রাধারাণী
শ্রীযুক্ত শচীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁহার ‘বঙ্কিম-জীবনী’তে লিখিয়াছেন—
গৃহ-বিগ্রদ রাধাবল্লভজীউর রথযাত্রা প্রতিবৎসর মহাসমারোহে [কাঁঠালপাড়ায়] সম্পন্ন হইত। পূজনীয় যাদবচন্দ্র তখন জীবিত। বঙ্কিমচন্দ্র ১২৮২ সালে রথযাত্রার সময় ছুটী লইয়া গৃহে বসিয়া ছিলেন। রথে বহলোকের সমাগম হইয়াছিল। সেই ভিড়ে একটি ছোট মেয়ে হারাইয়া যায়। তাহার আত্মীয় স্বজনের অনুসন্ধানার্থ বঙ্কিমচন্দ্র নিজেও কিছু চেষ্টা করিয়াছিলেন। এই ঘটনার দুইমাস পরে “রাধারাণী” লিখিত হয়। আমার মনে হয়, এই ঘটনা উপলক্ষ্য করিয়া বঙ্কিমচন্দ্র “রাধারাণী” রচনা করিয়াছিলেন।—তৃতীয় সংস্করণ, পৃ. ৩০৩
বঙ্কিমচন্দ্র ১৮৭৫ খ্রীষ্টাব্দের ২৪ জুন হইতে ছুটি লইয়া কাঁঠালপাড়ায় বাস করিয়াছিলেন। ঐ সালের শেষ দিকে অর্থাৎ কার্তিক-অগ্রহায়ণ সংখ্যা ‘বঙ্গদর্শনে’ ‘রাধারাণী’ বাহির হয়। ইহা ঐ বৎসরে পুস্তকাকারেও প্রকাশিত হয়। ১৮৭৭ খ্রীষ্টাব্দে ‘উপকথা’ নামক পুস্তকে ‘রাধারাণী’ পুনর্মুদ্রিত হয় এবং পরে ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে ‘ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপন্যাসে’ও ইহা স্থান লাভ করে। ইহাতে ‘রাধারাণী’ অংশ তৃতীয় সংস্করণ বলিয়া উল্লিখিত আছে। এই অংশ স্বতন্ত্র পুস্তকাকারেও বাহির হয় (১৮৮৬); পৃষ্ঠা-সংখ্যা ৩৮। ১৮৯৩ সালে প্রকাশিত চতুর্থ সংস্করণে ইহা বর্ত্তমান আকারে পরিবর্দ্ধিত হয়। বর্ত্তমান সংস্করণ চতুর্থ সংস্করণেরই পুনর্মুদ্রণ, পৃষ্ঠা-সংখ্যা ছিল ৬৫।
প্রথম সংস্করণ ‘রাধারাণী’ আমরা সংগ্রহ করিতে পারি নাই এবং উহা ‘বঙ্গদর্শনে’ প্রকাশিত গল্পের হুবহু পুনর্মুদ্রণ কিনা, তাহাও আমাদের জানা নাই। এই কারণে ‘রাধারাণী’র পাঠভেদ দেওয়া সম্ভব হইল না।
১৯১০ খ্রীষ্টাব্দে কলিকাতা হইতে দক্ষিণাচরণ রায় ইহার একটি ইংরেজী অনুবাদ প্রকাশ করেন। শেষোক্ত অনুবাদের সঙ্গে ‘যুগলাঙ্গরীয়ে’রও অনুবাদ আছে, পুস্তকের না—The Two Rings and Radharani। অন্য কোনও ভাষায় ইহার কোনও অনুবাদ হইয়াছে বলিয়া আমরা জানি না।
অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (কার্তিক-অগ্রহায়ণ, ১২৮২)। ১৮৭৭ ও ১৮৮১ সালে উপন্যাস – অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপন্যাস সংগ্রহ গ্রন্থে সংকলিত হয়। ১৮৮৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশের সময় পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৮। ১৮৯৩ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৬৫।
[১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম প্রকাশিত। বর্তমান সংস্করণ ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মুদ্রিত চতুর্থ সংস্করণ হইতে।]