অনুচ্ছেদ ৫
এ অংশের সমর্থনে প্রচুর হাদীস রয়েছে। তার মধ্য থেকে সহজ কিছু উল্লেখ করছি:
প্রথম: নাওয়াস ইবনু সাম‘আন আল-কিলাবী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:
ذکر رسول الله صلى الله عليه و سلم الدجال ذات غداة فخفض فيه ورفع حتى ظنناه في طائفة النخل فقال: (غير الدجال أخو فني عليكم إن يخرج وأنا فيكم فأنا حجيجه دونكم وإن يخرج ولست فيكم فامرؤ حجيج نفسه والله خليفتي على كل مسلم إنه شاب قطط عينه طافئة كأني أشبهه بعبد العزى بن قطن فمن أدركه منكم فليقرأ عليه فواتح سورة (الكهف) [فإنها جواركم من فتنته] إنه خارج خلة بين الشام والعراق فعاث يمينا وعاث شمالا يا عباد الله فاثبتوا) قلنا: يا رسول الله وما لبثه في الأرض؟ قال: ( أربعون يوما يوم كسنة ويوم كشهر ويوم كجمعة وسائر أيامه كأيامكم) قلنا: يا رسول الله فذلك اليوم الذي كسنة أتكفينا فيه صلاة يوم؟ قال: (لا اقدروا له قدره) قلنا: يا رسول الله وما إسراعه في الأرض؟ قال: (كالغيث استدبرته الريح فيأتي على القوم فيدعوهم فيؤمنون به ويستجيبون له فيأمر السماء فتمطر والأرض فتنبت فتروح عليهم سارحتهم أطول ما كانت ذرا وأسبغه ضروعا وأمده خواصر ثم يأتي القوم فيدعوهم فيردون عليه قوله فينصرف عنهم فيصبحون ممحلين ليس بأيدهم شيء من أموالهم ويمر بالخربة فيقول لها: أخرجي كنوزك . فتتبعه كنوزها كيعاسيب النحل ثم يدعو رجلا ممتلئا شبابا فيضربه بالسيف فيقطعه جزلتين رمية الغرض ثم يدعوه فيقبل ويتهلل وجهه يضحك فبينما هو كذلك إذ بعث الله المسيح ابن مريم فينزل عند المنارة البيضاء شرقي دمشق بين مهرودتين واضعا كفيه على أجنحة ملكين إذا طأطأ رأسه قطر وإذا رفعه تحدر منه جمان كاللؤلؤ فلا يحل لكافر يجد ريح نفسه إلا مات ونفسه ينتهي حيث ينتهي طرفه فيطلبه حتى يدركه بباب (لد) فيقتله ثم يأتي عيسى ابن مريم قوم قد عصمهم الله منه فيمسح عن وجوههم ويحدثهم بدرجاتهم في الجنة فبينما هو كذلك إذ أوحى الله إلى عيسى: إني قد أخرجت عبادا لي لا يدان لأحد بقتالهم فحرز عبادي إلى الطور. ويبعث الله يأجوج ومأجوج وهم من كل حدب ينسلون فيمر أوائلهم على بحيرة طبرية فيشربون ما فيها ويمر آخرهم فيقولون: لقد كان بهذه مرة ماء . ويحصر نبي الله عيسى وأصحابه حتى يكون رأس الثور لأحدهم خيرا من مائة دينار لأحدكم اليوم فيرغب نبي الله عيسى وأصحابه فيرسل الله عليهم النغف في رقابهم فيصبحون فرسی کموت نفس واحدة ثم يهبط نبي الله عيسى وأصحابه إلى الأرض موضع فلا يجدون في الأرض موضع شبر إلا ملأه زهمهم ونتنهم فيرغب نبي الله عيسى وأصحابه إلى الله فيرسل الله طيرا كأعناق البخت فتحملهم فتطرحهم حيث شاء الله ثم يرسل الله مطرا لا يكن منه بيت مدر ولا وبر فيغسل الأرض حتى يتركها كالزلفة ثم يقال للأرض: أنبتي ثمرتك وردي بركتك . فيومئذ تأكل العصابة من الرمانة ويستظلون بقحفها ويبارك في الرسل حتى أن من الإبل لتكفي الفئام من الناس واللقحة من البقر لكتفي القبيلة من الناس واللقحة من الغنم لتكفي الفخذ من الناس فبينما هم كذلك إذ بعث الله ريحا طيبة فتأخذهم تحت آباطهم فتقبض روح كل مؤمن وكل مسلم ويبقى شرار الناس يتهارجون فيها تهارج الحمر فعليهم تقوم الساعة)
একদা সকালবেলা রাসূলুল্লাহ (সা.) দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি তার ভয়াবহতা ও নিকৃষ্টতার কথা তুলে ধরেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, সে হয়তো খেজুর বাগানের ওপাশেই অবস্থান করছে। আমরা বিকেলে আবার তাঁর কাছে উপস্থিত হলাম। তখন তিনি আমাদের মাঝে দাজ্জালের ভীতি লক্ষ্য করে বলেন: তোমাদের কি হয়েছে? আমরা বললাম, হে আল্লাহর নাবী! সকালে আপনি আমাদের সামনে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং তার ভয়াবহতার কথা এমনভাবে তুলে ধরেছেন যে, আমরা মনে করলাম, সে হয়তো খেজুর বাগানের পাশেই উপস্থিত আছে। তিনি বলেন: আমার কাছে দাজ্জালই তোমাদের জন্য অধিক ভয়ঙ্কর বিপদ। সে যদি আমার জীবদ্দশায় তোমাদের মাঝে আত্মপ্রকাশ করে তবে আমিই তোমাদের পক্ষে তার প্রতিপক্ষ হবো। আর আমার অবর্তমানে যদি সে আত্মপ্রকাশ করে তাহলে তোমরাই হবে তার প্রতিপক্ষ। আর প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আল্লাহই আমার পরিবর্তে সহায় হবেন। সে হবে কোঁকড়ানো চুলবিশিষ্ট, স্থির দৃষ্টিসম্পন্ন যুবক এবং ‘আবদুল উযযা ইবনু ক়াতান সদৃশ। তোমাদের কেউ তাকে দেখলে সে যেন তার বিরুদ্ধে সূরাহ্ কাহ্ফের প্রথমদিকের আয়াতগুলো পাঠ করে। সে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী খাল্লা নামক স্থান থেকে আত্মপ্রকাশ করবে। অতঃপর সে ডানে-বামে বিপর্যয় ছড়াবে। হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা দৃঢ়তার সাথে স্থির থাকবে।
আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করবে? তিনি বলেন: চল্লিশ দিন। তবে এর এক দিন হবে এক বছরের সমান, এক দিন হবে এক মাসের সমান, একদিন হবে এক সপ্তাহের সমান এবং অবশিষ্ট দিনগুলো হবে তোমাদের বর্তমান দিনগুলোর সমান। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! যে দিনটি এক বছরের সমান হবে তাতে একদিনের সলাত পড়লেই কি তা আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বলেন: তোমরা সে দিনের সঠিক অনুমান করে নিয়ে তদনুযায়ী সলাত আদায় করবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা জিজ্ঞেস করলাম, সে পৃথিবীতে কত দ্রুত গতিতে বিচরণ করবে? তিনি বলেন: বায়ু চালিত মেঘমালার গতিতে।
অতঃপর সে কোন এক সম্প্রদায়ের নিকট এসে তাদেরকে নিজের দলে আহবান করবে। তারা তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার উপর ঈমান আনবে। অতঃপর সে আসমানকে বৃষ্টি বর্ষণের আদেশ দিবে এবং তদনুযায়ী বৃষ্টি বর্ষিত হবে। অতঃপর সে যমীনকে শস্য উৎপাদনের নির্দেশ দিলে তদনুযায়ী ফসল উৎপাদিত হবে। অতঃপর বিকেলে তাদের পশুগুলো পূর্বের চেয়ে উঁচু কুঁজবিশিষ্ট, মাংসল নিতম্ববিশিষ্ট ও দুগ্ধপুষ্ট স্তনবিশিষ্ট হয়ে ফিরে আসবে। অতঃপর সে আরেক সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে তাদেরকে ডাকবে। কিন্তু তারা তার ডাকে সাড়া দিবে না। ফলে সে তাদের কাছ থেকে ফিরে যাবে। পরদিন সকালে তারা নিজেদেরকে নিঃস্ব অবস্থায় পাবে এবং তাদের হাতে কিছুই থাকবে না। অতঃপর সে এক নির্জন পতিত ভূমিতে গিয়ে বলবে, তোর ভেতরের ভাণ্ডার বের করে দে। অতঃপর সে যেখান থেকে প্রস্থান করবে এবং তথাকার ধনভাণ্ডার তার অনুসরণ করবে, যেভাবে মৌমাছিরা রানী মৌমাছির অনুসরণ করে থাকে।
অতঃপর সে যৌবনে পরিপূর্ণ এক যুবককে তার দিকে ডাকবে। তাকে সে তরবারির আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করবে এবং তার দেহের প্রতিটি টুকরা দুই ধনুকের ব্যবধানে গিয়ে পড়বে। অতঃপর সে তাকে ডাকা মাত্রই (জীবিত হয়ে) হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় তার কাছে এসে দাঁড়াবে। এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ)-কে পাঠাবেন। তিনি হলুদ রং-এর দু’টি কাপড় পরিহিত অবস্থায় দুইজন ফিরিশ্তার পাখায় ভর করে দামিস্কের পূর্ব প্রান্তের এক মাসজিদের সাদা মিনারে অবতরণ করবেন। তিনি তাঁর মাথা উত্তোলন করলে বা নোয়ালে ফোঁটায় ফোঁটায় মনিমুক্তার ন্যায় (ঘাম) পড়তে থাকবে। তার নিঃশ্বাস যে কাফিরকেই স্পর্শ করবে সে তৎক্ষনাৎ মারা যাবে। তাঁর নিঃশ্বাস বায়ু তাঁর দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত পৌঁছবে। অতঃপর তিনি সামনে অগ্রসর হবেন, শেষে “লুদ্দ” নামক স্থানের প্রবেশ পথে দাজ্জালকে হত্যা করবেন।
অতঃপর আল্লাহর নাবী ঈসা (আ.) এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে আসবেন যাদেরকে মহান আল্লাহ (দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করেছেন। তিনি তাদের চেহারায় হাত বুলাবেন এবং জান্নাতে তাদের মর্যাদা জানিয়ে দিবেন। তাদের এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ তাঁর নিকট ওয়াহী পাঠাবেন, হে ঈসা! আমি আমার এমন বান্দাদের প্রেরণ করবো যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতা কারো নেই। সুতরাং তুমি আমার বান্দাদের তূর পাহাড়ে সরিয়ে নাও।
অতঃপর মহান আল্লাহ ইয়াজুজ-মাজুজের দল পাঠাবেন। মহান আল্লাহর বাণী অনুযায়ী তাদের অবস্থা হলো: “তারা প্রতিটি উচ্চভূমি থেকে ছুটে আসবে” (সূরাহ্ আল-‘আম্বিয়াহ্: ৯৬)। এদের প্রথম দলটি (সিরিয়ার) তাবারিয়া হ্রদ অতিক্রমকালে এর সমস্ত পানি পান করে শেষ করে ফেলবে। অতঃপর তাদের পরবর্তী দল এখান দিয়ে অতিক্রমকালে বলবে, নিশ্চয় কোন এক সময় এখানে পানি ছিলো।
আল্লাহর নাবী ঈসা (আ.) তাঁর সঙ্গীগণসহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। তারা (খাদ্যাভাবে) এমন এক কঠিন অবস্থায় পতিত হবেন যে, তখন একটি গরুর মাথা তাদের একজনের জন্য তোমাদের আজকের দিনের একশো স্বর্ণ মুদ্রার চাইতেও মূল্যবান মনে হবে। তারপর আল্লাহর নাবী ঈসা (আ.) এবং তাঁর সাথীগণ আল্লাহর দিকে রুজু হয়ে দু‘আ করবেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের (ইয়াজুজ-মাজুজ বাহিনীর) ঘাড়ে মহামারীরূপে নাগাফ নামক কীটের সৃষ্টি করবেন। সকালে তারা এমনভাবে ধ্বংস হবে যেন একটি প্রাণের মৃত্যু হয়েছে।
তখন আল্লাহর নাবী ঈসা (আ.) এবং তাঁর সাথীগণ (পাহাড় থেকে নেমে আসবেন। তারা সেখানে এমন এক বিঘত জায়গাও পাবেন না, যেখানে সেগুলোর পঁচা দুর্গন্ধময় রক্ত-মাংস ছড়িয়ে নেই। তারা মহান আল্লাহর নিকট দু‘আ করবেন। তখন আল্লাহ তাদের নিকট উটের ঘাড়ের ন্যায় লম্বা ঘাড়বিশিষ্ট এক প্রকার পাখি পাঠাবেন। সেই পাখিগুলো তাদের মৃতদেহগুলো তুলে নিয়ে আল্লাহর ইচ্ছামত স্থানে নিক্ষেপ করবে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর এমন বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যা সমস্ত ঘরবাড়ি, স্থলভাগ ও কঠিন মাটির স্তরে গিয়ে পৌঁছবে এবং সমস্ত পৃথিবী ধুয়ে মুছে আয়নার মত ঝকঝকে হয়ে উঠবে।
অতঃপর যমীনকে বলা হবে, তোমার ফল উৎপন্ন করো এবং তোমার বরকত ফিরিয়ে দাও। তখন অবস্থা এমন হবে যে, একদল লোকের আহারের জন্য একটি ডালিম যথেষ্ট হবে এবং একদল লোক এর খোসার ছায়াতলে আশ্রয় নিতে পারবে। আল্লাহ তা‘আলা দুধেও এতো বরকত দিবেন যে, একটি দুধেল উষ্ট্রীর দুধ একটি বৃহৎ দলের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি গাভীর দুধ একটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি বকরীর দুধ একটি ক্ষুদ্র দলের জন্য যথেষ্ট হবে।
তাদের এরূপ অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর দিয়ে বিশুদ্ধ শীতল বায়ু প্রবাহিত করবেন। এই বায়ু তাদের বগলের নীচে স্পর্শ করে প্রত্যেক মুসলিমের জান ক়বয করবে। তখন অবশিষ্ট (পাপিষ্ট) নর-নারী গাধার ন্যায় প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে। এদের উপর ক়িয়ামাত সংঘটিত হবে।”
মুসলিম (৮/১৯৭-১৯৮), আবূ দাউদ (২/২১৩) সংক্ষেপে কিছু অংশ, অতিরিক্ত অংশটুকু তার এবং এর সানাদ সহীহ। তিরমিযী (২২৪১), ইবনু মাজাহ্ (২/৫০৮-৫১২), আজরী ‘আশ-শারীআহ’ (পৃ. ৩৭৬) আহমাদ (৪/১৮১-১৮২), হাম্বাল (৪৯/১-৫১/১), ইবনু মানদাহ ‘ঈমান’ (৯৪/১), এবং ইবনু আসাকির (১/৬০৬-৬০৯)।
দ্বিতীয়: জুবাইর ইবনু নুফাইর হতে তার পিতা সূত্রে মারফূভাবে অনুরূপ বর্ণিত। তবে এ কথাটি বাদে:
(قلنا: يا رسول الله وما إسراعه في الأرض … )
“আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! পৃথিবীতে তার চলার গতি কেমন হবে …।”
হাকিম (৪/৬৩০-৬৩১) এবং তিনি বলেন: সানাদ সহীহ। ইমাম যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন।
আমি (আলবানী) বলি: বরং তা মুসলিমের শর্তে সহীহ। এর প্রত্যেক ব্যক্তি সিক়াত এবং মুসলিমের রিজাল। আল্লামা হায়সামী বলেন (৭/৩৫১): ‘হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তাবারানী। এর সানাদে আবদুল্লাহ ইবনু সালিহ রয়েছে। যাকে সিক়াহ বলা হয়। তবে একদল তাকে যঈফ বলেছেন। এছাড়া অবশিষ্ট রিজাল সিক়াত।’ তিনি অন্যত্র উল্লেখ করেন: (والله خليفتي على كل مسل) — “আল্লাহ প্রত্যেক মুসলিমের পক্ষে সাহায্যকারী হবেন।”—পর্যন্ত (৭/৩৪৭-৩৪৮)। তিনি বলেন: এটি বর্ণনা করেছেন বাযযার। এর সানাদে ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালিহ রয়েছে, যিনি লাইসের লেখক। তাকে নির্ভরযোগ্য বলা হয় কিন্তু একদল হাদীস বিশারদ তাকে দুর্বল বলেছেন। এছাড়া অবশিষ্ট রিজাল সহীহ রিজাল।
আমি বলি: হাদীসটি হাকিমে বর্ণিত হয়েছে ইবনু সালিহের সানাদ ছাড়া ভিন্ন সানাদে। সুতরাং হাদীসটি সহীহ, আল-হামদুলিল্লাহ।
তৃতীয়: ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:
دخل علي رسول الله صلى الله عليه وسلم وأنا أبكي فقال لي: (ما يبكيك؟) قلت: يا رسول الله ذكرت الدجال فبكيت . فقال رسول الله صلى الله عليه و سلم: ( إن يخرج الدجال وأنا حي كفيتكموه وإن يخرج الدجال بعدي فإن ربكم ليس بأعور إنه يخرج في يهودية أصبهان حتى يأتي المدينة فينزل ناحيتها ولها يومئذ سبعة أبواب على كل نقب منها ملكان فيخرج إليه أشرار أهلها حتى يأتي فلسطين باب لد فينزل عيسى عليه السلام فيقتله ثم يمكث عيسى عليه السلام في الأرض أربعين سنة إماما عدلا وحكما مقسطا)
“রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার নিকট আসলেন। এ সময় আমি কাঁদছিলাম, তখন তিনি আমাকে বললেন: কিসে তোমাকে কাঁদাচ্ছে? আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! দাজ্জালের কথা স্মরণ হওয়ায় কাঁদছি। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন: আমার জীবদ্দশায় যদি দাজ্জাল বের হয় তাহলে আমি তোমাদের পক্ষে যথেষ্ট হব। আর যদি আমার পরে বের হয় তাহলে (জেনে রাখ) তোমাদের রব্ব কানা নন। সে বের হবে আসবাহানের ইয়াহুদীদের মধ্যে। এমনকি সে মাদীনাতে আসবে এবং তার এক প্রান্তে নামবে। সে দিন মাদীনাহর সাতটি দরজা থাকবে। প্রতিটি প্রবেশদ্বারে দুইজন করে ফিরিশতা মোতায়েন থাকবে। মাদীনাহর মন্দ অধিবাসীদের দাজ্জাল তার দলে বের করে আনবে এমনকি সে ফিলিস্তিনের কাছে (বাবে) লুদে আসবে। তখন ‘ঈসা (আ.) অবতরণ করবেন এবং তাকে হত্যা করবেন। অতঃপর ঈসা (আ.) পৃথিবীতে চল্লিশ বছর অবস্থান করবেন ন্যায়পরায়ণ ইমাম ও ইনসাফকারী শাসক হিসেবে।”
ইবনু হিব্বান (১৯০৫), আহমাদ (৫/৭৫), এবং তার পুত্র ‘আস-সুন্নাহ’ (১৩৬ পৃ.), ইবনু মানদাহ (৯৭/২), আদ-দানী (১৪২/২) ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ কাসীর হতে। হাদরামী ইবনু লাহিক় ‘আয়িশাহ্ সূত্রে।
আমি বলি: এই সানাদ সহীহ। আল্লামা হায়সামী বলেন (৭/৩৩৮): এর রিজাল সহীহ রিজাল, তবে হাদরামী ইবনু লাহিক় ছাড়া। যে সিক়াহ রাবী।
চতুর্থ: নাবী (সা.)-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:
এক রাতে মাসীহ দাজ্জালের কথা স্মরণ হওয়ায় ঘুম আসছিল না। অতঃপর সকাল হলে আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে প্রবেশ করে তাকে বিষয়টি জানালাম। তখন তিনি বললেন:
( لا تفعلي فإنه إن يخرج وأنا حي يكفيكموه الله بي وإن يخرج بعد أن أموت يكفيكموه الله بالصالحين) ثم قال: (ما من نبي إلا وقد حذر أمته الدجال وإني أحذر كموه: إنه أعور وإن الله ليس بأعور إنه يمشي في الأرض وإن الأرض والسماء الله ألا إن المسيح عينه اليمنى كأنها عنبة طافية)
“এরূপ করো না। কেননা সে আমার জীবদ্দশায় বের হলে আল্লাহ আমাকে তোমাদের জন্য যথেষ্ট করবেন। আর সে যদি আমার মৃত্যুর পর বের হয় তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে সালেহীন (নেককার লোকদের) দ্বারা রক্ষা করবেন।” অতঃপর তিনি (সা.) বললেন: “প্রত্যেক নাবী তাঁর উম্মাতকে দাজ্জাল সম্পর্কে সাবধান করেছেন। আর আমি তোমাদেরকে সাবধান করছি। সে হবে কানা, আর তোমাদের রব্ব কানা নন। সে পৃথিবীতে চলাফেরা করবে। আকাশ ও যমীন তো আল্লাহরই। জেনে রাখ, তার ডান চোখ হবে ফুলে ওঠা আঙ্গুর সদৃশ।”
ইবনু খুযাইমাহ্ (৩২ পৃ.)।
আমি বলি: এর সানাদ মুসলিমের শর্ত মোতাবেক। আল্লামা হায়সামী বলেন: ‘হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তাবারানী এবং এর রিজাল সিক়াত। তবে তাবারানীর শায়খ আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু নাফি’ ত়াহানকে আমি চিনি না।’
আমি বলি: ইবনু খুযাইমাহ্র সানাদ তার থেকে নিরাপদ। সেজন্য হাফিয ইবনু কাসীর বলেছেন (১/১৩৮): ‘যাহাবী বলেন: এর সানাদ মজবুত।’
অনুচ্ছেদ ৬
এ অংশটি প্রমাণিত হয়েছে নাওয়াস এবং জুবাইরের পুত্র নুফাইর বর্ণিত হাদীস দ্বারা যা পূর্বের অনুচ্ছেদে গত হয়েছে।