অষ্টম খণ্ড – আগুনে কে কে পুড়িল?

☞ প্রথম পরিচ্ছেদ ☞ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ☞ তৃতীয় পরিচ্ছেদ ☞ চতুর্থ পরিচ্ছেদ ☞ পঞ্চম পরিচ্ছেদ ☞ ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ☞ সপ্তম পরিচ্ছেদ ☞ অষ্টম পরিচ্ছেদ ☞ নবম পরিচ্ছেদ ☞ দশম পরিচ্ছেদ ☞ একাদশ পরিচ্ছেদ ☞ দ্বাদশContinue Reading

প্রথম পরিচ্ছেদ – বাদশাহের দাহনারম্

এদিকে বাদশাহ বড় গোলযোগে পড়িলেন। তাঁহার সমস্ত সেনা রন্ধ্রপথে প্রবেশ করিবার অল্প পরেই দিবাবসান হইল। কিন্তু রন্ধ্রের অপর মুখে কেহই পৌঁছিল না। অপর মুখের কোন সংবাদ নাই। সন্ধ্যার পরেই সেই সঙ্কীর্ণ রন্ধ্রপথে অতিশয় গাঢ় অন্ধকারContinue Reading

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ – দাহনে বাদশাহের বড় জ্বালা

রাত্রি প্রভাতে ঔরঙ্গজেব সৈন্যচালনার আদেশ করিলেন। সেই বৃহতী সেনা,-তোপ লইয়া চতুরঙ্গিণী–অতি দ্রুতপদে রন্ধ্রমুখের উদ্দেশে চলিল। ক্ষুৎপিপাসায় সকলেই অত্যন্ত ক্লিষ্ট–বাহির হইলে তবে পানাহারের ভরসা–সকলে শ্রেণীভঙ্গ করিয়া ছুটিল। ঔরঙ্গজেব নিজে উদিপুরী ও জেব-উন্নিসাকে মুক্ত করিয়া উদয়পুর নি:শেষেContinue Reading

তৃতীয় পরিচ্ছেদ – উদিপুরীর দাহনারম্ভ

নির্মলকুমারী, উদিপুরী বেগম ও জেব-উন্নিসা বেগমকে উপযুক্ত স্থানে রাখিয়া, মহারাণী চঞ্চলকুমারীর নিকট গিয়া প্রণাম করিলেন। এবং আদ্যোপান্ত সমস্ত বিবরণ তাঁহার নিকট নিবেদন করিলেন। সকল কথা সবিশেষ শুনিয়া চঞ্চলকুমারী আগে উদিপুরীকে ডাকাইলেন। উদিপুরী আসিলে তাঁহাকে পৃথকContinue Reading

চতুর্থ পরিচ্ছেদ – জেব-উন্নিসার দাহনারম্ভ

জেব-উন্নিসা একা বসিয়া আছেন। দুই একজন পরিচারিকা তাঁহার তত্ত্বাবধান করিতেছে। নির্‍মলকুমারীও দুই একবার তাঁহার খবর লইতেছেন। ক্রমশ: জেব-উন্নিসা উদিপুরীর বিভ্রাটবার্‍তা শুনিলেন। শুনিয়া তিনি নিজের জন্য চিন্তিত হইলেন।পরিশেষে তাঁহাকেও নির্‍মলকুমারী চঞ্চলকুমারীর নিকট লইয়া গেলেন। তিনি নাContinue Reading

পঞ্চম পরিচ্ছেদ – অগ্নিতে ইন্ধনক্ষেপ–জ্বালা বাড়িল

পরদিন যখন জেব-উন্নিসা শয্যাত্যাগ করিয়া উঠিলেন, তখন আর তাঁহাকে চেনা যায় না। একে ত পূর্‍বেই মূর্‍তি শীর্‍ণা বিবর্‍ণা কাদম্বিনীচ্ছায়াপ্রচ্ছন্নাবৎ হইয়াছিল–আজ আরও যেন কি হইয়াছে, বোধ হইতে লাগিল। সমস্ত দিনরাত্র আগুনের তাপের নিকট বসিয়া থাকিলে মানুষContinue Reading

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ – শাহজাদী ভস্ম হইল

অর্দ্ধ রাত্রি অতীত; সকলে নি:শব্দে নিদ্রিত। জেব-উন্নিসা বাদশাহ-দুহিতা সুখশয্যায় অশ্রুমোচনে বিবশা, কদাচিৎ দাবাগ্নিপরিবেষ্টিত ব্যাঘ্রীর মত কোপতীব্রা। কিন্তু তখনই যেন বা শরবিদ্ধা হরিণীর মত কাতরা। রাত্রিটা ভাল নহে; মধ্যে মধ্যে গভীর হুঙ্কারের সহিত প্রবল বায়ু বহিতেছে,Continue Reading

সপ্তম পরিচ্ছেদ – দগ্ধ বাদশাহের জলভিক্ষা

পরদিন পূর্বাহ্নকালে চঞ্চলকুমারীর নিকট জেব-উন্নিসা বসিয়া প্রফুল্লবদনে কথোপকথনে প্রবৃত্ত। দুই দিনের রাত্রিজাগরণে শরীর ম্লান–দুশ্চিন্তার দীর্ঘকাল ভোগে বিশীর্ণ। যে জেব-উন্নিসা রত্নরাশি, পুষ্পরাশিতে মণ্ডিত হইয়া শিশমহলের দর্‍পণে দর্‍পণে আপনার প্রতিমূর্‍তি দেখিয়া হাসিত, এ সে জেব-উন্নিসা নহে। যেContinue Reading

অষ্টম পরিচ্ছেদ – অগ্নিনির্বাণের পরামর্শ

মহারাণার সাক্ষাৎ পাইয়া, প্রণাম করিয়া মাণিকলাল যুক্তকরে নিবেদন করিলেন, “যদি এ দাসকে অন্য কোন যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠান মহারাজের অভিপ্রায় হয়, তবে বড় অনুগৃহীত হইব৷”রাণা জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন, এখানে কি হইয়াছে?”মাণিকলাল উত্তর করিল, “এখানে ত কোন কাজContinue Reading

নবম পরিচ্ছেদ – অগ্নিতে জলসেক

সভাভঙ্গ হইল, তবু মাণিকলাল গেল না। সকলেই চলিয়া গেল, মাণিকলাল গোপনে মহারাণাকে জানাইল, “মবারকের বখ‍‍শিশের কথাটা এই সময়ে মহারাজকে স্মরণ করিয়া দিতে হয় |”রাজসিংহ জিজ্ঞাসা করিলেন, “সে কি চায়?”মা। বাদশাহের যে কন্যা আমাদিগের কাছে বন্দীContinue Reading

দশম পরিচ্ছেদ – অগ্নিনির্বাণকালে উদিপুরী ভস্ম

কপোত শীঘ্রই ঔরঙ্গজেবের উত্তর লইয়া আসিল। রাজসিংহ যাহা যাহা চাহিয়াছিলেন, ঔরঙ্গজেব সকলেতেই সম্মত হইলেন। কেবল একটা গোলযোগ করিলেন, লিখিলেন, “চঞ্চলকুমারীকে দিতে হইবে |” রাজসিংহ বলিলেন, “তদপেক্ষা আপনাকে ঐখানে সসৈন্যে কবর দেওয়া আমার মনোমত |” কাজেইContinue Reading

একাদশ পরিচ্ছেদ – অগ্নিকাণ্ডে তৃষিতা চাতকী

বেগমদিগকে বিদায় দিয়া চঞ্চলকুমারী আবার অন্ধকার দেখিল। মোগল ত পরাভূত হইল, বাদশাহের বেগম তাহার পরিচর্‍যা করিল, কিন্তু কৈ, রাণা ত কিছু বলেন না। চঞ্চলকুমারী কাঁদিতেছে দেখিয়া নির্‍মল আসিয়া কাছে বসিল। মনের কথা বুঝিল। নির্‍মল বলিল,Continue Reading

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ – অগ্নি পুনর্জ্বালিত

উদয়সাগরের তীরে ফিরিয়া আসিয়া, ঔরঙ্গজেব তথায় শিবির স্থাপন ও রাত্রি যাপন করিলেন। সৈনিক ও বাহনগণ খাইয়া বাঁচিল। তখন সিপাহী মহালে গান, গল্প এবং নানাবিধ রসিকতা আরম্ভ হইল। একজন মোগল বলিল, “হিন্দুর রাজ্যে আসিয়াছি বলিয়া আমরাContinue Reading

ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ – মবারকের দহানারম্ভ

সৌন্দর্‍যের কি মহিমা! মবারক জেব-উন্নিসাকে দেখিয়া আবার সব ভুলিয়া গেল। গর্‍বিতা, স্নেহাভাবদর্পে প্রফুল্লা জেব-উন্নিসাকে দেখিলে আর তেমন হইত কি না, বলা যায় না, কিন্তু সেই জেব-উন্নিসা এখন বিনীতা, দর্পশূন্যা, স্নেহশালিনী, অশ্রুময়ী। মবারকের পূর্‍বানুরাগ সম্পূর্‍ণরূপে ফিরিয়াContinue Reading

চতুর্দশ পরিচ্ছেদ – অগ্নির নূতন স্ফুলিঙ্গ

রাজসিংহ রাজনীতিতে ও যুদ্ধনীতিতে অদ্বিতীয় পণ্ডিত। মোগল যতক্ষণ না সমস্ত সৈন্য লইয়া রাণার রাজ্য ছাড়িয়া অধিক দূর যায়, ততক্ষণ শিবির ভঙ্গ করেন নাই বা স্বীয় সেনার কোন অংশ স্থানবিচ্যুত করেন নাই। তিনি শিবিরেই রহিয়াছেন, এমনContinue Reading

পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ – মবারক ও দরিয়া ভস্মীভূত

গোপীনাথ রাঠোর, বিক্রম সোলাঙ্কি, এবং মাণিকলাল দিলীর খাঁর ধ্বংসাকাঙ্ক্ষায় চলিলেন। যে পথে দিলীর খাঁ আসিতেছেন, সেই পথে তিন স্থানে তিন জন লুক্কায়িত রহিলেন। কিন্তু পরস্পরের অনতিদূরেই রহিলেন। বিক্রম সোলাঙ্কি অশ্বারোহী সৈন্য লইয়া আসিয়াছিলেন, কাজেই তিনিContinue Reading

ষোড়শ পরিচ্ছেদ – পূর্ণাহুতি–ইষ্টলাভ

যুদ্ধান্তে জয়শ্রী বহন করিয়া বিক্রম সোলাঙ্কি রাজসিংহের শিবিরে ফিরিয়া আসিল। রাজসিংহ তাঁহাকে সাদরে আলিঙ্গন করিলেন। বিক্রম সোলাঙ্কি বলিলেন, “একটা কথা বাকি আছে। আমার সেই কন্যাটা। কায়মনোবাক্যে আশীর্‍বাদ করিয়া আপনাকে সেই কন্যা সম্প্রদান করিতে ইচ্ছা করি।Continue Reading

উপসংহার – গ্রন্থকারের নিবেদন

গ্রন্থকারের বিনীত নিবেদন এই যে, কোন পাঠক না মনে করেন যে, হিন্দু মুসলমানের কোন প্রকার তারতম্য নির্‍দেশ করা এই গ্রন্থের উদ্দেশ্য। হিন্দু হইলেই ভাল হয় না, মুসলমান হইলেই মন্দ হয় না, অথবা হিন্দু হইলেই মন্দContinue Reading