রাধারাণী

অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (কার্তিক-অগ্রহায়ণ, ১২৮২)। ১৮৭৭ ও ১৮৮১ সালে উপন্যাস – অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপন্যাস সংগ্রহ গ্রন্থে সংকলিত হয়। ১৮৮৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশের সময় পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৮। ১৮৯৩ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয়Continue Reading

প্রথম পরিচ্ছেদ

রাধারাণী নামে এক বালিকা মাহেশে রথ দেখিতে গিয়াছিল। বালিকার বয়স একাদশ পরিপূর্ণ হয় নাই। তাহাদিগের অবস্থা পূর্বে ভাল ছিল–বড়মানুষের মেয়ে। কিন্তু তাহার পিতা নাই; তাহার মাতার সঙ্গে একজন জ্ঞাতির একটি মোকদ্দমা হয়; সর্বস্ব লইয়া মোকদ্দমা;Continue Reading

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

রাধারাণীর মাতা পথ্য করিলেন বটে, কিন্তু সে রোগ হইতে মুক্তি পাইয়া, তাঁহার অদৃষ্টে ছিল না। তিনি অতিশয় ধনী ছিলেন, এখন অতি দুঃখিনী হইয়াছিলেন, এই শারীরিক এবং মানসিক দ্বিবিধ কষ্ট, তাঁহার সহ্য হইল না। রোগ ক্রমেContinue Reading

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

পাঁচ বৎসর গেল–রাধারাণী পরম সুন্দরী ষোড়শবর্ষীয়া কুমারী। কিন্তু সে অন্তঃপুরমধ্যে বাস করে, তাহার সে রূপরাশি কেহ দেখিতে পায় না। এক্ষণে রাধারাণীর সম্বন্ধ করিবার সময় উপস্থিত হইল। কামাখ্যা বাবুর ইচ্ছা, রাধারাণীর মনের কথা বুঝিয়া তাহার সম্বন্ধContinue Reading

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

দুই এক বৎসর পরে একজন ভদ্রলোক সেই অনাথনিবাসে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তাঁহার বয়স ৩৫/৩৬ বৎসর। অবস্থা দেখিয়া, অতি ধীর, গম্ভীর এবং অর্থশালী লোক বোধ হয়। তিনি সেই “রুক্মিণীকুমারের প্রাসাদের” দ্বারে আসিয়া দাঁড়াইলেন। রক্ষকগণকে জিজ্ঞাসা করিলেন,Continue Reading

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

যিনি আসিয়াছিলেন, তাঁহার পরিচ্ছদ সচরাচর বাঙ্গালী ভদ্রলোকের মত; বিশেষ পারিপাট্য, অথবা পারিপাট্যের বিশেষ অভাবও কিছু ছিল না, কিন্তু তাঁহার অঙ্গুলিতে একটি হীরকাঙ্গুরীয় ছিল; তাহা দেখিয়া রাধারাণীর কর্মকারগণ অবাক হইয়া তৎপ্রতি চাহিয়া রহিল, এত বড় হীরাContinue Reading

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

বাহিরে আসিয়া, মুখে চক্ষে জল দিয়া অশ্রচিহ্ন বিলুপ্ত করিয়া, রাধরাণী ভাবিতে লাগিল। ভাবিল, ইনিই ত রুক্মিণীকুমার। আমিও সেই রাধারাণী। দুইজনে দুইজনের জন্য মন তুলিয়া রাখিয়াছি। এখন উপায়? আমি যে রাধারাণী, তা উহাকে বিশ্বাস করাইতে পারি–তারContinue Reading

সপ্তম পরিচ্ছেদ

ভগবান বুঝি, সে কথাও শুনিলেন। বিশুদ্ধচিত্তে যাহা বলিবে, তাহাই বুঝি তিনি শুনেন। রাধারাণী মৃদু হাসি হাসিতে হাসিতে, গজেন্দ্রমনে রুক্মিণীকুমারের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন। রুক্মিণীকুমার তখন বলিলেন, “আপনি আমাকে বিদায় দিয়াও যান নাই, আমি যে কথাContinue Reading

অষ্টম পরিচ্ছেদ

রাধারাণীর আজ্ঞা পাইয়া, দেওয়ানজি আসিয়া রাজা দেবেন্দ্রনারায়ণকে বহির্বাটিতে লইয়া গিয়া যথেষ্ট সমাদর করিলেন। যথাবিহিত সময়ে রাজা দেবেন্দ্রনারায়ণ ভোজন করিলেন। রাধারাণী স্বয়ং উপস্থিত থাকিয়া তাঁহাকে ভোজন করাইলেন। ভোজনান্তে রাধারাণী বলিলেন, “আপনার নগদ দুইটাকা ও কাপড় এখনওContinue Reading