নিস্তব্ধ রাত্রির সূচিভেদ্য অন্ধকার ভেদ করে শোনা যাচ্ছে অশ্ব-পদধ্বনি খট খট খটু….তাজের পিঠে এগিয়ে আসছে দস্যু বনহুর। সর্বাঙ্গে কালো পোশাক, মাথায় কালো পাগড়ি, কোমরের বেল্টে গুলীভরা রিভলবার।
চৌধুরী বাড়ির অদূরে এসে বনহুর তাজের পিঠ থেকে নেমে দাঁড়ালো। তাজের পিঠে মৃদু আঘাত করে বললো–ঠিক এইখানে দাঁড়িয়ে থাকবি, বুঝলি?
তাজ হয়তো বনহুরের কথা বুঝতে পারলো, মৃদু শব্দ করে উঠলো সে–চিঁ হিঁ।
বনহুর অন্ধকারে সন্তর্পণে এগিয়ে আসছে। বার বার তাকাচ্ছে সে চৌধুরী বাড়ির দোতলার একটি সুউচ্চ কক্ষের দিকে। মুক্ত জানালা দিয়ে কিছুটা বৈদ্যুতিক আলো বেরিয়ে এসে পড়েছে নিচের বাগানের মধ্যে। এই কক্ষটি মনিরার। যতই নিকটবর্তী হচ্ছে সে ততই মনের মধ্যে এক আনন্দের দ্যুতি খেলে যাচ্ছে-মনিরা হয়তো তার জন্য পথ চেয়ে বসে আছে।
এদিকে পুলিশ সুপার মি. আহম্মদ গুলীভরা উদ্যত রিভলবার হস্তে রুদ্ধ নিঃশ্বাসে প্রতীক্ষা করছেন দস্যু বনহুরের।
অদূরে একটি পাইন গাছের আড়ালে লুকিয়ে রিভলবার উদ্যত করে আছেন মি. হারুন। অন্যান্য পুলিশ কেউ বা বন্দুক, কেউ বা রাইফেল বাকিয়ে ঝোঁপের মধ্যে উবু হয়ে প্রতীক্ষা করছে। আজ দস্যু বনহুরকে জীবিত কিংবা মৃত পাকড়াও করা চাই-ই চাই।
বনহুর একেবারে নিকটে পৌঁছে যায়। হঠাৎ তার পায়ে একটি লতা জড়িয়ে পড়ে। পড়তে পড়তে বেঁচে যায় বনহুর। কিন্তু সে সোজা হয়ে দাঁড়াবার পূর্বেই একটি গুলী সঁ করে চলে যায় তার পাশ কেটে। মুহূর্তে বনহুর বুঝতে পারে বিপদ তার সম্মুখীন। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে উবু হয়ে শুয়ে পড়ে সে। পর মুহূর্তেই তার মাথার উপর দিয়ে সাঁ সাঁ করে আরও কয়েকটা গুলী চলে গেল। নিস্তব্ধ রাত্রির বুকে জেগে উঠলো রিভলবার আর রাইফেলের গুলীর আওয়াজ গুড় ম-গুড় ম গুড় ম…..
বনহুর হামাগুড়ি দিয়ে এগুতে লাগলো। এখানে থাকা আর এক দণ্ড তার পক্ষে উচিত নয়। কখনও বুক দিয়ে, কখনও হামাগুড়ি দিয়ে চলতে লাগলো সে। তখনও তার মাথার উপর দিয়ে গুলী ছুটে চলেছে।
নিজের কক্ষে চমকে উঠলো মনিরা। হাত থেকে খসে পড়লো ফুলের মালা। নিশ্চয়ই মনিরের আগমন পুলিশ বাহিনী জানতে পেরেছে। তারা ভীষণভাবে আক্রমণ করেছে তাকে। মনিরার হৃদপিণ্ড ধক ধক করে কাঁপতে শুরু করলো। হায়। একি হলো! এতোক্ষণ হয়তো মনিরের দেহটা ধূলায় লুটিয়ে পড়েছে। রক্তে রাঙা হয়ে উঠেছে সেখানের মাটি….আর ভাবতে পারে না মনিরা। একবার ছুটে যায় জানালার পাশে, একবার এসে দাঁড়ায় মেঝের মাঝখানে। ভেবে পায় না কি। করবে সে।
গুলীর শব্দে চৌধুরী সাহেব এবং মরিয়ম বেগমের নিদ্রা ছুটে যায়। ব্যস্ত সমস্ত হয়ে চৌধুরী সাহেব রেলিং-এর পাশে এসে দাঁড়ান। মরিয়ম বেগম ছুটেন মনিরার কক্ষের দিকে।
মনিরা তখন দরজা খুলে মামুজানের কক্ষের দিকে ছুটতে শুরু করেছে। মরিয়ম বেগমকে দেখতে পেয়ে মনিরা তাঁকে জড়িয়ে ধরে ব্যাকুল কণ্ঠে বলে উঠে-মামীমা, মামীমা, একি হলো! একি হলো!
মরিয়ম বেগম সান্ত্বনার স্বরে বলেন–ভয় নেই মা, গুলী এখানে আসবে না।
তারপর মনিরাকে সঙ্গে করে চৌধুরী সাহেবের কক্ষে গিয়ে দাঁড়ান মরিয়ম বেগম; স্বামীকে লক্ষ্য করে বলেন–ওগো, কি হয়েছে? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনে।
বিস্ময়াহত চৌধুরী সাহেবও অস্ফুট কণ্ঠে বলেন–আমিও তো কিছু বুঝতে পারছিনে।
মনিরার চোখে মুখে এক উৎকণ্ঠার ছাপ ফুটে উঠেছে। কি করবে, না বললেও নয়। নিশ্চয়ই পুলিশ বাহিনী তার মনিরের উপর হামলা চালিয়েছে। চঞ্চল কণ্ঠে বলে উঠে মনিরা-মামুজান, নিশ্চয়ই এ পুলিশের রাইফেলের শব্দ। পুলিশ আমাদের বাড়ি ঘেরাও করে ফেলেছে।
চৌধুরী সাহেব অস্ফুট কণ্ঠে উচ্চারণ করেন–পুলিশ!
হ্যাঁ হ্যাঁ, মামুজান যাও, ওদের ক্ষান্ত করো। ওদের ক্ষান্ত করো তুমি…
সেকি মা, পুলিশ কেন এভাবে আমাদের বাড়ি ঘেরাও করে গুলী ছুঁড়বে?
মামুজান যাও, বারণ করো; বারণ করো তুমি….নইলে…নইলে সর্বনাশ হবে, সর্বনাশ হবে মামুজান….।
মরিয়ম বেগম বাড়ির অদূরে যেখানে গুলীর শব্দ হচ্ছিলো সেদিকে তাকিয়ে বলেন–মনিরা, আমাদের ব্যস্ত হবার কিছু নেই। গুলী আমাদের বাড়ির দিকে ছুঁড়ছে বলে মনে হচ্ছে না; দেখছিস নাগুলীর শব্দ ক্রমান্বয়ে ঐদিকে সরে যাচ্ছে।
মনিরা স্তব্ধ চোখে তাকিয়ে রইলো অন্ধকারময় অদূরস্থ পাইন গাছগুলির দিকে। মনের মধ্যে ঝড় বইতে শুরু করেছে। কায়মনে খোদাকে স্মরণ করতে লাগলো, হে দয়াময়! ওকে তুমি রক্ষা করো, ওকে তুমি বাঁচিয়ে নাও প্রভু!
মাত্র কয়েক মিনিট, হঠাৎ মনিরার কানে এসে পৌঁছলো অশ্ব-পদশব্দ খট খট খট….তবে কি মনির এ যাত্রা রক্ষা পেয়েছে! এ যে তারই অশ্বের পদশব্দ। মুহূর্তে মনিরার মুখমণ্ডল প্রসন্ন হয়ে উঠে। নিজ মনেই অস্ফুট কণ্ঠে বলে উঠে-বেঁচে গেছে, নিশ্চয়ই সে বেঁচে গেছে….
মরিয়ম বেগম আশ্চর্য কণ্ঠে বলে উঠে-সেকি মনিরা, কে বেঁচে গেছে রে?
ঐ যে ও-ও বেঁচে গেছে; শুনছো না মামীমা ওর ঘোড়ার খুরের শব্দ?
তাইতো শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু ওটা কার ঘোড়ার খুরের শব্দ মনিরা? মরিয়ম বেগম কান পেতে শুনতে লাগলেন।
চৌধুরী সাহেব বলেন–তাই তো, একটা ঘোড়া দ্রুত ঐদিকে চলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
হ্যাঁ মামাজান, সে বেঁচে গেছে।
কে, কার কথা বলছো, মা মনিরা? চৌধুরী সাহেব প্রশ্ন করেন।
না না কেউ না, কেউ না মামুজান, কেউ না….মনিরা ছুটে চলে যায় নিজের ঘরের দিকে।
কক্ষে প্রবেশ করে খোদার কাছে দু’হাত তুলে শুকরিয়া আদায় করে-হে খোদা, তুমি পাক পরওয়ার দেগার, আমার মনিরকে তুমি নিশ্চয়ই বাঁচিয়ে নিয়েছে। তোমার কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া। মালাখানা হাতে তুলে নিয়ে বনহুরের ছবির পাশে গিয়ে দাঁড়ায়, তারপর পরিয়ে দেয় সে ছবির গলায়। নির্বাক নয়নে তাকিয়ে থাকে সে ছবিখানার দিকে।
মি. আহম্মদের রিভলবারের গুলী লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি, তিনি দেখতে পেলেন, অন্ধকারে কেউ যেন ভূতলে পড়ে গেল। পুশিল বাহিনী মুহর্তমধ্যে ঘিরে ফেললো জায়গাটা, কিন্তু কোথায় কে! মি. আহম্মদ স্বয়ং ছুটে গেলেন যেখানে অন্ধকারে কাউকে পড়ে যেতে দেখেছিলেন। টর্চের আলো বিক্ষিপ্তভাবে ছুটাছুটি করতে লাগলো। মি. হারুন এবং মি. হোসেন টর্চের আলো ফেলে ঝোঁপ ঝাড়, বাগানের আশেপাশে দেখতে লাগলেন। সবাই সতর্ক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে খুঁজে চলেছে দস্যু বনহুরকে।
মি. আহম্মদ বলেন–ইন্সপেক্টর, আমার গুলী দস্যুটাকে ঘায়েল করেছে। নিশ্চয়ই সে মারা পড়েছে কিংবা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।
পুলিশ বাহিনী তখনও অনুসন্ধান করে চলেছে। তাদের টর্চের আলো বিক্ষিপ্তভাবে ছুটোছুটি করছে। হঠাৎ একজন পুলিশ তীব্র চিৎকার করে উঠে-হুজুর রক্ত, হুজুর রক্ত…
সবাই দ্রুত এগিয়ে গেলেন সেখানে। একটা পাইন ঝাড়ের পাশে খানিকটা জায়গা রক্তে রাঙা হয়ে উঠেছে। মি. হোসেন আনন্দধ্বনি করে উঠেন-স্যার, দস্যু নিহত হয়েছে, দস্যু নিহত হয়েছে।
মি. হারুন জায়গাটা ভালোভাবে লক্ষ্য করে বলেন–না, সে নিহত হয়নি, সে আহত হয়েছে।
স্যার, আপনার গুলি যে দস্যুটাকে ঘায়েল করেছে, এ সুনিশ্চয়।
সে বেঁচে আছে, আমার গুলী খেয়েও সে বেঁচে আছে। নিহত হয়নি! নিশ্চয়ই তাহলে সে আহত অবস্থায় নিকটেই কোথাও লুকিয়ে আছে। এই মুহূর্তে তোমরা সমস্ত ঝোঁপঝাড়, বাগান তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখ। আহত অবস্থায় সে পালাতে পারেনি।
মি. আহম্মদ যখন তার সঙ্গীদের কথাগুলো বলছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে বনহুর তার বাম হস্ত চেপে ধরে তাজের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। দক্ষিণ হস্তের আংগুলের ফাঁকে ঝর ঝর করে ঝরে পড়ছে তাজা রক্ত। মি. আহম্মদের গুলীটা বনহুরের বাম হস্তের মাংস ভেদ করে চলে গেছে।
তাজ মনিবের অবস্থা হয়তো অনুভব করলো। নিঃশব্দে তাজ সোজা হয়ে দাঁড়ালো। বনহুর। অন্ধকারে অতিকষ্টে উঠে বসলো তাজের পিঠে। সঙ্গে সঙ্গে উল্কাবেগে ছুটতে শুরু করলো তাজ।
আচমকা অশ্ব-পদশব্দে চমকে উঠেন মি. আহম্মদ ও তার দলবল। মি. হারুন চিৎকার করে উঠেন-স্যার, দস্যু বনহুরের অশ্ব-পদশব্দ। সঙ্গে সঙ্গে তার রিভলবার গর্জন করে উঠে-গুড়ুম গুডুম……
মি. আহম্মদ রাগে-ক্ষোভে অধর দংশন করেন। সমস্ত পুলিশ বাহিনীকে লক্ষ্য করে হুঙ্কার ছাড়েন-গ্রেপ্তার করো, গ্রেপ্তার করো। গুলী চালাও, গুলী চালাও….
একসঙ্গে অসংখ্য রাইফেল গর্জে উঠে।
কিন্তু তাজের খুরের শব্দ তখন অনেক দূরে এগিয়ে গেছে। মনিবের বিপদ বুঝতে পেরে তাজ উলকাবেগে ছুটতে শুরু করেছে।
পুলিশ বাহিনীর রাইফেলের গুলী আর তাজের নিকটে পৌঁছতে সক্ষম হলো না।
ধীরে ধীরে তাজের পদশব্দ অন্ধকারে মিলে গেল।
মি. আহম্মদ ক্ষিপ্তের ন্যায় হয়ে উঠলেন। দস্যু বনহুরের কাছে এ যেন তার চরম অপমান। হাঙ্গেরিয়া কারাগার থেকে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছে। ভেবেছিলেন এবার তিনি দস্যু বনহুরকে জীবিত কিংবা মৃত পাকড়াও করবেনই। কিন্তু সব বিফলে গেল। এত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলো।
তিনি অফিসে ফিরে এ বিষয়ে গভীরভাবে আলোচনা করতে লাগলেন।
মি. হারুন পুলিশ সুপারের অবস্থা দর্শনে মনে মনে হাসলেন। প্রকাশ্যে বললেন-স্যার, আপনি এতো উত্তেজিত হচ্ছেন কেন, দস্যু বনহুরকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও তাকে আপনি ঘায়েল করেছেন। যে দস্যুকে হাঙ্গোরিয়া কারাগার আটকে রাখতে পারেনি বা সক্ষম হয়নি, সেই দস্যু আজ আপনার হস্তে আহত-এটাও কম নয়।
মি. হারুনের কথায় সুপার কতকটা যেন আশ্বস্ত হন। তিনি গম্ভীর কণ্ঠে বলেন–ইন্সপেক্টর, এ কথা আমি হলফ করে বলতে পারি, আমার রিভলবারের গুলী দস্যুটাকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে।
দ্বিতীয় ইন্সপেক্টর মি. হোসেন বলেন–স্যার, এ বিষয়ে নিঃসন্দেহ যে, তার জখমটা সাংঘাতিক হয়েছে। নইলে অতো রক্তপাত হতো না।
মি. আহম্মদ যেন খুশি হলেন। দস্যুকে যদিও তিনি গ্রেপ্তার করতে পারেননি, তবু কিছুটা সান্ত্বনা পেলেন দস্যু ঘায়েল হয়েছে বলে।
তিনি আরও কিছুক্ষণ এ বিষয় নিয়ে তাঁর দলবলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করলেন। তারপর বিদায় গ্রহণ করলেন।
কিন্তু বাসায় ফিরেও মি. আহম্মদ স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। অহরহ একটা চিন্তা তাঁকে অক্টোপাশের মত ঘিরে রেখেছিল। তিনি ভেবেছিলেন দস্যু বনহুর সবাইকে হার মানাতে পারে, হাঙ্গেরিয়া কারাগার থেকে পালাতে পারে, কিন্তু তার হাত থেকে পরিত্রাণ পাবে না। বাকি রাতটুকু তাঁর ছটফট করে কাটলো। ভোর হবার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অফিসে ফোন করলেন। মি. হারুন এবং অন্যান্য পুলিশ অফিসার কেবলমাত্র বিশ্রামের জন্য বাড়ি যাবেন ভাবছেন, এমন সময় মি. হারুন এবং হোসেনের ডাক এলো। মি. আহম্মদ এক্ষুণি তাঁদের আহ্বান জানিয়েছেন।
মি. হারুন এবং হোসেন অগত্যা বিশ্রামের আশা ত্যাগ করে মি. আহম্মদের বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। মি. হারুন ও মি. হোসেন সুপারের বাসভবনে পৌঁছে আশ্চর্য হলেন। মি. আহম্মদের শরীরে তখনও গত সন্ধ্যার ড্রেস দেখে বিস্ময়ে স্তম্ভিত হলেন মি. হারুন এবং মি. হোসেন। ক্ষিপ্তের ন্যায় পায়চারি করছেন মি. আহম্মদ।
মি. হারুন এবং মি. হোসেন সেলুট করে সোজা হয়ে দাঁড়ালেন। মি. আহম্মদ গম্ভীর কণ্ঠে বলেন–ইন্সপেক্টর, এক্ষুণি মি. চৌধুরীর বাড়ির সম্মুখে যে স্থানে দস্যুটার রক্ত দেখা গিয়েছিল ঐখানে যেতে চাই। নিশ্চয়ই কোন ক্ল পাওয়া যেতে পারে। আপনারা প্রস্তুত আছেন?
ইয়েস স্যার, আমরা প্রস্তুত।
তবে চলুন আর বিলম্ব নয়, আমি নিজে ঐ জায়গাটা দিনের আলোয় দেখতে চাই। কথাটা বলে টেবিল থেকে হ্যাটটা তুলে মাথায় পরে নেন মি. আহম্মদ।