পাঁচকড়ি দে
নীলবসনা সুন্দরী
‘নীল বসনা সুন্দরী’ পাঁচকড়ি দে’র একটি সাড়া জাগানো উপন্যাস। এটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯০৪ খ্রীষ্টাব্দে। ১৩১১ বঙ্গাব্দের ১৯শে মাঘ ’বঙ্গভূমি’ পত্রিকায় উপন্যাসটি সম্বন্ধে লেখা হয়েছে— “‘নীলবসনা সুন্দরী’ বঙ্গ সাহিত্যের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ ডিটেক্টিভ ঔপন্যাসিক শ্রীযুক্ত পাঁচকড়ি দে প্রণীত। ইনি সাহিত্য সমাজে সুপরিচিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত। আমরা এই পুস্তক অত্যন্ত আগ্রহের সহিত পাঠ করিয়াছি। পূর্ব্বে বাংলায় ভালো ডিটেক্টিভ উপন্যাস ছিল না, শ্রীযুক্ত পাঁচকড়িবাবু বঙ্গীয় পাঠকগণের সে অভাব পূরণ করিয়াছেন। আমরা তাঁহার ডিটেকটিভ উপন্যাসের সমাদর করি। তাঁহার ন্যায় প্রতি পরিচ্ছেদে এমন নব নব কৌতূহল সৃষ্টি করিবার ক্ষমতা কাহারও দেখি না। যদি এমন উপন্যাস পড়িতে চাহেন যাহা একবার পড়িয়া তৃপ্তি হয় না, দশবার পড়িয়া দশজনকে শুনাইতে ইচ্ছা করে তবে এই ‘নীল বসনা সুন্দরী’ পাঠ করুন। পড়িতে পড়িতে যেন এই উপন্যাস চুম্বকের আকর্ষণে পাঠককে টানিয়া লইয়া যায়। ঘটনা কৌতূহলজনক, ভাষাও তেমন সরল ও তরল, যেন নির্ঝরিণীর ন্যায় তরতর বেগে বহিয়া যাইতেছে। শব্দচ্ছটাও অতি সুন্দর। বঙ্গ সাহিত্যে গ্রন্থকারের ডিটেকটিভ উপন্যাস যথেষ্ট সমাদর লাভ করিবে।”
নলিনী রঞ্জন পণ্ডিত সম্পাদিত ‘জাহ্ণবী’ মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় ১৯০৪ খ্রীষ্টাব্দে। পত্রিকাটির প্রথম বর্ষের ষষ্ঠ সংখ্যায় কবি দেবেন্দ্রনাথ সেন পাঁচকড়ি দে’র দুটি উপন্যাস সম্বন্ধে লিখেছেন— “’নীল বসনা সুন্দরী’, ‘হত্যাকারী কে?’ শ্রী পাঁচকড়ি দে প্রণীত। এই দুইখানি ডিটেকটিভ উপন্যাস আমরা স্বীকার করিতে বাধ্য, আমরা সচরাচর ইংরাজী ও ফরাসীয় লেখকদের রচিত যে সব ডিটেকটিভ উপন্যাস পাঠ করি, তদপেক্ষা সমালোচ্য উপন্যাস দুখানি কোন অংশে হীন নহে। ভাষা বেশ সরল, সুন্দর যেন জলধারার মত বহিয়া যাইতেছে। লেখক সুনিপুণ কৌশলে, মুন্সিয়ানার সহিত, ওস্তাদির সহিত পাঠককে গ্রন্থের প্রথম হইতে শেষ পর্য্যন্ত পাঠ করিতে বাধ্য করেন। কৌতূহল চরিতার্থ করিবার জন্য এক দুর্দ্দমনীয় ব্যাকুলতা জন্মে। লেখকের পক্ষে ইহা কম বাহাদুরীর বিষয় নহে।”
সাহিত্যিক ধীরেন্দ্রনাথ পালের পুত্র যতীন্দ্রনাথ পালের আকস্মিক মৃত্যুতে দীনেন্দ্রনাথ অত্যন্ত শোকগ্রস্ত হন। যতীন্দ্রনাথ ছিলেন পাঁচকড়ির বিশেষ বন্ধু। তার নামানুসারেই জোড়াসাঁকোর শিবকৃষ্ণ দাঁ লেনে পাঁচকড়ির বইয়ের দোকানের নাম ছিল ‘পাল ব্রাদার্স’। বন্ধুর মৃত্যুর পর তিনি আর কোন লেখা লেখেন নি। ১৯৪৫ খৃষ্টাব্দের ২০শে নভেম্বর তার মৃত্যু হয়।
সৰ্ব্বসদ্গুণালঙ্ক তহৃদয়
সুহৃদ্বর
শ্রীযুক্ত অভয়চরণ পাল বি.এ., বি. এল.,
বৈবাহিক মহাশয়ের নামে এই গ্ৰন্থ
সাদরে
উৎসর্গীকৃত হইল।