দ্বাদশ পরিচ্ছেদ
যথাসময়ে ইস্পেক্টার জহরুল আলম সাহেব রতীশ ও নলিনী প্রভৃতি আসামীগণকে চুরির মালসহ জেলায় চালান দিলেন। মনিঅর্ডার ও সেভিংস ব্যাঙ্কের টাকাও সত্ত্বর আনয়ন করা হইল। ম্যাজিস্ট্রেট নানাবিধ বিবেচনা করিয়া মোকদ্দমা দায়রায় দিলেন।
নবা ও ফরমান বাঁচিবার আশায়, জজকোর্টে চুরির সমস্ত কথা খুলিয়া সাক্ষ্য দিল। ম্যানেজার সাহেব পুনরায় সাক্ষীর আসনে দাঁড়াইলেন। চুরির সত্যতার জন্য আসামীগণের বিরুদ্ধে যাহা নাজাই ছিল, উকিল সাহেবের জেরার কৌশলে তাহা বাহির হইয়া পড়িল। রতীশ সরকারের নিকট যে নোট পাওয়া গিয়াছিল ইনস্পেক্টার সাহেবের সূক্ষ্ম তদন্তের ফলে সেই নোটের নম্বরই তাহাকে প্রকৃত চোর বলিয়া ধরাইয়া দিল। বিচারের দিন নুরল এসলামকে জেল হইতে জবানবন্দীর নিমিত্ত বিচারালয়ে আনা হইল। তাঁহাকে বেনারসী ও নীলাম্বরী শাড়ী দেখাইয়া জজ সাহেব জিজ্ঞাসা করিলেন, “এ শাড়ী চিনেন? নুরল এসলাম শাড়ী দেখিয়া মূর্ছিত হইবার উপক্রম হইলেন। উকিল সাহেবের ইঙ্গিতে জনৈক চাপরাশী তাঁহাকে ধরাধরি করিয়া নিচে লইয়া গেল। জজ সাহেব এসেসারগণকে বিশেষভাবে মোকদ্দমা বুঝাইয়া দিলেন। পরে সকলের মত এক হইলে তিনি রায় লিখিলেন, আসামী রতীশ সরকার ও দাগুকে বিশ্বাসঘাতকতা ও চুরির অপরাধে ১০ বৎসর, পৃষ্ঠপোষক নলিনীর প্রতি ৩ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড বিধান করা হইল। ইনস্পেক্টার সাহেবের বিশেষ অনুগ্রহে নবা ও ফরমান বাঁচিয়া গেল। সঙ্গীন চুরি আস্কারা করার জন্য নুরল এসলাম সাহেবের স্ত্রী গবর্নমেন্ট হইতে পুরষ্কার প্রাপ্তির যোগ্যা, জজ সাহেব রায়ের উপসংহারে একথা উল্লেখ করিতে ত্রুটি করিলেন না।
প্রকৃত অপরাধীরা ধরা পড়িয়া শাস্তি পাওয়ায় আপিলে নুরল এসলাম বেকসুর খালাস পাইলেন।