» » কালোচিতার ফটোগ্রাফ

বর্ণাকার

আধঘণ্টা সময় চলে গেল। ইতিমধ্যে বাস ইঞ্জিন সারিয়ে চলে গেছে গ্যাংটকের দিকে। কোমল শেষপর্যন্ত বাধ্য মেয়ের মত কথা শুনেছে। মিলিটারি অফিসারটি এতক্ষণ ব্যস্ত ছিলেন ওপরওয়ালাদের সঙ্গে ওয়ারলেসে কথা বলতে। এর মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ির সেপাইটির কথা মত ওরা এক নম্বর গুহা আবিষ্কার করে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছেন। নিহত এবং আহত লোকগুলোকে ওঁরা ধরতে পেরেছেন। আহত পুলিশটি জবানবন্দি দিয়েছে।

শেষপর্যন্ত অফিসারটি প্রদীপের কাছে এগিয়ে এল। দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছিল বলে প্রদীপ জিপে উঠে বসেছিল। লোকটি জিজ্ঞাসা করল, ‘আপনার কাছে অস্ত্র আছে?’

‘না।’ সরাসরি মিথ্যে কথা বলল প্রদীপ। ‘যদিও ওর পায়ের নিচে কেড়ে নেওয়া আধুনিক অস্ত্র এবং পকেটে পিস্তলটা রয়েছে তখনও। তা হলে ওদের সঙ্গে লড়াই করলেন কী করে?’

‘ওদের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে।’

‘সেটা কোথায়?’

‘ওখানেই ফেলে এসেছি।’

‘বেশ। আপনি এখন এগিয়ে যান। আঙ্কলস শপের সামনে পৌঁছে মাঝরাস্তায় দাঁড়াবেন। কিন্তু জিপ থেকে নামবেন না। আমরা জায়গাটাকে ঘিরে ফেলছি। লেট দেম কাম আউট। ওরা যেন বিশ্বাস করে ওদেরই জিপ ফিরে এসেছে। ওকে?’ অফিসার ঘড়ি দেখল।

প্রদীপ ঘাড় নাড়ল। তারপর জিপ চালু করল।

এ ছাড়া উপায় ছিল না। তার একার পক্ষে অতবড় সংগঠিত দলের সঙ্গে মোকাবিলা করতে যাওয়া মানে আত্মহত্যা করা এটা সে জানত। তবু কোমলকে নিয়ে জিপে করে এগিয়ে যাওয়ার সময় সে বেশ ধন্দে ছিল। তখন আঙ্কলস শপ কোথায় তা না জানা থাকায় সোজা গ্যাংটকে পৌঁছে যেত। এখন একটা যুদ্ধ সামনে অপেক্ষা করছে। টোপ হিসেবে জিপটাকে নিয়ে সে এগিয়ে যাচ্ছে। এই মিলিটারি অফিসারকে সে কিছু সত্য গোপন করে গিয়েছে। দার্জিলিং-এর ভদ্রলোকের টোপ গিলে যে সে এসেছিল একথা বলেনি। বলেছে ট্যুরিস্ট হিসাবে এই অঞ্চলে বেড়াতে এসে হত্যাকাণ্ড আবিষ্কার করে সে বিপাকে পড়ে গিয়েছে। সুজাতা বা লিটনের প্রসঙ্গ বলার কোনও প্রয়োজন হয়নি। ইতিমধ্যে যাচাই করে তথ্যের সত্যতা মিলিটারি অফিসার পেয়েছেন বটে কিন্তু ওঁরা তার সম্পর্কে কখনওই সন্দেহ মুক্ত হতে পারেন না। যে ঘটনাই এখন ঘটাতে থাক তারপর জীবিত অবস্থায় সে থাকলে অনেক জবাবদিহি তাকে দিতে হবে। আত্মরক্ষা করার জন্যে সে মানুষ মারতে বাধ্য হয়েছে সেটা প্রয়োগ করতে তাকে হিমসিম খেতে হবে।

হঠাৎ ওয়াকিটকির সিগন্যাল শুনতে পেয়ে যন্ত্রটাকে কানের কাছে আনল প্রদীপ, ‘হ্যালো!’

‘জিরো জিরো টু?’

‘জিরো জিরো টু স্পিকিং।’

‘জি ওয়ান কলিং। তোমার কি কোনও অ্যাকসিডেণ্ট হয়েছে?’

‘ইঞ্জিন গোলমাল করছিল। এখন ঠিক আছে।’

‘সে কি তোমাদের সঙ্গে আছে?’

‘ইয়েস।’

‘বস ইজ ওয়েটিং ফর ইউ। ওভার।’

অন্ধকারে বাইরেটার কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। কোনও আলো দেখা যাচ্ছে না। হেডলাইটের আলো যেন পর্যাপ্ত নয়। হঠাৎ অস্ত্রটার কথা মনে এল। পায়ের নিচে হাত দিয়ে ওটাকে তুলে গাড়ি থামিয়ে দুরের খাদে ছুঁড়ে ফেলল সে। একটা অস্ত্র নিয়ে অপেক্ষায় থাকা অনেক অস্ত্রের সঙ্গে লড়াই করতে যাওয়া বোকামি। বরং মিলিটারিকে দেওয়া স্টেটমেণ্টকে সত্যি করতে তার কাছে অস্ত্র না থাকা উচিত। কিন্তু পিস্তলটা? জিপ চালাল সে। পিস্তলটার ওপর তার বেশ মায়া পড়ে গেছে। মতিলালের পায়ের কাছে ফেলে দেওয়ার সময় সে নিতান্তই বাধ্য হয়েছিল। না মায়া ত্যাগ করতে হবে। পিস্তলটা বের করে ছুঁড়ে দিল সে বাইরে। পাহাড়ের কোনও খাদে উড়ে গিয়ে পড়ল সেটা। সারা রাতের তুষার তাকে মানুষের চোখের আড়ালে রেখে দেবে, অনেকদিন। এখন সে মুক্ত। একেবারে সাধারণ মানুষ। কেউ একটা ছুরি নিয়ে এগিয়ে এলে প্রতিরোধ করার মত কিছু সঙ্গে নেই।

পায়ের যন্ত্রণা বাড়ছে। অ্যাকসিলেটার থেকে পা সরিয়ে সেটাকে আবার যথাস্থানে নিয়ে যেতে ব্যাপারটা বুঝতে পারল প্রদীপ। দুটো পা অবশ হয়ে গেছে। যন্ত্রণাটা জন্ম নিয়েছে হাড়ে। হাড়ের বাইরে মাংস, চামড়া আছে কি না তা বোঝা যাচ্ছে না হাত না বোলালে। সে স্পিড কমাল। প্রয়োজনের সময় যদি ব্রেকে পা নিয়ে যেতে না পারে?

এবং তখনই দূরে আলো দেখল। সামনেই ছোট জনপদ। বরফ শেষ হয়ে গেছে অনেকক্ষণ। একটু-আধটু তুষার পড়ছে গুঁড়ো ধুলোর মত। পাহাড়ে গরিব মানুষেরা যেভাবে থাকে। একটা দোকানের সামনে আলো জ্বলছে। দোকানটা চা-বিস্কুটের। গাড়িটা একটু আগে দাঁড় করল। ক্লাচ এবং ব্রেকে যে সে চাপ দিয়েছে তা নিতান্তই অভ্যেস। প্রদীপ চিনতে পারল। সকালে যাওয়ার সময় এই বুড়োর কাছে সে হদিশ জানতে চেয়েছিল।

বুড়ো অবিকল একই ভঙ্গিতে বসে আছে দোকানে।

প্রদীপ চিৎকার করল, ‘হ্যালো আঙ্কল! আই অ্যাম হিয়ার।’

বৃদ্ধ হাত নেড়ে ভেতরে যেতে বলল।

প্রদীপ চিৎকার করল, ‘ইম্পসিবল। আমি হাঁটতে পারছি না। বরফ আমার পায়ে থাবা বসিয়েছে।’

বৃদ্ধ সেটা শোনার পর ভেতর দিকে মুখ ঘুরিয়ে কিছু বলল চাপা গলায়। প্রদীপ দেখল একটি লোক বেরিয়ে আসছে। লোকটা যদি তাকে গুলি করে তাহলে তার কিছু করার নেই। কিন্তু লোকটা সেসব কিছুই না করে ইশারায় তাকে অনুসরণ করে হেডলাইটের আলো ধরে সামনে হাঁটতে লাগল। অর্থাৎ এটা যদি আঙ্কলের দোকান হয় তা হলে বিশিষ্ট ভদ্রলোক এখানে নেই। তিনি অনেক বেশি সতর্ক।

মিনিট তিনেক যাওয়ার পর লোকটা তাকে ইশারায় দাঁড়াতে বলে বাঁ-দিকে চলে গেল। প্রদীপ দেখল ওপাশে পাহাড়ের গা ধরে একটি গাড়ি স্বচ্ছন্দে যেতে পারে। লোকটা ঢুকেছে সেই পথে। সে পিছনে তাকাল। কোনও মানুষের অস্তিত্ব নেই। সামনেও কোনও গাড়ির আলো জ্বলছে না। অথচ সেইরকম কথা ছিল। মিলিটারি অফিসার তাকে ওইরকম আশ্বাস দিয়েছিলেন।

এইসময় তিনজন লোক বেরিয়ে এল অন্ধকার ফুঁড়ে সেই রাস্তা দিয়ে। তিনজনের হাতে অস্ত্র। একজন চিৎকার করল, ‘কে হাঁটতে পারছে না?’

‘আমি।’ গলা তুলে বলল প্রদীপ।

‘বাকিদের কি পায়ে বাত হয়েছে? অ্যাই, তোর নাম কী?’

এই প্রশ্নটাই শেষপর্যন্ত ওরা করবে তা জানত প্রদীপ। সে আচমকা গিয়ার পালটে অ্যাকসিলেটারে চাপ দিয়ে জিপটাকে সরু রাস্তায় নিয়ে গেল। হেডলাইটের আলোয় তিনটে মুখ আচমকা ভয়ার্ত হয়ে উঠল। পাহাড়ের দিকে সরে যাওয়ার কোনও জায়গা নেই। পেছনের দিকে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করে ওরা ঝাঁপ দিল যেদিকটায়, সেদিকে শুধুই শূন্য। তিনটে মানুষের আর্তচিৎকার শোনা গেল রাতের নিস্তব্ধতা চূর্ণ করে।

আর তখনই গুলি ছুটে আসতে লাগল সামনে থেকে। সামনের কাঁচ ভেঙে পড়তেই প্রদীপ কোনওমতে শরীরটাকে পেছনে নিয়ে এল। সামনের সিটে তখন গুলি বিধছে। প্রদীপ দ্রুত হাতে মোটরবাইকের দড়ির বাঁধন খুলতে চেষ্টা করছিল। বাঁধবার সময় খেয়াল করেনি। এভাবে খোলা দরকার হতে পারে। হঠাৎ একটা চিৎকার শোনা গেল। কেউ একজন ধমকে গুলি না চালাতে বলছে। গুলি যখন বন্ধ হল তখন প্রদীপের মনে হল গলার স্বর যেন একটু চেনা-চেনা।

ততক্ষণে বাইকটাকে মুক্ত করে সে নিচে নামাতে পেরেছে। লোকগুলোর সঙ্গে তার একমাত্র আড়াল এখন জিপটা। ওরা নিশ্চয়ই এগিয়ে আসছে। বাইকে বসে সে স্টার্ট নিতে চেষ্টা করল। কিন্তু পা উঠছে না তার। দুই পায়ে বিন্দুমাত্র শক্তি অবশিষ্ট নেই। বাইক চালু করতে যতটুকু শক্তি পায়ে দরকার হয় তা জোগাড় করতে না পেরে সে সাইকেলের মত বাইরের চাকা গড়িয়ে যেতে দিল। ঢালু রাস্তা বলে মোটরবাইকটা নিচের দিকে নেমে যাচ্ছিল। সেই অবস্থায় ইঞ্জিন চালু করার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল প্রদীপ।

পিচের রাস্তায় পড়ে সে গ্যাংটকের দিকে বাঁক নিল। এবং তখনই পেছনে গাড়ির আলোকে ছুটে আসতে দেখল সে। ঢালু পিচের পথ পেয়ে বাইক তখন বেশ জোরে ছুটছে। এবার সামনে থেমে গাড়ির আওয়াজ ভেসে আসতেই ব্রেক চেপে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করল সে। বাইকটা থেমে যাওয়ামাত্র মাটিতে পা দিতেই আছাড় খেয়ে পড়ল প্রদীপ। হাঁটুর নিচ থেকে কোনও কিছু যেন তার অবশিষ্ট নেই। কোনওমতে বাইকটাকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তা থেকে অনেকটা সরে যাওয়ামাত্র ওপর থেকে একটার পর একটা মিলিটারি আর পুলিশের গাড়ি জায়গাটা পেরিয়ে চলে গেল। অর্থাৎ এতক্ষণে দ্বিমুখী অভিযান শুরু হল। ওরা ওকে বিশ্বাস করেনি তাই টোপ হিসেবে ব্যবহার করেছিল। এতক্ষণে গুলিতে আঁঝরা হয়ে যাওয়ার কথা ওর।

অন্ধকারে উঠে বসতে চেষ্টা করল প্রদীপ। হাত বোলাল পায়ে। তারপর জুতো খুলতে লাগল। দুটো পা দারুণ ফুলে গেছে। ভেজা জুতো বসে গেছে চামড়ায়। কোনওমতে জুতো মোজা খুলে ফেলতেই ওপরে গুলির আওয়াজ শুরু হল। মাটিতে পা ঘষতে ঘষতে মনে হল সাড় আসছে। কোনওমতে বাইকটাকে দাঁড় করিয়ে সে উঠে বসে স্টার্ট নেওয়ার চেষ্টা করতেই থমকে গেল। অন্ধকারে কিছু একটা নড়ছে। একটা মানুষ। পাহাড় থেকে লাফিয়ে নিচে নামল। তারপর দৌড়তে লাগল সামনে। লোকটা ভাল করে দৌড়তে পারছিল না।

চট করে হেডলাইট জ্বালাল প্রদীপ। আতঙ্কিত লোকটা ঘুরে দাঁড়াল। ওর হাতে একটা রিভলভার। ভদ্রলোকের ভয়ার্ত মুখ চিনতে অসুবিধে হল না তার। চটপট হেডলাইট নিভিয়ে দিয়ে সে শরীরের সমস্ত শক্তি জড়ো করে স্টার্ট নিতে চাইল। সঙ্গে-সঙ্গে বাইকটা চালু হয়ে গেল। প্রদীপ রাস্তায় নামল।

হেডলাইটের আলোয় লোকটাকে দৌড়তে দেখল সে।

সে বাইকের গতি বাড়াল। মুহূর্তেই লোকটি তার সামনে। রাস্তার একপাশে সরে যেতে যেতে রিভলভার তাক করছে। কোনও চিন্তাভাবনা না করে বাইক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল সে লোকটার ওপর। একটুও চিৎকার করল না লোকটা। প্রদীপ দেখল সে বাইক সমেত শূন্যে ভেসে যাচ্ছে। পরক্ষণেই রাস্তায় পড়ল বাইকটা। সে প্রাণপণে হ্যাঁণ্ডেল দুটো ধরে রাখতে চেষ্টা করছিল। দুটো চাকা একসঙ্গে পড়ার পর বাইকটা লাফিয়ে উঠতেই আবার ব্যালেন্স রাখতে চেষ্টা করল প্রদীপ। পড়তে-পড়তে শেষ মুহূর্তে সোজা হয়ে বাইকটা ছুটে যেতে লাগল সামনে। প্রদীপ দাঁড়াল না। পিছন থেকে কোনও শব্দ ভেসে আসছিল না। দুহাতে বাইকটাকে আঁকড়ে ধরে সে স্পিড বাড়াতে লাগল। মিলিটারি অথবা পুলিশ জানতে পারলেই তার পেছনে ছুটে আসবে।

গ্যাংটক শহরে সে যখন পৌঁছাল তখন মধ্যরাত। বাস টার্মিনাসের পাশ দিয়ে ওপরে ওঠার সময় তার দৃষ্টি ঝাপসা। হঠাৎ যে লোকটা রাস্তার মাঝখানে চলে এসে হাত নাড়তে লাগল, তার শরীরের ওপর বাইকটা তুলে দিতে গিয়ে শেষ মুহূর্তে ব্রেক চাপল সে। সঙ্গে-সঙ্গে ছিটকে পড়ে গেল প্রদীপ বাইক থেকে। পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেল।

দু’ দিন পরে যখন তার জ্ঞান ফিরল তখন সে প্রথমে লিটনের মুখ দেখতে পেল। ছেলেটার মুখে দাড়ি, চোখে রাত জাগার চিহ্ন।

‘কেমন আছ গুরু?’

‘ভাল।’ নিশ্বাস নিল প্রদীপ।

‘আর একটু হলে তুমি আমাকে খতম করে দিয়েছিলে।’

প্রদীপের মনে পড়ল। বাস টার্মিনাসের কাছে যে লোকটা সামনে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছিল সে যে লিটন তা বুঝতে পারেনি তখন, বোঝার ক্ষমতা ছিল না।

‘আমার পা?’ সে নিচু স্বরে জিজ্ঞাসা করল।

‘বেঁচে যাবে। অল্পের জন্যে বেঁচেছে, হাঁটু থেকে কেটে ফেলতে হত, ডাক্তার বলেছে।’

‘ওঃ। বুক থেকে স্বস্তি জড়ানো বাতাস বেরিয়ে এল।’

‘গুরু?’

‘বল।’

‘একটা ছবি দ্যাখো।’ লিটন সন্তর্পণে একটা ফটোগ্রাফ তুলে ধরল। বরফের মধ্যে একটি লোক পড়ে যাচ্ছে, তার পাশে কোমল, দূরে বন্দুক হাতে একজন। লিটন বলল, ‘কাপুরের ফিল্ম ম্যানেজ করে নিয়েছি আমি।’

‘গুড। আমি এখন কোথায়?’

‘হাসপাতালে।’

‘পুলিশ?’

‘সব খুলে বলেছি আমি। এই ছবি দেখার পর ওরা সব মেনে নিয়েছে।’

‘সেই লোকটা?’

‘কোন লোক? কোমলের বাবা?’

‘নেই। ওকে পুলিশ মেরুদণ্ড ভাঙা অবস্থায় পরদিন রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দ্যাখে।’

‘যাচ্চলে। ফিরে গিয়ে বাচ্চাগুলোকে কীভাবে বাঁচাব জানি না।’

‘বাঁচাবার দরকার হবে না। যে কিনছিল সে-ই তো নেই।’ লিটন হাত ধরল প্রদীপের। বলল, ‘গুরু। রেস্ট নাও এখন। কিন্তু তার আগে একটা সমস্যা আছে।’

‘কী সমস্যা?’

‘দুজন দাঁড়িয়ে আছে বাইরে। তোমার সঙ্গে দেখা করবে বলে।’

‘দুজন?’ ভাঁজ পড়ল প্রদীপের কপালে।

‘সুজাতা আর কোমল। কাকে আগে ঢুকতে বলব?’ লিটন ফাজিল হাসি হাসল।

‘চোখ বন্ধ করল প্রদীপ, আমি এখন ঘুমাব। অনেকক্ষণ ঘুমাব। বাই।’