» চার

কয়লা কুড়োন ছেলেমেয়ের দল ঝুড়ি মাথায় বাড়ি ফিরছে। নিজেদের মধ্যে অনর্গল কথা বলে চলেছে এরা। রেলওয়ে ইয়ার্ডের কালো ধোয়ার ফাঁকে আকাশ দেখা যায় না। চারপাশে ইঞ্জিনের সিটি আর পুশ পুশ শব্দ। বিকেলের রোদে চিকচিক করছেContinue Reading

» পাঁচ

না। আর চলে না। এভাবে আর আমি পারছি না মার্থা। শওকতের গলার স্বর ভারি হয়ে এলো। ভাবছি কোথাও চলে যাব। কোথায়? কোথায় জানি না। উঠে দাঁড়িয়ে ঘরের মধ্যে পায়চারি করতে লাগলো শওকত। কোন মফঃস্বল শহরেContinue Reading

» ছয়

হুঁ, তারপর, বলো বলে যাও, থামলে কেন? চায়ের কাপটা শব্দ করে পিরিচের ওপরে নামিয়ে রাখলো বুড়ো আহমদ হোসেন। ঘিঞ্জি-গলির মাথায়, দরমায়-ঘেরা রেস্তোরাঁর অসমতল টুলের ওপরে দুজনে বসে। শওকত বললো, বললাম তো সব। আর কী বলবো।Continue Reading

» সাত

সংক্ষিপ্ত ব্লাউজের নিচে আড়াল-রাখা একজোড়া উদ্ধত যৌবন, নিচে তার ঘরে নাচের মহড়া দিচ্ছে। এখান থেকে তার ঘুঙুরের শব্দ শুনতে পাচ্ছে শওকত। মার্থা বললো, দেরি করছো কেন, ওঠো। তাড়াতাড়ি বাড়িটা দেখে আসি গিয়ে। আমাকে আবার দুটোরContinue Reading

» আট

বাড়ি দেখে দুজনেই পছন্দ হলো। হোক না কবুতরের খোঁপের মত ছোট-ছোট দুটো কামরা। তবু ভাড়া কম। মাসে পঁচাত্তর টাকা। দু-মাসের আগাম দিতে হবে, দেড়শ! সে টাকা দিয়ে বাড়ির ভেতরটা মেরামত আর চুনকাম করে দেবে বাড়িওয়ালা।Continue Reading

» নয়

পর পর কয়েকদিন বুড়ো আহমদ হোসেনের আখড়ার কাছে এসে ফিরে গেলো শওকত। সারাপথ মনটাকে ধরে রাখলেও বুড়ো আহমদ হোসেনের নজরের সীমানার আসার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত সত্তা যেন বিদ্রোহ করে উঠে ওর। মার্থা বলে। তোমার কীContinue Reading

» জহির রায়হান গল্পসমগ্র

কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক জহির রায়হানের বিভিন্ন সময়ে লেখা ২১ টি গল্প নিয়ে সাজানো গল্পসমগ্র; মাত্র একুশটি গল্প লিখে যেতে পেরেছিলেন তিনি। প্রত্যেকটা গল্পেই যিনি রেখেছেন দক্ষতার ছাপ। কোনো গল্পে বলেছেন অতীতের স্মৃতি আবার কোনো গল্পে বলেছেনContinue Reading

» সোনার হরিণ

দীর্ঘ দশ বছর পর অকস্মাৎ আজ যদি তাদের একজনের সঙ্গে দেখা না হত, তাহলে হয়ত এ গল্পের জন্ম হতো না কোনদিন। দশ বছর আগে, ফার্নিচারের দোকানে কিছুদিনের জন্য চাকরি নিতে হয়েছিল আমার। দোকানটা ছিল আকারেContinue Reading

» সময়ের প্রয়োজনে

কিছুদিন আগে সংবাদ সংগ্রহের জন্যে মুক্তিযোদ্ধাদের একটা অগ্রবর্তী ঘাঁটিতে গিয়েছিলাম। ক্যাম্প-কমান্ডার ভীষণ ব্যস্ত ছিলেন। সেই ব্যস্ততার মুহূর্তে আমার দিকে একটা খাতা এগিয়ে দিয়ে বললেন, আপনি বসুন। এই খাতাটা পড়ুন বসে বসে। আমি কয়েকটা কাজ সেরেContinue Reading

» একটি জিজ্ঞাসা

হজে গেলে কিতা অয় বাবাজান? প্রশ্নটা আকস্মিক, তাই মেয়ের দিকে একবার মুখ তুলে তাকাল করমআলী। কিন্তু কিছুই বলল না সে, নীরবে ধানের চারাগুলি পরিষ্কার করতে লাগল দু-হাতে। হজে গেলে কিতা অয় বাবাজান? আবার প্রশ্ন। জবাবContinue Reading

» হারানো বলয়

অফিস থেকে বেরুতেই ফুটপাতে দেখা হয়ে গেলো মেয়েটির সাথে। একটুও চমকালো না আলম। যদিও ক্লান্ত চোখ দুটি ওর বিস্ময়ের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। আরে আলম না। তুমি এখানে? মেয়েটিও ভুল করেনি, ঠিক চিনতে পেরেছে তাকে। অনেকContinue Reading

» বাঁধ

আর কিছু নয়, গফরগাঁ থাইকা পীর সাইবেরে নিয়া আস তোমরা। অনেক ভেবেচিন্তে বললেন রহমি সর্দার। তাই করেন, হুজুর, তাই করেন। একবাক্যে সায় দিল চাষীরা। গফরগাঁ থেকে জবরদস্ত পীর মনোয়ার হাজীকেই নিয়ে আসবে ওরা। দেশজোড়া নামContinue Reading

» সূর্য গ্রহণ

সকাল থেকেই মেঘ করছিলো সারা আকাশটা। দুপুর গড়াতেই বৃষ্টি নামলো জোরে। বাইরে শুধু বৃষ্টির একটানা রিমঝিম রিমঝিম শব্দ। মাঝে মাঝে দমকা বাতাসে সে বৃষ্টির বেগ বাড়ছিলো। আবার কমছিলো। রাস্তায় পায়ে চলা পথিকের সাড়াশব্দ ছিলো না।Continue Reading

» নয়া পত্তন

ভোরের ট্রেনে গাঁয়ে ফিরে এলেন শনু পণ্ডিত। ন্যুব্জ দেহ, রুক্ষ চুল, মুখময় বার্ধক্যের জ্যামিতিক রেখা। অনেক আশা ভরসা নিয়েই গিয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন, কিছু টাকা পয়সা সাহায্য পেলে আবার নতুন করে দাঁড় করাবেন স্কুলটাকে। আবার শুরুContinue Reading

» মহামৃত্যু

লাশটাকে ধরাধরি করে উঠোন থেকে ঘরে নিয়ে এলো ওরা। তারপর আস্তে শুইয়ে দিলো মেঝের উপর।   বাইরে তখন সন্ধ্যার আস্তরণে কালো রাত নেমে এসেছে ঘন হয়ে। শিয়রে দুটো মোমবাতি জ্বেলে দিয়ে চক্রাকারে বসলো ওরা, লাশটাকেContinue Reading

» ভাঙ্গাচোরা

টুনুর স্বামীকে দেখে এমনভাবে চমকাতে হবে তা কে জানতো। তবু চমকেছিলাম, ভীষণভাবেই চমকে উঠেছিলাম হয়তো।   কাল রাতে যখন ট্রেন থেকে নেমেছিলাম তখন বাইরে শীত পড়ছিলো ভীষণ। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। বাতাসের বরফ ঝরছিল যেন। কোটেরContinue Reading

» অপরাধ

না, আর সইতে পারে না সালেহা। জীবনটা একেবারে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে তার কাছে। বিয়ে হয়েছে আজ চার বছর। চারটে বছর মানুষের জীবনে নেহায়েৎ কম নয়। এ চারটে বছর কেমন করে তাকে কাটাতে হয়েছে তা সেইContinue Reading