রুটির পাহাড় ও পানির নহর থাকবে। সে এক ব্যক্তিকে ডাকবে— আল্লাহ তাকে এ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারোর উপর কর্তৃত্ব প্রয়োগের ক্ষমতা দিবেন না। সে বলবে: আমার সম্পর্কে তোমার বক্তব্য কি? লোকটি বলবে: তুই আল্লাহর দুশমন, তুই মিথ্যাবাদী দাজ্জাল। অতঃপর সে করাত আনিয়ে তা তার মাথার সামনে রেখে মাথা কেটে ফেলবে এমনকি তা যমীনের উপর পড়ে যাবে। অতঃপর সে লোকটিকে জীবিত করবে এবং বলবে: এখন আমার সম্পর্কে তুমি কি বলো? লোকটি বলবে: আল্লাহর শপথ! আমি ইতোপূর্বে তোমার সম্পর্কে এমন সম্যক ধারণা লাভ করতে পারিনি যা আজ এই মুহুর্তে লাভ করলাম (অর্থাৎ তুই দাজ্জাল, তা এখন আমি আগের চেয়েও অধিক নিশ্চিত হলাম)। তুই আল্লাহর দুশমন দাজ্জাল। তোর সম্পর্কে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সা.) সংবাদ দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর সে তার তরবারি নিয়ে তার দিকে অগ্রসর হবে কিন্তু তাকে হত্যা করতে সক্ষম হবে না। ফলে সে বলবে: তাকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে নাও।”
আল্লামা হায়সামী (৭/৩৫০) বলেন: ‘হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ত়াবারানী, এর সানাদে এমন ব্যক্তি রয়েছে যাকে আমি চিনি না।’ এজন্যই যাহাবী একে গরীব বলেছেন। যেমন তার থেকে নকল করেছেন হাফিয ইবনু কাসীর ‘নিহায়া (১/১৩৪)’।
মনোযোগ আকর্ষণ: এই দুই হাদীসের বক্তব্য হলো, মু‘মিন ব্যক্তিটিকে দাজ্জাল করাত দিয়ে দ্বিখণ্ডিত করবে। আর পূর্বোক্ত নাওয়াস বর্ণিত হাদীসের বক্তব্য হলো, দাজ্জাল তাকে তরবারির আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করবে। হাফিয ইবনু হাজার (১৩/৮৭) বলেন: ইবনুল ‘আরাবী বলেছেন, দুই হাদীসের সামঞ্জস্য এভাবে হবে যে, মু‘মিন ব্যক্তি একজন নন। তারা দুই ব্যক্তি। দাজ্জাল তাদের দুইজনকে পৃথক পৃথক নিয়মে হত্যা করবে (একজনকে করাত দিয়ে এবং একজনকে তরবারি দিয়ে)। হাফিয ইবনু হাজার বলেন: তিনি এমনটিই বলেছেন। কিন্তু প্রকৃত বিষয় তা নয়। বরং করাতের বর্ণনাটির ব্যাখ্যা হলো তরবারির আঘাতের বর্ণনা। হয়তো বা তরবারিটির ধারালো অংশের অনেক জায়গায় ভাংগা ছিল যা দেখতে প্রায় করাতের মত। নিহত ব্যক্তিকে অধিক শাস্তি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে এখানে তাই বুঝানো হয়েছে।
অত্রএব তাকে তরবারি দিয়ে আঘাত করেছে এ বর্ণনাটি তাকে দ্বিখণ্ডিত করেছে এর ব্যাখ্যা। তাকে দুই টুকরা করে ফেলবে বাক্য দ্বারা তার কর্মের শেষ পরিণতি বুঝানো হয়েছে।