ভারতনাট্যম
‘ভারতনাট্যম’ মাসুদরানা সিরিজের দ্বিতীয় বই, এবং এটি লেখকের এই সিরিজের একটি মৌলিক রচনাও। কাহিনী তেমন কিচ্ছু না, ভারতীয় সাংস্কৃতিক দল এসেছে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অনুষ্ঠান করতে। মেজর জেনারেল রাহাত খান তাদের মাঝে ঘাপলা দেখতে পেলেন। নজর রাখতে গিয়ে (তৎকালীন) পিসিআইয়ের একজন এজেন্ট মারা পড়েছে। এবার পাঠানো পিসিআইয়ের মাসুদ রানাকে ফটোগ্রাফারের ছদ্মবেশে। রানা কি পারবে তাদের দুরভিসন্ধি জেনে আসতে? কিন্তু কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে পড়ল মোলাসেস সেন্ট— অর্থাৎ চিটাগুড়ের গন্ধ। ব্যাপার কী? এ যে বিষাক্ত কেউটের চেয়েও ভয়ঙ্কর! রানার মৃত্যুসংবাদ প্রচার করেও কি ধোঁকা দেয়া গেল ওদের?
প্রথম বই ‘ধ্বংস পাহাড়ে’র তুলনায় ‘ভারতনাট্যমে’র লেখনী আরেকটু আঁটসাট, স্মার্ট। সুলতার সাথে রানার সম্পর্ক যেমন মেলোড্রামাটিক, এটায় তা অনেকটাই অনুপস্থিত। মিত্রাকেও ভাল লেগেছে বেশ, নিজ দেশ আর প্রেমের প্রতি দোদুল্যমানতাটা আরোপিত লাগেনি। জয়দ্রথ মৈত্র মশাইও নেগেটিভ চরিত্র হিসেবে ঠিকঠাক।
তবে জুয়ার আড্ডায় রানার টানা চার দান জিতে ফেলাটা নাটকীয়ই ছিল। যদিও তার জুয়া ভাগ্য বরাবরই অবিশ্বাস্য।
ধ্বংস পাহাড়ের তুলনায় রানাও বেশ অনেকটা পরিণত এই বইয়ে। সাথে সোহেলের প্রথম প্রবেশ। সোহেলের হাত কাটা পড়ার মিশন নিয়ে ভিন্ন একটি বই হলেও মন্দ হতো না। ধ্বংস পাহাড়ে মাসুদ রানা ‘সিনিয়র সার্ভিস’ পান করত, এই বইয়ে ধরেছে ৫৫৫ সিগারেট।
বর্তমান সংস্করণে আমরা ‘ভারতনাট্যমে’র অসংক্ষেপিত সংস্করণ অনুসরণ করেছি। এটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৬ সালে সেবা প্রকাশনী থেকে।