
জাগরণী
বকুল! জা-গো! জাগো বকুল, এই পল্লিমাঠের পথের পাশে মেঠো গানের সহজ সুরে জাগো। জাগো তারই রেশের ছোঁয়ায়! জাগো বেদন নিয়ে, পল্লিশিশুর মুক্ত-বিথার প্রাণ নিয়ে, পল্লিতরুণের তাজা খুনের তীব্র কাঁপুনি নিয়ে। জাগো – জাগো বকুল, জাগো!Continue Reading
বকুল! জা-গো! জাগো বকুল, এই পল্লিমাঠের পথের পাশে মেঠো গানের সহজ সুরে জাগো। জাগো তারই রেশের ছোঁয়ায়! জাগো বেদন নিয়ে, পল্লিশিশুর মুক্ত-বিথার প্রাণ নিয়ে, পল্লিতরুণের তাজা খুনের তীব্র কাঁপুনি নিয়ে। জাগো – জাগো বকুল, জাগো!Continue Reading
রাজবন্দীর জবানবন্দী কাজী নজরুল ইসলাম লিখিত একটি প্রবন্ধ। নজরূল সম্পাদিত অর্ধ-সাপ্তাহিক ধূমকেতু ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ সরকার নিষিদ্ধ করে। সেই পত্রিকায় প্রকাশিত নজরুলের কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে ও নিষিদ্ধ হয়। নজরুলকে জেলে আটক করে রাখার পর তারContinue Reading
[কথিকা] সে চলিতেছিল দুর্গম কাঁটা-ভরা পথ দিয়ে। পথ চলিতে চলিতে সে একবার পিছন ফিরিয়া দেখিল, লক্ষ আঁখি অনিমিষে তাহার দিকে চাহিয়া আছে। সে-দৃষ্টিতে আশা-উন্মাদনার ভাস্বর জ্যোতি ঠিকরাইয়া পড়িতেছিল। তাহাই দুরন্ত পথিকের বক্ষ এক মাদকতা-ভরা গৌরবেContinue Reading
এস ভাই, পথের সাথী বন্ধুরা আমার, এস আমাদের লক্ষ্মীছাড়ার দল! আজ শনি এসেছে তোমাদের পোড়া-কপালে বাসি ছাই-এর পাণ্ডুর টিকা পরিয়ে দিতে। এস আমার লক্ষ্মীছাড়া গৃহহারা ভাইরা! আজ ঝর-ঝর বারিধারার সুরে সুরে কান্না উঠেছে–‘হায় গৃহহীন, হায়Continue Reading
ঐ শোন– পুব সাগরের পার হতে কোন্ এল পরবাসী। শূন্যে বাজায় ঘন ঘন হাওয়ায় হাওয়ায় শনশন সাপ খেলাবার বাঁশি। বেরিয়ে এস, বেরিয়ে এস বিবর থেকে ‘অগ্নি-বরণ নাগ-নাগিনী’ তোমাদের নিযুত ফণা দুলিয়ে। ওই শোনো, সাপুড়ের তুবড়িContinue Reading
একবার শির উঁচু করে বলো দেখি বীর, ‘মোরা সবাই স্বাধীন, সবাই রাজা!’ দেখবে অমনি তোমার পূর্ব-পুরুষের রক্ত-মজ্জা-অস্থি দিয়ে গড়া রক্ত-দেউল তাসের ঘরের মতো টুটে পড়েছে, তোমার চোখের সাত-পুরু-করে বাঁধা পর্দা খুলে গেছে, তিমির রাত্রি দিক-চক্রবালেরContinue Reading
‘খোশ-আমদেদ!’ স্বাগত হে দেশবন্ধু! হে বীরেন্দ্র! তোমাদের এই তিমির রাত্রির অবসানে আমরা আমাদের স্বাগত সম্ভাষণ জানাচ্ছি। তোমরা ফিরে এস এই বাংলার শ্মশানে। জ্বালিয়ে রেখেছি এই শ্মশান-চিতার হোম-শিখা ; এস ঋষি, হোতা হও। এস তবে, কপালেContinue Reading
পাগলি মেয়ের কী খেয়াল উঠল, হঠাৎ দুপুর রাতে ডুকরে কেঁদে উঠল, ‘মেয়্ ভুখা হুঁ!’ মঙ্গল-ঘট গেল ভেঙ্গে, পুরনারীর হাতে শাঁখ আর বাজে না, শাঁখাও গেল টুটে। ভীত শিশু মাকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করলে, ‘মা, ওContinue Reading
‘পথিক! তুমি পথ হারাইয়াছ?’ বনানী-কুন্তলা ষোড়শী বনের বুক চিরে বেরিয়ে এসে পথ-হারা পথিককে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘পথিক! তুমি পথ হারাইয়াছ?’ সেদিন দিশেহারা পথিকের মুখে উত্তর জোগায়নি। সুন্দরের আঘাতে পথিকের মুখে কথা ফোটেনি। পথিক সেদিন সত্যই পথContinue Reading
এখন দেশে সেই সেবকের দরকার যে-সেবক সৈনিক হতে পারবে। সেবার ভার নেবে নারী কিংবা সেই পুরুষ, যে-পুরুষের মধ্যে নারীর-করুণা প্রবল। নারীর ভালোবাসা আর পুরুষের ভালোবাসা বিভিন্ন রকমের। নারীর ভালোবাসায় মমতা আর চোখের জলের করুণাই বেশি।Continue Reading
নিশীথ রাত্রি। সম্মুখে গভীর তিমির। পথ নাই। আলো নাই। প্রলয়-সাইক্লোনের আর্তনাদ মরণ-বিভীষিকার রক্ত-সুর বাজাচ্ছে। তারই মাঝে মাকে আমার উলঙ্গ করে টেনে নিয়ে চলেছে আর চাবকাচ্ছে যে, সে দানবও নয়, দেবতাও নয়, রক্ত-মাংসের মানুষ। ধীরে ধীরেContinue Reading
আমার এই যাত্রা হল শুরু ওগো কর্ণধার, তোমারে করি নমস্কার। ‘মাভৈঃ বাণীর ভরসা নিয়ে’ ‘জয় প্রলয়ংকর’ বলে ‘ধূমকেতু’কে রথ করে আমার আজ নতুন পথে যাত্রা শুরু হল। আমার কর্ণধার আমি। আমায় পথ দেখাবে আমার সত্য।Continue Reading
ফিরে এসেছে আজ সেই মোহর্রম—সেই নিখিল-মুসলিমের ক্রন্দন-উৎসবের দিন। কিন্তু সত্য করে আজ কে কেঁদেছে বলতে পার হে মুসলিম? আজ তোমার চোখে অশ্রু নাই। আজ ক্রন্দন-স্মৃতি তোমার উৎসবে পরিণত! তোমার অশ্রু আজ ভণ্ডামি, ক্রন্দন আজ কৃত্রিমContinue Reading
মাভৈঃ! মাভৈঃ!! ভয় নাই, ভয় নাই–ওগো আমার বিষ-মুখ অগ্নি-নাগ-নাগিনীপুঞ্জ! দোলা দাও, দোলা দাও তোমাদের কুটিল ফণায় ফণায়। তোমাদের যুগ যুগ-সঞ্চিত কাল-বিষ আপন আপন সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে ফেলো। তোমাদের বিভূতি-বরণ অঙ্গ কাঁচা বিষের গাঢ় সবুজ রাগে রেঙেContinue Reading
ক্ষুদিরামের ফাঁসির সময়ের একটা গানে আছে, ক্ষুদিরাম বলছে – ‘আঠার মাসের পরে জনম নেব মাসীর ঘরে, মা গো, চিনতে যদি না পার মা দেখবে গলায় ফাঁসি–’ একবার বিদায় দে মা ফিরে আসি। সেই হারা-ক্রন্দনের আশ্বাস-গানContinue Reading
অনেকেই প্রশ্নের পর প্রশ্ন করছেন, ‘ধূমকেতু’-র পথ কী? সে কী বলতে চায়? এর দিয়ে কোন্ মঙ্গল আসবে ইত্যাদি। নীচে মোটামুটি ‘ধূমকেতু’র পথনির্দেশ করছি। প্রথম সংখ্যায় ধূমকেতুতে ‘সারথির পথের খবর’ প্রবন্ধে একটু আভাস দিবার চেষ্টা করেছিলাম,Continue Reading
‘মারো শালা যবনদের!’ ‘মারো শালা কাফেরদের!’ – আবার হিন্দু মুসলমানি কাণ্ড বাধিয়া গিয়াছে। প্রথমে কথা-কাটাকাটি, তারপর মাথা-ফাটাফাটি আরম্ভ হইয়া গেল। আল্লার এবং মা কালীর ‘প্রেস্টিজ’ রক্ষার জন্য যাহারা এতক্ষণ মাতাল হইয়া চিৎকার করিতেছিল তাহারাই যখনContinue Reading
একদিন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল আমার, হিন্দু-মুসলমান সমস্যা নিয়ে। গুরুদেব বললেন : দ্যাখো, যে ন্যাজ বাইরের, তাকে কাটা যায়, কিন্তু ভিতরের ন্যাজকে কাটবে কে? হিন্দু-মুসলমানের কথা মনে উঠলে আমার বারেবারে গুরুদেবের ওই কথাটাই মনেContinue Reading
© All Right Reserved by Eduliture ২০২৫