সর্বহারা

‘সর্বহারা’ কাব্যগ্রন্থ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩৩৩ বঙ্গাব্দে, মুতাবিক ১৯২৬ খৃষ্টাব্দের অক্টোবরে। প্রকাশক ব্রজবিহারী বর্মণ রায়, বর্মণ পাবলিশিং হাউস, ১৯৩ কর্ণওয়ালিশ ষ্ট্রীট, কলিকাতা। পৃষ্ঠা সংখ্যা ২+৬৪, মূল্য এক টাকা ছয় আনা। তাতে অন্তর্ভুক্ত হয়— সর্বহারা, কৃষাণের গান, শ্রমিকের গান, ধীবরের গান, ছাত্রদলের গান, কাণ্ডারী হুঁশিয়ার, সাম্যবাদী, ফরিয়াদ, আমার কৈফিয়ৎ, প্রার্থনা ও গোকুল নাগ— এই এগারটি কবিতা।

১৩৫৯ বঙ্গাব্দে কলিকাতার ‘নলেজ হোম’ থেকে ‘সর্বহারা’ কাব্যের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এতে ‘সাম্যবাদী’ ও ‘সর্বহারা’র কিছু কবিতা এবং গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত কিছু কবিতা সঙ্কলিত হয়। এই সংস্করণের মুখবন্ধ রচনা করেন রবীউদ্দীন আহমদ। এই সংস্করণের সঙ্কলিত কবিতাগুলি হল—কৃষাণের গান (সর্বহারা), শ্রমিকের গান (সর্বহারা), ধীবরের গান (সর্বহারা) চোর-ডাকাত (সাম্যবাদী), মিথ্যাবাদী (সাম্যবাদী), রাজা-প্রজা (সাম্যবাদী), সাম্য (সাম্যবাদী), প্রার্থনা (সর্বহারা), চাষার গান, ছাদপেটার গান, চীন ও ভারত, নারী, চাষীর গান, এই দেশ কার, বিদায় মাভৈ, জাকাত লইতে এসেছে ডাকাত চাঁদ ও শ্রীমান আবদুল মুহিত চৌধুরী স্নেহভাজনেষু। শেষের নয়টি কবিতা গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত ও বেশির ভাগই সর্বহারা প্রকাশের অনেক পরে লিখিত। এই সংস্করণের অন্তর্ভুক্ত নারী ও ‘সাম্যবাদী’ কাব্যের নারী স্বতন্ত্র কবিতা। ‘সর্বহারা’ গ্রন্থের মূল উৎসর্গপত্র বদলে দিয়ে এই সংস্করণে ‘উৎসর্গ—মুজফ্‌ফর আহমদ-কে’ মুদ্রিত হয়। ‘সর্বহারা’র বর্তমান সংস্করণে প্রথম সংস্করণের পাঠ ও ক্রম অনুসৃত হয়েছে।

‘উৎসর্গ’ কবিতাটি ‘সর্বহারা’ শিরোনামে ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের আশ্বিনে ‘সওগাত’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

কাব্যে গৃহিত ‘সর্বহারা’ কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩৩২ বঙ্গাব্দের ২৫শে চৈত্র সংখ্যা ‘লাঙল’ পত্রিকায়।

‘কৃষাণের গান’ প্রথম প্রকাশিত হয় ৮ই পৌষ ১৩৩২ সংখ্যা ‘লাঙলে’।

‘শ্রমিকের গান’ প্রথম প্রকাশিত হয় ৬ই ফাল্গুন ১৩৩২ সংখ্যা ‘লাঙলে’। ২৩শে মাঘ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ, মুতাবিক ৬ই ফেব্রুয়ারি ১৯২৬ তারিখে কৃষ্ণনগরে নিখিল বঙ্গীয় প্রজা-সম্মিলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে উদ্বোধনী সঙ্গীতরূপে কবি কর্তৃক ‘শ্রমিকের গান’ গীত হয়েছিল।

‘ধীবরের গান’ ৪ঠা চৈত্র ১৩৩২ বঙ্গাব্দ, মুতাবিক ১৮ই মার্চ ১৯২৬ তারিখে ‘লাঙল’ পত্রিকায় ‘জেলেদের গান’ শিরোনামে ছাপা হয়; পাদটীকায় মুদ্রিত ছিল: ‘মাদারিপুরে নিখিল বঙ্গীয় ও আসাম প্রদেশীয় মৎস্যজীবী সম্মিলনীর তৃতীয় অধিবেশনের উদ্বোধন—সঙ্গীত’। উক্ত সম্মিলনী সম্পর্কে সে সংখ্যার লাঙলে বলা হয়— ‘গত ১১ই ও ১২ই মার্চ (২৭শে ও ২৮শে ফাল্গুন) তারিখে ফরিদপুর জেলার মাদারিপুর শহরে মৎস্যজীবী সম্মিলনীর তৃতীয় অধিবেশন হয়। ১০ই মার্চ সন্ধ্যায় সভাপতি শ্রীযুক্ত হেমন্তকুমার সরকার মহাশয় ষ্টিমার যোগে আসেন। তাঁর সঙ্গে কাজী নজরুল ইসলাম, শ্রীযুক্ত বসন্তকুমার মজুমদার ও শ্রীমতী হেমপ্রভা মজুমদার ছিলেন।”

‘ছাত্রদলের গান’ ১৯২৬ খৃষ্টাব্দের মে মাসে কৃষ্ণনগরে ছাত্র ও যুব-সম্মিলনের উদ্বোধন সঙ্গীত রূপে কবি কর্তৃক গীত হয়েছিল।

‘কাণ্ডারী হুঁশিয়ার’ ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠের ‘বঙ্গবাণী’তে বের হয়েছিল। তার পাদটীকায় লেখা ছিল— ‘কৃষ্ণনগর প্রাদেশিক সম্মিলনীতে গীত।’ ১৯২৬ খৃষ্টাব্দের ২২শে মে কৃষ্ণনগরে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের বার্ষিক সম্মিলনের উদ্বোধন সঙ্গীত রূপে কবি কর্তৃক গীত হয়েছিল। ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের আশ্বিনে ‘কালি-কলম’ পত্রিকায় গানটি কবি কৃত স্বরলিপিসহ প্রকাশিত হয়।

‘আমার কৈফিয়ৎ’ ১৩৩২ বঙ্গাব্দের আশ্বিনে ৫ম বর্ষের ৪১ সংখ্যক ‘বিজলী’তে প্রকাশিত হয়েছিল।

‘গোকুল নাগ; ১৩৩২ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণের ‘কল্লোলে’ ছাপা হয়েছিল। গোকুলচন্দ্র নাগ ১৯২২ হতে ১৯২৫ পর্যন্ত ‘কল্লোল’ পত্রিকার সহ-সম্পাদক ছিলেন। তাঁর গল্পগ্রন্থ ‘সোনার ফুল’ ও উপন্যাস ‘পথিক’ সুপরিচিত। তিনি ১৩৩২ সালের ৮ই আশ্বিন একত্রিশ বৎসর বয়সে দার্জিলিঙে পরলোকগমন করেন।