দ্বিতীয় খণ্ড

☞ প্রথম পরিচ্ছেদ ☞ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ☞ তৃতীয় পরিচ্ছেদ ☞ চতুর্থ পরিচ্ছেদ ☞ পঞ্চম পরিচ্ছেদ ☞ ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ☞ সপ্তম পরিচ্ছেদ ☞ অষ্টম পরিচ্ছেদ ☞ নবম পরিচ্ছেদ ☞ দশম পরিচ্ছেদ ☞ একাদশ পরিচ্ছেদ ☞ দ্বাদশContinue Reading

প্রথম পরিচ্ছেদ

পাঁচে পাঁচে দশ বৎসর অতীত হইয়া গেল। যে দিন প্রফুল্লকে বাগদীর মেয়ে বলিয়া হরবল্লভ তাড়াইয়া দিয়াছিলেন, সে দিন হইতে দশ বৎসর হইয়া গিয়াছে। এই দশ বৎসর হরবল্লভ রায়ের পক্ষে বড় ভাল গেল না। দেশের দুর্দ্দশারContinue Reading

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

বড় ধুম পড়িয়াছে। ব্রজেশ্বর শ্বশুরবাড়ী আসিয়াছেন। কোন্ শ্বশুরবাড়ী, তাহা বলা বাহুল্য। সাগরের বাপের বাড়ী। তখনকার দিনে একটা জামাই আসা বড় সহজ ব্যাপার ছিল না। তাতে আবার ব্রজেশ্বর শ্বশুরবাড়ী সচরাচর আসে না। পুকুরে পুকুরে, মাছমহলে ভারিContinue Reading

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

বর্ষাকাল। রাত্রি জ্যোৎস্না। জ্যোৎস্না এমন বড় উজ্জ্বল নয়, বড় মধুর, একটু অন্ধকারমাখা–পৃথিবীর স্বপ্নময় আবরণের মত। ত্রিস্রোতা নদী জলপ্লাবনে কূলে কূলে পরিপূর্ণ। চন্দ্রের কিরণে সেই তীব্রগতি নদীজলের স্রোতের উপর–স্রোতে, আবর্তে, কদাচিৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তরঙ্গে জ্বলিতেছে। কোথাওContinue Reading

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

পূর্বে বলিয়াছি, বজরার কাছে তেঁতুলগাছের ছায়ায় আর একখানি নৌকা অন্ধকারে লুকাইয়াছিল। সেখানি ছিপ–ষাট হাত লম্বা, তিন হাতের বেশী চৌড়া নয়। তাহাতে প্রায় পঞ্চাশ জন মানুষ গাদাগাদি হইয়া শুইয়াছিল। রঙ্গরাজের সঙ্কেত শুনিবামাত্র সেই পঞ্চাশ জন একেবারেContinue Reading

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

ব্রজেশ্বর যাইতে যাইতে রঙ্গরাজকে জিজ্ঞাসা করিল, “আমাকে কত দূর লইয়া যাইবে–তোমার রাণীজি কোথায় থাকেন?” র। ঐ বজরা দেখিতেছ না? ঐ বজরা তাঁর। ব্র। ও বজরা? আমি মনে করিয়াছিলাম, ওখানা ইংরেজের জাহাজ–রঙ্গপুর লুটিতে আসিয়াছে। তা এতContinue Reading

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ব্রজেশ্বর অনুমতি পাইয়া, পর্দা তুলিয়া কামরার ভিতরে প্রবেশ করিল। প্রবেশ করিয়া যাহা দেখিল, ব্রজেশ্বর তাহাতে বিস্মিত হইল। কামরার কাষ্ঠের দেওয়াল, বিচিত্র চারুচিত্রিত। যেমন আশ্বিন মাসে ভক্ত জনে দশভুজা প্রতিমা পূজা করিবার মানসে প্রতিমার চাল চিত্রিতContinue Reading

সপ্তম পরিচ্ছেদ

ব্রজেশ্বর কিয়ৎক্ষণ বিহ্বল হইয়া রহিল। শেষে জিজ্ঞাসা করিল, “সাগর! তুমি এখানে কেন?” সাগর বলিল, “সাগরের স্বামী! তুমিই বা এখানে কেন?” ব্র। তাই কি? আমি কয়েদী, তুমিও কি কয়েদী? আমাকে ধরিয়া আনিয়াছে। তোমাকেও কি ধরিয়া আনিয়াছে?Continue Reading

অষ্টম পরিচ্ছেদ

নিশি ব্রজেশ্বরকে সঙ্গে করিয়া দেবীর শয্যাগৃহে লইয়া গেল। ব্রজেশ্বর দেখিলেন, শয়নঘর দরবার কামরার মত অপূর্ব সজ্জায় সজ্জিত। বেশীর ভাগ, একখানা সুবর্ণমণ্ডিত মুক্তার ঝালরযুক্ত ক্ষুদ্র পালঙ্ক আছে। কিন্তু ব্রজেশ্বরের সে সকল দিকে চক্ষু ছিল না। এতContinue Reading

নবম পরিচ্ছেদ

ব্রজেশ্বর আপনার নৌকায় আসিয়া গম্ভীর হইয়া বসিল। সাগরের সঙ্গে কথা কহে না। দেখিল, দেবীর বজরা পাল তুলিয়া পক্ষিণীর মত উড়িয়া গেল। তখন ব্রজেশ্বর সাগরকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “বজরা কোথায় গেল?” সাগর বলিল, “তা দেবী ভিন্ন আরContinue Reading

দশম পরিচ্ছেদ

ব্রজেশ্বর ও সাগরকে বিদায় দিয়া দেবী চৌধুরাণী–হায়! কোথায় গেল দেবী? কই সে বেশভূষা, ঢাকাই সাড়ি, সোণাদানা, হীরা মুক্তা পান্না–সব কোথায় গেল? দেবী সব ছাড়িয়াছে–সব একেবারে অন্তর্ধান করিয়াছে। দেবী কেবল একখানা গড়া পরিয়াছে–হাতে কেবল এক গাছাContinue Reading

একাদশ পরিচ্ছেদ

সোমবারে প্রাতঃসূর্যপ্রভাসিত নিবিড় কাননাভ্যন্তরে দেবী রাণীর “দরবার” বা “এজলারস”। সে এজলাসে কোন মোকদ্দমা মামলা হইত না। রাজকার্যের মধ্যে কেবল একটা কাজ হইত–অকাতরে দান। নিবিড় জঙ্গল–কিন্তু তাহার ভিতর প্রায় তিন শত বিঘা জমি সাফ হইয়াছে। সাফContinue Reading

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ

যথাকালে পিতৃসমীপে উপস্থিত হইয়া ব্রজেশ্বর তাঁর পদবন্দনা করিলেন। হরবল্লভ অন্যান্য কথার পর জিজ্ঞাসা করিলেন, “আসল সংবাদ কি? টাকার কি হইয়াছে?” ব্রজেশ্বর বলিলেন যে, “তাঁহার শ্বশুর টাকা দিতে পারেন নাই।” হরবল্লভের মাথায় বজ্রাঘাত হইল–হরবল্লভ চীৎকার করিয়াContinue Reading