☼ বিনোদ ঘোষাল ☼
রূপনগরের পিশাচিনী
‘রূপনগরের পিশাচিনী’ গ্রন্থটি রচনা করেছেন বিনোদ ঘোষাল; এই গ্রন্থে একটি উপন্যাস ও পাঁচটি ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে। এই গ্রন্থের প্রতিটি গল্পের বিষয় বস্তু মোটামুটি প্রেম আর যৌনতা বিষয়ক। ‘রূপনগরের পিশাচিনী’র প্রথম প্রকাশ বইমেলা ২০১৯, মাঘ ১৪২৫। গ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছে – “প্রাচীন ভারতবর্ষের সকল গণিকাকে”।
গ্রন্থের শুরুতেই রয়েছে উপন্যাস ‘রূপনগরের পিশাচিনী’; এটির নামেই গ্রন্থের নাম। উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল দেব সাহিত্য কুটিরের ১৪২৫ বঙ্গাব্দের ‘শারদীয়া নবকল্লোলে’। ‘রুপনগরের পিশাচিনী’ নাম শুনে মনে হতে পারে রূপনগর নামক কোন নগরের এক পিশাচিনীর কাহিনী এটি; কিন্তু না, এটি একটি ভিন্নধারার উপন্যাস— প্রাপ্তমনস্ক রূপকথা। ‘রূপনগরের পিশাচিনী’তে লেখকের অসাধারণ লেখন শৈলীর প্রকাশ পেয়েছে।
কলকাতার উপকণ্ঠে গড়ে উঠেছে এক অত্যাধুনিক শহর— কাল্পনিক রূপকথার শহর— রূপনগর। উপন্যাসের শুরুতে এই শহর সম্পর্কে লেখক জানাচ্ছেন— “কলকাতা শহর থেকে বেশ কিছুটা দূরে গড়ে উঠেছে আরেকটি শহর। নাম রূপনগর। রূপে, আভিজাত্যে সে প্রতিদিন গুনে গুনে দশ-বিশ গোল দেয় কলকাতাকে।”
“প্রাচীন ভারতবর্ষের এক শহরের সেট তৈরি। কী নিখুঁতভাবে গড়া এই নগরী। প্রতিটি বাড়ি যেন পাথর কুঁদে গড়া। অসামান্য সব ভাস্কর্য বাড়িগুলির গায়ে, পথের দুইপাশে। সব ভাস্কর্যই নারী ও পুরুষের মিলনভঙ্গি।”
সেই রূপনগরে রয়েছ প্রাচীন ভারতবর্ষের আদলে গড়া রূপমঞ্জরী। যার সাথে মিল আছে প্রাচীন ভারতের খাজুরাহোর। এখানে প্রতিভাময়ী গণীকাদের চাকরি দেওয়া হয়, কেননা, প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে ‘কামকলা’ যেমন একটা শিল্প ছিল, রূপনগরেও কামকলা তদ্রূপ শিল্প। প্রথমে মনে হতে পারে কলকাতার পাশেই কেন গড়ে উঠল রূপনগর? এরপর মনে পড়বে, কলকাতার ঠিক কাছেই তো রয়েছে সোনাগাছি; সেখানে কাম জীবিকার উপায় মাত্র, সেখানে কামের কোন শৈল্পিক সুষমা নেই। কিন্তু এই রূপনগরের কাম হল একটা খেলা— একটা শিল্প।
যাকে বলা হল ‘রূপনগরের পিশাচিনী’, যাকে নিয়ে এই কাহিনী সেও একজন গণীকা। তার নাম রূপসা যার আছে এক আশ্চর্য শক্তি যার জন্যে দেশ-দেশান্তর থেকে ছুটে আসে পুরুষের দল। সেই শ্যামবর্ণা রূপসার শরীর ভোগ করে ধর্ষকামী চেতনা শীতল করতে সারাপৃথিবী থেকে ছুটে আসা ধনকুবেরা।
রূপনগর এমন একটি নগর যেখানে যে যখন খুশি, রাস্তা-ঘাটে, ছাদে যৌনসঙ্গম করতে পারে। তবুও পুরুষেরা কেন তার কাছেই ছুটে আসে?
রূপসার উপকথায় লেখা আছে তার প্রেম থেকে যৌন ব্যবসায় উঠে আসার কথা; আছে দীপুদার সাথে বটতলাতে প্রথম চুম্বনের ও দীপুদার যৌনাঙ্গ শক্ত হবার কথা। আরও আছে তার দাদা বিলু তার খদ্দের নিয়ে আসার কথা। এই সব উপকথার মধ্যেই একদিন সেই রূপনগরে প্রবেশ ঘটল এক অন্যরকম পুরুষের যার স্পর্শে রূপসার জীবন গেল বদলে। কী ঘটল? কি আশ্চর্য শক্তি ছিল রুপসার? কে সেই পুরুষ?
এইসব প্রশ্নের জবাব পেতে পড়ে ফেলুন ‘রূপনগরের পিশাচিনী’।
শহরের ব্যস্ততা আর কোলাহল থেকে দুরে পালাতে কৌশিক নিজের বন্ধুর দাদার সাহায্যে এসে উঠেছিল উত্তরপাড়ার এক নিরিবিলি সুপ্রাচীন পোড়োবাড়িতে। সেখানে পৌঁছাতেই সে অনুভব করে এক মিষ্টি গন্ধ আর এক নারী অবয়বের। কে সেই নারী? কি ছিল সেই গন্ধে?
‘রূপনগরের পিশাচিনী’তে যে সকল গল্প রয়েছে—