রক্তাম্বরধারিণী-মা
রক্তাম্বর পরো মা এবার
জ্বলে পুড়ে যাক শ্বেত বসন
দেখি ওই করে সাজে মা কেমন
বাজে তরবারি ঝনন ঝন।
সিঁথির সিঁদুর মুছে ফেলো মা গো,
জ্বালো সেথা জ্বালো কাল-চিতা
তোমার খড়্গ-রক্ত হউক
স্রষ্টার বুকে লাল ফিতা।
এলোকেশে তব দুলুক ঝঞ্ঝা
কালবৈশাখী ভীম তুফান,
চরণ-আঘাতে উদ্গারে যেন
আহত বিশ্ব রক্ত-বান।
নিশ্বাসে তব পেঁজা-তুলো সম
উড়ে যাক মা গো এই ভুবন,
অসুরে নাশিতে হউক বিষ্ণু–
চক্র মা তোর হেম-কাঁকন।
টুঁটি টিপে মারো অত্যাচারে মা,
গলহার হোক নীল ফাঁসি,
নয়নে তোমার ধূমকেতু-জ্বালা
উঠুক সরোষে উদ্ভাসি।
হাসো খলখল দাও করতালি
বলো হরহর শঙ্কর!
আজ হতে মা গো অসহায়সম
ক্ষীণ ক্রন্দন সম্বরো।
মেখলা ছিঁড়িয়া চাবুক করো মা
সে চাবুক করো নঊ-তড়িৎ,
জালিমের বুক বেয়ে খুন ঝরে
লালে লাল হোক শ্বেত হরিৎ।
নিদ্রিত শিবে লাথি মারো আজ,
ভাঙো মা ভোলার ভাঙ-নেশা,
পিয়াও এবার অ-শিব গরল
নীলের সঙ্গে লাল মেশা।
দেখা মা আবার দনুজ-দলনী
অশিব-নাশিনী চণ্ডী-রূপ;
দেখাও মা ওই কল্যাণ-করই
আনিতে পারে কি বিনাশ-স্তূপ।
শ্বেত শতদলবাসিনী নয় আজ
রক্তাম্বরধারিণী মা,
ধ্বংসের বুকে হাসুক মা তোর
সৃষ্টির নব পূর্ণিমা।