সাম্প্রতিক সংযোজন
কমলাকান্ত » পরিশিষ্ট » কমলাকান্তের জোবানবন্দী
সেই আফিঙ্গখোর কমলাকান্তের অনেক দিন কোন সম্বাদ পাই নাই। অনেক সন্ধান করিয়াছিলাম, অকস্মাৎ সম্প্রতি একদিন তাহাকে ফৌজদারী আদালতে দেখিলাম। দেখি যে, ব্রাহ্মণ এক গাছতলায় বসিয়া, গাছের গুঁড়ি ঠেসান দিয়া, চক্ষু বুজিয়া ডাবায় তামাকু টানিতেছে। মনেContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের পত্র » পঞ্চম সংখ্যা : কমলাকান্তের বিদায়
সম্পাদক মহাশয়! বিদায় হইলাম, আর লিখিব না। বনিল না। আপনার সঙ্গে বনিল না, পাঠকের সঙ্গে বনিল না, এ সংসারের সঙ্গে আমার বনিল না। আপনার সঙ্গে আর আমার বনিল না। আর কি লেখা হয়? বেসুরে কিContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের পত্র » চতুর্থ সংখ্যা : বুড়া বয়সের কথা
সম্পাদক মহাশয়! আফিঙ্গ পৌঁছে নাই, বড় কষ্ট গিয়াছে। আজ যাহা লিখিলাম, তাহা বিস্ফারিত লোচনে লেখা। নিজ বুদ্ধিতে, অহিফেন প্রসাদাৎ নহে। একটা মনের দুঃখের কথা লিখিব। বুড়া বয়সের কথা লিখিব! লিখি লিখি মনে করিতেছি, কিন্তু লিখিতেContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের পত্র » তৃতীয় সংখ্যা : বাঙ্গালীর মনুষ্যত্ব
মহাশয়! আপনাকে পত্র লিখিব কি—লিখিবার অনেক অনেক শত্রু। আমি এখন যে কুঁড়ে ঘরে বাস করি, দুর্ভাগ্যবশতঃ তাহার পাশে গোটা দুই তিন ফুলগাছ পুঁতিয়াছি। মনে করিয়াছিলাম, কমলাকান্তের কেহ নাই—এই ফুলগুলি আমার সখা সখী হইবে। খোশামোদ করিয়াContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের পত্র » দ্বিতীয় সংখ্যা : পলিটিক্স্
শ্রীচরণেষু, আফিঙ্গ পাইয়াছি। অনেকটা আফিঙ্গ পাঠাইয়াছেন— শ্রীচরণকমলেষু। আপনার শ্রীচরণকমলযুগলেষু—আরও কিছু আফিঙ্গ পাঠাইবেন। কিন্তু শ্রীচরণকমলযুগল হইতে কমলাকান্তের প্রতি এমন কঠিন আজ্ঞা কি জন্য হইয়াছে, বুঝিতে পারিলাম না। আপনি লিখিয়াছেন যে, এক্ষণে নয় আইনে অন্যত্র কিছু পলিটিক্স্Continue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের পত্র » প্রথম সংখ্যা : কি লিখিব?
পূজ্যপাদ শ্রীযুক্ত বঙ্গদর্শন সম্পাদক মহাশয় শ্রীচরণকমলেষু। আমার নাম শ্রীকমলাকান্ত চক্রবর্ত্তী, সাবেক নিবাস শ্রীশ্রীনসিধাম, আপনাকে আমি প্রণাম করি। আপনার নিকট আমার সাক্ষাৎসম্বন্ধে পরিচয় নাই, কিন্তু আপনি নিজগুণে আমার বিশেষ পরিচয় লইয়াছেন, দেখিতেছি। ভীষ্মদেব খোশ্নবীস, জুয়াচোর লোকContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » চতুদর্শ সংখ্যা : ঢেঁকি
আমি ভাবি কি, যদি পৃথিবীতে ঢেঁকি না থাকিত, তবে খাইতাম কি? পাখীর মত দাঁড়ে বসিয়া ধান খাইতাম? না লাঙ্গুলকর্ণদুল্যমানা গজেন্দ্রগামিনী গাভীর মত মরাইয়ে মুখ দিতাম? নিশ্চয় তাহা আমি, পারিতাম না। নবযুবা কৃষ্ণকায় বস্ত্রশূন্য কৃষাণ আসিয়াContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » ত্রয়োদশ সংখ্যা : বিড়াল
আমি শয়নগৃহে, চারপায়ীর উপর বসিয়া, হুঁকা হাতে ঝিমাইতেছিলাম। একটু মিট্ মিট্ করিয়া ক্ষুদ্র আলো জ্বলিতেছে—দেয়ালের উপর চঞ্চল ছায়া, প্রেতবৎ নাচিতেছে। আহার প্রস্তুত হয় নাই—এজন্য হুঁকা হাতে, নিমীলিতলোচনে আমি ভাবিতেছিলাম যে, আমি যদি নেপোলিয়ন্ হইতাম, তবেContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » দ্বাদশ সংখ্যা : একটি গীত
“শোন্ প্রসন্ন, তোকে একটি গীত শুনাইব।” প্রসন্ন গোয়ালিনী বলিল, “আমার এখন গান শুনিবার সময় নয়—দুধ যোগাবার বেলা হলো।” কমলাকান্ত। “এসো এসো বঁধু এসো।” প্রসন্ন। “ছি ছি ছি! আমি কি তোমার বঁধু?” কমলাকান্ত। “বালাই! ষাট, তুমিContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » একাদশ সংখ্যা : আমার দুর্গোৎসব
সপ্তমীপূজার দিন কে আমাকে এত আফিঙ্গ চড়াইতে বলিল! আমি কেন আফিঙ্গ খাইলাম! আমি কেন প্রতিমা দেখিতে গেলাম! যাহা কখন দেখিব না, তাহা কেন দেখিলাম! এ কুহক কে দেখাইল! দেখিলাম—অকস্মাৎ কালের স্রোত, দিগন্ত ব্যাপিয়া প্রবলবেগে ছুটিতেছে—আমিContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » দশম সংখ্যা : বড় বাজার
প্রসন্ন গোয়ালিনীর সঙ্গে আমার চিরবিচ্ছেদের সম্ভাবনা দেখিতেছি। আমি নসীরাম বাবুর গৃহে আসিয়া অবধি তাহার নিকট ক্ষীর, সর, দধি দুগ্ধ এবং নবনীত খাইতেছি। আহারকালে মনে করিতাম, প্রসন্ন কেবল পরলোকে সদ্গতির কামনায় অনন্ত পুণ্য সঞ্চয় করিতেছে—; জানিতাম,Continue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » নবম সংখ্যা : ফুলের বিবাহ
বৈশাখ মাস বিবাহের মাস। আমি ১লা বৈশাখে নসী বাবুর ফুলবাগানে বসিয়া একটি বিবাহ দেখিলাম। ভবিষ্যৎ বরকন্যাদিগের শিক্ষার্থ লিখিয়া রাখিতেছি। মল্লিকা ফুলের বিবাহ। বৈকাল—শৈশব অবসানপ্রায়, কলিকা—কন্যা বিবাহযোগ্য হইয়া আসিল। কন্যার পিতা বড় লোক নহে, ক্ষুদ্র বৃক্ষ,Continue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » অষ্টম সংখ্যা : স্ত্রীলোকের রূপ
অনেক ভামিনী রূপের গৌরবে পা মাটিতে দেন না। ভাবেন, যে দিক্ দিয়া অঙ্গ দোলাইয়া চলিয়া যান, লাবণ্যের তরঙ্গে সে দিকের সংজ্ঞা ডুবিয়া যায়; নূতন জগতের সৃষ্টি হয়। তাঁহারা মনে করেন, তাঁহাদের রূপের ঝড় যে দিকেContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » সপ্তম সংখ্যা : বসন্তের কোকিল
তুমি বসন্তের কোকিল, বেশ লোক। যখন ফুল ফুটে, দক্ষিণ বাতাস বহে, এ সংসার সুখের স্পর্শে শিহরিয়া উঠে, তখন তুমি আসিয়া রসিকতা আরম্ভ কর। আর যখন দারুণ শীতে জীবলোকে থরহরি কম্প লাগে, তখন কোথায় থাক, বাপু?Continue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » ষষ্ঠ সংখ্যা : চন্দ্রালোকে
এই তৃণ-শষ্প-শোভিত হরিৎক্ষেত্র, এই কলবাহিনী ভাগীরথী-তীরে, এই স্ফুটচন্দ্রা-লোকে, আজি দপ্তরের শ্রীবৃদ্ধি, কলেবর-বৃদ্ধি করিব। এইরূপ চন্দ্রালোকেই না ট্রেলস্ শর্ম্মা ট্রয়ের উচ্চ প্রাচীরে আরোহণ করিয়া, ক্রিসীদাকে স্মরণ করিয়া, উষ্ণ শ্বাস ত্যাগ করিতেন! এইরূপ চন্দ্রালোকেই না থিবসী সুন্দরীContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » পঞ্চম সংখ্যা : আমার মন
আমার মন কোথায় গেল? কে লইল? কই, যেখানে আমার মন ছিল, সেখানে ত নাই। যেখানে রাখিয়াছিলাম, সেখানে নাই। কে চুরি করিল? কই, সাত পৃথিবী খুঁজিয়া ত আমার “মনচোর” কাহাকে পাইলাম না। তবে কে চুরি করিল?Continue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » চতুর্থ সংখ্যা : পতঙ্গ
বাবুর বৈঠকখানায় সেজ জ্বলিতেছে —পাশে আমি, মোসায়েবি ধরণে বসিয়া আছি। বাবু দলাদলির গল্প করিতেছেন,— আমি আফিম চড়াইয়া ঝিমাইতেছি। দলাদলিতে চটিয়া মাত্রা বেশী করিয়া ফেলিয়াছি। বিধিলিপি! এই অখিল ব্রহ্মাণ্ডের অনাদি ক্রিয়াপরম্পার একটি ফল এই যে, ঊনবিংশContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » তৃতীয় সংখ্যা : ইউটিলিটি বা উদর-দর্শন
বেন্থাম হিতবাদ দর্শনের সৃষ্টি করিয়া ইউরোপে অক্ষয় কীর্ত্তি স্থাপন করিয়া গিয়াছেন। আমি এই হিতবাদমতে অমত করি না; বরং আমি ইহার অনুমোদক, তবে আপনারা জানেন কি না, বলিতে পারি না, আমি একজন সুযোগ্য দার্শনিক। আমি এইContinue Reading
কমলাকান্ত » কমলাকান্তের দপ্তর » দ্বিতীয় সংখ্যা : মনুষ্য ফল
আফিমের একটু বেশী মাত্রা চড়াইলে আমার বোধ হয়, মনুষ্যসকল ফলবিশেষ—মায়াবৃন্তে সংসার—বৃক্ষে ঝুলিয়া রহিয়াছে, পাকিলেই পড়িয়া যাইবে। সকলগুলি পাকিতে পায় না —কতক অকালে ঝড়ে পড়িয়া যায়। কোনটি পোকায় খায়, কোনটিকে পাখীতে ঠোকরায়। কোনটি শুকাইয়া ঝরিয়া পড়ে।Continue Reading