neelkantha-pakhir-khunje

» » চার

শীত পড়তে পড়তেই চন্দ্রনাথ চলে এলেন বাড়িতে। ভূপেন্দ্রনাথ আসবেন মাঘ মাসের সতেরো তারিখে। কারণ সেই তারিখে শচীন্দ্রনাথ ছাড়া পাচ্ছেন। কোর্ট-কাছারি অথবা কী করে কী যে হয়েছিল সোনা জানে না। ছোটকাকা ফিরে আসছেন। ছোটকাকা ছাড়া পাচ্ছেনContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » পাঁচ

আবার সেই বাদ্য বাজছিল। ঢাক-ঢোল-সানাই বাজছে। জল ভরতে গেছে মেয়েরা। মাথা নেড়া করছে সোনা লালটু পলটু। উৎসবের বাড়ি, কত আত্মীয়-কুটুম। তাদের সন্তান-সন্ততি। সব ছেলেপুলে চারপাশ ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। ওরা বুঝি তামাশা দেখছে—এমন এক ভাবContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » ছয়

আজ দণ্ডী বিসর্জনের দিন। খুব সকালে উঠে সোনা, লালটু, পলটু, আহ্নিক করল। সূর্যোদয়ের আগে ওদের আজ নদীর পাড়ে হাজির হতে হবে। আহ্নিক শেষে ওরা এসে উঠোনে দাঁড়াল। তরমুজ খেত পার হলেই নদী। সেই নদীতে ওরাContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » সাত

জানালা খোলা। কামরাঙা গাছের অন্ধকারে কিছু জোনাকি জ্বলছে। বেতঝোপ পার হলে মাঠ। মাঠে আশ্চর্য সাদা জ্যোৎস্না। বড়বৌ সেই সাদা জ্যোৎস্নার দিকে তাকিয়েছিল, না ঘরের আয়নায় নিজের মুখ দেখছিল বোঝা যাচ্ছে না। গলায় চন্দ্রহার পরেছে বড়বৌ।Continue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » আট

ঘুম ভাঙতে ঈশমের বেশ বেলা হল। খুব সকালে ঘুম ভাঙার অভ্যাস। আজ বেলা হওয়ায় সে নিজের কাছেই কেমন ছোট হয়ে গেল। খুব সকাল সকাল সে ঠাকুরবাড়ি উঠে যায়। গোয়াল থেকে গরু বের করতে হবে। মাঠেContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » নয়

তখন কোরবানের পশুটা ভয়ে হাম্বা হাম্বা ডাকছে। যেন সে তার বাছুর হারিয়ে এই মানুষের মেলায় চলে এসেছে। সে তার অবলা চোখে সব দেখছিল। ভিড় ক্রমে বাড়ছে। ফেলুর একটা হাতে এত শক্তি! অন্য হাতটা তো ওরContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » দশ

এর ভিতর সেদিন দু’জন মানুষ এসেছিল ফেলুর বাড়ি। মাথায় তাদের কালো রঙের টুপি। লাল রঙের পুচ্ছ টুপিতে। কালো রঙের পাতলা সস্তা আদ্দির পাঞ্জাবি। নিচে কালো গেঞ্জি। গেঞ্জিটা ভেতর থেকে জেল্লা মারছে। পরনে খোপ-কাটা লুঙ্গি। পাতলাContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » এগার

সোনা বিকেলের দিকেই দেখল এই বাড়ি মানুষজনে গিজগিজ করছে। ঘোড়ায় চড়ে এলেন তারিণী সেন, তনি ঘোড়ায় চড়ে ফের নেমেও গেলেন। ব্রাহ্মন্দী থেকে রায়মশাইরা খবর পেয়ে বের হয়ে পড়েছেন। গোপালদি থেকে এসেছে অর্জুন সাহা, তার বৌContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » বার

সুতরাং এ অঞ্চলে আবার দুটো খবর কিংবদন্তীর মতো ছড়িয়ে পড়তে থাকল। হাটে মাঠে এখন এ-দুটো খবরই। প্রথম খবর, এ-অঞ্চলের মহিমামণ্ডিত মানুষ দেহরক্ষা করেছেন। দেহরক্ষার আগে তাঁর তিন পুত্রকে সজ্ঞানে বলে গেছেন, শ্রাদ্ধের মলিক হবে ভূপেন্দ্রনাথ।Continue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » তের

তখন সোনা উঠোনের চারপাশটায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। মানুষজন আসছে তো আসছেই। সে কোথাও যেতে পারছে না। তাকে সকলের সঙ্গে ধরে রাখতে হবে। ধরাধরি করে অর্জুন গাছটার নিচে নিয়ে যাবার সময় সেও সবার সঙ্গে একপাশে ঠাকুরদার মৃতদেহContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » চৌদ্দ

পাগল মানুষও সোনার সঙ্গে পুকুরে ডুব দিয়ে উঠে এসেছিলেন। লালটু পলটু ডুব দিয়ে উঠে এসেছিল। লালটু পলটু ডুব দিয়েছিল, এক ডুব। ওরা বাড়ি এসে নিমপাতা মুখে দিয়ে আগুনে শরীর সেঁকে ঘরে উঠে গেল। বাড়ির সবকিছুContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » পনের

সকালবেলাতে বড়বৌর মনে হল কেউ রাতে ফল-জল খায়নি। সবাই সোনাকে নিয়ে এমন ব্যস্ত ছিল যে, খাবার কথা কারও মনে আসেনি। এখন সোনা ঘুমোচ্ছে। খুব আলগোছে চন্দ্রনাথ তাকে পশ্চিমের ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন। এবং শুইয়ে দিচ্ছেন। কাঁথা-বালিশContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » ষোল

বিকেলের দিকে সোনার জ্বর আবার বেড়ে গেল। ওর ভীষণ শীত করছিল। কম্প দিয়ে জ্বর আসছে। সে ভেবেছিল জ্বর না এলে কাল ঠিক জ্যেঠিমাকে ধরে দুটো ভাত খাবে। ভাত না খেলে কী যে কষ্ট! যেন সেContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » সতের

মনে হল গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ঈশমকে কেউ ডাকছে। সে খুব ব্যস্ত ছিল বলে প্রথমে খেয়াল করে নি। সে একাই আজ একশো। ওর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে আবেদালি। সে আর কাউকে সঙ্গে পাবে আশা করেনি। হ্যাঁ, আরContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » আঠার

দিন-দশেক পর শশীভূষণ এবং ঈশম ফিরে এল। ওরা মহাদেব সাহার লোককে সঙ্গে নিয়ে গেছে। এত বড় মানুষকে দেশ-দেশান্তরে খুঁজতে যাওয়া ভাগ্যের কথা। ওরা এসে খবর দিল, না পাওয়া গেল না। বড়বৌ, শচীন্দ্রনাথ, এমন কী বাড়িরContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » উনিশ

ঈশম অনেক উঁচুতে ডাঙায় দাঁড়িয়েছিল। সামনে মেঘনা নদী। আশ্বিনের আকাশ উপরে। আশ্বিনের কুকুর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। দূরে সেই নৌকাগুলি—বিন্দু বিন্দু হয়ে ভাসছে। ঠিক কাগজের নৌকার মতো ছোট হয়ে গেছে। সে খুব উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়েContinue Reading

neelkantha-pakhir-khunje

» » বিশ

ভাবে বাংলাদেশে কিছু সময় কেটে গেল। এভাবে বাংলাদেশে ২১শে ফেব্রুয়ারি চলে এল একদিন। সারারাত জেগেছিল বলে সফিকুর এখন হাই তুলছে। বড় খাটুনি গেছে। সারারাত সে এবং তার কলেজের বন্ধুরা মিলে শহরময় পোস্টার মেরেছে। ঘরে মেয়েরাContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

» মানুষের ঘরবাড়ি

‘লেখক অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ে’র ‘দেশভাগ সিরিজে’র প্রথম বই ‘নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে’। বইটাতে দেশ বিভাগের আগের গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনযাত্রা, সমাজ ব্যবস্থা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, একক ও যৌথ পরিবারের সুখ দুঃখের এক অভূতপূর্ব অনুভূতির ছোঁয়া রেখে গেছে। ‘দেশভাগContinue Reading

মানুষের ঘরবাড়ি

» ভূমিকা

‘মানুষের ঘরবাড়ি’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭০ সালের জুনে, প্রকাশক বামাচরণ মুখোপাধ্যায়, করুণা প্রকাশনী, ১৮এ টেমার লেন, কলিকাতা-৯। মুদ্রাকর শ্যামাচরণ মুখোপাধ্যায়, করুণা প্রিন্টার্স, ১৩৮ বিধান সরণী, কলিকাতা-৪; প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন গৌতম রায়। মানুষের ঘরবাড়ির প্রথম সংস্করণেরContinue Reading