» » আদিম আতঙ্ক

বর্ণাকার

অদ্রীশ বর্ধন

আদিম আতঙ্ক

দশ

হোটেলটাকে এখন কেল্লা বানিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বড় ঘরগুলোর মেঝেতে তোশক গদি ফেলে শুয়েছে সবাই। প্রহরী মোতায়েন রয়েছে লিফট আর দরজায়। জানলাগুলোর বাইরে থেকে ধাক্কা পড়লেই সজাগ হওয়া যাবে।

চারিদিকে নিশ্চিদ্র নীরবতা।

রাত গভীর হয়েছে।

বড় ঘরের লাগোয়া ছোট্ট ঘরটায় পাঁচমিশেলি জিনিস রাখা হয়। এ ঘরে আলো জ্বলছে না। জানলা নেই।

ঘরদোর পরিষ্কার করার কেমিক্যালের হালকা সুবাস ভাসছে বাতাসে। লাইসল। ফিনাইল। ফার্নিচার পালিশ। মেঝে ঘষার মোম। দেওয়ালের তাকে সাজানো রয়েছে।

দরজা থেকে দূরতম কোণে, ডানদিকে রয়েছে বড় সাইজের মেটাল সিঙ্ক। কলে লিক আছে। টপ টপ করে  জল পড়ছে। দশ থেকে বারো সেকেণ্ড অন্তর একটা করে ফোঁটা। প্রত্যেকটা ফোঁটা ধাতুর চাদরে আছড়ে পড়ছে—আর শব্দ হচ্ছে—টং।

এই ঘরের মাঝখানে সোফায় শুয়ে আছে শচীন, — চাদরে ঢাকা সর্বাঙ্গ।

নিস্তব্ধ চারিদিক। শুধু একঘেয়ে টং টং টং শব্দটা ছাড়া।

বাতাসে ভাসছে রুদ্ধশাস পূর্বাভাস।

ঘুম নেই সুরেশ সাইকিয়ার চোখে। উনি ভাবছেন, শহরের গৃহপালিত পশুগুলো গেল কোথায়?

আলোহীন, গবাক্ষহীন, পাঁচমিশেলি জিনিস রাখার ঘরে অব্যাহত রয়েছে ওই একটা শব্দ। মেটাল বেসিনে টং টং টং আওয়াজ সৃষ্টি করে যাচ্ছে জলের ফোঁটা।

কিন্তু ঘর একেবারে নিস্তব্ধ নয়। অন্ধকারে কী যে নড়ছে। নরম, ভিজে ভিজে, চোরা শব্দ গুঁড়ি মেরে ঘুরছে ঘরময়।

ঘুম নেই মাধবীর চোখেও।

সুরেশ সাইকিয়া টহল দিতে বেরিয়েছিলেন। মাধবীর চোখ খোলা দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন।

মাধবী বললে, ‘আপনার চোখে ঘুম নেই?’

সুরেশ বললেন, ‘ছেলেটার জন্যে মন কেমন করছে।’

‘আপনার ছেলে?’

‘এক ছেলে। বছর খানেক আগে গাড়ি অ্যাকসিডেন্টে ওর মা মারা যান। ছেলেটার ব্রেনে চোট লাগল। এক বছর হয়ে গেল—এখনও জ্ঞান ফিরে পায়নি।’

‘কোমা?’

‘হ্যাঁ।’

শচীনের লাশ যে-ঘরে, সেই ঘরে জল পড়া কিছুক্ষণের জন্যে বন্ধ হয়েছিল। ফের শুরু হয়েছে।

টং।

শচীনের সোফা ঘিরে চুপি চুপি কি যেন ঘুরছে। আওয়াজ হচ্ছে ছপ… ছপ… ছপ…।

কাদায় পা পড়লে যেমন আওয়াজ হয়।

শুধু এই আওয়াজই নেই ঘরের মধ্যে। শোনা যাচ্ছে আরও অনেক শব্দ… খুব কোমল, মৃদু শব্দ। হাঁপাচ্ছে কুকুর। ফ্যাঁস করছে বেড়াল। চাপা হাসি— কচি গলার হাসি। যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠছে একটি মেয়ে। গোঙানি। দীর্ঘশ্বাস। চড়ুই পাখির কিচিরমিচির। খুব আস্তে— বাইরের সান্ত্রীর কানে যেন না যায়। সাপের হিসহিসানি। র‍্যাটলস্নেকের কড়মড় বাদ্যি। মৌমাছির তীক্ষ্ণ গুঞ্জন। কুকুরের গজরানি।

আচমকা স্তব্ধ হল সমস্ত শব্দ। শুরু হয়েছিল হঠাৎ, শেষও হল হঠাৎ।

ফিরে এল নৈঃশব্দ্য।

টং।

এক মিনিট নৈঃশব্দ্য। আবার… টং।

আলোহীন ঘরে খসখস শব্দ… কাপড় চোপড়ে যেমন আওয়াজ হয়। শচীনের গা-ঢাকা চাদর খসে পড়ল মেঝের ওপর।

আবার পিছলে যাওয়ার আওয়াজ। শুকনো কাঠ ভাঙার আওয়াজ। চাপা শব্দে যেন হাড় ভাঙল।

আবার নৈঃশব্দ্য।

টং।

নৈঃশব্দ্য।

টং টং টং।

ভোরের দিকে ঘুম ভেঙে গেছিল পরীর। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখল রাস্তা একদম নিঝুম। গাছের পাতা পর্যন্ত নড়ছে না। এখনও আলো ফোটেনি আকাশে।

ভোরবেলা দৌড়োনোর অভ্যেস আছে পরীর। এই সময়ে ঘুম ভাঙলে আর শুয়ে থাকতে পারে না। তাই উঠে পড়ল। বেরিয়ে এল করিডরে। দরজায় দাঁড়িয়ে সান্ত্রী। লিফটের পাশে সান্ত্রী। সদর দরজার ম্যাজিক হোল দিয়ে বাইরের বাগানের পথে নজর রেখেছে একজন সান্ত্রী।

পরী ভাবল লম্বা করিডরেই একটু পায়চারি করা যাক। হেঁটে করিডরের শেষে টয়লেটের দিকে চলে গেল পরী। আবার ফিরে এল। আবার গেল।

সান্ত্রীরা হাসছে ওর কাণ্ড দেখে।

ভয়ানক কাণ্ডটা ঘটল ঠিক তখনই!

হেঁটে টয়লেটের বন্ধ দরজাটার সামনে গিয়ে যেই অ্যাবাউট টার্ন করতে যাচ্ছে পরী, আস্তে ফাঁক হয়ে গেল টয়লেটের দরজা। খোলা হল ভেতর থেকে।

 দরজার ফাঁকে দাঁড়িয়ে শচীন। যার লাশ শোয়ানো আছে ছোট ঘরে— সেই শচীন। কিন্তু এখন তার গোটা মুখটা রয়েছে— নেই শুধু চোখ। সে জায়গায় দুটো নিতল গর্ত।

বিকট চেঁচিয়ে উঠেছিল পরী। তারপর আর কিছু মনে নেই।

পরী চোখ মেলে দেখে সে শুয়ে আছে বড় ঘরে। ওকে ঘিরে আছে সবাই।

মাধবী বললে, ‘ভুল, দেখেছিস।’

‘না দিদি, স্পষ্ট দেখেছি।’

‘তোর চিৎকার শুনেই সান্ত্রীরা দৌড়ে গেছিল। কেউ নেই টয়লেটে।’

‘আমি তাকে দেখেছি।’

‘সে এখন ছোট ঘরে।’

‘দেখেছ সেখানে আছে কি না?

মাধবী চাইল সুরেশ সাইকিয়ার দিকে। বেরিয়ে গেলেন তিনি হাতে রিভলভার নিয়ে। ফিরে এলেন। বললেন, ‘শুধু চাদর পড়ে মেঝেতে। শচীনের বডি নেই সোফায়।’

না, সান্ত্রীরা কেউ দেখেনি শচীনকে। দরজা তো বন্ধই রয়েছে। তা ছাড়া মরা মানুষ হেঁটে বেরিয়ে আসতে পারে না। অথচ ঘরে নেই জানলা।

 আলো ফুটেছে আকাশে। শিবালয় শহরের চারপাশের পাহাড়ে পাহাড়ে এখন আলোর তরঙ্গ।

ঢাল বেয়ে নামছিল একটা শেয়াল। হঠাৎ থমকে গেল। একটা অপরিচিত গন্ধ পেয়েছে। গন্ধটা ভয়ের।

লোম খাড়া হয়ে গেল তৎক্ষণাৎ। সেই সঙ্গে ল্যাজ। তীরবেগে নেমে গেল ন্যাড়া পাহাড় বেয়ে। সামনে পড়ল ফুট দুয়েক চওড়া একটা গহ্বর। লাফ দিল তার ওপর দিয়ে। কিন্তু অপর পারে পৌঁছোতে পারল না।

 বিদ্যুতের চেয়েও ক্ষিপ্রবেগে কী যেন লকলকিয়ে উঠল গর্তের ভেতর থেকে। সাপটে ধরল শূন্যপথের শেয়ালকে। নিমেষে টেনে নিল গর্তের মধ্যে। প্রায় পাঁচফুট গভীর গর্তের তলদেশে রয়েছে একটা সরু ফুটো। শেয়ালের শরীর সেই ফুটোয় ঢোকার কথা নয়। কিন্তু তবুও প্রচণ্ড টানের চোটে গোটা শরীরটা ঢুকে গেল তার মধ্যে, মড়মড় করে ভাঙতে লাগল হাড়।

নিস্তব্ধ চারিদিক।

পালে পালে পাহাড়ি ইঁদুর গুটি গুটি এসে দাঁড়াল গর্তের পাশে। চেয়ে রইল ভেতর দিকে। তারপর, একে একে লাফিয়ে নেমে গেল নিচে। প্রায় একশো ইঁদুর।

বেরিয়ে এল না কেউই।

খবর কিন্তু ছড়িয়ে গেল—

গভর্নমেন্টের হাজারো সতর্কতা সত্ত্বেও টেলিফোনে টেলিফোনে খবর চলে গেল। নানান দৈনিকের অফিসে। টনক নড়ল সংবাদ শিকারী সাংবাদিকদের।

ভোরের আলো ফোটবার পরেই শর্টওয়েভ রেডিও আর ডিজেল-চালিত দুটো ইলেকট্রিক জেনারেটর পৌঁছে গেল শিবালয় টাউনের প্রান্তে। চার মাইল লম্বা সড়কের মাঝামাঝি জায়গায় দু’খানা ভ্যান ফেলে রেখে পালিয়ে এল চালকরা।

যেখানে রোড ব্লক করে আড়াআড়ি দাঁড়িয়ে পুলিশের গাড়ি, সেখানে এসে খবর দিতেই রেডিও মারফত খবর চলে গেল হেডকোয়ার্টারে। হেডকোয়ার্টার থেকে খবর চলে এল সুরেশ সাইকিয়ার কাছে।

রাস্তা থেকে ভ্যান দুটোকে নিয়ে আসা হল হোটেল হেডকোয়ার্টারে। শহরের জীবাণু যাতে বাইরে চলে না যায়, তা বন্ধ করা হল এইভাবে।

চালু হয়ে গেল শর্টওয়েভ রেডিও। এখন  টেলিফোন যন্ত্র বিকল হলেও টিকেন্দ্রনগরের সঙ্গে যোগসূত্র বিচ্ছিন্ন হবে না।

এক ঘণ্টার মধ্যেই একটা জেনারেটর চালু হয়ে গেল। শিবালয় সড়কের পশ্চিমে বাতিস্তম্ভগুলোকে এখন এই জেনারেটর জ্বালিয়ে রাখবে। আর একটা জেনারেটরের সঙ্গে তারের সংযোগসাধন ঘটানো হল হোটেলের ঘরে ঘরে। রহস্যজনকভাবে রাতে যদি আলো চলে যায়, দু’এক সেকেণ্ডের মধ্যেই জেনারেটর অটোমেটিক্যালি চালু হয়ে যাবে। দু’এক সেকেণ্ডের অন্ধকারে অদৃশ্য শত্ৰু নিশ্চয় আর কাউকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।

সকালবেলাতেই স্নান সেরে নিয়েছিল মাধবী। প্রাতরাশ খেয়ে চারজন সান্ত্রীকে নিয়ে গেছিল নিজের বাড়িতে—ওষুধপত্র আর ডাক্তারি সরঞ্জাম আনতে। হোটেলে এমার্জেন্সি চিকিৎসার জন্যে।

গোটা বাড়ি নিস্তব্ধ। সান্ত্রীরা কাঠ হয়ে ঢুকেছিল একটার পর একটা ঘরে— যেন গিলোটিন উঁচিয়ে রয়েছে প্রতিটা ঘরে ঘরে।

জিনিসপত্র প্যাকেটে বেঁধে নিল মাধবী অফিস ঘরে বসে। টেলিফোন বেজে উঠল ঠিক তখনই। প্রত্যেকের চোখ এমন দূরভাষ যন্ত্রের ওপর।

বেজে বেজে থেমে গেল টেলিফোন। বাজল আবার। এবার রিসিভার তুলল মাধবী। কিন্তু হ্যালো বলল না।

নৈঃশব্দ্য।

প্রতীক্ষায় রইল মাধবী।

এক সেকেণ্ড পরেই শোনা গেল দূরাগত গাংচিলের ডাক। মৌমাছিদের গুঞ্জন। বেড়াল বাচ্চাদের সরু গলাবাজি। মানুষের কচি বাচ্চার কান্না। পরমুহূর্তেই আর এক বাচ্চার খিলখিল হাসি। কুকুরের ডাক। র‍্যাটলস্নেকের কড়মড় মড়মড় বাদ্যি।

গত রাত্রে এইসব আওয়াজই শুনেছেন সুরেশ সাইকিয়া। টেলিফোনে। বিচলিত হয়েছিলেন। কেন হয়েছিলেন, তা এখন বুঝল মাধবী।

পাখি গান গাইছে।

ব্যাঙ কটর কটর করছে।

বেড়াল ফ্যাঁস ফ্যাঁস আওয়াজ ছাড়ছে।

ফ্যাঁস ফ্যাঁস ডাক গজরানিতে পরিণত হল— পরক্ষণে রাগের হুঙ্কার— হুঙ্কার পাল্টে ভয়ানক যন্ত্রণার কাতরানিতে।

পরক্ষণেই শোনা গেল শচীনের গলা, ‘ডাক্তার নাকি? আমাকে দেখেই মূর্ছা গেল পরী! ছিঃ ছিঃ!’

দমাস করে রিসিভার নামিয়ে রাখল মাধবী। মুখ তার নিরক্ত। সান্ত্রীরা সাগ্রহে চেয়ে আছে তার দিকে। কিছুই ফাঁস করল না মাধবী। ঘাবড়ে যেতে পারে। এমনিতেই ভয়ে কাঠ হয়ে রয়েছে।

সদলবলে বেরিয়ে এল বাড়ি থেকে। পথে পড়ল একটা ওষুধের দোকান। সেখানে ঢুকে আরও কিছু ওষুধ তাক থেকে নামিয়ে যেই প্যাক করতে যাচ্ছে, আবার বাজল টেলিফোন।

রিসিভার ধরল মাধবী। ভেসে এল শচীনের কণ্ঠস্বর, ‘পালিয়ে কোথায় যাবেন?’

রিসিভার নামিয়ে রাখল মাধবী। এখন ওর হাত কাঁপছে।

দেখল সান্ত্রীরা। কিছু জিজ্ঞেস করল না।

সুরেশ সাইকিয়া বসেছিলেন টেলিফোন নিয়ে। কথা বলছেন টিকেন্দ্রনগর হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে।

বিনয় চৌধুরী নামে একজন ভদ্রলোকের সন্ধান পাওয়া গেছে কলকাতায়। মধ্যবয়স্ক। বইয়ের দোকান আছে। একটা নয়—দুটো। একটায় বেচেন নতুন বই আর একটায় শুধু পুরোনো বই। বেশি লাভ দ্বিতীয় দোকানে। বই পাগল মানুষ। বিয়ে-থা করেননি। শিবালয় শহরে গেছিলেন বেড়াতে। উতঙ্ক চৌধুরী নামে কোনও ভদ্রলোকের নাম ওঁর খাতাপত্তরে পাওয়া যায়নি। অন্যান্য দোকান দশটার পর খুললে আরও খোঁজ নেওয়া যাবে।

‘খোঁজ নিন। নামটা অদ্ভুত। খবর ঠিকই পাবেন।’

টেলিফোন নামিয়ে রাখলেন সুরেশ সাইকিয়া। মাধবী ফিরল ঠিক তখন। মুখ তার পাণ্ডুরবর্ণ।

সঙ্কুচিত চোখে তা লক্ষ করলেন সুরেশ সাইকিয়া। শুধোলেন, ‘কী হয়েছে?’

টেলিফোন বৃত্তান্ত খুলে বলল মাধবী।

‘শচীনের গলা? অসম্ভব!’ অবাক হয়েছেন সুরেশ।

‘জানি। কিন্তু ওর গলা আমি চিনি।’

‘কেউ ওর গলা নকল করেছে।’

চুপ করে রইল মাধবী। ভুল ওর হয়নি। বৃথা তর্ক করতেও ইচ্ছে হচ্ছে না।

পরী ছুটতে ছুটতে এল ঠিক এই সময়ে, ‘আসুন, আসুন, অদ্ভুত কাণ্ড। দেখে যান… শুনে যান!’

হোটেলের রান্নাঘর। সান্ত্রীরা অস্ত্র বাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিমূঢ়ভাবে। বুঝতে পারছে না কী করবে। কেননা, আওয়াজটা আসছে সিঙ্কের ভেতর থেকে। কচি গলায় ‘আবোল-তাবোল’ বইয়ের ছড়া কাটছে। সিঙ্কের তলা থেকে পাইপ নেমে গিয়ে ঢুকেছে ড্রেনের মধ্যে। ছড়া ভেসে আসছে এই ড্রেনের ভেতর থেকে। ছেলেটা যেন ড্রেনের মধ্যে বহাল তবিয়তে রয়েছে। একটার পর একটা ছড়া কেটে যাচ্ছে। স্তম্ভিত সকলেই। আচমকা স্তব্ধ হল কচিকণ্ঠ।

সুরেশ এগিয়ে গেলেন ড্রেনের দিকে—ঝুঁকে দেখবেন বলে। বাধা দিতে গেছিল মাধবী। তার আগেই…

ফোয়ারার মতন তেড়েফুঁড়ে কাদাজল ছিটকে এল ড্রেনের ভেতর থেকে।

ভিজিয়ে দিল সুরেশ সাইকিয়ার ইউনিফর্ম। দুর্গন্ধে ভরে গেল গোটা ঘর। তেলতেলে কালচে-বাদামি কাদা থেমে থেমে তেড়ে এল পর-পর তিনবার।

তারপর কচিকণ্ঠ একবার শুধু হেসে উঠল। বিদ্রুপহীন নির্মল হাসি। সব চুপ পরক্ষণেই।