‘দুঃসাহসিক’ কাজী আনোয়ার হোসেন রচিত ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের চতুর্থ উপন্যাস। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ সালে। এই রহস্যোপন্যাসটি রচিত হয়েছে ‘ইয়ান ফ্লেমিঙের ‘জেমস বণ্ড সিরিজে’র ‘ডায়মন্ডস আর ফরেভারে’র ছায়া অবলম্বনে। পিকিং শহর থেকে এল সাহায্যের আবেদন, একজন দুঃসাহসী বাঙালি লোক চাই। বন্ধু দেশ… যেতে হলো রানাকে। মুখোমুখি হতে হলো শক্তিশালী এক প্রতিপক্ষের।

পাকিস্তান কাউন্টার ইনটেলিজেন্স—পিসিআই-র ঢাকা শাখার কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছে চাইনিজ সিক্রেট্ সার্ভিস্ (সিএসএস)— ইউরেনিয়াম স্মাগলিং গ্যাঙের নাড়িনক্ষত্র খুঁজে বের করতে হবে। চীন, পাকিস্তানের অন্যতম বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ও সিএসএস অনেক দুঃসময়ে সাহায্য করেছে পিসিআইকে। তাই পিসিআই-র ঢাকা শাখাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় সিএসএসের জন্য। পিসিআই-র অন্যতম দুঃসাহসিক অফিসার মাসুদ রানাকে পাঠানো হয় সাহায্যের জন্য। কিন্তু রানা যখন সেখানে যায়, তখন সে বুঝতে পারে যে, সে অনেক বড় বিপদের মধ্যে পড়ে গেছে—যেখানে তার প্রাণসংশয়ও হতে পারে। তবুও ‘দুঃসাহসিক’ অভিযান চালিয়ে মাসুদ রানা শাংহাই থেকে হংকং, হংকং থেকে ম্যাকাও ঘুরে দুর্ধর্ষ গ্যাং রেড লাইটনিঙের ডেরা থেকে কার্য হাসিল করে বেরিয়ে আসে।

‘দুঃসাহসিক’ গল্পটি ভাল কিন্তু আর পাঁচটা সাধারণ স্পাই থ্রিলার গল্প থেকে আলাদা করার মত কোন বৈশিষ্ট্যই ফুটিয়ে তুলতে পারেননি লেখক। এছাড়া সংলাপগুলো অনেকটাই দুর্বল। আর লেখক মাসুদ রানা সিরিজের পূর্ববর্তী গল্পগুলোতে সেভাবে নারী চরিত্রগুলো এনেছেন, এই গল্পটিতেও প্রায় একইভাবে নারী চরিত্রটি এনেছেন; যা একেবারে গতানুগতিক—সহজ কথায়, বর্তমান থ্রিলার-রোমেন্টিক চলচ্চিত্র বা সিরিজে যেভাবে নারী চরিত্রগুলো (যদিও সেখানে নায়িকা বলে সম্বোধন করা হয়) আনা হয়, অনেকটা সেভাবেই লেখক এই গল্পেটিতে নারী চরিত্রটিকে স্থান দিয়েছেন। তবে অ্যাকশন দৃশ্যগুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলায় কাহিনীটির নাম ‘দুঃসাহসিক’ যথার্থ হয়েছে।