চোর-ডাকাত

কে তোমায় বলে ডাকাত বন্ধু, কে তোমায় চোর বলে?

চারিদিকে বাজে ডাকাতি ডঙ্কা, চোরেরই রাজ্য চলে!

চোর-ডাকাতের করিছে বিচার কোন সে ধর্মরাজ?

জিজ্ঞাসা করো, বিশ্ব জুড়িয়া কে নহে দস্যু আজ?

বিচারক! তব ধর্মদণ্ড ধরো,

ছোটোদের সব চুরি করে আজ বড়োরা হয়েছ বড়ো!

যারা যত বড়ো ডাকাত-দস্যু জোচ্চোর দাগাবাজ

তারা তত বড়ো সম্মানী গুণী জাতি-সংঘেতে আজ।

রাজার প্রাসাদ উঠিছে প্রজার জমাট-রক্ত-ইঁটে,

ডাকু ধনিকের কারখানা চলে নাশ করি কোটি ভিটে।

দিব্যি পেতেছ খল কলওলা মানুষ-পেষানো কল,

আখ-পেষা হয়ে বাহির হতেছে ভূখারি মানব-দল!

কোটি মানুষের মনুষ্যত্ব নিঙাড়ি কলওয়ালা

ভরিছে তাহার মদিরা-পাত্র, পুরিছে স্বর্ণ-জালা!

বিপন্নদের অন্ন ঠাসিয়া ফুলে মহাজন-ভুঁড়ি

নিরন্নদের ভিটে নাশ করে জমিদার চড়ে জুড়ি!

পেতেছে বিশ্বে বণিক-বৈশ্য অর্থ-বেশ্যালয়,

নীচে সেথা পাপ-শয়তান-সাকি, গাহে যক্ষের জয়!

অন্ন, স্বাস্থ্য, প্রাণ, আশা, ভাষা হারায়ে সকল-কিছু

দেউলিয়া হয়ে চলেছে মানব ধ্বংসের পিছু পিছু।

পালাবার পথ নাই,

দিকে দিকে আজ অর্থ-পিশাচ খুঁড়িয়াছে গড়খাই।

জগৎ হয়েছে জিন্দানখানা, প্রহরী যত ডাকাত –

চোরে-চোরে এরা মাসতুতো ভাই, ঠগে ও ঠগে স্যাঙাত।

কে বলে তোমায় ডাকাত, বন্ধু কে বলে করিছ চুরি?

চুরি করিয়াছ টাকা ঘটি, বাটি, হৃদয়ে হানোনি ছুরি!

ইহাদের মতো অমানুষ নহ, হতে পার তস্কর,

মানুষ দেখিলে বাল্মীকি হও তোমরা রত্নাকর!