প্রথম পরিচ্ছেদ

তোমাদের সুখদুঃখে আমার সুখদুঃখ পরিমিত হইতে পারে না। তোমরা আর আমি ভিন্নপ্রকৃতি। আমার সুখে তোমরা সুখী হইতে পারিবে না—আমার দুঃখ তোমরা বুঝিবে না—আমি একটি ক্ষুদ্র যূথিকার গন্ধে সুখী হইব; আর ষোলকলা শশী আমার লোচনাগ্রে সহস্রContinue Reading

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

বড়বাড়ীতে ফুল যোগান বড় দায়। সে কালের মালিনী মাসী রাজবাটীতে ফুল যোগাইয়া মশানে গিয়াছিল। ফুলের মধু খেলে বিদ্যাসুন্দর, কিল খেলে হীরা মালিনী—কেন না, সে বড়বাড়ীতে ফুল যোগাইত। সুন্দরের সেই রামরাজ্য হইল—কিন্তু মালিনীর কিল আর ফিরিলContinue Reading

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

সেই অবধি আমি প্রায় প্রত্যহ রামসদয় মিত্রের বাড়ী ফুল বেচিতে যাইতাম। কিন্তু কেন, তাহা জানি না। যাহার নয়ন নাই, তাহার এ যত্ন কেন? সে দেখিতে পাইবে না—কেবল কথার শব্দ শুনিবার ভরসা মাত্র। কেন শচীন্দ্র বাবুContinue Reading

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

আমি প্রত্যহই ফুল লইয়া যাইতাম, ছোট বাবুর কথায় শব্দশ্রবণ প্রায় ঘটিত না—কিন্তু কদাচিৎ দুই এক দিন ঘটিত। সে আহ্লাদের কথা বলিতে পারি না। আমার বোধ হইত, বর্ষার জলভরা মেঘ যখন ডাকিয়া বর্ষে, তখন মেঘের বুঝিContinue Reading

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

ছোট বাবু ছোট মার কাছে গিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “রজনীকে কি বলিয়াছ গা? সে কাঁদিতেছে।” ছোট মা আমার চক্ষে জল দেখিয়া অপ্রতিভ হইলেন,—আমাকে ভাল কথা বলিয়া কাছে বসাইলেন—বয়োজ্যেষ্ঠ সপত্নীপুত্রের কাছে সকল কথা ভাঙ্গিয়া বলিতে পারিলেন না।Continue Reading

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

বিবাহের দিন অতি নিকট হইল—আর একদিনমাত্র বিলম্ব আছে। উপায় নাই! নিষ্কৃতি নাই! চারিদিক হইতে উচ্ছ্বসিত বারিরাশি গর্জিয়া আসিতেছে—নিশ্চিত ডুবিব। তখন লজ্জায় জলাঞ্জলি দিয়া, মাতার পায়ে আছড়াইয়া পড়িয়া কাঁদিতে লাগিলাম। যোড়হাত করিয়া বলিলাম,—“আমার বিবাহ দিও না—আমিContinue Reading

সপ্তম পরিচ্ছেদ

হীরালাল, জগন্নাথের ঘাটে গিয়া নৌকা ধরিল। রাত্রিকালে দক্ষিণা বাতাসে পাল দিল। সে বলিল, তাহাদের পিত্রালয় হুগলী। আমি তাহা জিজ্ঞাসা করিতে ভুলিয়া গিয়াছিলাম। পথে হীরালাল বলিল, “গোপালের সঙ্গে বিবাহ ত হইবে না—আমায় বিবাহ কর।” আমি বলিলাম,Continue Reading

অষ্টম পরিচ্ছেদ

সেই জনহীনা রাত্রিতে আমি অন্ধ যুবতী, একা সেই দ্বীপে দাঁড়াইয়া গঙ্গার কল কল জলকল্লোল শুনিতে লাগিলাম। হায়, মানুষের জীবন! কি অসার তুই! কেন আসিস—কেন থাকিস—কেন যাস? এ দুঃখময় জীবন কেন? ভাবিলে জ্ঞান থাকে না। শচীন্দ্রContinue Reading