কপালকুণ্ডলা

কপালকুণ্ডলা সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত দ্বিতীয় উপন্যাস। সম্ভবত এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক রোমান্টিক উপন্যাস। ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি বাংলা সাহিত্যের একটি কাব্যধর্মী উপন্যাস। চরিত্র: নবকুমার শর্ম্মা- সপ্তগ্রামনিবাসী যুবক। কাপালিক- যোগসাধকContinue Reading

প্রথমখণ্ড

কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের প্রথম খণ্ডের পরিচ্ছেদ সমূহের তালিকা।Continue Reading

প্রথম পরিচ্ছেদ : সাগরসঙ্গমে

“Floating straight obedient to the stream.” Comedy of Errors. প্রায় দুই শত পঞ্চাশ বৎসর পূর্বে এক দিন মাঘ মাসের রাত্রিশেষে একখানি যাত্রীর নৌকা গঙ্গাসাগর হইতে প্রত্যাগমন করিতেছিল। পর্তুগিস ও অন্যান্য নাবিকদস্যুদিগের ভয়ে যাত্রীর নৌকা দলবদ্ধContinue Reading

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : উপকূলে

“Ingratitude! Thou marble-hearted fiend! _” King Lear আরোহীদিগের স্ফূর্তিব্যঞ্জক কথা সমাপ্ত হইলে, নাবিকেরা প্রস্তাব করিল যে, জোয়ারের বিলম্ব আছে; -এই অবকাশে আরোহিগণ সম্মুখস্থ সৈকতে পাকাদি সমাপন করুন, পরে জলোচ্ছ্বাস আরম্ভেই স্বদেশাভিমুখে যাত্রা করিতে পারিবেন। আরোহিবর্গওContinue Reading

চতুর্থ পরিচ্ছেদ : স্তূপশিখরে

“— সবিস্ময়ে দেখিলা অদূরে, ভীষণ-দর্শন মূর্তি৷” — মেঘনাদবধ যখন নবকুমারের নিদ্রাভঙ্গ হইল, তখন রজনী গভীরা। এখনও যে তাঁহাকে ব্যাঘ্রে হত্যা করে নাই, ইহা তাঁহার আশ্চর্য বোধ হইল। ইতস্তত: নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতে লাগিলেন, ব্যাঘ্র আসিতেছে কিContinue Reading

পঞ্চম পরিচ্ছেদ : সমুদ্রতটে

“_____ যোগপ্রভাবো ন চ লক্ষ্যতে তে। বিভর্ষি চাকারনির্বতানাং মৃণালিনী হৈমমিবোপরাগম্৷” রঘুবংশ প্রাতে উঠিয়া নবকুমার সহজেই বাটী গমনের উপায় করিতে ব্যস্ত হইলেন; বিশেষ, এ কাপালিকের সান্নিধ্য কোনক্রমেই শ্রেয়স্কর বলিয়া বোধ হইল না। কিন্তু আপাতত: এ পথহীনContinue Reading

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ : কাপালিকসঙ্গে

“কথং নিগড়সংযতাসি। দ্রুতম্ নয়ামি ভবতীমিত—” রত্নাবলী নবকুমার কুটীরমধ্যে প্রবেশ করিয়া দ্বারসংযোজনপূর্বক করতলে মস্তক দিয়া বসিলেন। শীঘ্র আর মস্তকোত্তোলন করিলেন না। “এ কি দেবী–মানুষী–না কাপালিকের মায়ামাত্র!” নবকুমার নিস্পন্দ হইয়া হৃদয়মধ্যে এই কথার আন্দোলন করিতে লাগিলেন। কিছুইContinue Reading

সপ্তম পরিচ্ছেদ : অন্বেষণে

“And the great lord of Luna Fell at the deadly stroke; As falls on mount Avernus A thunder-smitten oak.” Lays of Ancient Rome. এদিকে কাপালিক গৃহমধ্যে তন্ন তন্ন করিয়া অনুসন্ধান করিয়া, না খড়্গ, না কপালকুণ্ডলাকেContinue Reading

অষ্টম পরিচ্ছেদ : আশ্রয়ে

“And that very night – Shall Romeo bear thee to Mantua.” Romeo and Juliet. সেই অমাবস্যার ঘোরান্ধকার যামিনীতে দুই জনে ঊর্দ্ধশ্বাসে বনমধ্যে প্রবেশ করিলেন। বন্য পথ নবকুমারের অপরিজ্ঞাত; কেবল সহচারিণী ষোড়শীকে লক্ষ্য করিয়া তদ্বর্ত্মসম্বর্তী হওয়াContinue Reading

নবম পরিচ্ছেদ : দেবনিকেতনে

“কণ্ব। অলং রুদিতেন; স্থিরা ভব, ইতঃ পন্থানমালোকয়।” শকুন্তলা প্রাতে অধিকারী নবকুমারের নিকট আসিলেন। দেখিলেন, এখনও নবকুমার শয়ন করেন নাই। জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন কি কর্তব্য?” নবকুমার কহিলেন, “আজি হইতে কপালকুণ্ডলা আমার ধর্মপত্নী। ইহার জন্য সংসার ত্যাগContinue Reading

প্রথম পরিচ্ছেদ : রাজপথে

“-There-now lean on me: Place your foot here”— Manfred নবকুমার মেদিনীপুরে আসিয়া অধিকারীর প্রদত্ত ধনবলে কপালকুণ্ডলার জন্য একজন দাসী, একজন রক্ষক ও শিবিকাবাহক নিযুক্ত করিয়া তাঁহাকে শিবিকারোহণে পাঠাইলেন। অর্থের অপ্রাচুর্য্য হেতু স্বয়ং পদব্রজে চলিলেন। নবকুমারContinue Reading

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : পান্থনিবাস

“কৈষা যোষিৎ প্রকৃতিপলা” উদ্ধবদূত যদি এই রমণী নির্দোষ সৌন্দর্য্যবিশিষ্টা হইতেন, তবে বলিতাম, “পুরুষ পাঠক! ইনি আপনার গৃহিণীর ন্যায় সুন্দরী। আর সুন্দরী পাঠকারিণি! ইনি আপনার দর্পণস্থ ছায়ার ন্যায় রূপবতী৷” তাহা হইলে রূপবর্ণনার একশেষ হইত। দুর্ভাগ্যবশত: ইনিContinue Reading

তৃতীয় পরিচ্ছেদ : সুন্দরীসন্দর্শনে

_______ধর দেবি মোহন মূরতি দেহ আজ্ঞা, সাজাই ও বরবপু আনি নানা আভরণ! মেঘনাদবধ নবকুমার গৃহস্বামীকে ডাকিয়া অন্য প্রদীপ আনিতে বলিলেন। অন্য প্রদীপ আনিবার পূর্বে একটি দীর্ঘনিশ্বাসশব্দ শুনিতে পাইলেন। প্রদীপ আনিবার ক্ষণেক পরে ভৃত্যবেশী একজন মুসলমানContinue Reading

চতুর্থ পরিচ্ছেদ : শিবিকারোহণে

“_________________খুলিনু সত্বরে, কঙ্কণ, বলয়, হার, সীঁথি, কণ্ঠমালা, কুণ্ডল, নূপুর কাঞ্চি।” মেঘনাদবধ গহনার দশা কি হইল, বলি শুন। মতিবিবি গহনা রাখিবার জন্য একটি রৌপ্যজড়িত হস্তিদন্তের কৌটা পাঠাইয়া দিলেন। দস্যুরা তাঁহার অল্প সামগ্রীই লইয়াছিল–নিকটে যাহা ছিল, তদ্ব্যতীতContinue Reading

পঞ্চম পরিচ্ছেদ : স্বদেশে

“শব্দাখ্যেয়ং যদপি কিল তে যঃ সখীনাং পুরস্তাৎ। কর্ণে লোলঃ কথয়িতুমভূদাননস্পর্শলোভাৎ॥” মেঘদূত নবকুমার কপালকুণ্ডলাকে লইয়া স্বদেশে উপনীত হইলেন। নবকুমার পিতৃহীন, তাঁহার বিধবা মাতা গৃহে ছিলেন, আর দুই ভগিনী ছিল। জ্যেষ্ঠা বিধবা; তাহার সহিত পাঠক মহাশয়ের পরিচয়Continue Reading

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ : অবরোধে

“কিমিত্যপাস্যাভরণানি যৌবনে ধৃতং ত্বয়া বার্ধকশোভি বল্কলম্। বদ প্রদোষে স্ফুটচন্দ্রতারকা বিভাবরী যদ্যরুণায় কল্পতে॥” — কুমারসম্ভব সকলেই অবগত আছেন যে, পূর্বকালে সপ্তগ্রাম মহাসমৃদ্ধিশালী নগর ছিল। এককালে যবদ্বীপ হইতে রোমক পর্যন্ত সর্বদেশের বণিকেরা বাণিজ্যার্থ এই মহানগরে মিলিত হইত।Continue Reading

তৃতীয় খণ্ড

কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের তৃতীয় খণ্ডের পরিচ্ছেদ সমূহের তালিকা।Continue Reading

প্রথম পরিচ্ছেদ : ভূতপূর্বে

“কষ্টোহয়ং খলু ভৃত্যভাবঃ।” রত্নাবলী। যখন নবকুমার কপালকুণ্ডলাকে লইয়া চটি হইতে যাত্রা করেন, তখন মতিবিবি পথান্তরে বর্ধমানাভিমুখে যাত্রা করিলেন। যতক্ষণ মতিবিবি পথবাহন করে, ততক্ষণ আমরা তাঁহার পূর্ববৃত্তান্ত কিছু বলি। মতির চরিত্র মহাদোষ কলুষিত, মহদ্গুণেও শোভিত। এরূপContinue Reading