প্রথম পরিচ্ছেদ : বক ও হংসীর কথা

নির্মল ধীরে ধীরে রাজকুমারীর কাছে গিয়া বসিলেন। দেখিলেন, রাজকুমারী একা বসিয়া কাঁদিতেছেন। সে দিন যে চিত্রগুলি ক্রীত হইয়াছিল, তাহার একখানি রাজকুমারীর হাতে দেখিলেন। নির্মলকে দেখিয়া চঞ্চল চিত্রখানি উল্টাইয়া রাখিলেন— কাহার চিত্র, নির্মলের তাহা বুঝিতে বাকিContinue Reading

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : অনন্ত মিশ্র

অনন্ত মিশ্র, চঞ্চলকুমারীর পিতৃকুলপুরোহিত। কন্যানির্বিশেষে, চঞ্চলকুমারীকে ভালবাসিতেন। তিনি মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত। সকলে তাঁহাকে ভক্তি করিত। চঞ্চলের নাম করিয়া তাঁহাকে ডাকিয়া পাঠাইবামাত্র তিনি অন্তঃপুরে আসিলেন— কুলপুরোহিতের অবারিতদ্বার। পথিমধ্যে নির্মল তাঁহাকে গ্রেপ্তার করিল এবং সকল কথা বুঝাইয়া দিয়াContinue Reading

তৃতীয় পরিচ্ছেদ : মিশ্র ঠাকুরের নারায়ণস্মরণ

পরিধেয় বস্ত্র, ছত্র, যষ্টি, চন্দনকাষ্ঠ প্রভৃতি নিতান্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং একমাত্র ভৃত্য সঙ্গে লইয়া, অনন্ত মিশ্র গৃহিণীর নিকট হইতে বিদায় লইয়া উদয়পুর যাত্রা করিলেন। গৃহিণী বড় পীড়াপীড়ি করিয়া ধরিল, “কেন যাইবে?” মিশ্র ঠাকুর বলিলেন, “রাণারContinue Reading

চতুর্থ পরিচ্ছেদ : মাণিকলাল

অশ্বারোহী পার্বাতের উপর হইতে দেখিল, চারি জনে একজনকে বাঁধিয়া রাখিয়া চলিয়া গেল। আগে কি হইয়াছে, তাহা সে দেখে নাই, তখন সে পৌঁছে নাই। অশ্বারোহী নিঃশব্দে লক্ষ্য করিতে লাগিল, উহারা কোন্ পথে যায়। তাহারা যখন নদীরContinue Reading

পঞ্চম পরিচ্ছেদ : চঞ্চলকুমারীর পত্র

তথায়, উপলঘাতিনী কলনাদিনী তটিনীরব সঙ্গে সুমন্দ মধুর বায়ু, এবং স্বরলহরীবিকীর্ণকারী কুঞ্জবিহঙ্গগণ ধ্বনি মিশাইতেছে। তথায় স্তবকে স্তবকে বন্য কুসুম সকল প্রস্ফুটিত হইয়া, পার্ব তীয় বৃক্ষরাজি আলোকময় করিতেছে। তথায়, রূপ উছলিতেছে, শব্দ তরঙ্গায়িত হইতেছে, গন্ধ মাতিয়া উঠিতেছে,Continue Reading

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ : মাতাজীকি জয়!

রাণা অনন্ত মিশ্রকে তাঁহার প্রতীক্ষা করিতে বলিয়া গিয়াছিলেন, অনন্ত মিশ্রও তাঁহার অপেক্ষা করিতেছিলেন–কিন্তু তাঁহার চিত্ত স্থির ছিল না। অশ্বারোহীর যোদ্ধৃবেশ এবং তীব্রদৃষ্টিতে তিনি কিছু কাতর হইয়াছিলেন। একবার ঘোরতর বিপদগ্রাস্ত হইয়া, ভাগ্যক্রমে প্রাণে রক্ষা পাইয়াছেন–কিন্তু আরContinue Reading

সপ্তম পরিচ্ছেদ : নিরাশা

এদিকে অনন্ত মিশ্র রূপনগর হইতে যাত্রা করার পরেই রূপনগরে মহাধূম পড়িয়াছিল। মোগল বাদশাহের দুই অশ্বারোহী সেনা রূপনগরের গড়ে আসিয়া উপস্থিত হইল। তাহারা চঞ্চলকুমারীকে লইতে আসিয়াছে। নির্মিলের মুখ শুকাইল; দ্রুতবেগে সে চঞ্চলকুমারীর কাছে গিয়া বলিল, “কিContinue Reading

অষ্টম পরিচ্ছেদ : মেহেরজান

যে কয় দিন, মোগল সৈনিকেরা রূপনগরে শিবির সংস্থাপন করিয়া রহিলেন, সে কয় দিন বড় আমোদ প্রমোদে কাটিল। মোগল সৈন্যের সঙ্গে সঙ্গে নর্তপকীর দল ছুটিত; যখন যুদ্ধ না হইত, তখন তাম্বুর ভিতর নাচ—গানের ধুম পড়িত। সৈনিকদিগেরContinue Reading

নবম পরিচ্ছেদ : প্রভুভক্তি

এই সময়ে, একবার মাণিকলালের কথা পাড়িতে হইল। মাণিকলাল রাণার নিকট হইতে বিদায় লইয়া প্রথমে সেই পর্ব তগুহায় ফিরিয়া গেল। আর সে দস্যুতা করিবে, এমন বাসনা ছিল না; কিন্তু কর্তুব্যবন্ধুগণ মরিল, কি বাঁচিল, তাহা দেখিবে নাContinue Reading

দশম পরিচ্ছেদ : রসিকা পানওয়ালী

মাণিকলাল তখনই রূপনগরে ফিরিয়া আসিল। তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়াছে। রূপনগরের বাজারে গিয়া মাণিকলাল দেখিল যে, বাজার অত্যন্ত শোভাময়! দোকানের শত শত প্রদীপের শোভায় বাজার আলোকময় হইয়াছে–নানাবিধ খাদ্যদ্রব্য উজ্জ্বলবর্ণে রসনা আকুল হইতেছে–পুষ্প, পুষ্পমালা থরে থরে নয়নContinue Reading