ছোটখাট একটা ঘুম দিয়ে উঠে অনেকখানি চাঙ্গা বোধ করল রানা।
সাড়ে চারটে বাজে। জিনাত আগেই উঠে তৈরি হয়ে নিয়েছে। টা-টা করে চলে গেল সে সেইলরস ক্লাবের উদ্দেশে।
হাত-মুখ ধুয়ে বেরিয়ে এল রানা বাথরুম থেকে। কাপড়-চোপড় পরে নিল ধীরে-সুস্থে। ব্যালকনিতে এসে দেখল নীচে দেখা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট আসনে বসে আছে ওয়ালী আহমেদ আর জিনাত সুলতানা। আজ কেন জানি কিছুতেই মানাচ্ছে না জিনাতকে ওই পরিবেশের সঙ্গে। কী অদ্ভুত পরিবর্তন। তাড়াতাড়ি মুক্তি দিতে হবে ওকে এই অবস্থা থেকে।
শখের নাইকন-এফ ক্যামেরায় লেন্স হুডটা লাগিয়ে ঝুলিয়ে নিল রানা গলায়। ব্রাউন হবি ই এল ৩০০ ইলেকট্রনিক ফ্ল্যাশ গানের ফ্ল্যাশ হেডটা লাগিয়ে দিল ক্যামেরার উপর। X-মার্কা কন্ট্যাক্ট পয়েন্টে ঢুকিয়ে দিল কেবলটা। এবার অ্যাপার্চার এফ-১১ দিয়ে ডিসট্যান্স সেট করল বারো ফুটে, এক্সপোজার ওয়ান হানড্রেড।
তারপর সুটকেসের মধ্য থেকে মোটা ‘সঞ্চয়িতা’ বই বের করল। তার ভেতর থেকে বেরোল একখানা নাইন মিলিমিটার ক্যালিবারের হ্যামারলেস অটোমেটিক ডাবল অ্যাকশন লুগার পিস্তল। দ্রুত একবার পরীক্ষা করে কোটের পকেটে ফেলল সেটাকে রানা। একটা এক্সট্রা ম্যাগাজিনও নিল সাথে। তারপর বেরিয়ে এল বাইরে।
ঘরে চাবি লাগাতে গিয়ে কী মনে করে থেমে একটা কাগজের টুকরোকে কয়েক ভাঁজ করল রানা। দরজার কব্জার কাছে টুকরোটা রেখে বন্ধ করল দরজা। বাইরে থেকে আর দেখা যাচ্ছে না কাগজের টুকরো। একবার পরীক্ষা করে দেখল সে, দরজা খুললেই টুপ করে পড়ে যাচ্ছে সেটা মাটিতে। ওর অনুপস্থিতিতে কেউ ঘরে ঢুকলে টের পাবে ও কাগজের টুকরোটা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে।
ঘরে চাবি লাগিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এল রানা দোতলায়। সোজা এসে দাঁড়াল একত্রিশ নম্বর কামরার সামনে। আগেই চাবি জোগাড় করেছে বেয়ারাকে ঘুষ দিয়ে। চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে নিঃশব্দে খুলে ফেলল দরজা।
প্রথম ঘরটা বসবার ঘর। রানা যা ভেবেছিল তাই। খালি। পাশেই শোবার ঘর। তার ওপাশে ব্যালকনি। শোবার ঘরের দরজা বন্ধ দেখে একটু হতাশ হলো রানা। কিন্তু দেখল, ছিটকিনি লাগানো নেই তাতে। আস্তে চাপ দিতেই ফাঁক হয়ে গেল খানিকটা। প্রথমেই চাপা একটা কণ্ঠস্বর কানে এল, ‘থ্রি অভ ডায়মণ্ড, টু অভ ক্লাবস, ফোর অভ হার্টস।’ নারীকণ্ঠ।
মৃদু হাসল রানা। বেচারী জিনাত ব্লাইণ্ড খেলে না থাকলে খালি বোর্ড ফি-টা পাবে এবার। পা টিপে ঢুকে পড়ল রানা ঘরের ভেতর। একটা উঁচু চেয়ারে বসে আছে একটি অ্যাংলো মেয়ে। ঘরের ভেতর গরম, তা ছাড়া কে-ই বা আসছে দেখতে, সেজন্যে কাপড় চোপড়ের বালাই নেই মেয়েটির গায়ে। শুধু ছোট্ট একটা কালো জাঙ্গিয়া, আর বক্ষাবরণ।
টেবিলের উপর মেয়েটির চোখ থেকে ইঞ্চি তিনেক দূরেই উইভার কোম্পানির একটা শক্তিশালী দূরবীন। ট্রাইপডের উপর বসানো দূরবীনের পাশেই রাখা একখানা ছোট মাইক্রোফোন থেকে তার গেছে টেবিলের একপাশে বসানো একটা বাক্সের মধ্যে। বাক্সের ভেতর থেকে আবার কয়েকটা তার বেরিয়ে ঘরের ভেতর টাঙানো একটা ইনডোর এরিয়েলে গিয়ে মিশেছে।
আবার একটু সামনের দিকে ঝুঁকে দূরবীনে চোখ রেখে মেয়েটি একঘেয়ে কণ্ঠে গড়গড় করে বলে গেল, কুইন অভ ক্লাস, জ্যাক অভ স্পেডস, ফাইভ অভ ডায়মণ্ড। বলেই মাইক্রোফোনের সুইচ অফ করে দিল। সামনের দিকে ঝোঁকায় ফর্সা পিঠের উপর ব্রেসিয়ারের ফিতেগুলো চেপে বসেছিল। সোজা হতেই স্বাভাবিক হয়ে গেল।
এইটুকু সময়ের মধ্যে পা-টিপে এগিয়ে এল রানা। ক্যামেরাটা তুলল দু’হাতে মাথার ওপর। আন্দাজে যখন বুঝল দূরবীন, মাইক্রোফোন, এরিয়েল, মেয়েটির চেহারার একাংশ আর দূরে জিনাত ও ওয়ালী আহমেদের টেবিল, সবই এক সাথে ধরা পড়েছে স্ক্রিনে—টিপে দিল শাটার।
ঝলসে উঠল ঘরটা তীব্র আলোয়। একটা তীক্ষ্ণ চিৎকার বেরিয়ে এল মেয়েটির মুখ থেকে ঘটনার আকস্মিকতায়। চট করে ঘুরল ও রানার দিকে। নেমে পড়ল উঁচু চেয়ার থেকে।
‘কে? কে তুমি?’
‘ভয় পেয়ো না, সুন্দরী, আমি ভূত নই। আমার যা প্রয়োজন ছিল পেয়ে গেছি। তোমার কোনই ক্ষতি করব না আমি। আমার নাম মাসুদ রানা।’
মেয়েটিকে মোটামুটি সুন্দরীই বলতে হবে। লম্বা একহারা চেহারা, চমৎকার স্বাস্থ্য। বয়স আটাশ-ঊনত্রিশ। যৌবন উছলে পড়ছে সারা অঙ্গে। বব ছাঁটা চুল বিছিয়ে পড়েছে নগ্ন কাঁধের উপর। চোখে একরাশ কৌতূহল।
‘কী করবে তুমি ছবি নিয়ে?’
‘বলছি তো তোমার কোনও ক্ষতি করব না। অত ঘাবড়ে যাচ্ছ কেন? ওয়ালী আহমেদকে গোটা দুই গাট্টা মেরেই কেটে পড়ব। এইখানটায় দাঁড়িয়ে থাকো চুপচাপ—কোনও রকম চালাকির চেষ্টা করলে স্রেফ খুন করে ফেলব।’
ক্যামেরাটা নামিয়ে রাখল রানা টেবিলের উপর। ডান হাতে পিস্তলটা ধরে উঠে বসল মেয়েটির চেয়ারে। চোখ রাখল দূরবীনে। পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। জিনাতের হাতের কার্ড। দুইয়ের পেয়ার পেয়েছে এবার সে। ওয়ালী আহমেদকে খানিকটা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠবার সুযোগ দিয়ে একটা সিগারেট ধরাল রানা।
‘এত টাকা ওয়ালী আহমেদের, তাও এইসব করে কেন?’ জিজ্ঞেস করল ও মেয়েটিকে।
‘ওই মেয়েটিকে ও চায়। একটু অনুগ্রহ করলেই টাকা ফিরিয়ে দেবে সব।’
‘এই কি ওর প্রথম শিকার?’
‘না। এর আগে আরও অনেকে এসেছে। সবাই আত্মসমর্পণ করেছে।’
‘তোমার মত রূপসী পেয়েও তৃপ্তি হয় না ওর?’
হাসল মেয়েটি।
‘আমি বেতনভোগী চাকরাণী মাত্র! আজ তিনমাস আমাকে স্পর্শও করেনি ওয়ালী আহমেদ। নিত্য নতুন মেয়েমানুষ পছন্দ ওর। আমি প্রথম দিনেই পুরনো হয়ে গেছি।’
‘তা, তুমি এগুলো করো কেন? ভাগ্যিস, আমি আইবি কিংবা পুলিশের লোক নই। মেয়েটির একজন শুভাকাক্ষী মাত্র। নইলে আজ এই ফটোর জোরে ওয়ালী আহমেদের সাথে সাথে তোমারও হাতে হাতকড়া পড়ত, তা জানো?
‘জানি। আমি এসব করি টাকার জন্যে। দু’হাজার টাকা পাই মাসে। কিন্তু তুমি পুলিশ হলে কী আর হোত? টাকার কুমীর ও। টাকা দিয়ে কিনে নিত তোমাকে। আমাকেও মোটা টাকার মাইনে দেয় বলেই আছি। নইলে কার ভাল লাগে সকাল বিকেল বসে বসে একঘেয়ে অ্যানাউন্সমেন্ট করতে? এখন ভাবছি, চাকরিটা বুঝি গেল আমার। আর রাখবে না আমাকে।’
আর একবার চোখ রাখল রানা টেলিস্কোপে। আধ ইঞ্চি উঠিয়ে ওয়ালী আহমেদের বসন্তের দাগ ভর্তি মুখের উপর সেট করে নিল টেলিস্কোপ। দেখল প্রান্ত মুখটা এবার সত্যিই একটু উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে। একটা পান মুখে ফেলে দরজার চতুষ্কোণ অন্ধকারের দিকে চাইল সে একবার।
‘তোমার অ্যানাউন্সমেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশ ব্যস্ত হয়ে উঠেছে ওয়ালী আহমেদ। এখন কি খেলা ছেড়ে উঠে পড়বে নাকি?’
‘না। মাঝে মাঝে এরকম হয় কোনও তারটার ছুটে গেলে। ও ভাবছে, আমি এখন সেই তার জোড়া লাগানোয় ব্যস্ত আছি!’
‘তোমার নামটা কী বললে না?’
‘অ্যানিটা গিলবার্ট।’
‘অনীতা?’
‘তা বলতে পারো। চার পুরুষ ধরে খ্রিস্টান। তাই উচ্চারণটা বেঁকে গিয়ে অ্যানিটা হয়ে গেছে। তোমার নাম কি যেন বললে, মাসুদ রানা, না?’
‘হ্যাঁ।’
‘আমি পাশের ঘর থেকে একটা জামা পরে আসতে পারি? আমাকে দেখতে…’
‘উঁহু!’ মাথা নাড়ল রানা। মেয়েটার আর কোনও মতলব আছে কি না কে জানে? বলল, ‘বেশ তো চমৎকার লাগছে তোমাকে দেখতে। আমার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এক পা-ও নড়তে পারবে না তুমি। ইচ্ছে করলে, সিগারেট খেতে পারো একটা।’
কাঠগড়ার আসামীর মত দাঁড়িয়ে রইল। একটা সিগারেট নিয়ে ধরাল। ভয়ে ভয়ে চাইল পিস্তলটার দিকে। রানা আবার চোখ রাখল দূরবীনে। ভ্রুকুটি দেখা দিয়েছে ওয়ালী আহমেদের কপালে। হিয়ারিং এইডের অ্যাম্পলিফায়ারটা অ্যাডজাস্ট করে এয়ারফোনটা ভাল করে খুঁজে দিল কানের মধ্যে—তাও কোনও সিগনাল নেই। আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবে ভাবল রানা। ব্যাপারটা আরেকটু জমে উঠুক।
‘বেশ সুন্দর ছোট্ট যন্ত্র আবিষ্কার করেছ। কত ওয়েভলেংথে ট্রান্সমিট করছ?’
‘টু হানড্রেড টেন মেগাসাইকলস।’
মাইক্রোফোনটা হাতে তুলল রানা এবার। অত্যন্ত বিচলিত হয়ে উঠল অনীতা, ভয়ে পাংশু হয়ে গেছে ওর মুখ।
‘ভয়ঙ্কর লোক ওয়ালী আহমেদ। ওকে না ঘটলে চলে না?’
‘না!’ দৃঢ় রানার কণ্ঠস্বর।
হঠাৎ এগিয়ে এসে রানার হাত ধরল মেয়েটা। বিস্ফারিত নয়নে চাইল রানার চোখের দিকে। বলল, ‘আমার ওপর একটু কৃপা করো, মিস্টার রানা। ওকে ছেড়ে দাও। দয়া করে ছেড়ে দাও ওকে। নইলে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে আমাকে ওয়ালী আহমেদ। তুমি জানো না। ও পারে না এমন কাজ নেই।’ আরেকটু কাছে সরে এল মেয়েটা। চোখে তার করুণ আকুতি। ‘প্লিজ! রানা, সব কথা তোমাকে বলা যাবে না। ওকে যদি কিছু করো তা হলে ভয়ানক ক্ষতি হয়ে যাবে আমার। দোহাই তোমার, ছেড়ে দাও ওকে। বিনিময়ে যা চাইবে তাই দিতে রাজি আছি আমি।’
মৃদু হেসে রানা বলল, ‘তা হয় না, অনীতা। তুমি খামোকা অত ভয় পাচ্ছ ওয়ালী আহমেদকে। ওর কিছুটা শিক্ষা হওয়া দরকার। আজ ও বড়লোক একটা মেয়েকে ঠকাচ্ছে, কাল হয়ত এমন কাউকে ঠকাবে, যার পক্ষে সহ্য করা কঠিন। কাজেই ওর ইসক্রুপে সামান্য টাইট দিতেই হবে।’
মাইকের সুইচ টিপে দিল রানা। খুট করে একটা শব্দ হয়ত পৌঁছুল ওয়ালী আহমেদের কানে। কপালের ভ্রূকুটি সোজা হয়ে গেল। প্রসন্ন হয়ে উঠল ওর মুখ। লালচে গোফে একবার তা দিয়ে নিয়ে একটা পান ফেলল মুখে।
রানা বলল, ‘এইস অভ ডায়মণ্ড, এইস অভ হার্টস, এইস অভ ক্লাবস। টপ ট্রায়ো!’
ঠিক যেন পাথরের মূর্তির মত স্থির হয়ে গেল ওয়ালী আহমেদ। একবিন্দু চাঞ্চল্য প্রকাশ পেল না ওর চেহারায়। এমনকী সবুজ চোখ তুলে তাকাল না পর্যন্ত এদিকে।
‘ওয়ালী আহমেদ, আমি আপনার মাশুক নানা বলছি। নিশ্চয়ই চিনতে পারছেন? আপনার প্রাইভেট সেক্রেটারি, দূরবীন, মাইক্রোফোন, ইত্যাদি সবকিছুর ছবি তুলে নিয়েছি আমি। আমার কথামত কাজ করলে এ ছবি পুলিশের হাতে যাবে না। বুঝতে পারছেন? পারলে বা হাতটা ওপরে তুলে লাল মাথাটা চুলকান একবার।’
মুখের ভাব পরিবর্তন হলো না। কিন্তু বাঁ হাতটা তুলে মাথাটা চুলকাল ওয়ালী আহমেদ একবার।
‘চমৎকার! এবার হাতের তাস চিত করে ফেলে দিন টেবিলের ওপর। ভয় নেই, কেবল টাকার ওপর দিয়েই যাবে এবারের ঝাঁপটা। হাতকড়া পড়বে না হাতে।’
নিতান্ত ভাল মানুষের মত হাতের তাস তিনটে ফেলে দিল ওয়ালী আহমেদ টেবিলের ওপর। ব্যালকনির খোলা দরজার দিকে চাইল একবার সে। মনে হলো সবুজ দৃষ্টিটা যেন দূরবীনের মধ্য দিয়ে এসে চোখের ভেতর দিয়ে ঢুকে রানার খুলি ভেদ করে বেরিয়ে গেল।
এবার পকেট থেকে চেক বইটা বের করুন দয়া করে। হ্যাঁ। একলক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকার চেক লিখুন একটা। মেয়েটির কাছ থেকে চুরি করেছেন মোট একলক্ষ পঁয়ষট্টি হাজার। বাকি দশ হাজার ফাইন করলাম এই চুরির জন্যে। আজকের ডেট দিন—এক্ষুণি ক্যাশ করতে হবে এই হোটেলের ব্যাঙ্কে। ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের চেক বই-ই তো দেখা যাচ্ছে। বেশ, বেশ। চেকটা ধরুন, অঙ্কটা দেখব। বাহ, সব ঠিক আছে। এখন সই করুন। সই করবার সময় ফটোগ্রাফটার কথা একবার স্মরণ করুন। এবার উল্টো দিকে আরেকটা কাউন্টার সাইন, ব্যস।’
চেকটা ছিঁড়ে উল্টো পিঠে কাউন্টার-সাইন করল ওয়ালী আহমেদ। চেক বইয়ের কাউন্টার-ফয়েলে টুকে রাখল অঙ্কটা।
‘এবার আরেকবার দেখি তো চেকের এপিঠ-ওপিঠ? এই তো, গুড! এখন একটা বেয়ারা ডেকে চেকটা ক্যাশ করে আনতে বলুন। আর দু বোতল ফাণ্টার অর্ডার দিন। বিলটা আমিই দেব।’
অবাক বিস্ময়ে ভয়-ভক্তি-শ্রদ্ধা মিশ্রিত দৃষ্টিতে রানার দিকে চেয়ে রয়েছে অনীতা। রানা ওর দিকে চাইতেই ঢোক গিলল। রানা সিগারেট ধরাল। ওকেও দিল একটা।
বেয়ারা এল, চেক নিয়ে চলে গেল। আরেকজন দু’বোতল স্ট্র লাগানো ফান্টা এনে রাখল টেবিলের উপর। কোল্ড ড্রিঙ্ক শেষ করে একটা পান মুখে ফেলল ওয়ালী আহমেদ। একটা স্বস্তির ভাব ফুটে উঠেছে ওর চোখে-মুখে। যাক, শুধু ক’টা টাকার উপর দিয়েই কেটে গেল ফাড়াটা। স্বয়ং ব্যাঙ্কের ম্যানেজারই এল টাকা নিয়ে। সসম্ভ্রমে ওয়ালী আহমেদের হাতে দিয়ে চলে গেল।
‘একটা নোটও যেন ভুল করে আবার পকেটে চলে না যায়!’ বলল রানা। ‘সব টাকা ভদ্রমহিলার হাতে দিয়ে জোচ্চুরি করার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। বাহ, এই তো লক্ষ্মী ছেলে! এবার আমি নেমে আসছি। কোনও রকম চালাকির চেষ্টা করলে বিপদে পড়বেন। ব্যস। আজকের প্রথম অধিবেশনের এইখানেই সমাপ্তি। খোদা হাফেজ। পাকিস্তান পায়েন্দাবাদ।’