রাজমোহনের স্ত্রী

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম রচনা RAJMOHAN’S WIFE রচিত হয়েছিল ইংরেজি ভাষায়, সেটি বাংলায় পুনরায় লেখার কাজ শুরু করেছিলেন তিনি, কিন্তু সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি। সেই অসম্পূর্ণ রচনাই এই ।Continue Reading

প্রথম পরিচ্ছেদ

মধুমতী নদীতীরে রাধাগঞ্জ নামক একটি ক্ষুদ্র গ্রাম আছে। প্রভূত ধনসম্পন্ন ভূস্বামীদিগের বসতি-স্থান বলিয়া এই গ্রাম গণ্ডগ্রামস্বরূপ গণ্য হইয়া থাকে। একদা চৈত্রের অপরাহ্নে দিনমণির তীক্ষ্ণ কিরণমালা ম্লান হইয়া আসিলে দুঃসহ নৈদাঘ উত্তাপ ক্রমে শীতল হইতেছিল; মন্দContinue Reading

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

অপনীত সূর্য্যকর নারিকেলাদি বৃক্ষাগ্রভাগ হইতে অন্তর্হিত হইয়াছে; কিন্তু এখনও পর্য্যন্ত নিশা ধরাবাসিনী হয় নাই। এমন সময় কনক ও তাহার সমভিব্যাহারিণী কলসীকক্ষে গৃহে প্রত্যাবর্ত্তন করিতেছিল। পথিপার্শ্বে একটি ক্ষুদ্র উদ্যান ছিল; পূর্ব্ববঙ্গ মধ্যে তদ্রূপ উদ্যান বড় বিরল।Continue Reading

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

কনকময়ী এবং তৎসঙ্গিনী নীরবে গৃহাভিমুখে চলিলেন। লোকের সম্মুখে কথা কহিতে কনকের সহচরী অতি লজ্জাকর বোধ করিতে লাগিলেন। তাঁহাকে নীরব দেখিয়া কনকও নীরব। কিন্তু এমন লোকালয়মধ্যে রসনারূপিণী প্রচণ্ডা অশ্বিনী যে নিজ প্রাখর্য্যাদি গুণ দেদীপ্যমান করিতে পারিলContinue Reading

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

এক্ষণে পাঠক মহাশয়ের সহিত যাঁহাদিগের পরিচয় হইল, তাঁহাদিগের পূর্ব্ব বিবরণ কথনে প্রবৃত্ত হই। পূর্ব্বাঞ্চলে কোন ধনাঢ্য ভূস্বামীর আলয়ে বংশীবদন ঘোষ নামে এক ভৃত্য ছিল। এই ভূস্বামীর বংশ ও নাম এক্ষণে লোপ হইয়াছে, কিন্তু পূর্ব্বে তাঁহারContinue Reading

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

পিতৃবিয়োগের পরেও মাধব বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন-শেষ পর্য্যন্ত রহিলেন। তাঁহার অনুপস্থিতিকালে তাঁহার কার্য্যকারকেরা বিষয় রক্ষণাবেক্ষণ করিতে লাগিল। পাঠ সমাপ্ত হইলে হেমাঙ্গিনীকে সঙ্গে লইয়া রাধাগঞ্জে গমনোদ্যত হইয়া শ্বশুরালয়ে আগমন করিলেন। মাতঙ্গিনী তৎকালে পিত্রালয়ে ছিলেন, এবং রাজমোহনও তথায় উপস্থিতContinue Reading

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

এক্ষণে আখ্যায়িকার সূত্র পুনঃগ্রহণ করা যাইতেছে। পুষ্পোদ্যান হইতে মাধব বাটীতে প্রত্যাগমন করিলে একজন পত্র-বাহক তাঁহার হস্তে একখানি লিপি প্রদান করিল। লিপির শিরোনামার স্থলে “জরুরি” এই শব্দ দৃষ্টে মাধব ব্যস্ত হইয়া পত্রপাঠে নিযুক্ত হইলেন। সদর মোকামেContinue Reading

সপ্তম পরিচ্ছেদ

এদিকে মাতঙ্গিনী স্বামীকৃত তিরস্কারের পর শ্বশ্রূস্বসা কর্ত্তৃক নিজ শয়নকক্ষে আনীত হইলে কক্ষের দ্বার অর্গলবব্ধ করিয়া মনের দুঃখে শয্যাবলম্বন করিলেন। রাত্রে পাকাদি সমাপন হইলে শ্বশ্রূস্বসা তাঁহাকে আহারার্থে ডাকিলেন, কিন্তু মাতঙ্গিনী শয্যাত্যাগ করিলেন না। ননন্দা কিশোরী আসিয়াContinue Reading

অষ্টম পরিচ্ছেদ

মাতঙ্গিনী পুনর্ব্বার নিঃশব্দে পদসঞ্চারে শয্যা ত্যাগ করিয়া গবাক্ষসান্নিধ্যে গমন করিলেন; এবং নিম্নোদ্ধৃত মত কথোপকথন শ্রবণ করিলেন। সকলেই নিদ্রিত, এ সংবাদ রাজমোহন প্রমুখাৎ শ্রবণ করিয়া আগন্তুক কহিল, “তুমি আমাদের এ উপকার করিতে তবে স্বীকার আছ?” রাজমোহনContinue Reading

নবম পরিচ্ছেদ

মাতঙ্গিনী অন্তরালে থাকিয়া তাবৎ শুনিয়াছিলেন। এই বিষম কু-সঙ্কল্পকারিদিগের মুখনির্গত যতগুলি শব্দ তাঁহার কর্ণকুহরে প্রবিষ্ট হইয়াছিল, ততগুলি বজ্রাঘাত তাঁহার বোধ হইয়াছে। যতক্ষণ না কথোপকথন সমাপ্ত হইয়াছিল, ততক্ষণ বসন্ত-বাতাহত অশ্বত্থ পত্রের ন্যায় তাঁহার ভীতি-কম্পিত তনু কোন মতেContinue Reading