» » তারও আগে যা ঘটেছিল

বর্ণাকার

বিশ্রামাগার থেকে বেরিয়ে কোথায় যাবে ভাবছিলো মাহমুদ, পেছনে কে যেন নাম ধরে ডাকলো। ফিরে তাকিয়ে দেখে শাহাদাত দাঁড়িয়ে।

পরনে একটা পায়জামা, গায়ে পাঞ্জাবি আর হাতে গুটিকয় বই।

কিহে, এখানে কোথায় এসেছিলে?

পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হতে মনটা ভালো হয়ে গেলো মাহমুদের।

শাহাদাত বললো, প্রেসের কিছু টাকা পাওনা ছিলো একজনের কাছে। দু-বছর আগের টাকা, হেঁটে হেঁটে সারা হলুম, আজ দেবো কাল দেবো করে ব্যাটা শুধু ঘুরাচ্ছে আমায়।

মাহমুদ গম্ভীর হয়ে বললো, বাকি দাও কেন?

শাহাদাত বললো, আগে কয়েকটা কাজ করিয়েছিলো তাই দিয়েছি।

হুঁ। মাহমুদ চুপ করে গেলো।

খানিকক্ষণ পর শাহাদাত আবার বললো, তুমি তো, আজকাল আর ওদিকে আসো না, আমেনা প্রায়ই তোমার কথা জিজ্ঞেস করে। আসো না একদিন।

মাহমুদ বললো, আসবো।

শাহাদাত শুধালো, কবে?

মাহমুদ বললো, সে দেখা যাবে পরে। এসো তোমাকে এক কাপ চা খাওয়াই।

পুরোনো বন্ধুকে সাথে নিয়ে আবার বিশ্রামাগারে ফিরে এলো মাহমুদ।

কোণের একখানা টেবিলে এসে দুজনে বসলো ওরা।

নঈম আর রফিক ঝুঁকে পড়ে নিজেদের মধ্যে কি যেন আলাপ করছে। খোদাবক্স কাউন্টার থেকে মুখ তুলে মাহমুদকে এবং বিশেষ করে শাহাদাতকে লক্ষ্য করলো, উৎসুক চোখে। নতুন খদ্দের। এর আগে কখনো দেখে নি তাকে।

এক কাপ চায়ের অর্ডার দিলো মাহমুদ।

শাহাদাত বললো, তুমি খাবে না?

না। এই একটু আগে এক কাপ খেয়ে বেরিয়েছি।

পকেট হাতড়ে বিড়ি আছে কিনা দেখলো মাহমুদ। বিড়ি নেই। মুখখানা গুমোট করে বসে রইলো সে।

শাহাদাত শুধালো, কি হয়েছে?

মাহমুদ বললো, না, কিছু না। চুপ করে কেন, কথা বলো, ছেলে-মেয়েরা সব কেমন আছে?

ওদের কথা আর বলে না, হতাশ গলায় বললো শাহাদাত, বড়টার পেটের অসুখ আর ছোটটা সর্দি-কাশিতে ভুগছে।

হুঁ। টেবিলে কনুই ঠেকিয়ে হাতের তালুতে মুখ রাখলে মাহমুদ। বয় এসে সামনে চা নামিয়ে রাখতে বললো, নাও, চা খাও।

শাহাদাত নীরবে চা খেতে লাগলো।

মাহমুদ চুপচাপ।