আমি আর মুকুল সেদিন সারাটা বিকেল ঘুরলাম। কিছু ভাল লাগছিল না। এমন অর্থহীন নিজেকে কখনও মনে হয় নি। আমি তো আশা করি না। মিমি নিজেই আমার কাছে ধরা দিয়েছিল। প্রথমে ছিল ওটা ওর মজা। কালীবাড়িতে এসেই লক্ষ্মীর কাছে শুনেছিল, বদরিদা নটু পটুর জন্য বাচ্চা মাষ্টার রেখেছে। চিড়িয়াখানায় জীব যেভাবে দেখতে আসে, মিমি সেদিন সেভাবেই আমাকে দেখতে এসে আমাকে নিয়ে মজা করবে ভেবেছিল।

কালীবাড়িতে লক্ষ্মী কখন মাস্টার সম্বল ভেবে আমার সব কাজ, খাওয়া-দাওয়া, বিছানা করা, জামা প্যান্ট কেচে রাখা থেকে স্নানের জল তোলার কাজটা হাতে নিয়ে ফেলেছিল। কলেজ থেকে দেরি করে ফিরলে দেখতাম লক্ষ্মী নিম গাছের নিচে আমার ফেরার প্রত্যাশায় দাঁড়িয়ে আছে। সেই লক্ষ্মীও এক জ্যোৎস্না রাতে সব টের পেয়ে আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমার পাপের শেষ নেই। আজ কেন জানি এটা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম, জীবনে অনেক ভোগান্তি আছে।

রেল লাইনের কাছে সেই গুমটি ঘর। তার পাশে ঘাসের চটান। নিরিবিলি জায়গা। এখানাটায় এসে মুকুলকে বললাম, চল বসি। প্যাকেটে কি আছে দেখি।

সাইকেল ঘাসের উপর ফেলে রেখে আমরা বসলাম। বললাম, তোমার কি মনে হয়?

মুকুল বুঝতে না পেরে বলল, প্যাকেটটা খুব ভারি। খুলে দেখি না।

—আরে না। মিমি পরেশচন্দ্রের সঙ্গে ঘুরছে—আমার কেন জানি ভাল লাগছে না।

—ও একটু তরলমতি আছে। কখন কি করবে আমরা কেউ টের পাই না। বাড়ির মানুষজনও টের পায় কি না সন্দেহ আছে। ও নিয়ে ভেবো না।

—না, ভাববার কি আছে! ভাবব কেন। তারপর বলার ইচ্ছে হল ভাববার অধিকারই বা আমাদের কতটুকু। আফটার অল আমরা কলোনির ছেলে। স্নান, কলোনির বাইরের লোকের ধারণা আমরা মানুষ না।

মানুষ না ভাবলে মিমি তোমার কাছে যেত না।

মানুষ ভাবলে আমার সামনে দিয়ে ধুলো উড়িয়ে কেউ যেতে পারে না।

বারে, তুমি ওকে অপমান করতে পারলে রাজা আর সে তোমাকে অপমান করতে পারলে রাণী হবে না সে কেমন করে হয়।

আমি চুপ করে বসে থাকলাম। প্যাকেট খোলা হলে দেখলাম ওতে অনেকগুলো কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, সমালোচনা। একটা হাত চিঠি, মিমি লিখছে,

বিদ্যাসাগর মশাই, আপনার জন্য পাঠালাম। আপনার নির্বাচনই শেষ কথা। যেটা যাবে তার উপর আপনি দয়া করে একটা সই করে দেবেন। অমনোনীত লেখাগুলোতে ক্রুশ চিহ্ন। সুধীন দা, দিলীপের সঙ্গে কথা হয়েছে। ডামির উপর কাগজের নাম লিখে দেবেন। ইতি মিমি।

তা’লে সুধীনবাবুর কাছে থেকে জেনে ফেলেছে, আমাকে তারা বিংশ শতাব্দির বিদ্যাসাগর মশাই বলে সম্বোধন করে। আমাদের আড্ডায় কে কাকে কি নামে ডাকে, মিমির মতো তরলমতি যুবতীর কাছে না বললেই হত। সে আমাকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি।

একা ফিরছি। রাত হয়ে গেছে। এতক্ষণ মুকুল সঙ্গে থাকায় মনটা হালকা ছিল। একা হয়ে যেতেই কেমন বিষণ্ণ হয়ে গেলাম। জ্যোৎস্নায় সারা মাঠ ঘাট ভেসে যাচ্ছে। ঠাণ্ডা হাওয়া দিচ্ছে। কোথাও দুরে বৃষ্টিপাত হয়েছে টের পেলাম। উত্তাপ দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কিংবা দুঃখ কষ্ট মানুষের চিরজীবন থাকে না। ছিন্নমূল পিতার সন্তান— যেকোনভাবে পারি তার থেকে পরিত্রাণ চাইছি। অভাবের তাড়নায় একবার মেট্রিক পরীক্ষা দেবার পর পলাতকের খাতায় নাম লিখিয়েছিলাম, মিমির জন্য আবার না পলাতক হতে হয়।

বাড়ি ফিরে অবাক।

পিলুই খবরটা দিল।

—দাদা মিমিদি এসেছিল।

—কখন?

—তুই বের হয়ে গেলি ঠিক তারপর।

—মানে!

পিলু মানেটা বুঝবে কি করে। মায়া লাফিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে বলল, এই দ্যাখ দাদা, আমার চুড়ি, পুঁতির মালা।

বাবা ঠাকুরঘরে বৈকালি দিচ্ছিলেন। ঘণ্টা নাড়ার শব্দ পেলাম। যেন দ্রুত তিনিও ঠাকুরের শয়নের ব্যবস্থা করে ঘর থেকে বের হয়ে আসতে চাইছেন। এলেনও। বাইরে বের হয়ে বললেন, মৃন্ময়ী আমাদের একদিন ওদের বাড়ি নিয়ে যাবে বলেছে। ওদের বাড়িতেও নাকি বিগ্রহের মন্দির আছে।

মিমি কি বাবাকে ওদের বাড়িতে পূজার বামুনের কাজটা দিতে চায়। ওরা ভাল মাইনে দেয়— বাবা যদি রাজী হয়ে যান। বললাম, না কেউ যাবে না।

—কি বলছিস তুই। মাও দেখলাম কেমন রুষ্ট গলায় কথাটা বলল।

বাবা বললেন, মৃন্ময়ী তো বলল, ওর ঠাকুরদা তোমার উপর খুব প্রীত।

—তাই নাকি।

আমার আচরণে আজকাল মা বাবা কোনো অর্থ খুঁজে পান না। হয়তো ভাবেন, বিলুটা দিন দিন কেমন রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে। কোন কথাই বলা যায় না। ওঁরা হতবাক হয়ে গেছেন। বাবা আর কিছু না বলে তামাক সাজতে বসলেন। সব ক্ষোভ দুঃখ যেন তিনি এক ছিলিম তামাক খেতে পারলে ভুলে যেতে পারেন।

টের পাচ্ছিলাম মাথাটা ধরেছে খুব। জলচৌকিতে বসে বললাম, আমার কাজ হয়ে যাবে। সার্কুলার এসেছে। কেউ কোনো কাজের কথা বললে, নেবেন না।

বাবা এবার কলকেতে তামাক টিপতে টিপতে বললেন, সে রকমের তো কোনো কথা হয়নি। মৃন্ময়ী বলল, মেসোমশাই, আপনাদের এসে নিয়ে যাব। ওদের বাড়িতে শ্রাবণে খুব ঘটা করে লক্ষ্মীপূজা হয়। ওর দাদুরও ইচ্ছে তাই। দাদুকে বলেছে, কালীবাড়িতে বাবাঠাকুরের নাকি তুমি খুব প্রিয়জন ছিলে। বাবাঠাকুরের শরীর ভাল না। একবার তাঁকে তোমার দেখে আসা উচিত।

সত্যি তো, সেই যে কালীবাড়ি থেকে চলে এসেছিলাম, আর ওদিকটায় আমার যাওয়া হয় নি। বৌদি, বদরিদা, বাবাঠাকুর কে কেমন আছেন খোঁজই নিইনি। আসলে, আমি যেতে ভয় পাই। কারণ যখনই যেখান থেকে কালীবাড়ি ফিরেছি, দেখেছি মন্দিরের দরজায় লক্ষ্মী দাঁড়িয়ে। এখন গেলে দেখব কেউ দাঁড়িয়ে নেই। বড় ফাঁকা লাগবে, শূন্যতা এসে গ্রাস করবে। কেউ আর বলবে না, মাস্টার তোমার এত দেরি!

.

মাথার কাছে টেবিলে হ্যারিকেনটা জ্বলছে। মৃদু আলো। হাত বাড়িয়ে হ্যারিকেনটা নিভিয়ে দেওয়া যায়। আমার তাও ইচ্ছে করছে না। মিমির দেওয়া প্যাকেটটা পড়ে আছে। লেখাগুলো খুলে দেখাই হয় নি কী আছে ভিতরে। ইচ্ছেও করছে না। মহা ফাঁপরে পড়ে গেছি। পরেশচন্দ্র এবং মিমির উধাও হয়ে যাওয়া এবং সে বের হয়ে গেলে মিমির একা বাড়িতে আসা বড়ই রহস্যজনক ব্যাপার। সঙ্গে পরেশচন্দ্র থাকলে বাবা ঠিক বলতেন। মিমি কী তবে বাঁকের মুখে নিমতলায় গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে একা হেঁটে এসেছিল। এসে সারা বিকাল বাড়িতে কাটিয়ে গেছে। মেয়েটা দজ্জাল, তরলমতি না বিপ্লবী ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। চৈতালীর দিদিরা ওর নাম দিয়েছে মক্ষীরানী। তা ও কিছুটা পুরুষ-ঘেঁষা। পার্টি করলে যা হয়। মিছিলের আগে শুধু নয়, মিছিল পরিচালনা করতেও তাকে শহরের পথে দেখা গেছে। সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, শোষণের বিরুদ্ধে, সরকারী অব্যবস্থার বিরুদ্ধে তার জ্বালাময়ী ভাষণ বড় মুগ্ধ হয়ে শুনতে হয়। আর হাতের কাছে এমন সব যুক্তি খাড়া করে রাখে যে মনেই হয় না সে এতটুকু অসত্য ভাষণ করছে। আসলে ভিতরে মিমি এখন চরম সংকটের মুখে। সেই এক আত্মপ্রকাশ। কিন্তু পরেশচন্দ্র যে একটা কাঁটা হয়ে গলায় গেঁথে আছে সেটা টের পেয়ে চোখ আরও জ্বালা করতে থাকল। ভিতরে আমারও এক আত্মপ্রকাশের জ্বালা—যার থেকে রেহাই নেই। একমাত্র কবিতা সৃষ্টি করে বুঝিয়ে দিতে পারি আমি তোমার চেয়ে কম কিসে।

সুতরাং আমার ঘুম নাও আসতে পারে। পিলু পাশে শুয়ে নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে। তার কাকাতুয়া পাখি চাই। মিমি একদিন তাও দিয়ে যেতে পারে, কিংবা বলতে পারে, চল পিলু, কাকাতুয়া পাখিটা নিয়ে আসবি। সেই আনন্দেই আছে। মিমিদি সেই কাকাতুয়া বাড়িটায় থাকে জেনে চরম বিগলিত হয়ে গেছিল। কত বড় বাড়িরে দাদা। কি বিশাল বিশাল কারুকার্য করা থাম। ও! ভাবা যায় না! পিলু কেন, বাবাও ঠিক বাড়িটা দেখেছে। শহরে কাকাতুয়া তো ঐ একটা বাড়িতেই আছে। রিকশায় চড়ে কিংবা উঁচু বা লম্বা মানুষ হলে পাঁচিলের ও পাশে দাঁড়ে ঝোলান কাকাতুয়াটা কারো চোখে পড়বে না কথা নয়। বাবা ঠিক বুঝতে পেরেছেন কোন্ বাড়ির মেয়ে মৃন্ময়ী। ওদের বৈভবই মৃন্ময়ীর প্রতি বাবার যত সম্ভ্রমের কারণ।

মনে হল, বাবাকে যেন ছোট করছি। বাবা তো আমার এমন মানুষ নন। বাবা কি তবে মৃন্ময়ীর আচরণে মুগ্ধ। কত বড় বাড়ির মেয়ে তাঁর বাড়ি নির্দ্বিধায় আসে। তাঁর ছেলের সঙ্গে এক কলেজে পড়ে। আসলে বাবার সেই এক পুত্র-গৌরব। পুত্রটি একদিন খুব বিখ্যাত ব্যক্তি হবে এমনও আশা পোষণ করে থাকতে পারেন। আমার ঠিকুজি-কুষ্ঠীতে এমনই নাকি লেখা আছে। বৈভব বাবাকে কোনোদিন বিচলিত করে না। কারণ বাবার কাছে তাঁর এই বাড়িটুকু, গাছপালা, বিগ্রহ এবং গাভী সকল মিলে লক্ষ কোটি টাকার চেয়েও মূল্যবান। বাবা আমার এ দেশে এসে কত সহজে মাটির ভিতরে শিকড় চালিয়ে দিতে পারলেন।

বুঝলাম ঘুম আসবে না। উঠে বসলাম। কিছু লেখা যায় কিনা চেষ্টা করলাম। না মাথা ফাঁকা। একটা লাইন আসছে না। শুধু সব লাইনে পরীর দুই ভরা চোখ, পুষ্ট স্তন, এবং ঋজু কোমর এবং নাভিমূলে এক পরমাশ্চর্য দ্বীপ আবিষ্কারের আকাক্ষাতে মরিয়া হয়ে উঠেছি। পরী সেদিন কালীবাড়িতে জ্যোৎস্না রাতে কেন যে বনের গভীরে নিয়ে আমার সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে চেয়েছিল। সবটা দেয়নি। কিছুটা দিয়েছে। এই কিছুটাই আমাকে যে পাগল করে দিচ্ছে বুঝি।

লিখতে বসে কত সব স্মৃতি আমাকে পাগল করে তুলছে। একটা লাইন নেই মাথায়। দুই পাশে দুই নারী। মিমি আর লক্ষ্মী। আরও একজন, সেই ভায়া দাদু টিউশনির বড় মেয়ে। এই বয়সে মানুষ একা হয়ে যায়। সে নারীসঙ্গের জন্য পাগল হয়ে থাকে। বুঝতে পারি আমার লেখা লিখি সবই এই নারীসঙ্গ থেকে পরিত্রাণের পথ। ইচ্ছে করলেই তো কোনো নারী সম্ভোগে এখন তৃপ্ত হতে পারি না। কত রকমের পাঁচিল চারপাশে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। বুঝতে পারছি, যতই চেষ্টা করি না কেন লেখা এখন হবে না। প্যাকেট খুলে কাগজগুলি দেখে রাখা ভাল। মাথায় মুখে চোখে জল দিয়ে এলাম।

তারপর প্যাকেট পুরো খুললে দেখলাম একটা কাগজের ডামি। ছয় ফর্মার কাগজ। সম্পাদকের নাম মিমিই সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখে রেখেছে। এমন কি প্রিন্টার্স লাইন পর্যন্ত। টাইটেল বিজ্ঞাপন সব সাজিয়ে কোথায় কোন্ গল্প যাবে, কারণ গল্প বেশি পাওয়া যায় নি, কেবল পাওয়া গেছে গুচ্ছের কবিতা। কবিতা নির্বাচন আমার। কবিতাগুলি পড়ে দেখা দরকার। আর কাগজের নাম পরী লেখেনি। আমি সম্পাদকের নামের মাথায় আরও সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখলাম—অ প রূপা। লিখে বার বার পড়লাম। অ….প…….রূ…….পা। এ যে কী আনন্দ, কী আনন্দ! ডামিটা হঠাৎ ছুঁড়ে লুফে নিলাম, তারপর সহসা জোরে আচমকা ডেকে ফেললাম—অ প রূ পা।

পাশে দেখি তখন পিলু ধড়ফড় করে উঠে বসেছে। চোখ রগড়ে বলছে, ও দাদা, তোর কি হয়েছে?

ভারি লজ্জায় পড়ে গেলাম। নিজেকে সংযত করে বললাম, না কিছু না। তুই ঘুমো।

পিলু, শুধু পিলু কেন, মায়া, মা বাবা আমাকে নিয়ে মাঝে মাঝে খুব সন্ত্রাসের মধ্যে পড়ে যান। তাঁরা বোঝে না আমি কেন দিন দিন এত গম্ভীর হয়ে যাচ্ছি। আমার পছন্দ অপছন্দের প্রতি তাঁরা আজকাল খুবই গুরুত্ব দেন। এই যে বলেছি, না তোমরা যাবে না, এটা বাবা দিন কয়েক বাদে আর একবার জিজ্ঞেস করবেন আমাকে, যাওয়াটা বোধহয় উচিত হবে। তুমি ভেবে দেখ। অর্থাৎ বাবা বুঝতে পারেন আমার মেজাজ ঠাণ্ডা থাকলে, খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা স্বভাব আমার। সময় বুঝেই কথাটা তুলবেন।

পিলু আবার শুয়ে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘুম। ভোঁস ভোঁস করে ঘুমাচ্ছে। ওর জীবনে কোন সংকটই নেই। ওকে কেন জানি ভারি হিংসা হচ্ছে। ও তো বুঝতে পারে না ভাল একটা কবিতা লিখতে না পারলে কি জ্বালা বোধ করি!

কবিতাগুলি দেখতে গিয়ে অবাক। সবই অপাঠ্য। কবিতা গোটা দুই তিন ছাপা যায়। আরে, এ যে একটা পদ্য লিখেছেন তিনি। নিচে লেখা ভূপাল চৌধুরী। সুন্দর প্যাডে লেখা, উপরে নাম, কোয়ালিফেকেশন। সব দেখে বুঝলাম, মিলের ম্যানেজার প্রবর না হয়ে যায় না। উপরে ক্রস চিহ্ন দিয়ে কেমন একটা জ্বালাবোধের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন পর প্রতিশোধ নেওয়া গেল। অর্থাৎ অমনোনীত। কবিতা ছাপার উপযুক্ত নয়। কবিতার তুমি অ আ ক খ বোঝ না। তোমার জীবন অর্থহীন।

তোমার বাবার জীবনও। সঙ্গে সঙ্গে এখন আমার হাই উঠছে। ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসছে। এতদিন পর ভিতরের যে অপমানবোধে পীড়িত হচ্ছিলাম, তা নিমেষে কেটে গেল। আমি জানি, মিমি ঠিক মিলের ম্যানেজারের কাছ থেকে কোনো বিজ্ঞাপন আদায় করেছে। সেই সূত্রে তিনি কবিতা গছিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমি সম্পাদক। এমন অপাঠ্য কবিতা ছেপে আর যাই করতে পারি অপরূপাকে হেয় করতে পারি না।

সকালে উঠে মনে হল দীর্ঘদিন পর আমি সারারাত গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলাম। কী তৃপ্তি, কী আনন্দ।