বধূ-বরণ

এতদিন ছিলে ভুবনের তুমি

আজ ধরা দিলে ভবনে,

নেমে এলে আজ ধরার ধুলাতে

ছিলে এতদিন স্বপনে।

শুধু শোভাময়ী ছিলে এতদিন

কবির মানসে কলিকা নলিন,

আজ পরশিলে চিত্ত-পুলিন

বিদায়-গোধূলি লগনে।

উষার ললাট-সিন্দূর-টিপ

সিথিঁতে উড়াল পবনে॥

প্রভাতের উষা কুমারী, সেজেছ

সন্ধ্যায় বধূ উষসী,

চন্দন টোপা-তারা-কলঙ্কে

ভরেছে বে-দাগ মু’শশী।

মুখর মুখ আর বাচাল নয়ন

লাজ-সুখে আজ যাচে গুণ্ঠন,

নোটন-কপোতী কণ্ঠে এখন

কূজন উঠিছে উছসি।

এতদিন ছিলে শুধু রূপ-কথা

আজ হলে বধূ রূপসী॥

দোলা-চঞ্চল ছিল এই গেহ

তব লটপট বেণী ঘায়,

তারই সঞ্চিত আনন্দ ঝলে

ঐ ঊর-হার-মণিকায়।

এ ঘরের হাসি নিয়ে যাও চোখে,

সেথা গৃহ-দীপ জ্বেলো এ আলোকে

চোখের সলিল থাকুক এ-লোকে–

আজি এ মিলন-মোহনায়

ও-ঘরের হাসি-বাঁশির বেহাগ

কাঁদুক এ ঘরে সাহানায়॥

বিবাহের রঙে রাঙা আজ সব

রাঙা মন রাঙা আভরণ,

বলো নারী, ‘এই রক্ত আলোকে

আজ মম নব জাগরণ!’

পাপে নয়, পতি পুণ্যে সুমতি

থাকে যেন, হয়ো পতির সারথি।

পতি যদি হয় অন্ধ, হে সতী

বেঁধো না নয়নে আবরণ;

অন্ধ পতিরে আঁখি দেয় যেন

তোমার সত্য আচরণ॥