প্রথম পাঠ
রাম খাইতেছে। পাখী উড়িতেছে। হরি পীড়িত হইয়াছে। মানুষ মরিয়া যায়। এইগুলিকে এক একটি বাক্য, উক্তি, বা পদ বলা যায়।
“রাম খাইতেছে”— এই বাক্যে কাহার কথা বলা যাইতেছে? রামের কথা। অতএব রাম এই বাক্যের “বিষয়”।
“পাখী উড়িতেছে”—কাহার কথা বলিতেছি? পাখীর কথা। “হরি পীড়িত হইয়াছে”—কাহার কথা বলিতেছি? হরির কথা। “মানুষ মরিয়া যায়”—কাহার কথা বলিতেছি? মানুষের কথা। পাখী, হরি, মানুষ, ইহারা ঐ ঐ বাক্যের বিষয়।
“রাম খাইতেছে”—এখানে রামের কথা বলিতেছি বটে, কিন্তু রামের কি কথা বলিতেছি? সে “খাইতেছে”—তাহার খাবার কথা বলিতেছি। “খাইতেছে” হইল বক্তব্য।
“পাখী উড়িতেছে।” “উড়িতেছে” বক্তব্য। “যদু পীড়িত হইয়াছে।” পীড়া এখানে বক্তব্য। “মানুষ মরিয়া যায়।” “মরা” এখানে বক্তব্য।
অতএব সকল বাক্যে, দুইটি বস্তু থাকে; একটি “বিষয়” আর একটি “বক্তব্য”।
এই দুইটিই না থাকিলে বাক্য বলা সম্পূর্ণ হয় না। শুধু “গোরু” বলিলে, তুমি বুঝিতে পারিবে না যে, আমার বলিবার কথা কি। কিন্তু “গোরু চরিতেছে” বলিলেই তুমি বুঝিতে পারিলে। বাক্য সম্পূর্ণ হইল। শুধু “ভাসিতেছে” বলিলে তুমি বুঝিতে পার না যে, আমার বলিবার ইচ্ছা কি। তুমি জিজ্ঞাসা করিবে, কি ভাসিতেছে? কিন্তু যদি বলি যে, “কুম্ভীর ভাসিতেছে” বা “নৌকা ভাসিতেছে”, বাক্য সম্পূর্ণ হইল—তুমি বুঝিতে পারিলে।
অভ্যাসার্থ
১। নীচের লিখিত বিষয়গুলি লইয়া, তাহাতে বক্তব্য যোগ কর।
ঘোড়া, আকাশ, নক্ষত্র, সমুদ্র, বালক, মাতা, শিক্ষক, পুস্তক, ঈশ্বর, বৃক্ষ, ঠক, ঘট, প্রাণ।
২। নীচের লিখিত বক্তব্য লইয়া তাহাতে বিষয় যোগ কর।
হাসিল। ভাঙ্গিয়া গেল। উচিত নয়। বাড়িয়াছে। অধীন ছিল। ডুবিয়াছিল। প্রকাশ হইল।
দ্বিতীয় পাঠ
কখন কখন বিষয়ের কোন গুণ কি দোষ আগে লিখিয়া তার পর বক্তব্য লিখিতে হয়। যেমন—“সুন্দর পাখী উড়িতেছে।” “দুঃখী হরি পীড়িত হইয়াছে।” এখানে, পাখীটির একটি গুণ যে, সে সুন্দর; ইহা বলা হইল। হরির একটি দোষ যে, সে দুঃখী; ইহা বলা হইল। এগুলিকে বিশেষণ বলে। “সুন্দর” “দুঃখী” এই দুটি বিশেষণ। যাহার বিশেষণ, তাহাকে বিশেষ্য বলে। “পাখী” “হরি” ইহারা বিশেষ্য।
বিশেষণ উপযুক্ত হইতে পারে, অনুপযুক্তও হইতে পারে। উপযুক্ত বিশেষণ, যেমন—
ফলবান্ বৃক্ষ।নির্মল আকাশ।
বলবান্ মনুষ্য।বেগবতী নদী।
অনুপযুক্ত বিশেষণ, যেমন,—
নির্মল বৃক্ষ। ফলবান্ মনুষ্য। বেগবান্ আকাশ।
এইগুলি অনুপযুক্ত। বৃক্ষের সমলতা বা নির্মলতা নাই, এই জন্য নির্মল বৃক্ষ বলা যায় না। মানুষে কোন ফল ফলে না, এই জন্য ফলবান্ মনুষ্য বলা যায় না। আকাশের বেগ নাই, এজন্য বেগবান্ আকাশ বলা যায় না। যে বিশেষণ উপযুক্ত তাহাই লিখিবে, যাহা অনুপযুক্ত তাহা লিখিও না।
অভ্যাসার্থ
৩। নীচের লিখিত বিশেষ্যের সঙ্গে উপযুক্ত বিশেষণ যোগ কর।
সমুদ্র, চন্দ্র, সূর্য, হস্তী, বন, সংসার, স্ত্রী, কন্যা, পুত্র, বালিকা, দেশ, রাত্রি, আসন, পুতুল, হংস।
৪। নীচের লিখিত বিশেষণের পর উপযুক্ত বিশেষ্য যোগ কর।
নশ্বর, পবিত্র, দীন, অযোগ্য, কষ্টসাধ্য, গুণবতী, সুলভ, সদাচার, শান্ত, পরিষ্কার, অজ্ঞাত।
তৃতীয় পাঠ
“ফলবান্ বৃক্ষ”, “বলবান্ পুরুষ”, “নির্মল আকাশ”, “বেগবতী নদী” বলিলে বাক্য সম্পূর্ণ হইল না। “ফলবান্ বৃক্ষ” সম্বন্ধে কি বলিতেছ? “বলবান্ পুরুষ” সম্বন্ধে কি বলিতে চাও? এখানে “ফলবান্ বৃক্ষ”, “বলবান্ পুরুষ” বিষয়; কিন্তু বক্তব্য কই? বক্তব্য লিখিলে তবে বাক্য সম্পূর্ণ হইবে। যেমন—
ফলবান্ বৃক্ষ কাটিও না। নির্মল আকাশ দেখিতে সুন্দর।
বলবান্ পুরুষ সাহসী হয়। বেগবতী নদী বহিতেছে।
অভ্যাসার্থ
৫। নীচের লিখিত বিষয়ে বক্তব্য যোগ কর।
দয়াময় ভগবান্। স্নেহময়ী মাতা।
অবোধ শিশু। অন্নহীন ভিক্ষুক।
নিষ্ফল কার্য। স্বচ্ছ সরোবর।
সহজ কাজ। মজবুত বাঁশ।
অন্ধকার রাত্রি। পাকা আটচালা।
“ফলবান্ বৃক্ষ”, “বলবান্ পুরুষ” বলিলে বাক্য সম্পূর্ণ হয় না বটে, কিন্তু যদি বলি “বৃক্ষ ফলবান্”, “মনুষ্য বলবান্”, তাহা হইলে বাক্য সম্পূর্ণ হয়। তাহার কারণ সহজে বুঝিতে পারিবে। “ফলবান্ বৃক্ষই” বিষয় হইল, বক্তব্য নাই। কিন্তু “বৃক্ষ ফলবান্” বলিলে বৃক্ষ বিষয় হইল—ফলবত্ত্বা তাহার বক্তব্য। “বৃক্ষ ফলবান্” এ কথায় এই বুঝায় যে, বৃক্ষে ফল হয়। “মানুষ বলবান্ বলিলে বুঝাইবে, “মানুষের বল আছে।”
দেখ, দুই রকমে এক বক্তব্য প্রকাশ করা যায়। যথা—
[বৃক্ষ ফলবান্। বৃক্ষে ফল হয়।] |
[মনুষ্য বলবান্। মানুষের বল আছে।] |
[আকাশ নির্মল। আকাশের নির্মলতা আছে। আকাশ নির্মল হইয়াছে।] |
[নদী বেগবতী। নদীর বেগ আছে।] |
“আছে” “হয়” “হইয়াছে” এইগুলিকে ক্রিয়া বলে। যাহাতে একটা কাজ বুঝায়, কিম্বা অবস্থ্যান্তরপ্রাপ্তি বুঝায়, তাহাকেই ক্রিয়া বলে। ধরিল, থাকিল, যাইল, শয়ন করিল, ভক্ষণ করিল, নিবেদন করিল—এ সব ক্রিয়া।
অতএব বক্তব্য দুই প্রকারে প্রকাশ করা যায়, এক প্রকার বিশেষণ দ্বারা, যেমন “বৃক্ষ ফলবান্” ; আর এক প্রকার ক্রিয়া দ্বারা, যেমন—“বৃক্ষে ফল হয়।”
অভ্যাসার্থ
৬। নীচের লিখিত বাক্যগুলির বক্তব্য বিশেষণের দ্বারা বল।
বাঙ্গালির বুদ্ধি আছে। সন্দেশের স্বাদ ভাল লাগে।
ইংরেজের বিদ্যা আছে। বসন্তের বাতাস আস্তে বয়।
মৎস্যে খারাপ গন্ধ পাওয়া যায়। জলে ভিজিলে পীড়া হয়।
৭। নীচের লিখিত বাক্যগুলিতে বক্তব্য ক্রিয়ার দ্বারা প্রকাশ হয়।
পৃথিবী ঘূর্ণ্যমান।তাহার স্বর গম্ভীর।
সূর্যকিরণ অসহ্য।মাতাল চিরদুঃখী।
ব্যাঘ্র মাংসাশী।
চতুর্থ পাঠ
বিশেষণের আবার বিশেষণ হয়, যেমন—
অতিশয় ভারী। প্রচণ্ড তেজস্বী। প্রগাঢ় অন্ধকার।
ইহাতে বিশেষ্য যোগ করা যায়; যথা—
অতিশয় ভারী লোহা। প্রচণ্ড তেজস্বী অগ্নি। প্রগাঢ় অন্ধকার রাত্রি।
অথবা,
লোহা অতিশয় ভারী। সূর্য প্রচণ্ড তেজস্বী। বর্ষার রাত্রি প্রগাঢ় অন্ধকার।
আবার ক্রিয়ারও বিশেষণও আছে, যেমন—
মৃদু হাসিতেছে। দারুণ জ্বলিতেছে।
শীঘ্র যাইতেছে। ভালরূপে মেরামত করিতেছে।
পঞ্চম পাঠ
এখন বিষয়, বক্তব্য, বিশেষণ, ক্রিয়ার বিশেষণ, এই সকল লইয়া বাক্যরচনা করিতে শিখ। একটা বিষয় লও। “রাক্ষস”। বক্তব্য—তাহার বিনাশ। বাক্য এইরূপে লিখিতে হইবে।
“রাক্ষস বিনষ্ট হইল।”
এখন বিশেষণ যোগ কর। প্রথম বিষয়ের বিশেষণ লেখ।”
“পাপিষ্ঠ রাক্ষসেরা নিঃশেষে বিনষ্ট হইল।”
তার পর ক্রিয়ার বিশেষণ লেখ।
“পাপিষ্ঠ রাক্ষসেরা নিঃশেষে বিনষ্ট হইল।”
তার পর ইচ্ছা করিলে, “পাপিষ্ঠে”র বিশেষণের বিশেষণ দিতে পার।
“চিরপাপিষ্ঠ রাক্ষসেরা নিঃশেষে বিনষ্ট হইল।”
পরীক্ষার্থ
নিম্নলিখিত বিষয় ও বক্তব্য লইয়া বিশেষণ, বিশেষণের বিশেষণ ও ক্রিয়ার বিশেষণ যোগপূর্বক বাক্য রচনা কর।
বিষয়বক্তব্য
পুত্র পিতামাতার উপকার করা।
রাজা প্রজাপালন করা।
স্ত্রীস্বামীর সেবা করা।
বিদ্যা অভ্যাসের অধীন।
ষষ্ঠ পাঠ
কখন কখন বাক্য সম্পূর্ণ হইলেও, আরও কিছুর আকাঙ্ক্ষা থাকে। “চিরপাপিষ্ঠ রাক্ষসেরা নিঃশেষে বিনষ্ট হইল” এই বাক্যটি সম্পূর্ণ বটে, কিন্তু ইহাতে কিছু আকাঙ্ক্ষা রহিল। কর্ম আছে। কিন্তু কর্তা নাই। রাক্ষসেরা বিনষ্ট হইল, আমরা জানিতেছি; কিন্তু কে তাহাদের বিনষ্টকারী, তাহা জানিতে পারিতেছি না। অতএব আকাঙ্ক্ষাপূরণ কর। যথাঃ—
“বানরের দ্বারা চিরপাপিষ্ঠ রাক্ষসেরা নিঃশেষে বিনষ্ট হইল।”
আবার বানরের বিশেষণ দিতে পার, যথাঃ—
“দুর্দান্ত বানরের দ্বারা চিরপাপিষ্ঠ রাক্ষসেরা বিনষ্ট হইল।”
আবার দুর্দান্তেরও বিশেষণ দেওয়া যায়।
কখন কখন আকাঙ্ক্ষা পূরণ না করিলে বাক্যই সম্পূর্ণ হয় না, যেমন—
“যদি আমি সেখানে যাই।”
“তুমি এমন কথা বলিয়াছিলে।”
এ সকল বাক্য সম্পূর্ণ নহে। সম্পূর্ণ করিতে গেলে, বলিতে হইবে,
“যদি আমি সেখানে যাই, তবে তুমি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিও।”
“তুমি এমন কথা বলিয়াছিলে যে, তুমি আমাকে কিছু টাকা দিবে।”
পরীক্ষার্থ
নিম্নলিখিত বাক্যগুলিতে আকাঙ্ক্ষা পূরণ করিয়া বাক্য সম্পূর্ণ কর।
হাতীর গায়ে যে বল আছে,
রামধন এমন দাম্ভিক,
রাজা দশরথ বিজ্ঞ ছিলেন বটে,
সাঁতার জানিয়াও যে সমুদ্রে ঝাঁপ দেয়,
যদি তোমার এতই অভিমান যে, রাজার দান গ্রহণ করিবে না,
তামাকু যদি এমন অস্বাস্থ্যকর,
সপ্তম পাঠ
এখন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাক্য রচনা করিতে শিখিয়াছ। এখন একটি বিষয় লইয়া তৎসম্বন্ধে দুই তিনটি বাক্য রচনা করিতে অভ্যাস কর।
একটি বিষয় লও, যথা—অশ্ব। অশ্ব সম্বন্ধে দুই তিনটি বাক্য লেখ। যথাঃ—
“অশ্ব চতুষ্পদ। অশ্ব বড় দ্রুতগামী। মনুষ্য অশ্বের উপর আরোহণ করে।”
এখানে তিনটি বাক্যের বিষয় একই অশ্ব, কিন্তু বক্তব্য তিনটি। যথা—১। চতুষ্পদত্ব। ২। দ্রুতগমন। ৩। মনুষ্যগণের তদুপরি আরোহণ। এইজন্য তিনটি পৃথক্ বাক্য হইল। এইরূপ এক বিষয়ে অনেকগুলি বাক্যকে একত্র করিলে প্রবন্ধ বা বক্তৃতা হইল।
আর একটি বিষয় লও “পৃথিবী”।
“পৃথিবী গোলাকার। পৃথিবীতে জল ও স্থল আছে। পৃথিবী সূর্যকে সংবেষ্টন করে।”
পরীক্ষার্থ
হস্তী, কুক্কুর, চন্দ্র, সূর্য, বৃক্ষ, বিদ্যা, মাতাপিতা, রাগ, সাহস, শিক্ষক দয়া।
অষ্টম পাঠ
অনেক বালককে প্রবন্ধ লিখিতে বলিলে তাহারা খুঁজিয়া পায় না যে, কি লিখিতে হইবে। যদি বলা যায় যে, অশ্ব সম্বন্ধে একটি প্রবন্ধ লেখ; তাহার খুঁজিয়া পায় না যে, অশ্ব সম্বন্ধে কি প্রবন্ধ লিখিবে। এই সকল বালকের সাহায্য জন্য কতকগুলি যুক্তি বলিয়া দিতেছি।
১। প্রথমে বিষয়টি কি তাহা বর্ণন করিবে।
২। তার পর তাহার জাতিভেদ বা প্রকারভেদ বা সে সম্বন্ধে মতভেদ থাকিলে তাহা বুঝাইবে।
৩। তাহার দোষগুণের বা কার্যের বিচার করিবে।
৪। কিসে সেই বিষয়ে মনুষ্যের উপকার বা উন্নতি হইতে পারে, তাহার বিচার করিবে। অশ্বের উদাহরণে ইহা বুঝাইতেছি।
১। বর্ণনা
অশ্ব চতুষ্পদ জন্তু বিশেষ।
২। জাতিভেদ
অশ্ব অনেক জাতীয় আছে।—যথা আরবী, কাবুলী, তুরকী, ওয়েলর, টাটু ইত্যাদি।
৩। গুণ দোষ বিচার
অশ্ব, পশুজাতি মধ্যে বিশেষ বলবান ও দ্রুতগামী। অশ্বের আরও গুণ এই যে, অশ্ব সহজে মনুষ্যের বশ হয়। এজন্য মানুষ অশ্ব হইতে অনেক উপকার পায়।
৪। উপকার
মনুষ্য অশ্বকে বশ করিয়া তাহার পৃষ্ঠে আরোহণ পূর্বক যথেচ্ছা ভ্রমণ করে। যে পথ অনেক বিলম্বে যাইতে হইত, অথবা শ্রমাধিক্যবশতঃ যাওয়াই যাইত না, অশ্বের সাহায্যে তাহা অল্প সময়ে যাওয়া যায়। মনুষ্য গাড়ি প্রস্তুত করিয়া, তাহাতে অশ্বযোজন করিয়া, সুখে আসীন হইয়া বিচরণ করে। যুদ্ধকালে অশ্ব, যোদ্ধার বিশেষ সহায়। ইহা ভিন্ন অনেক দেশে অশ্বের দ্বারা ভারবহন ও হলাকর্ষণ কার্যও নির্বাহ হয়।
এই যে উদাহরণ দেওয়া গেল, ইহা সংক্ষিপ্ত। ইচ্ছা করিলে ইহার সম্প্রসারণ করিতে পার। যথা, বর্ণনায়—“অশ্ব চতুষ্পদ জন্তু বিশেষ” লেখা গিয়াছে। কিন্তু, চতুষ্পদ জন্তু কেহ মাংসাহারী, কেহ উদ্ভিজ্জাহারী, কেহ উভয়হারী, অতএব অশ্ব ইহার কোন্ শ্রেণীভুক্ত, তাহা লেখা উচিত। যথা—
“অশ্ব উদ্ভিজ্জ মাত্র খায়, মাংস খায় না।” কিন্তু আরও অনেক চতুষ্পদ আছে যে, তাহারা কেবল উদ্ভিজ্জ খায়। যথা, গোমহিষাদি। অতএব আরও বিশেষ করিয়া লিখিতে পার যে, “যে সকল চতুষ্পদ উদ্ভিজ্জাহারী, তাহাদের মধ্যে কতকগুলির শৃঙ্গ আছে, কতকগুলির শৃঙ্গ নাই। অশ্ব দ্বিতীয় শ্রেণীর মধ্যে।”
এইরূপ আরও সম্প্রসারণ করা যায়।
এইরূপে (২) জাতিভেদ, (৩) দোষ-গুণ, (৪) উপকার—এ সকলেরও সম্প্রসারণ করা যায়।
পরীক্ষার্থ
নিম্নলিখিত কয়েকটি বিষয়ে এইরূপ সম্প্রসারিত প্রবন্ধ লেখ।
হস্তী, কুক্কুর, চন্দ্র, সূর্য, বৃক্ষ, বিদ্যা, মাতাপিতা, রাগ, সাহস, শিক্ষক, দয়া।
ইহাও স্মরণ রাখিবে যে, সকল বিষয়েই প্রবন্ধকে ঐরূপ চারি ভাগে বিভক্ত করা যায় না। কখন কোনটি ছাড়িয়া দিতে হয়। যথা, চন্দ্র সূর্যের জাতিভেদ নাই—উহা ছাড়িয়া দিবে; তবে চন্দ্র সূর্য সম্বন্ধে লোকের মতভেদ আছে, পার ত, তাহা লিখিবে। আর এই চারিটি ভাগ ছাড়া আর যাহা কিছু বক্তব্য লিখিতে চাও তাহাতে আপত্তি নাই। বিশেষ কোন বিষয়ে প্রবন্ধ লিখিতে গেলে পূর্বগামী লেখকদিগের মত সঙ্কলন করা প্রথা আছে; আবশ্যক মতে তাহা করিতে পার। ভাল বুঝিলে তাহার প্রতিবাদ করিতে পার।