☼ মলয় রায় চৌধুরী ☼
ঔরস
সিভিলিয়ান হিট : তিন
চারজনের রক্ত গড়িয়ে মিশেছে মাছিদের আহ্লাদী জমায়েতে, মাছিরা তাদের এঁদো-পলটন ভাইবেরাদর সবাইকে ডেকে এনেছে, র্যালিতে-মিছিলে, যারা ভোরের দিয়ারায় ডোমপাড়ার শুয়োরদের আড্ডায় টাটকা-তাজা গু খেতে বেরিয়েছিল, তারাও তাজা রক্তের সু-বদবুর সংবাদ পেয়ে, হাঁফ-ফুরোনো বাংলা বৈদ্যুতিন মাধ্যমের দামড়া-চোয়াল ভাতচিকন সাংবাদিকের অনুকরণে, কুয়াশাভেজা ঘষাকাচ-ডানা নাচাতে-নাচাতে পৌঁছে গেছে।
—হ্যাঁ দীপঙ্করদা-মাছি, ঘটনাস্থলে কী দেখতে পাচ্ছেন?
—সুমিতা-মাছিনী, এখানে চারজনকে কে বা কারা খুন করে বডি ফেলে তিনচার দিকে দৌড়ে চলে গেছে বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শী মাছিরা; ইশে, নিমন্ত্রণ করা হয়েছে বিভিন্ন পাড়ার বিশেষজ্ঞ মাছি-মাছিনীদের। একজন মহিলা কেন খুন হলেন তা ভেবে দেখতে হবে, অ্যাবং খুন হলেও কেন তিনি লজ্জা নিবারণ করতে পারলেন না, তার জন্য সরকারকে জবাবদিহি করতে হতে পারে।
—দীপঙ্করদা-মাছি, আপনি কী স্বয়ং স্বাদ নিয়েছেন, রক্তের অ্যাবং গুয়ের? না নিয়ে থাকলে ঘটনাস্থলে যাঁরা একত্রিত হয়েছেন, তাঁদের দিকে একটু ক্যামেরা প্যান করতে বলুন, আমরা মাছি-দর্শকদের দেখাতে চাই, যাতে মানুষের কাঁচা গু খেয়ে-খেয়ে বিরক্ত দর্শকরাও রক্তের স্বাদ নিতে পারেন; চার-চার জনের রক্তের স্বাদ কীরকম তা আমাদের গুয়েমাছি চ্যানেলেই প্রথম দেখানো হচ্ছে। অ্যাবং নারীরক্তের স্বাদ সম্পর্কে একটু পরেই স্টুডিওর রাসায়নিক মাছি ও ফরেনসিক মাছিনী তাঁদের মূল্যবান মতামত গু-ঞ্জরিত করবেন।
—সুমিতা-মাছিনী, স্টুডিওতে যে গুসেবক অ্যাবং রক্তসেবক মাছিরা বিতর্কে অংশ নিতে এসেছেন, তাঁদের জন্য আরেকবার আমরা ক্যামেরা প্যান করে তারিণী মণ্ডল নামে মানব প্রজাতির জনৈক প্রতিকল্পের ছিৎরে-যাওয়া মগজ দেখাতে চাই; ইশে, ঘিলুসেবন করার জন্য স্থানীয় নির্বাচনক্ষেত্রের নীলমাছি পৌঁছে গেছেন, তাঁর ভোজন সমাপ্ত হলে স্টুডিওর সঙ্গে যোগাযোগ করব। ইশে, তারিণী মণ্ডলের স্ত্রীর শব দেখাতে পারছি না, কেননা স্তনদ্বয়ে গুলি খেয়ে পড়ার পর তাঁর শাড়ি ওপরে উঠে গিয়ে অকুস্থলের পাকাচুল বেরিয়ে পড়েছে। ইশে, রাজ্য প্রশাসন দেশের প্রগতি দাবি করে অথচ আজ পর্জন্ত অকুস্থলের পাকাচুলের সমস্যার সমাধান করতে পারেনি।
—দীপঙ্করদা-মাছি, দ্রুত সংবাদের জন্য ধন্যবাদ। এতক্ষণ আপনারা ভাগলপুরের দিয়ারা-সম্রাট তারিণী মণ্ডল হত্যার দৃশ্য দেখছিলেন। সময়াভাবে আমরা পৃষ্ঠভূমি সঙ্গীত তৈরি করতে পারিনি। পরবর্তী কোনো হত্যাকাণ্ডে যাতে ব্যাকগ্রাউণ্ড স্কোর দেয়া যায় তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে থাকুন; রক্তের অ্যাবং গুয়ের স্বাদ উপভোগ করুন।
—সুমিতা-মাছিনী : দর্শকগণ, কেউ একজন আমাদের সংবাদ পরিবেশনকে ঠাট্টা করে তার ঔরস উপন্যাসে যা নয় তাই লিখেছে। ল্যাখককে বিশ্বাস করবেন না, কেননা আপনারা ওনাকে দেখতে পাচ্ছেন না, আমাকে স্বচক্ষে চব্বিশ ঘণ্টা দেখছেন। মনে রাখবেন, যা দেখছেন তা-ই সত্য।