মানুষের ঘরবাড়ি

আঠারো

আজকাল জানলায় বসে থাকলে কত কিছু টের পাই। আমার এই ছোট্ট জানলা এখন ভারি প্রিয়। মানুষের বুঝি এমনই হয়। যেখানে নিত্যদিন তার বসবাস, শোওয়া থাকা, এক রকমের অভ্যাসের দাস বলা চলে, আমার মধ্যে সেই দাসত্বContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

এক

শেষ পর্যন্ত সাদুল্লা আমগাছটায় মুকুল আসায় বাবার গাছ লাগানো যেন ষোল আনা সার্থক। বাবার একটাই দুঃখ ছিল, গাছের কলমটা তাহলে সৈয়দ আলি ঠিক দেয় নি। সব গাছে মুকুল আসে, এটায় আসে না কেন—হাতের দোষ মনেContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

দুই

আসলে বুঝতে পারছি আমি অন্যমনস্ক থাকার চেষ্টা করছি। ছিমছাম বাংলো বাড়ির দিকে আমাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একটা সবুজ লন। বড় একটা নীল রঙের নেট টাঙানো। দু’পাশে নীল রঙের বেতের চেয়ার সাজানো। ওটা পার হলেই সুন্দরContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

তিন

মনে পড়ে কবে এক তারাভরা রাতের বাতাসে/ধর্মাশোকের ছেলে মহেন্দ্রের সাথে/ উতরোল বড় সাগরের পথে অন্তিম আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রাণে/তবুও কাউকে আমি পারি নি বোঝাতে/ সেই ইচ্ছা সংঘ নয়, শক্তি নয়, কর্মীদের সুধীদের বিবর্ণতা নয়, আরো আলোContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

চার

ঘাসের উপর শুয়ে যেন স্বপ্ন দেখছিলাম। টিউশনিটা ছাড়তে পারছি না। অথচ বড় ইজ্জতে লাগছে। চাকর-বাকরের মতো ব্যবহার। এমন কি এক কাপ চা পর্যন্ত দেয় না। সাহেবের বাপ কাছ থেকে নড়ে না। মেয়ে দুটো পড়ে, আমিContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

পাঁচ

আশ্চর্য, চার-পাঁচ দিন হয়ে গেল মিমির আর কোনো পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না। নিখিল বলল, মিমি পার্টি অফিসেও যাচ্ছে না। আমরা রাউণ্ড মারতে বের হলে শুধু দেখি, চৈতালীর ন্যালা ক্ষ্যাপা দিদিটা বারান্দায় গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে।Continue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

ছয়

আমি আর মুকুল সেদিন সারাটা বিকেল ঘুরলাম। কিছু ভাল লাগছিল না। এমন অর্থহীন নিজেকে কখনও মনে হয় নি। আমি তো আশা করি না। মিমি নিজেই আমার কাছে ধরা দিয়েছিল। প্রথমে ছিল ওটা ওর মজা। কালীবাড়িতেContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

সাত

কদিন থেকে জোর বর্ষা শুরু হয়েছে। আমাদের বাড়ির সামনের নালাটা জলে ভেসে গেছে। সামনের মাঠ ঘাট সব। রাস্তায় এসে দাঁড়ালে, দূরের বাদশাহী সড়ক আম জাম গাছের ফাঁকে দেখতে পাই। বর্ষার সময়টা বাড়িতে আটকা পড়ে যেতেContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

আট

একদিন বাড়ি এসে শুনলাম, মিমি এসেছিল। মিমি কলকাতা থেকে কাকে ধরে আমাদের কজনের পাশ ফেলের খবর নিয়ে এসেছে। ওদের প্রভাব আছে—আনাতেই পারে। সবার আগে আমাদের বাড়িতে এসে খবর দিয়ে গেছে, মাসিমা বিলু পাশ করেছে। মিমিContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

নয়

বৃষ্টি বাদলার দিনে বাড়িঘরের চেহারা কেমন পালটে যায়। কদিন থেকে অবিরাম বৃষ্টি। মাঠ- ঘাট ভেসে গেছে। বাড়ির সামনে এক চিলতে খাল। কবে এখানকার স্থানীয় মহারাজ—এই অঞ্চলে আখের চাষ করবেন বলে এই খাল কাটিয়েছিলেন, মহারাজদের খেয়াল—কেContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

দশ

পরী কালীবাড়ি যাবার রাস্তাটায় ঢুকে সাইকেল থেকে নেমে পড়ল। আমরা পাশাপাশি দু’জন সাইকেল চালিয়ে এসেছি। দু’জনের মধ্যে একটা কথাও হয় নি। হবার কথাও নয়। শহরটা কেমন ক্রমেই ঘিঞ্জি হয়ে উঠছে। শহরের ভেতর নিরিবিলি সাইকেল চালিয়েContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

এক

সকালে ঘুম থেকে উঠেই পিলুর বুক ধড়াস করে উঠল। দাদা বিছানায় নেই। বাড়িতে সবার আগে ওঠেন বাবা। ব্রাহ্ম মুহূর্তে তিনি ঘুম থেকে ওঠেন। অবশ্য পিলুর মনে হয় বাবার বোধ হয় শেষ রাতের দিকে বিছানায় পড়েContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

দুই

দাদার সেই একটা বিষয়ে পাশ পিলুকে এখন কিঞ্চিৎ বিভ্রমে ফেলে দিয়েছে। তার চেয়েও বেশি বিভ্রমে ফেলে দিয়েছে, দাদা কোথায় যেতে পারে এমন কোনো নিশ্চিত ধারণা বাবার আছে—তা না হলে বাবা ধরে নিলেন কেন যাত্রা শুভ।Continue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

তিন

ভোর রাতে মিমির মনে হল বেশ শীত শীত করছে। শীত করার জন্য ঘুম ভেঙেছে, না কোনো শব্দে, সে ঠিক বুঝতে পারছে না। ইদানীং তার রাতে ঘুম ভাল হয় না। মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙে যায়— কেনContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

চার

পরীদি এল। শাড়ি সায়া পাল্টে পরীদি এল। সাদা সিল্ক, লাল ব্লাউজ, মুখে স্যান্য প্রসাধন। সামনে এসে পরীদি পিলুর জামাটা দেখে বলল, ছিঁড়ে গেছে। দেখেছিস। পিলু নিজের ছেঁড়া জামা আগেই দেখেছে। সে পরীদির কথায় আশ্চর্য হলContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

পাঁচ

পিলু মিমির গা ঘেঁসে রয়েছে। সিঁড়ি ধরে নামার সময়ও সে মিমির আড়ালে থাকছে। যেন একটু আলগা পেলেই খপ করে তাকে কেউ ধরে ফেলবে। আবার টেনে হিঁচড়ে উপরে তুলে নিয়ে গিয়ে কোনো পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রাখবে।Continue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

ছয়

পিলুটা যে কোথায় গেল! মায়া দেখল, বাবা বিড় বিড় করে বকছেন। এই অসময়ে কেউ বাড়ি ছাড়া হলেই যেন দুশ্চিন্তা। মায়া রাস্তায় দৌড়ে গেল। বাড়িটাতে লোকজন আসছে যাচ্ছে। দুঃসংবাদ পেয়ে সবাই আসছে। বাবা এতক্ষণ মাকে বোঝContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

সাত

বিকেল পড়তেই নবমীর সঙ্গে পিলুর চোটপাট শুরু হয়ে গেল। নবমী আজকাল বাবাঠাকুরের বাড়িতে উঠে এসে চোপা করতে শিখে গেছে। অবশ্য পিলু জানে, নবমীর চোপা আগেও কম ছিল না। কেবল তাকে দেখলেই বুড়ির মাথা ঠাণ্ডা হত।Continue Reading