প্রথম পরিচ্ছেদ : উনি তোমার কে?
যে কুটীরের নিকটস্থ বৃক্ষতলে বসিয়া হেমচন্দ্র বিশ্রাম করিতেছিলেন, সেই কুটীরমধ্যে এক পাটনী বাস করিত। কুটীরমধ্যে তিনটি ঘর। এক ঘরে পাটনীর পাকাদি সমাপন হইত। অপর ঘরে পাটনীর পত্নী শিশুসন্তান সকল লইয়া শয়ন করিত। তৃতীয় ঘরে পাটনীরContinue Reading
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : প্রতিজ্ঞা-পর্বতো বহ্নিমান
বিশ্রাম করিয়া হেমচন্দ্র কিঞ্চিৎ সবল হইয়াছিলেন। শোণিতস্রাবও কতক মন্দীভূত হইয়াছিল। শূলে ভর করিয়া হেমচন্দ্র স্বচ্ছন্দে গৃহে প্রত্যাগমন করিলেন। গৃহে আসিয়া দেখিলেন, মনোরমা দ্বারদেশে দাঁড়াইয়া আছেন। মৃণালিনী ও গিরিজায়া অন্তরালে থাকিয়া মনোরমাকে দেখিলেন। মনোরমা চিত্রার্পিত পুত্তলিকারContinue Reading
তৃতীয় পরিচ্ছেদ : হেতু-ধূমাৎ
মনোরমা এবং হেমচন্দ্র গৃহমধ্যে প্রবেশ করিলে মৃণালিনীকে বিদায় দিয়া গিরিজায়া উপবনগৃহ প্রদক্ষিণ করিতে লাগিলেন। যেখানে যেখানে বাতায়ন-পথ মুক্ত দেখিলেন, সেইখানে সাবধানে মুখ উন্নত করিয়া গৃহমধ্যে দৃষ্টিপাত করিলেন। এক কক্ষে হেমচন্দ্রকে শয়ানাবস্থায় দেখিতে পাইলেন; দেখিলেন, তাঁহারContinue Reading
চতুর্থ পরিচ্ছেদ : উপনয়-বহ্নিব্যাপ্যো ধূমবান্
গিরিজায়া গীত গায়িল, “কাহে সই জীয়ত মরত কি বিধান? ব্রজকি কিশোর সই, কাঁহা গেল ভাগই, ব্রজজন টুটায়ল পরাণ।” সঙ্গীতধ্বনি হেমচন্দ্রের কর্ণে প্রবেশ করিল। স্বপ্নশ্রুত শব্দের ন্যায় কর্ণে প্রবেশ করিল। গিরিজায়া আবার গায়িল, “ব্রজকি কিশোর সই, কাঁহা গেলContinue Reading
পঞ্চম পরিচ্ছেদ : আর একটি সংবাদ
সেই দিন মাধবাচার্যের পর্যটন সমাপ্ত হইল। তিনি নবদ্বীপে উপস্থিত হইলেন। তথায় প্রিয় শিষ্য হেমচন্দ্রেকে দর্শনদান করিয়া চরিতার্থ করিলেন। এবং আশীর্বাদ, আলিঙ্গন, কুশলপ্রশ্নাদির পরে বিরলে উভয়ের উদ্দেশ্য সাধনের কথোপকথন করিতে লাগিলেন। আপন ভ্রমণবৃত্তান্ত সবিস্তারে বিবৃত করিয়াContinue Reading
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ : আমি ত উন্মাদিনী
অপরাহ্নে মাধবাচার্য প্রত্যাবর্তন করিলেন। তিনি সংবাদ আনিলেন যে, ধর্মাধিকার প্রকাশ করিয়াছেন, যবনসেনা আসিয়াছে বটে, কিন্তু পূর্বজিত রাজ্যে বিদ্রোহের সম্ভাবনা শুনিয়া যবনসেনাপতি সন্ধিসংস্থাপনে ইচ্ছুক হইয়াছেন। আগামীকল্য তাঁহারা দূত প্রেরণ করিবেন। দূতের আগমন অপেক্ষা করিয়া কোন যুদ্ধোদ্যমContinue Reading
সপ্তম পরিচ্ছেদ : গিরিজায়ার সংবাদ
গিরিজায়া যখন পাটনীর গৃহে প্রত্যাবর্তন করে, তখন প্রাণান্তে হেমচন্দ্রের নবানুরাগের কথা মৃণালিনীর সাক্ষাতে ব্যক্ত করিবে না স্থির করিয়াছিল। মৃণালিনী তাহার আগমন প্রতীক্ষায় পিঞ্জরে বদ্ধ বিহঙ্গীর ন্যায় চঞ্চলা হইয়া রহিয়াছিলেন; গিরিজায়াকে দেখিবামাত্র কহিলেন, “বল গিরিজায়া, কিContinue Reading
অষ্টম পরিচ্ছেদ : মৃণালিনীর লিপি
মৃণালিনী কহিলেন, “গিরিজায়া, তিনি রাগ করিয়া বলিয়া থাকেন, ‘উত্তম হইয়াছে’; ইহা শুনিয়া তিনি কেনই বা রাগ না করিবেন?” গিরিজায়ারও তখন সংশয় জন্মিল। সে কহিল, “ইহা সম্ভব বটে।” তখন মৃণালিনী কহিলেন, “তুমি এ কথা বলিয়া ভালContinue Reading
নবম পরিচ্ছেদ : অমৃতে গরল-গরলামৃত
হেমচন্দ্রের আচার্যের কথায় বিশ্বাস করিয়া মৃণালিনীকে দুশ্চরিত্রা বিবেচনা করিয়াছিলেন; মৃণালিনীর পত্র পাঠ না করিয়া তাহা ছিন্ন ভিন্ন করিয়াছিলেন, তাঁহার দূতীকে বেত্রাঘাত করিতে প্রস্তুত হইয়াছিলেন। কিন্তু ইহা বলিয়া তিনি মৃণালিনীকে ভালবাসিতেন না, তাহা নহে। মৃণালিনীর জন্যContinue Reading
দশম পরিচ্ছেদ : এত দিনের পর!
হেমচন্দ্র মৃণালিনীকে হস্তে ধরিয়া তুলিলেন। উভয়ে উভয়ের সম্মুখীন হইয়া দাঁড়াইলেন। এতকাল পরে দুইজনের সাক্ষাৎ হইল। যে দিন প্রদোষকালে, যমুনার উপকূলে নৈদাঘানিলসন্তাড়িত বকুলমূলে দাঁড়াইয়া, নীলাম্বুয়ীর চঞ্চল-তরঙ্গ-শিরে নক্ষত্ররশ্মির প্রতিবিম্ব নিরীক্ষণ করিতে করিতে উভয়ে উভয়ের নিকট সজলনয়নে বিদায়Continue Reading