» নিশীথ রাক্ষসীর কাহিনী

প্রথম পরিচ্ছেদ “ভাল, সারি, সত্য বল দেখি, তোমার বিশ্বাস কি? ভূত আছে?” বরদা, ছোট ভাই সারদাকে এই কথা জিজ্ঞাসা করিল। সন্ধ্যার পর, টেবিলে দুই ভাই খাইতেছিল-একটু রোষ্ট মটন প্লেটে করিয়া, ছুরি কাঁটা দিয়া তৎসহিত খেলাContinue Reading

» মাসিক সংবাদ

গঙ্গাতীরে পাটনা নামে এক নগর আছে। তথায় কর্কুড নামা প্রথিতযশা অতি জ্ঞানবান্ এক বিচারপতি জনসমাজের প্রতি কৃপা করিয়া মাসিক আড়াই হাজার টাকামাত্র বেতন লইয়া বিচার বিতরণ করিতেন। তাহাতে পুণ্যক্ষেত্র পাটলিপুত্র পবিত্রিত হইতেছিল। একদা, বুধিয়া নাম্নীContinue Reading

» ঋতুবর্ণন

কাব্যের দুইটি উদ্দেশ্য; বর্ণন ও শোধন। এই জগৎ শোভাময়। যাহা দেখিতে সুন্দর, শুনিতে সুন্দর, যাহা সুগন্ধ, যাহা সুকোমল, তৎসমুদায় বিশ্ব পরিপূর্ণ। কাব্যের উদ্দেশ্য সৌন্দর্য, কিন্তু সৌন্দর্য খুঁজিতে হয় না— এ জগৎ যেমন দেখি, তেমনি যদিContinue Reading

» মানস বিকাশ

বাঙ্গালা সাহিত্যের আর যে দুঃখই থাকুক, উৎকৃষ্ট গীতিকাব্যের অভাব নাই। বরং অন্যান্য ভাষার অপেক্ষা বাঙ্গালায় এই জাতীয় কবিতার আধিক্য। অন্যান্য কবির কথা না ধরিলেও, একা বৈষ্ণব কবিগণই ইহার সমুদ্রবিশেষ। বাঙ্গালার সর্বোৎকৃষ্ট কবি—জয়দেব—গীতিকাব্যের প্রণেতা। পরবর্তী বৈষ্ণবContinue Reading

» আগামী বৎসরে প্রচার যেরূপ হইবে

আমরা পূর্বেই বলিয়াছি, যাহা সঙ্কল্প করা যায়, তাহা সকল সময়ে সম্পন্ন হয় না। যখন প্রচার প্রথম প্রকাশ হয়, তখন আমাদের এমন অভিপ্রায় ছিল না যে, প্রচার কেবল ধর্মবিষয়ক পত্র হইবে। কিন্তু প্রচারের লেখকদিগের রুচির গতিকে,Continue Reading

» কৃষ্ণচরিত্র*

বঙ্গদর্শনের দ্বিতীয় খণ্ডে মানস বিকাশের সমালোচনায় কথিত হইয়াছে যে, যেমন অন্যান্য ভৌতিক, আধ্যাত্মিক বা সামাজিক ব্যাপার নৈসর্গিক নিয়মের ফল, কাব্যও তদ্রূপ। দেশভেদে ও কালভেদে কাব্যের প্রকৃতিগত প্রভেদ জন্মে। ভারতীয় সমাজের যে অবস্থার উক্তি রামায়ণ, মহাভারতContinue Reading

» জাতিবৈর

ভারতবর্ষীয় যে কোন ইংরেজি সম্বাদপত্র (ইংরেজি সম্বাদপত্র অর্থে ইংরেজের দ্বারা সম্পাদিত সম্বাদপত্র) আমরা হস্তে গ্রহণ করি না কেন, সন্ধান করিলে অবশ্যই দেখিব যে, তাহার কোন স্থানে না কোন স্থানে দেশীয় লোকদিগের উপর কিছু গালি—কিছু অন্যায়Continue Reading

» লর্ড রিপণের উৎসবের জমা-খরচ

এ উৎসবে আমরা পাইলাম কি? হারাইলাম কি? যে সঞ্চয়ী লোক, সে সকল সময়ে আপনার জমা-খরচটা খতাইয়া দেখে। আমাদের জাতীয় জমা-খরচটার মধ্যে মধ্যে কৈফিয়ৎ কাটিয়া দেখা ভাল। আগে দেখা যাউক, আমাদের লাভের অঙ্কে কি? প্রথমতঃ, আমরাContinue Reading

» জ্ঞান সম্বন্ধে দার্শনিক মত

ন্যায়দর্শনের সঙ্গে বাঙ্গালি মাত্রেরই একটি বিশেষ সম্বন্ধ আছে। যদি কেহ আমাদিগকে বলে যে, তোমরা এত বড়াই কর, কিন্তু কোন্ বিষয়ে তোমাদের পূর্বপুরুষেরা পৃথিবীবাসী অন্যান্য জাতির অপেক্ষা গৌরব লাভ করিয়াছিলেন, তাহা হইলে, আমরা আর কিছু বলিতেContinue Reading

» আদি ব্রাহ্ম সমাজ ও “নব হিন্দু সম্প্রদায়”

বাবু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্প্রতি একটি বক্তৃতা করেন। তাহা অগ্রহায়ণের “ভারতী”তে প্রকাশিত হইয়াছে। প্রস্তাবটির শিরোনাম, “একটি পুরাতন কথা।” বক্তৃতাটি শুনি নাই, মুদ্রিত প্রবন্ধটি দেখিয়াছি। নিম্নস্বাক্ষরকারী লেখক তাহার লক্ষ্য। ইহা আমার পক্ষে কিছুই নূতন নহে। রবীন্দ্র বাবুContinue Reading

» প্রাপ্ত গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত সমালোচনা

(সম্পাদকীয় উক্তি) বহুসংখ্যক গ্রন্থ আমাদিগের নিকট অসমালোচিত রহিয়াছে। গ্রন্থকারগণও ব্যস্ত হইয়াছেন। কেন সে সকল গ্রন্থ এ পর্যন্ত সমালোচিত হয় নাই, তাহা যে বুঝে না, তাহাকে বুঝান দায়। বুঝাইতেও আমরা বাধ্য কি না তদ্বিষয়ে সন্দেহ। কিছুContinue Reading

» জন ষ্টুয়ার্ট মিল

মিলের মৃত্যু হইয়াছে। আমরা কখন তাঁহাকে চক্ষে দেখি নাই; তিনিও কখন বঙ্গদর্শনের পরিচয় গ্রহণ করেন নাই। তথাপি আমাদিগের মনে হইতেছে যেন আমাদিগের কোন পরম আত্মীয়ের সহিত চিরবিচ্ছেদ হইয়াছে। ২৭ বৈশাখ তারিখের টেলিগ্রাম ২৮ তারিখে প্রকাশContinue Reading

» সূচনা [‘প্রচার’]

আমাদিগের এই মাসিক পত্রখানি অতি ক্ষুদ্র। এত ক্ষুদ্র পত্রের একটা বিস্তারিত মুখবন্ধ লেখা কতকটা অসঙ্গত বোধ হয়। বড় বড় এবং ভাল ভাল এত মাসিক পত্র থাকিতে আবার একখানি এমন ক্ষুদ্র পত্র কেন? সেই কথা বলিবারContinue Reading

» বৃত্রসংহার

এই মহাকাব্যের বিষয়, ইন্দ্রকৃত বৃত্রের বধ। হেমবাবু পৌরাণিক বৃত্তান্তের অবিকল অনুসরণ করেন নাই—অনেক স্থানেই নিজ কল্পনাকে স্ফুরিত করিয়াছেন। পাতালে, বৃত্রজিত, নির্বাসিত দেবগণ মন্ত্রণায় নিযুক্ত। এই স্থানে গ্রন্থারম্ভ। প্রথম সর্গ পড়িয়া অনেকেরই পাণ্ডিমোনিয়ামে মন্ত্রণানিযুক্ত দেবদূতগণের কথাContinue Reading

» দুর্গা

শ্রীকৃষ্ণ এবং দুর্গা এই বঙ্গদেশের প্রধান আরাধ্য দেবতা। ইঁহাদিগের পূজা না করে এমত হিন্দু প্রায় বঙ্গদেশে নাই। কেবল পূজা নহে, কৃষ্ণভক্তি ও দুর্গাভক্তি এ দেশের লোকের সর্বকর্মব্যাপী হইয়াছে। প্রভাতে উঠিয়া শিশুরাও “দুর্গা দুর্গা” বলিয়া গাত্রোত্থানContinue Reading

» বঙ্গদর্শন

যখন বঙ্গদর্শনের চতুর্থ খণ্ড সমাপ্ত করিয়া আমি পাঠকদিগের নিকট বিদায় গ্রহণ করি, তখন স্বীকার করিয়াছিলাম যে, প্রয়োজন দেখিলে স্বতঃ হউক অন্যতঃ হউক বঙ্গদর্শন পুনর্জীবিত করিব। বঙ্গদর্শনের লোপ জন্য আমি অনেকের কাছে তিরস্কৃত হইয়াছি। সেই তিরস্কারেরContinue Reading

» কল্পতরু*

গদ্যোপন্যাসকে সচরাচর আমরা কাব্যই বলিয়া থাকি। কাব্যের বিষয় মনুষ্যচরিত্র। মনুষ্যচরিত্র ঘোরতর বৈচিত্রবিশিষ্ট। মনুষ্য স্বভাবতঃ স্বার্থপর, এবং মনুষ্য স্বভাবতঃ পরদুঃখে দুঃখী এবং পরোপকারী। মনুষ্য পশুবৃত্ত, এবং মনুষ্য দেবতুল্য। সকল মনুষ্যের চরিত্রই এইরূপ বৈচিত্রবিশিষ্ট; এমন কেহ নাইContinue Reading

» প্রাপ্ত গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত সমালোচন

হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠতা। শ্রীরাজনারায়ণ বসু প্রণীত। কলিকাতা জাতীয় যন্ত্র। এই গ্রন্থ, এবং ইহার পরে যে গ্রন্থের উল্লেখ করা যাইতেছে, এই দুই গ্রন্থের সমালোচনায় প্রবৃত্ত হইয়া, আমরা একটি আনন্দ অনুভব করিতেছি। আমরা সচরাচর বাঙ্গালা গ্রন্থের অপ্রশংসাContinue Reading

» বঙ্গদর্শনের বিদায় গ্রহণ

চারি বৎসর গত হইল বঙ্গদর্শন প্রকাশ আরম্ভ হয়। যখন ইহাতে আমি প্রবৃত্ত হই তখন আমার কতকগুলি বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল। পত্রসূচনায় কতকগুলি ব্যক্ত করিয়াছিলাম; কতকগুলি অব্যক্ত ছিল। যাহা ব্যক্ত হইয়াছিল, এবং যাহা অব্যক্ত ছিল, এক্ষণে তাহারContinue Reading

» বঙ্গে দেবপূজা

প্রতিবাদ কার্তিক মাসের ভ্রমরে শ্রীঃ স্বাক্ষরিত “বঙ্গে দেবপূজা” নামক প্রবন্ধ সম্বন্ধে আমার কিছু বলিবার কথা আছে। শ্রীঃ মহাশয়ের কথার রীতিমত প্রতিবাদ করিতে গেলে যে সময় লাগে তাহা আমার নাই; এবং যে স্থান লাগে তাহা ভ্রমরেরContinue Reading