ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
যমুনার কৃশাঙ্গী তনয়াদ্বয় প্রকৃতির বিধানে যে স্থানে মিলিত হইয়া কোলে গা-ঢালিয়া দিয়াছে, সেই সঙ্গমস্থলের দক্ষিণতীরে রতনদিয়া গ্রাম। নীচজাতীয় কয়েক ঘর হিন্দু ব্যতিত গ্রামের অধিবাসী সবই মুসলমান। মুসলমানদিগের মধ্যে আমির-উল-এসলাম নামের একজন অবশিষ্ট ভদ্রলোকের বাস। তিনি গ্রাম হইতে একমাইল দূরে নীলকুঠিতে দেওয়ানী করিতেন। তিনি প্রথমে ময়মনসিংহ জেলায় হাজী সফীউদ্দিন নামক জনৈক পরম ধার্মিক মহাত্মার কন্যাকে বিবাহ করেন। এই শুভ প্রণয়ের প্রথম ফলস্বরূপ আমির-উল-এসলাম সাহেব একটি পুত্রসন্তান লাভ করেন। পিতার নিজ নামের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া পুত্রের নাম রাখিয়াছিলেন—নুরুল এসলাম। নীলকুঠিতে দেওয়ানী করিতেন বলিয়া আমির-উল-এসলাম সাহেবের বংশ দেশের সর্বত্র দেওয়ান আখ্যায় পরিচিত।
সাধারণত নীলকুঠির প্রভু ও ভৃত্যগণের মধ্যে যেরূপ উৎকোচ-প্রিয়তার পরিচয় পাওয়া যায়, তাহাতে দেওয়ান আমির-উল-এসলাম সাহেবের আর্থিক অবস্থা খুব উন্নত হওয়া উচিত ছিল; কিন্তু তিনি ধর্মশীলা পত্নীর সংসর্গে ধর্মসাধনে যেরূপ উন্নত হইয়াছিলেন, আর্থিক উন্নতি বিষয়ে সেরূপ কৃতকার্যতা লাভ করিতে পারেন নাই। তবে তিনি ন্যায়-পথে থাকিয়া যাহা উপার্জন করিতেন, তাহাতে মিতব্যয়শীলা পত্নীর গুণে সংসারের অভাব পূর্ণ হইয়া কিছু কিছু উদ্বৃত্ত থাকিত। শেষে তিনি তদ্দ্বারা বার্ষিক পাঁচশত টাকা আয়ের একটি ক্ষুদ্র তালুক খরিদ করেন।
নুরুল এসলামের বিদ্যাশিক্ষার জন্য তাঁহার পিতা সমধিক মনোযোগী ছিলেন। দ্বাদশ বৎসর বয়ক্রমকালে নুরল এসলাম স্থানীয় নবপ্রতিষ্ঠিত মাইনর স্কুল হইতে বৃত্তিলাভ করেন; কিন্তু দুঃখের বিষয় এই বৎসর তাঁহার জননী তাঁহাকে ও তাঁহার দুইটি শিশু ভগিনীকে পরিত্যাগ করিয়া পরলোকগমন করেন। আমির-উল-এসলাম সাহেব পত্নীবিয়োগে সংসার অন্ধকার দেখিতে লাগিলেন বটে, তথাপি পুত্রের বিদ্যাশিক্ষার ঔদাসীন্য প্রকাশ করিলেন না। সময় মত তিনি পুত্রকে তাহার মাতুলালয়ে রাখিয়া ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে পড়ার বন্দোবস্ত করিয়া দিলেন।
এদিকে সংসার অচল হইলেও গুণবতী প্রিয়তমা পত্নীর কথা স্মরণ করিয়া, দেওয়ান সাহেব দুই বৎসর যাবৎ বিবাহ করিলেন না। শেষে দেশস্থ নানা লোকের প্ররোচনা ও পরামর্শে নিজ গ্রামের দক্ষিণ গোপীনপুর গ্রামে মহোচ্চ বংশে আলতাফ হোসেন নামক এক ব্যক্তির বয়স্কা রূপবতী কনিষ্ঠা ভগিনীকে তালুকের অর্ধেক কাবিন দিয়া বিবাহ করিলেন। কালক্রমে এই পক্ষে দেওয়ান সাহেবের একটি কন্যা জন্মগ্রহণ করিল। এই কন্যা জন্মগ্রহণের পর নুরল এসলামের অপ্রাপ্ত বয়স্কা ভগিনীদ্বয়ের আর এ সংসারে তিষ্টান দায় হইল। পত্নীর বিদ্বেষ-ব্যবহারে ব্যথিত হইয়া দেওয়ান সাহেব কন্যাদ্বয়কেও তাহাদের স্নেহময়ী মাতামহীর নিকট ময়মনসিংহে পাঠাইয়া দিলেন। নুরল এসলাম ছুটির সময় মাতুলালয় হইতে বাড়িতে আসিতেন; কিন্তু বিমাতার ব্যবহারে শান্তি লাভ করিতে না পারিয়া স্কুল খুলিবার পূর্বেই ময়মনসিংহে চলিয়া যাইতেন। স্নেহশীল পিতা পুত্রের মানসিক কষ্ট অনুভব করিয়া নীরবে, নির্জনে অশ্রুমোচন করিতেন এবং নানাবিধ প্রবোধবাক্যে পুত্রের চিত্তবিনোদন করিতে প্রয়াস পাইতেন।
নুরল এসলাম চারি বৎসরে বৃত্তিসহ এনট্রান্স পাস করিয়া কলিকাতায় পড়িতে গেলেন। তাঁহার পিতা তাহাকে মাসে মাসে বৃত্তির উপর ২০/২৫ টাকা করিয়া খরচ পাঠাইতে লাগিলেন। খোদার ফজলে নুরল এসলাম দুই বৎসরেই প্রশংসার সহিত এফ.এ. পাস করিয়া বি.এ. পড়িতে আরম্ভ করিলেন; কিন্তু বৎসরের শেষে অকস্মাৎ নিদারুণ সান্নিপাতিক জ্বরে তাঁহার পিতার মৃত্যু ঘটায় নুরল এসলাম পরমারাধ্য পিতার অভাবে সংসার অন্ধকার দেখিতে লাগিলেন। বিমাতার চক্রান্তে ভূসম্পত্তি ও গৃহস্থালী নিবষ্ট হইবে ভাবিয়া, অগত্যা তিনি সে সকলের ভার নিজ হাতে লইলেন। সুতরাং বি.এ. পাস করা তাঁহার ভাগ্যে ঘটিল না।
প্রতিভাবলে পঠিত বিদ্যায় নুরল এসলাম যেরূপ কৃতকার্যতা লাভ করিয়াছেন, তৎসঙ্গে ভূয়োদর্শন-জনিত জ্ঞানও কম লাভ করিয়াছিলেন না। তিনি দেখিয়াছিলেন, চাকুরিজীবীর শারীরিক ও মানসিক সমুদয় ইন্দ্রিয় সর্বক্ষণ প্রভুর মনোরঞ্জন সম্পাদনের জন্য নিয়োজিত রাখিতে হয়, স্বাধীন ভাবে মানব-জীবনের মহতুদ্দেশ্য সাধনের সুযোগ তাঁহার ভাগ্যে বড় ঘটিয়া উঠে না; এ নিমিত্ত চাকুরিকে তিনি অন্তরের সহিত ঘৃণা করিতেন। বি.এ. পাস করিয়া স্বাধীন ব্যবসায়ের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করিবেন, ইহাই তাঁহার জীবনের স্থির সঙ্কল্প ছিল।
কিন্তু পিতার মৃত্যুতে হঠাৎ তাঁহার ভাগ্যবিপর্যয় ঘটিল। তথাপি তিনি অভীপ্সিত সঙ্কল্পের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া আপাতত বাড়ি হইতে ছয় মাইল পূর্বে বেলাগাঁও বন্দরে জুট-কোম্পানির অফিসে ৩৫ টাকা বেতনে চাকুরি গ্রহণ করিলেন। সপ্তাহে ২/১ বার আসিয়া বাড়ি-ঘরের তত্ত্বাবধান লইতে লাগিলেন।
পাঠ্যাবস্থায় অনেক ভাল ঘর হইতে তাঁহার বিবাহের সম্বন্ধ আসিয়াছিল; কিন্তু তিনি বি.এ. পাস করিয়া; উপার্জনক্ষম না হইলে বিবাহ করিবেন না প্রকাশ করায় তাঁহার পিতা সমস্ত সম্বন্ধ প্রত্যাখ্যান করিয়াছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর সংসারের সমস্ত ভার তাহাকে নিজ স্কন্ধে লইতে হইল, তিনি উপার্জনে নিযুক্ত হইলেন। এই সময়ে তঁহার বিমাতা তাহাকে এক দুরাশার ফাঁদে ফেলিবার চেষ্টা করিলেন। বিমাতার বিবাহযোগ্যা এক পরমাসুন্দরী ভ্রাতুষ্পুত্রী ছিল। তিনি ভাবিলেন, পতির অর্ধেক সম্পত্তি কাবিন-স্বত্বে তাহার প্রাপ্য হইয়াছে; এক্ষণে ভ্রাতুষ্পুত্রীকে নুরল এসলামের সহিত বিবাহ করাইয়া অপরাধ সম্পত্তি সেই কন্যার নামে লিখাইয়া লইবেন, তাহা হইলে প্রকারান্তরে সমস্ত সম্পত্তি তাহারই আয়ত্তে আসিবে, তিনি সংসারের কর্ত্রী হইয়া সুখে কাল কাটাইবেন। এইরূপ দুরাশায় প্রলুব্ধ হইয়া তিনি অগৌণে নুরল এসলামের সহিত ভ্রাতুষ্পুত্রীর বিবাহ সম্বন্ধ উত্থাপন করিলেন। নুরল এসলাম এ প্রস্তাব শুনিয়া জনৈক প্রবীণ আত্মীয়ের দ্বারা বিনয়সহকারে মাতাকে জানাইলেন, “আমি আপাতত বিবাহ করিব না, আপনার ভ্রাতুষ্পুত্রীকে অন্যত্র সৎপাত্রে বিবাহ দিউন।” পিতা যে বংশে কাবিন দিয়া নগদ অজস্র অর্থাদি ব্যয় করিয়া বিবাহ করিয়াছেন, মুরব্বিহীন নুরল এসলাম সেই উচ্চকুলোদ্ভবা সুরূপা পাত্রীকে বিবাহ করিতে অসঙ্কোচে অম্লান বদনে অস্বীকার করিলেন। ব্যাপার সহজ নহে। কিন্তু আমাদিগের অনুমান হইতেছে, এই প্রত্যাখ্যানের জন্য নুরল এসলামকে মর্মঘাতী ক্লেশ ভোগ করিতে হইবে, অশান্তির দাবানলে হয়ত তাহার জীবনের প্রথম ভাগ দগ্ধীভূত হইবে। যাহা হউক, তজ্জন্য আমরা নুরল এসলামকে এক্ষণে দোষী সাব্যস্ত করিতে পারি না। কারণ, ভবিষ্যতের গর্ভে কি আছে, কে বলিতে পারে? ভবিষ্যৎ বড়ই দুর্গম। মানুষ মানুষের পেটের কথা টানিয়া বাহির করে, বিজ্ঞানবলে তড়িৎ ধরে, আকাশে উড়ে, সাগরে ভাসে, পাতালে প্রবেশ করে, আবার মরা মানুষ জীবিত করিতে চায়; কিন্তু প্রত্যক্ষের অন্তরালে যে যবনিকা আছে তাহা ভেদ করিবার কথা ধারণায় আনিতেও অক্ষম। নুরল এসলাম ত নগণ্য যুবক।
নুরল এসলাম বুঝিয়াছিলেন, সংসার জীবনের সুখের মূল ধর্ম, অর্থকাম মোক্ষের সহায়। পারিবারিক ধর্মভাব ও প্রীতি-পবিত্রতা, অশিক্ষিতা স্ত্রীলোক সংসর্গে পাইবার আশা, মরুভূমিতে নন্দনকাননের সুখসৌন্দর্য ভোগের আশার ন্যায় দুরাশামাত্র। আমরা বাহিরের অবস্থায় যত লোককে ধনী, মানী, গুণি জানিয়া সুখী মনে করিয়া থাকি, ভিতরের অবস্থায় তাঁহাদের অধিকাংশ লোক প্রকৃতপক্ষে সুখী নয়, বরং নিরয়-নিবাসী; পরন্তু তাঁহাদের অর্ধাঙ্গিনী—অশিক্ষিতা সহধর্মিণীগণই যে এই নিরয়-রাজ্যের প্রতিষ্ঠাত্রী তাহাও সুনিশ্চিত। এই নিমিত্ত অশিক্ষিতা রমণীর প্রতি তাঁহার বিজাতীয় ঘৃণা ছিল। তিনি আরও দেখিয়াছিলেন, এদেশে যাহারা উচ্চকুলোদ্ভব বলিয়া অভিমান করেন, তাঁহাদের মধ্যে অনেকেই প্রাচীন আরবি-ফারসি বিদ্যা শিক্ষার একরূপ উদাসীন, অথচ আধুনিক পাশ্চাত্য-শিক্ষালাভে সবিশেষ মনোযোগী নহেন; পরন্তু কেবল কুলের দোহাই দিয়া ধরাকে সরা জ্ঞান করেন। পারিবারিক স্বর্গীয়-পবিত্রতা ইঁহাদের মধ্যে বড় দেখা যায় না। ইঁহাদের ২/৪ জন আবার একাধিক বিবাহ করিয়া, সেই সুখ-শান্তির মূলে কুঠারাঘাত করিয়া থাকেন এবং নিজে সেই আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হইয়া জীবনৃতভাবে কালকর্তন করেন। এইরূপ দেখিয়া ঐ সম্প্রদায়ের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাবান ছিলেন না। তিনি নিজ পরিবারেই সংসার ধর্মের দ্বিবিধ অবস্থা সন্দর্শ করেন। প্রথমে দেখিয়া ছিলেন, তাঁহার জননী জীবিতকাল পর্যন্ত অতি প্রতুষ্যে উঠিয়া সর্বাগ্রে তাহার পিতার প্রাতঃকৃত্যের আয়োজন করিয়া দিতেন, পরে তিনি নিজে অজু করিয়া ফজরের নামাজ পড়িতেন। শেষে এক ঘণ্টা কোরআন শরীফ পাঠ করিয়া গৃহস্থালীর কার্যে মনোযোগীণী হইতেন এবং তাহা পরিপাটিরূপে সম্পন্ন করিয়া পিতার স্নানাহারের আয়োজন করতঃ পথপানে চাহিয়া থাকিতেন। তিনি নীলকুঠি হইতে পরিশ্রান্ত দেহে ঘরে ফিরিলে, মা তাঁহাকে বসিতে আসন দিয়া পাশে দাঁড়াইয়া বাতাস করিতেন। অনন্তর স্বহস্তে তাঁহাকে স্নানাহার করাইয়া শেষে চাকর-চাকরাণীদিগের আহারের তথ্য লইতেন, পরে নিজে আহারে যাইতেন। পিতার স্নানাহারের পূর্বে দিন কাটিয়া গেলেও মা আহার করিতেন না।
পিতার পীড়ার সময় মায়ের অবস্থায় দেখা যাইত পীড়া যেন তাঁহারই হইয়াছে। জননীর জীবিতকাল পর্যন্ত নুরল এসলাম সংসারের অভাব-অশান্তি কখনও প্রত্যক্ষ করেন নাই। আবার তাঁহার জননীর মৃত্যুর পরও বিমাতা যখন গৃহস্থালীর কর্ত্রী হইলেন, তখন তিনি দেখিতে লাগিলেন,—পিতার সেবাশুশ্রূষার জন্য ডাক পড়িলে কেবল চাকরাণীরাই তাঁহার সন্নিহিত হইত; বিমাতা কেবল সময় সময় অভাব-অভিযোগের কথা লইয়া পিতার নিকট উপস্থিত হইতেন। তাঁহার গর্ভজাত কন্যা ও নিজের সুখ-সুবিধা ছাড়া তিনি আর অন্য কোনদিকে নজর করিবার বড় অবসর পাইতেন না। মূল্যবান বস্ত্রালঙ্কার ও সুগন্ধি তৈলাদির জন্য তিনি পিতাকে অহরহ ত্যক্ত-বিরক্ত করিতেন। তাঁহার গতি-বিধিতে, তাঁহার প্রত্যেক কথায়, তাঁহার প্রতি নিঃশ্বাসে কেবল আভিজাত্যের অভিমানই প্রকাশ পাইত। এই খেয়ালের বশে তিনি পিতাকে আন্তরিক ভক্তি করিতে পারিতেন না। প্রবীন পিতা বিমাতার এই ভাব সবই বুঝিতেন এবং বুঝিয়া অনুতাপে দগ্ধ হইতেন, কিন্তু মুখ ফুটিয়া কিছু বলিতেন না। পিতা ১৪ দিনের জ্বরে প্রাণত্যাগ করেন; এই ১৪ দিন নুরল এসলাম ও তাহার ফুফুআম্মা দিনরাত খাটিয়া তাঁহার সেবাশুশ্রূষা করেন। এই সময় বিমাতা যে তাঁহার পরিচর্যা করেন নাই, তাহা নহে; কিন্তু তাঁহার পরিচর্যায় আন্তরিক অনুরাগ ছিল না। মৃত্যুর পূর্বে পিতার যখন শ্বাসকষ্ট উপস্থিত হইল ফুফু-আম্মা ফুকারিয়া কাঁদিয়া উঠিলেন, বিমাতাও পতিশোকে শোকাকুলিতা হইলেন বটে; কিন্তু তদসঙ্গে লোহার সিন্দুকের চাবিটিও হস্তগত করিতে ভুলিলেন না। বিমাতার ব্যবহারে নুরল এসলামের করুণ হৃদয়ে দারুণ আঘাত করিল।
এই সমস্ত কারণে বিমাতা স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া বিবাহের সম্বন্ধ উত্থাপন করিলে, নুরল এসলাম ভাবিলেন, ‘ যে ঘরে এহেন বিমাতা, সেই ঘরে বিবাহের সম্বন্ধ বিশেষত পাত্রি সুন্দরী হইলেও অশিক্ষিতা।’ তাই তিনি অসঙ্কোচে বিমাতার প্রস্তাব অস্বীকার করিলেন। তিনি আরও ভাবিলেন, বিবাহ যাবজ্জীবনের সম্বন্ধ! মানবজীবনের সুখ-দুঃখ অধিকাংশকাল এই সম্বন্ধে উপর নির্ভর করে; সুতরাং বিশেষ বিবেচনা করিয়া মনের মত শিক্ষিকা পাত্রী পাইলে বিবাহ করিবেন, নচেৎ করিবেন না,—এইরূপ সঙ্কল্প করিয়া তিনি এ পর্যন্ত বিবাহ করেন নাই।