ছেলেবেলার গল্প

ছেলেবেলাকার গল্প গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় এপ্রিল ১৯৩৮ খৃষ্টাব্দ মুতাবেক বৈশাখ, ১৩৪৫ বঙ্গাব্দে। প্রকাশক এম. সি সরকার এণ্ড সন্স, কলকাতা। গ্রন্থটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর (১৬ই জানুয়ারি, ১৯৩৮ খৃষ্টাব্দ) তিন মাস পরে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে ইলাস্ট্রেশনসহ সাতটি গল্প সঙ্কলিত হয়েছিল। ক্রমানুসারে গল্পগুলো হচ্ছে— লালু, ছেলেধরা, কলকাতার নতুন-দা, লালু, বছর পঞ্চাশ পূর্বের একটি দিনের কাহিনী, লালু এবং দেওঘরের স্মৃতি। শরৎ রচনা সম্ভারে গ্রন্থটির নাম ‘বাল্যকালের গল্প’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে— এই নামটিই আমরা গ্রহণ করেছি।

লালু নামে তিনটি গল্পটি লিখেছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, এবং গল্পগুলো একই সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। লালু শিরোনামের প্রথম গল্পটি ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের (১৯৩৭ খৃষ্টাব্দ) চৈত্র সংখ্যা ‘মৌচাক’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই গল্পের উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলো হচ্ছে—কেন্দ্রীয় চরিত্র লালু, লালুর বাবা উকিল, লালুর মা নন্দরাণী, নন্দরাণীর গুরুদেব স্মৃতিরত্ন ঠাকুরমশাই।

লালু শিরোনামের দ্বিতীয় গল্পটি ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের (১৯৩৭ খৃষ্টাব্দ) কবি নরেন্দ্র দেব ও তাঁর স্ত্রী কবি রাধারাণী দেবী সম্পাদিত পূজা-বার্ষিকী (শারদ সংখ্যা) ‘সোনার কাঠি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই গল্পের উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলো হচ্ছে—কেন্দ্রীয় চরিত্র লালু, চাটুজ্জে মশায় বা মনোহর চাটুজ্জে, পুরুত প্রমুখ।

লালু শিরোনামের তৃতীয় গল্পটির পত্রিকায় প্রকাশনার বিষয়ে কোন তথ্য জানা যায় না। এই গল্পের উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলো হচ্ছে—কেন্দ্রীয় চরিত্র লালু, গোপালখুড়ো (তার জীবনের ব্রত হ’ল মরা পোড়ানো), বিষ্টু ভট্‌চায (লালুদের ছেলেবেলার বাংলা শিক্ষক, পণ্ডিত মশাই বা গুরু, তিনি ছিলেন গরীব, পণ্ডিত ও চিররুগ্ণ এবং চিরদিন স্ত্রীর উপর নির্ভরশীল), নরু, নির্মল, মণি প্রমুখ। এই তিনটি গল্পকেই আমরা ‘লালু’ শিরোনামে একত্রিত করেছি।

‘ছেলেধরা’ গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় সাহিত্যিক শ্রীব্রজমোহন দাস সম্পাদিত পূজা-বার্ষিকী (শারদ) সংখ্যা ‘ছোটদের আহরিকা’ পত্রিকায় ১৩৪২ বঙ্গাব্দে (১৯৩৫ খৃষ্টাব্দ)।

‘কলকাতার নতুন-দা’ গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় সাহিত্যিক শ্রীপ্রেমেন্দ্র মিত্র সম্পাদিত বার্ষিকী (বার্ষিক প্রকাশন) ‘গল্পের মণিমালা’ পত্রিকায় ১৩৪৪ বঙ্গাব্দে (১৯৩৭-১৯৩৮ খৃষ্টাব্দ)। এটি ‘ছেলেবেলাকার গল্প’ নামক গ্রন্থের তৃতীয় গল্প। এই গল্পটির বিশেষত্ব হলো, এটি লেখকের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস শ্রীকান্ত, প্রথম পর্বের সপ্তম পরিচ্ছেদের অংশবিশেষ।

‘বছর-পঞ্চাশ পূর্বের একটা দিনের কাহিনী’ গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের (১৯৩৫ খৃষ্টাব্দ) আশ্বিন-কার্তিক সংখ্যা ‘পাঠশালা’ নামক ছেলেদের মাসিক পত্রিকায়।

এই গল্পটি ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের (১৯৩৭ খৃষ্টাব্দ) আষাঢ় সংখ্যা ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। এরপর এপ্রিল, ১৯৩৮ খৃষ্টাব্দ (বৈশাখ, ১৩৪৫ বঙ্গাব্দ) গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, ২০১, কর্ণওয়ালিস ষ্ট্রীট, কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘ছেলেবেলাকার গল্প’ নামক গ্রন্থের সপ্তম ও শেষ গল্প।